Cricket : The story of Bangladesh cricket team's participation in the World Cup in 1999 and 2015
আশাকরি সকলেই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমি সর্বপ্রথম #steem-bangladesh কমিউনিটিকে ধন্যবাদ দিতে চাই। এই ভিন্ন ধরনের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য। এতে করে আমরা যেমন আমাদের নিজেদের ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরতে পারবো তেমনি আমাদের নতুন টপিকসের প্রতি লেখার চাহিদা বাড়বে। আশাকরি এই উদ্যোগ টি আমাদের সকল টপিকসের উপর লেখার ইন্টারেস্ট তৈরি করবে।
বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাস।
ক্রিকেট শব্দটির সাথে বাংলাদেশের ছোট্ট থেকে বড় সকলেই জড়িত। কারণ আমাদের দেশে ক্রিকেট ভালোবাসেনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। ক্রিকেট মানেই আনন্দ ক্রিকেট মানেই আবেগ। এই দুটি শব্দের সাথে বাংলাদেশের মানুষ খুবই পরিচিত। ক্রিকেট একটিমাত্র প্লাটফর্ম যেটি বাংলাদেশকে নতুন করে আর একবার সারা বিশ্বে চিনিয়েছে। আজকের এই বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অনেক কষ্ট ও পরিশ্রমের ফল। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিসিবি পরিচালনা করেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে সারা বিশ্ব টাইগার্স নামেও চিনে। চলুন তাহলে আজকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ১৯৯৯ ও ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের যাত্রা সম্পর্কে জেনে আসা যাক।
বাংলাদেশের ওয়ানডে মর্যাদা।
- ওডিআই মর্যাদা - ১৯৯৭ সালে।
১৯৮৬ সালে ৩১শে মার্চ শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করে। কিন্তু ১৯৯৭ সালে পহেলা এপ্রিল মালয়েশিয়ায় আইসিসি ট্রফি জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ দল ওডিআই মর্যাদা অর্জন করে। ১৯৯৭ সালে কেনিয়া বাংলাদেশের বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। কিন্তু প্রথম ইনিংস শেষে বৃষ্টির কারণে খেলা কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে। ক্রিকেট ম্যাচ টি বৃষ্টি আইনে গড়ায়। বৃষ্টি আইনে ২৫ ওভারে বাংলাদেশের টার্গেট দাঁড়ায় ১৬৬ রান। জবাবে ইনিংস এর প্রথম বলেই বাংলাদেশ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যাই। কিন্তু মোহাম্মদ রফিক ও নাজমুল আবেদিন নান্নুর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ম্যাচটি ২ উইকেটে জয় লাভ করে।
বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ওডিআই জয়।
১৯৯৮ সালে ভারতে ত্রিদেশীয় সিরিজে কেনিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম আন্তর্জাতিক ওডিআই জয় ছিনিয়ে আনে।
বাংলাদেশের প্রথম ১৯৯৯ সালে ওডিআই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ।
- বাংলাদেশ দল :
আমিনুল ইসলাম, আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদীন, ফারুক আহমেদ, শফিউদ্দিন বাবু, নিয়ামুর রশীদ, নাঈমুর রহমান, এনামুল হক, খালেদ মাহমুদ, খালেদ মাসুদ, মো. রফিক, হাসিবুল ইসলাম, মঞ্জুরুল ইসলাম, শাহরিয়ার হোসেন ও মেহরাব হোসেন।
১৯৯৮ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক ওডিআই জয়ের পরের বছরই বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড কাপ খেলার গৌরব অর্জন করে। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার্ল্ড কাপে বাংলাদেশের শুরু টা মোটেও ভালো ছিলো না। তারা সর্বমোট ৫ টি ম্যাচ খেলে ২ টি জয় ও ৩টি হারের মুখ দেখে। কিন্তু প্রথম বারের মতো ওয়ার্ল্ড কাপে অংশগ্রহণ করা দল হিসাবে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স খুব খারাপ ছিল না।
বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ
বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ওয়ার্ল্ড কাপ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খুব বড় ব্যবধানে হেরে যায়। বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভারের ম্যাচে ৩৭.৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১৬ রান করতে সক্ষম। জবাবে নিউজিল্যান্ড ৬ উইকেটে ম্যাচটি জিতে যায়।বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ম্যাচ
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে ডার্বিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ নির্ধারিত ৪৯.২ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৮২ রান করতে সক্ষম হয়েছিল। জবাবে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ টি জিতে যায়।
বিশ্বকাপে তৃতীয় ম্যাচ
বিশ্বকাপের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ জয়ের মুখ দেখে। এই ম্যাচে বাংলাদেশ স্কটল্যান্ড এর মুখোমুখি হয়েছিল। বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভার ব্যাটিং করে ১৮৫ রান করতে সক্ষম হয়। জবাবে মাত্র ১৬৩ রানে অলআউট হয়ে যায় স্কটল্যান্ড। যার ফলে বাংলাদেশ ২২ রানের জয় পায়। আর এটি ছিল বাংলাদেশের বিশ্বকাপে প্রথম জয়।বিশ্বকাপে চতুর্থ ম্যাচ
বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ার কাছে খুব বাজেভাবে হেরে যায়। এই ম্যাচে বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান করতে সক্ষম হয়। জবাবে অস্ট্রেলিয়া বিশাল ব্যবধানে ম্যাচটি জিতে যায়। জবাবে মাত্র ১৯.৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া।বিশ্বকাপে পঞ্চম তম ম্যাচ
১৯৯৯ সালের সবচেয়ে বড় চমক সাবেক বিশ্বকাপ বিজয়ী দল পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়। এই বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ দারুন ব্যাটিং বোলিং নৈপুণ্যে প্রদর্শন করেন। জবাবে তারা পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলকে হারাতে সক্ষম হয়। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ প্রথম বারের মত ২০০ রান অতিক্রম করে। এই ম্যাচে বাংলাদেশে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৩ রান করতে সক্ষম হয়। জবাবে ৪৪.৩ ওভারে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম পাকিস্তান। ফলে বাংলাদেশ ৬২ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতে যায়। এই জয় টি বাংলাদেশ ক্রিকেটের একটি স্বরণীয় জয়।
বাংলাদেশ ১৯৯৯, ২০০৩, ২০১১ ও ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে প্রথম পর্বেই বিদায় নেয়। কিন্তু ২০০৭ ও ২০১৫ সালে বাংলাদেশ যথাক্রমে গ্রুপ পর্ব অতিক্রম ও কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে।
২০০৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ প্রথম বারের মতো গ্রুপ পর্ব অতিক্রম করার গৌরব অর্জন করেন। বাংলাদেশ দল এই আসরে ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি দল ভারতকে পরাজিত করে। তারা ভারতের মতো শক্তিশালী দলকে পরাজিত করে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় করে দেয়।
২০১৫ সালে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দল : মাশরাফি বিন মর্তুজা ( অধিনায়ক ), তামিম ইকবাল, শাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মামুনুল হক, সৌম্য সরকার, নাসির হোসেন, তাসকিন আহমেদ, আল-আমিন হোসেন, রুবেল হোসেন, সাব্বির রহমান , তাইজুল ইসলাম, এনামুল হক বিজয়।
এই দল নিয়ে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ দল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে যৌথভাবে আয়োজিত বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট অংশগ্রহণ করে। ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের পর ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফলতম। কারণ এই বিশ্বকাপে মাশরাফি বিন মর্তুজার হাত ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এক অন্যতম চূড়ায় উঠে।
গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ মোট ৬ টি ম্যাচ খেলে। তারমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়। গ্রুপে বাংলাদেশ শ্রীলংকা ও নিউজিল্যান্ডের সাথে হারলেও বাকি ম্যাচগুলো স্কটল্যান্ড আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ডের সাথে জয়লাভ করার সুবাদে বাংলাদেশ কোয়ার্টার-ফাইনালে অতিক্রম করে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রবেশ করে। এর সাথে ইংল্যান্ড ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়। বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের ম্যাচটি ছিল অত্যন্ত দর্শনীয় একটি ম্যাচ। ইংল্যান্ড প্রথমে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায়। তারপর মাহমুদুল্লাহ ও সৌম্য সরকারের ৮৬ রানের পার্টনারশিপ বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে। কিন্তু ৯৪ ও ৯৯ রানে পরপর সৌম্য ও সাকিব এর আউট বাংলাদেশকে পুনরায় বিপর্যয় ফেলে। তারপর মাহমুদুল্লাহ মুশফিকুর রহিম কে সঙ্গে নিয়ে ১৩৯ রানের পার্টনারশিপ বাংলাদেশকে একটি শক্ত পজিশনে নিয়ে যায় পজিশনে নিয়ে যায়। মাহমুদুল্লাহ ১০৪ রানে রান আউটের শিকার হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান। তখন দলীয় স্কোর ৪৫.৪ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান। নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশ ৭ উইকেট হারিয়ে ২৭৫ রান করতে সক্ষম হয়। জবাবে ইংল্যান্ড খুব ভালো সূচনা করে। তারা ১৯.৪ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৯৭ রান করে জয়ের পথেই এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু মাশরাফি ১৯.৫ ওভারে হেলস্ কে আউট করে ইংল্যান্ডের জয়টা একটু কঠিন করে দেয়। পরবর্তিতে রুবেল হোসেন ২৭ তম ওভারে পরপর ২ উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে পুরো ব্যাকফুটে ফেলে দেয়। পরবর্তিতে হানা দেয় তাসকিন হোসেন ৩০ তম ওভারে জেমস টেইলর কে নিজের শিকারে পরিণত করে। ইংল্যান্ড নিয়মিত উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে পড়ে যায়।
৩৫.৪ ওভারে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ১৬৩/৬। কিন্তু এরপর জজ বাটলার ও ক্রিস ওয়েকস এর পার্টনারশিপ বাংলাদেশকে বিপদে ফেলে দেয়। তাসকিন আহমেদ ৪৬ তম ওভারের ৫ বলে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান জস বাটলার কে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন। এতে বাংলাদেশের জয়ের আশা পুনরায় ফিরে পায়। কিন্তু বাংলাদেশকে তামিম ইকবালের ক্যাঁচ মিসের খেসারত দিতে হয়। ক্রিস ওয়েকস তামিম ইকবালের হাতে জীবন ফিরে পেয়ে বিধ্বংসী হয়ে উঠেন। শেষ দুই ওভারে ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৬ রান হাতে রয়েছে ২ টি উইকেট। তখন ক্রিস ওয়েকস ক্রিসে রয়েছেন। এ সময় বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ম্যাচের ৪৯ তম ওভার টি রুবেল হোসেনের হাতে তুলে দেন। রুবেল হোসেন ওভারে প্রথম বল ব্রোড কে করার জন্য গুটি গুটি পায়ে দৌড়িয়ে যাচ্ছেন। ওহ মাই গডস্ বোল্ট। ওভারের প্রথম বলেই ব্রোডকে আউট করে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন জাগিয়ে তুলেছেন। ওভারের ২য় বল ডট। ওভারের ৩য় বল জেমস এন্ডারসন কে করার জন্য রুবেল হোসেন ছুটছেন। কে যানে এই বলেই বাংলাদেশের বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ে দিবে। হ্যাঁ ওভারে ৩য় বলে জেমস এন্ডারসন কে বোল্ড করে বাংলাদেশ জয়ের আনন্দে ভাসছে। মাঠে খেলোয়াড়দের উল্লাসে স্টেডিয়াম মুখরিত হয়ে ওঠে। আর উঠবেই না কেন? বাংলাদেশ প্রথম বারের মত বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার গৌরব অর্জন করেছে।
যদিওবা কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে বিতর্কিত অ্যাম্পিয়ারিংয়ের কারনে বাংলাদেশ হেরে যায়। কিন্তু বাংলাদেশ ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে। আমরা সকলে আশাবাদী বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ জিতবে।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@sobuj28
Cc:-
@steemitblog
@steemcurator01
@steemcurator02
https://twitter.com/Mohamma94605683/status/1368142940078362631?s=19
JOIN WITH US ON DISCORD SERVER: