ওয়েব সিরিজ রিভিউ: রুদ্রবীনার অভিশাপ- সাবধান ( সিজন ১- চতুর্থ পর্ব )

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির চতুর্থ পর্ব রিভিউ দেব। আজকের চতুর্থ পর্বের নাম হলো "সাবধান"। আগের পর্বে দেখা গিয়েছিলো যে শ্রুতির মাকে কিডন্যাপ করার বা ভয় দেখানোর একটা ষড়যন্ত্র করেছিল। আজকের পর্বে কি ঘটনা ঘটে দেখা যাক।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

সিরিজটির নাম
রুদ্রবিনার অভিশাপ
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
সাবধান
পরিচালকের নাম
জয়দীপ মুখার্জি
অভিনয়
বিক্রম চ্যাটার্জি, রূপসা চ্যাটার্জি, সৌরভ দাস, দিতিপ্রিয়া রায়, উষশী রায় ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
২৪ ডিসেম্বর ২০২১( ইন্ডিয়া )
সময়
২০ মিনিট ( চতুর্থ পর্ব )
ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


ꕥমূল কাহিনী:ꕥ


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

এখানে দেখা যায় যে শ্রুতির মা সালামত খানের জন্য মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার জন্য সবার কাছে আগ্রহ প্রকাশ করে এবং শ্রুতি, বিক্রম আর তার বাবা মিলে বাইরে একটা পাহাড়ির উপর অবস্থিত মন্দিরে পুজো দিতে যায়। বিক্রম সাথে করে সেই তানসিনের বাক্সটা নিয়ে যায় যাতে রাগ সঞ্জীবনীর বিষয়ে কিছু লেখা ছিল। তার প্রত্যেকটা লাইন ভালোভাবে বিক্রম মনে করছিলো আর বিষয়গুলো মেলানোর চেষ্টা করছিলো যে কথার থেকে কিভাবে বিষয়গুলো শুরু করা যায়। তবে এই বাক্স এর উপরে যে লেখাগুলো ছিল সেগুলো আমানত খাঁ বলে একজন লিখেছিলো বলে ধারণা করে এবং সেইটা প্রায় ১০০ বছর আগের বিষয়ে। তবে একসময় বিক্রম, শ্রুতি, তার মা মিলে একটা পিয়ানো এর মতো দেখতে যন্ত্রটি বাজাতে থাকে তখন উল্টো দিক থেকে একটা দরজা খুলে যায় আর এটা বিক্রম স্বরণ করতে লাগে। যাইহোক এইবার তারা পুজো শেষ করে বাইরে বের হয় কিন্তু একটা লোক সবসময় তাদের পিছু পিছু ফ্লো করতে থাকে আর এটা দেখা যায় সেই শ্রুতির মাকে যখন নাদ লোকটি কিডন্যাপ করে নিয়ে যাচ্ছিলো। এই লোকটা একটা বাঁশিওয়ালা সেজে সবসময় তাদের উপরে নজর রাখতে লাগে। তারা রোডের উপরে এসে যখন গাড়িতে উঠতে থাকে তখন ওই লোকটিও তড়িঘড়ি করে একটা অটোতে ওঠে আর গাড়িটিকে ফ্লো করতে বলে কিন্তু অটোতে ছিল নাদ লোকটি বসে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

নাদ লোকটি ওই গোবিন্দ লোকটিকে আর নিয়ে গেলো না, তাকে নামিয়েই দেয়। আসলে এরা সবাই রুদ্র ভৈরব এর লোকজন ছিল। সবাই সব জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এরপর বিক্রম। শ্রুতি আর তার বাবা চলে আসে তাদের পুরোনো বাড়িতে অর্থাৎ শ্রুতির দাদু, দিদার বাড়িতে। যা আমানত খাঁ ১০০ বছর আগে তৈরি করেছিল। তবে শ্রুতির দিদা মারা যাওয়ার পরে সেই হাভেলিতে আর কেউ যেত না, ফলে ৪০ কি ৫০ বছর ধরে সেইভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে আর সমস্ত জিনিসপত্র ধুলোবালি, মাকড়সার জ্বালে ভরে গিয়েছে। এরপর শ্রুতি তার বাবার কাছে তাদের দাদু- দিদার বিষয়ে জানতে চায়। তারপর তার দাদুর সাথে তার দাদির কিভাবে পরিচয় হয়েছিল সেই বিষয়ে জানতে আরো আগ্রহ প্রকাশ করে। এরপর তার বাবা তাদের গল্পটা বলতে থাকে। আসলে শ্রুতির দিদার বাবার নামই ছিল আমানত খাঁ আর শ্রুতির দাদুকে সঙ্গীত শিখাতো আর সেখান থেকেই তাদের পরিচয় হয়। একসময় শ্রুতির দাদু সঙ্গীতে পারদর্শী এবং শ্রেষ্ঠ শিষ্য হয়ে উঠলে তাকে তানসিনের তানপুরা উপহার দিয়েছিলো।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

এরপরের কাহিনী বলতে থাকে আর তাদের মধ্যে কিভাবে ধীরে ধীরে সম্পর্ক গড়ে ওঠে সেই কাহিনীটাও বলে। শ্রুতির দিদা পিয়ানো বাজাতে ভালোবাসতো আর এইগুলো সে ভিয়েনা থেকে ওয়েস্টার্ন ক্লাসিকও শিখেছিল। সেখানকার প্রতিযোগিতাতেও ভালো পারতো। এরপর বলে শ্রুতির দাদু অনেকটা জনদরদী মানুষ ছিলেন অর্থাৎ সে সাধারণ মানুষজনের সাথে মিলেমিশে থাকতে ভালোবাসতেন। তাই একদিন যখন গ্রামে বন্যায় ভেসে গিয়েছিলো তখন গ্রামের কিছু নবজাত শিশুকে হাভেলিতে এনে আশ্রয় দিয়েছিলো আর সেখানে তার মধ্যে ছিল শ্রুতির বাবা আর মাও। তখনকার সময় নবাব আমানত খাঁ শ্রুতির বাবাকে আর মাকে একটা করে চাকতি দিয়েছিলো। তবে সেখানে প্রত্যেকের নামকরণের সময় প্রত্যেকের সামনে একটা করে বাদ্যযন্ত্র রেখে দিয়েছিলো আর সবাইকে যার যার পছন্দমতো বেছে নিতে বলেছিলো আর সেই হিসেবে সবাই সেই মতে সেই যন্ত্রের মাধ্যমে পারদর্শী হয়ে ওঠে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

এরপর সেই গল্প করতে করতে তারা সবাই আনন্দপুরের হাভেলিতে পৌঁছিয়ে যায় এবং এসেই শ্রুতির মাকে সেই চাকতি দুটি বের করতে বলে যেটা দিয়েছিলো আর তারা সেই দুটি চাকতিও এতো বছর ধরে যত্ন করে রেখেও দিয়েছিলো। নবাব আমানত খাঁ যে চাকতি দুটি দিয়েছিলো তাতে শ্রুতির মায়ের চাকতিতে ছিল রুদ্রবিনার চিহ্ন আর তার বাবার চাকতিতে ছিল শরতের চিহ্ন। এরপর বিক্রম এই দুটো চাকতি নিয়ে সেই তানসিনের তানপুরার বাক্স খুলে ভিতরে বড়ো চাকতিটা বসায় এবং তার মাঝখানে ছোট চাকতিটা বসায়। দুটি চাকতি একসাথে বসানোর সাথে সাথে পুরো খাপে খাপ ফিট হয়ে যায়। আর এইটার মাধ্যমে বিক্রম অনুমান করে যে এখানে রাগ সঞ্জীবনীর রহস্য বা কোনো ক্লু থাকতে পারে। এর মধ্যে সেই গোবিন্দ লোকটি তাদের হাভেলির সামনে এসে বাঁশি বাজাতে থাকে একই সুরে। আর এই একই সুর শুনে সবারই বিরক্ত লেগে যেতে লাগে। বিক্রম হমতিদমতি করে বাইরে যায় আর বাঁশির সুর একই বাজাচ্ছে কেন সেইটা নিয়ে একটু চিন্তা করতে লাগে এবং কিছুটা সঙ্গীতের বাজনার সাথে অর্থ বোঝার চেষ্টা করে যে লোকটি এই সুরের মাধ্যমে কি বোঝাতে চাচ্ছে। কারণ বিক্রম বুঝতে পেরেছিলো যে লোকটি কিছু একটা বোঝাতে চাচ্ছে তখন ভাবতে ভাবতে বিক্রম বের করে যে এর অর্থ 'সাবধান'।


ꕥব্যক্তিগত মতামত:ꕥ

আজকের পর্বটিতে বিশেষ তেমন কিছু এগোয়নি, তবে তানসিনের তানপুরার লেখাগুলোর মাধ্যমে কিছুটা অনুমান করতে পেরেছে এবং সেইটার মাধ্যমে এখন সামনের দিকে এগোনোর চেষ্টা করবে বলে বোঝা যাচ্ছে। এদিকে রুদ্রপুরের রুদ্র ভৈরব লোকটি তার লোকজনগুলোকে চারিদিকে ছড়িয়ে দিয়ে রেখেছে মদন্তীর বংশধরদের খুঁজে বের করার জন্য। আর বিশেষ করে বিক্রমের পরিবারের লোকজনদের উপরে একটু দৃষ্টিপাত রেখেছে কম বেশি সবাই। তবে এখানে গোবিন্দ লোকটি তাদের উপরে নজর রাখলেও তাদের বিপদ আছে বলে বাঁশির সুরের মাধ্যমে সংকেত দিতে থাকে। এখানে রুদ্র ভৈরব এর লোক হয়েও এদের কেন সতর্ক করছে বিপদ বলে সেটা জানার একটা কৌতূহল রয়েই গেছে। তবে বিক্রম বিষয়টা বুঝতে পেরে লোকটিকে ডাকতে যাচ্ছিলো এই বিষয়ে কথা বলার জন্য। কিন্তু লোকটি সেখান থেকে ততক্ষনে চলে যায়। তবে বিক্রম এখন যে দুটি চাকতি পেয়েছে সেইটা ছাড়াও আরো কিছু বাকি আছে যেগুলোর অনুসন্ধান করার পালা। এই দুটি চাকতি দিয়েও তারা তানসিনের তানপুরার মাধ্যমে একটা বিষয় বুঝেছে যে রাগ সঞ্জীবনী রুদ্রপুরের ভৈরব জলাশয়ের মধ্যেই কোথাও আছে।


ꕥব্যক্তিগত রেটিং:ꕥ
৮.৮/১০


ꕥট্রেইলার লিঙ্ক:ꕥ


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 last year 

আজকের ওয়েব সিরিজের পর্ব পড়ে ভাল লাগলো, তবে অন্যান্য পর্বের মত এই পর্বটাও অত রহস্যময় ছিল না। যাই হোক আজকের এই পর্বটি একদম খারাপ লাগেনি, অনেক ভালো লেগেছে বিশেষ করে তানসিনের তানপুরার লেখাগুলোর মাধ্যমে অনেকটায় অনুমান করতে পেরেছে, এটা নিয়ে অনেকটাই সামনে এগানো যাবে।আবার রুদ্রপুরের রুদ্র ভৈরব যে লোক আছে সে তার লোকজনগুলোকে চারিদিকে ছড়িয়ে দিয়েছো।কারণ মদন্তীর বংশধরদের খুঁজে বের করা জন্য। তবে রুদ্র ভৈরব এর লোক হয়েও কেন সতর্ক করছে। এটা জানার অপেক্ষা রইলাম।

 last year 

দাদা আগে প্রচুর বই কিনতাম আর পড়তাম,রেডিও শুনতাম শখ ছিল।মাঝে কিছু সময় সিরিয়াল ও দেখেছি। এখন কোনটাই আসলে দেখা হয় না। তাই এই সিরিয়ালে আমার কোন মন্তব্য আসলে থাকে না। তবে পোস্ট পড়ি।পোস্ট পড়লাম,আজকের পর্বে আপনি ১০ এ ৮.৮ দিলেন। অনেক ধন্যবাদ দাদা।

 last year 

দাদা আসলে বিক্রমকে আমার বরাবরই বেশ ভাল লাগে। আগে ওর কয়েকটি সিরিয়াল আমি দেখেছি। বেশ ভাল অভিনয় করে। তবে এবারের সিরিয়াল মনে হচেছ বেশ জটিল একটি সিরিয়াল। আসলে এখন আর সিরিয়াল দেখা হয় না তো। তবে আপনি আজকের পর্ব কে ১০ এ ৮ রের্টি দিয়েছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া সিরিয়ালটির একটি রিভিউ করার জন্য।

 last year 

গল্পটা বেশ গভীরে চলে যাচ্ছে। লোকগুলো যেভাবে ফলো করতে শুরু করেছে, সামনে হয়তো আরো বড় কোন বিপদ ঘটাবে। আর চাকতির ব্যাপারটা আমার দারুন লেগেছে। তবে বিক্রম বেশ চালাক চতুর মানুষ, তার হাত ধরেই হয়তো এই রহস্যের জট খুলতে পারে। বাঁশীর সুর সে ধরে ফেলেছে, বিশাল ব্যাপার।
দেখা যাক সামনে কি হয়।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀

 last year 

টিভি সিরিজের এবারের পর্বটি পড়ে ভালো লাগলো দাদা। তানসিনের তানপুরার লেখাগুলো থেকে অনেক কিছুই হয়তো বুঝতে পেরেছে তারা। শ্রুতির বাবার মুখে শুনা সেই পুরনো গল্পগুলোর মাধ্যমে হয়তো তারা অনেক কিছু জানতে পারছে এবং অনেক রহস্য সামনে চলে আসছে। গোবিন্দ লোকটি তাদের উপর নজর রাখল আবার তাদেরকেই সতর্ক করে যাচ্ছে ব্যাপারটি বেশ রহস্যজনক। মনে হচ্ছে আড়াল থেকে গোবিন্দ নামক লোকটি তাদেরকে সাহায্য করতে চাচ্ছে। কিন্তু কারো ভয়ে হয়তো সেটা করতে পারছে না। তাই সংকেত দিয়ে যাচ্ছে। রাগ সঞ্জীবনী রুদ্রপুরের ভৈরব জলাশয়ের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় কিনা এটাই ভাবার বিষয়। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

 last year 

আজকের পর্বে ওই বক্সটির মধ্যে চাকতি দুটা মিলানো ছাড়া তেমন কোন রহস্য উদঘাটন হয়নি। এই বক্সের মধ্যেই মনে হয় সঞ্জীবনীর রহস্য লুকিয়ে আছে। কিছুটা হলেও বিক্রম আইডিয়া করতে পেরেছে যে সঞ্জীবনীটা কোথায় আছে। তাছাড়া রুদ্র ভৈরবের লোকগুলো ওই সঞ্জীবনী পাওয়ার জন্য যেকোনো কিছুই করতে রাজি আছে বোঝাই যাচ্ছে। যেভাবে বিক্রমের পরিবারের উপরে লোকজন লাগিয়ে রেখেছে তাতে তো তাই মনে হচ্ছে। তাছাড়া গোবিন্দ রুদ্র ভৈরবের লোক হওয়ার পরেও তাদের কেন সাবধান করছে? লোকটি হয়তো ভালো। এই আনন্দপুরের হাবেলিতে মনে হয় এই সব রহস্য লুকিয়ে আছে। আশা করি পরবর্তী পর্বতে ধীরে ধীরে রহস্য গুলো বের হবে। ধন্যবাদ দাদা।

 last year 

দাদা আজকে চতুর্থ পর্ব দিয়ে তেমন কোন তথ্য পাওয়া না গেলেও কিছু ভয় দেখা যাচ্ছে। এদিকে রুদ্রপুরের রুদ্র ভৈরব লোকটি তার দল বল লাগিয়েছে মদন্তীর বংশধরদের খুঁজে যেটা তাদের জন্য ভয়। আবার গোবিন্দ লোকটি বাঁশির সুরের মাধ্যমে বিপদের সংকেত পাচ্ছে। সেটাও একটি রহস্য বা ভয় রয়েছে। তবে সামনের পর্বে কি বার্তা আসে সেটাই এখন দেখার বিষয়। ধন্যবাদ দাদা।

 last year 

এখানে মনে হচ্ছে গোবিন্দ লোকটি বেশ ভালো তাই বিপদের আগেই সতর্ক বার্তা দিচ্ছে বাঁশির সুরে।আসলে সবই রহস্য মনে হচ্ছে।দুটি চাকতি আবার কোথা থেকে এলো!রাগ সঞ্জীবনী রুদ্রপুরের ভৈরব জলাশয়ের মধ্যে দেখা যাক খুঁজে পায় কিনা।সুন্দর রিভিউ দিয়েছেন, ধন্যবাদ দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.31
TRX 0.11
JST 0.033
BTC 64550.89
ETH 3156.32
USDT 1.00
SBD 4.30