ফুলকপির সুস্বাদু রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি ফুলকপির তরকারি রান্না করেছি। এখন শীতকালে ফুলকপির তরকারি দারুন স্বাদ লাগে। এখন এই সিজনে ফুলকপি দিয়ে যেকোনো কিছু করে খেতে অনেক ভালো লাগে আর ইচ্ছাও করে। আমিও ফুলকপি দিয়ে কিছুদিনের মধ্যে পকোড়া করবো চিন্তা করেছি। এখন এইসব পকোড়ার কথা বললেই যেন জিভে জল চলে আসে, আর আমি আগেও বলেছিলাম আমার বরাবরই ভাজাভুজির দিকে একটু ঝোঁক বেশি। অনেকদিন বাদে গতকাল সন্ধ্যার দিকে কিছু চপ-পকোড়া কিনলাম তার দাম দেখে চোখ চড়ক গাছে, যে চপ একসময় লাস্ট ৪ টাকা করে কিনে খেয়েছি এখন তার দাম ৮-১৪ টাকায় গিয়ে পৌঁছিয়েছে। আর আমার আবার একটু বেশি লাগে কিনতে গেলে, কারণ একটা কি দুটো খেয়ে আমার আবার পোষায় না হা হা। এইসব এখন আসলে বাড়িতে একটু কষ্ট করে তৈরি করে খেতে পারলে আর সমস্যা থাকে না, আরামসে খাওয়া যায়। যাইহোক এখন এই ফুলকপির তরকারিটা আমি চিংড়ির সাথে রান্না করেছিলাম। আজকে এই তরকারির সাথে সাথে চিংড়ির শেষানি টেনে দিয়েছি। ভাজা, তরকারি আর গলা, এই তিনপ্রকার দিয়ে আজকে বাড়িতে ফ্রিজের চিংড়ির আড়ত ফাঁকা করে দিয়েছি হা হা। তবে যাইহোক তরকারিটা বেশ মজার হয়েছিল খেতে, আস্ত আস্ত ফুলকপির পিচ শুধু খেতেও দারুন লাগে, যেটা আমি অনেকসময় ভাত দিয়ে না খেয়ে শুধু খেয়ে থাকি। এখন আমি সরাসরি রেসিপিটার মূল পর্বের দিকে চলে যাবো।


☀প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☀

❦উপকরণ
পরিমাণ❦
চিংড়ি
১৫০ গ্রাম
গোটা ফুলকপি
১ টি
গোল আলু
৪ টি
পেঁয়াজ
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
১৪ টি
শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো
১ চামচ
গোটা জিরা
পরিমাণমতো
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৪ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১ চামচ


গোটা ফুলকপি, গোল আলু, পেঁয়াজ, কাঁচা লঙ্কা


লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো, সরিষার তেল


❣এখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


✠প্রস্তুত প্রণালী:✠


➤চিংড়িগুলোকে প্রথমে একবার ধুয়ে নিয়ে রেখেছিলাম। এরপর ফুলকপিটির পিচগুলো কেটে নিয়েছিলাম এবং জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

➤আলুগুলোর খোসা ছালিয়ে নিয়েছিলাম এবং কেটে ছোট ছোট পিচ করে নেওয়ার পরে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম।

➤পেঁয়াজ এর খোসা ছাড়িয়ে নেওয়ার পরে কেটে নিয়েছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলোও সব কেটে নিয়েছিলাম।

➤চিংড়িগুলোতে ১ চামচ করে লবন আর হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং গায়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।

➤একটি প্যানে অল্প সরিষার তেল দিয়ে লবন-হলুদ মাখানো চিংড়িগুলো সব দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালোভাবে ভাজা মতো করে নিয়েছিলাম।

➤একটি কড়াইতে জল দিয়ে তাতে কেটে রাখা ফুলকপির পিচগুলো সব দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর খানিক্ষন জ্বাল দিয়ে ফুলকপির পিচগুলো একটু সিদ্ধ মতো করে নিয়েছিলাম এবং পরে নামিয়ে নিয়ে জল ফেলে দিয়েছিলাম।

➤হাফ বয়েল করা ফুলকপিগুলো নামানোর পরে ভালো করে ভাজা মতো করে নিয়েছিলাম। এরপর কড়াইতে আরেকটু তেল দিয়ে আলুগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং লাল মতো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤কড়াইতে আরেকটু সরিষার তেল দিয়ে তাতে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর জিরাটা হালকা ভাজা হয়ে আসলে তাতে ফুলকপির ভাজা পিচগুলো সব দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤ফুলকপি দেওয়ার পরে তাতে কেটে রাখা পেঁয়াজ ধুয়ে দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে লাল করে ভেজে রাখা আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤আলু দেওয়ার পরে তাতে ভেজে রাখা চিংড়িগুলো তুলে দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে চামচখানিক শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং কেটে রাখা লঙ্কাগুলো একটু ধুয়ে নিয়ে দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤লঙ্কা দেওয়ার পরে তাতে স্বাদ মতো লবন আর হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব মশলা উপাদানগুলোর সাথে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

➤মিক্স করার পরে তাতে পরিমাণমতো জল ঢেলে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা ফুল আঁচে দিয়ে বেশ খানিক সময় ফুটিয়ে নিয়েছিলাম সব ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে আসার জন্য।

➤তরকারির থেকে সিদ্ধ কিছু আলুর পিচ তুলে নিয়েছিলাম। এরপর আলুগুলো ভালোভাবে গলিয়ে নিয়ে আঠালো মতো করে নিয়েছিলাম।

➤আলুর গলানো অংশটা পুনরায় আবার তরকারিতে দিয়ে দিয়েছিলাম এবং জ্বালটা মিডিয়ামে রেখেছিলাম। এরপর তরকারিটা পুরোপুরি হয়ে আসার জন্য আরো অল্প কিছু সময় দেরি করেছিলাম।

➤তরকারির ঝোলটা একটু কমে আসলে আর তরকারিটা গাঢ় হয়ে আসলে আমি জ্বাল নিভিয়ে দিয়েছিলাম এবং তাতে ১ চামচ জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম পরিবেশন করার জন্য।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

ফুলকপি দিয়ে চিংড়ি মাছের মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন দাদা। এই রেসিপি দেখে সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আসলে শীতের সবজি ফুলকপি আর এই ফুলকপি দিয়ে নানা রকমের রেসিপি তৈরি করা যায়। বিশেষ করে ফুলকপি চিংড়ি মাছের রেসিপি আমার কাছে অনেক মজাদার মনে হচ্ছে। আর আপনি চপ পকোড়ার কথা বললেন, আসলে আপনার দুই একটা দিয়ে হয় না, আপনার আবার বেশি লাগে কারণ আপনি ভাজি পুরি বেশি পছন্দ করেন।এই চপ পকোড়া আগে দাম ছিল চার টাকা এখন সেটার দাম বেড়ে হয়েছে ৮ থেকে ১৪ টাকা দাম যেন দ্বিগুণেরও বেশি। আসলে সব জিনিসের দাম যে হারে বাড়ছে এটা সত্যি রহস্যজনক। প্রতিটা জিনিসের দাম ঊর্ধ্বমুখী। দাদা আপনার ভাজি পছন্দ শুনে আমার খুবই ভাল লাগল, কারণ ভাজি আমিও খেতে খুবই পছন্দ করি। আর এই ফুলকপি এবং পাতাকপি দিয়ে শীতকালে নানা রকমের রেসিপি তৈরি করা যাবে। আপনার আজকের রেসিপি আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

এখন এইসব পকোড়ার কথা বললেই যেন জিভে জল চলে আসে,

পকোড়ার কথা মনে হলে আমারও জিভে জল চলে আসে দাদা। আমারও মন চাইছে ফুলকপির পাকোড়া তৈরি করে খেতে। শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি আমার খুবই প্রিয়। কিছুদিন আগে আমিও চিংড়ি মাছ দিয়ে ফুলকপির রেসিপি তৈরি করেছিলাম। চিংড়ির খনির সন্ধান আমারও করতে হবে দাদা। চিংড়ি মাছ দিয়ে ফুলকপি আর আলুর রেসিপি দারুন হয়েছে। ফুলকপি চিংড়ির মধ্যে বেশ ভাব রয়েছে। খেতেও বেশ ভালো লাগে। ধন্যবাদ দাদা মজার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago (edited)

শীতকালে ভাজাভুজা খেতে ভালোই লাগে ।কিন্তু বাইরের ভাজা না খেয়ে বাসায় বানিয়ে খাওয়াই অনেক ভালো। কারণ বাইরের খাবারের কোন ভরসা নেই। মনে হয় আবারো চিংড়ি কেনার সময় হয়েছে। এজন্য ফ্রিজেরগুলো শেষ করে দিলেন একবারে তিন রকম রান্না করে। দাদা এভাবে চিংড়ি ভেজে ছবি দিয়েন না তো। মুখে পানি আটকানো যায় না। ফুলকপি দিয়ে যেকোনো মাছ রান্না করলে খুব ভালো লাগে খেতে। চিংড়ি তো আবার যেকোনো কিছুর সঙ্গে খুব সুন্দর মানিয়ে যায়। ফুলকপির আর চিংড়ির যুগলবন্দি খুব ভালো হয়েছে। রেসিপির কালার বরাবরের মতোই লোভনীয় লাগছে দেখতে। আমার তো মন চাচ্ছে দুই এক পিস চিংড়ি উঠিয়ে খেয়ে ফেলি।
দাদা আপনার এই মরিচে ঝাল নেই নাকি আপনি ঝাল বেশি খান? ১৪ টা মরিচ একসঙ্গে দিয়েছেন।

 2 years ago 

বাজারে দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সবকিছুর দাম বেড়েই চলেছে। আর এজন্যই ৪ টাকার চপগুলো এখন ৮ টাকা অথবা ১৪ টাকায় কিনে খেতে হচ্ছে। যদিওবা বাসায় তৈরি করলে আরামচে খাওয়া যায়, কিন্তু সবসময়তো আর সেই সুযোগ থাকে না। দাদা, আপনার তৈরি ফুলকপির সুস্বাদু রেসিপি দেখেই তো জিভে জল চলে আসছে। মনে হচ্ছে গরম গরম ভাতের সাথে এই রেসিপি খেতে দুর্দান্ত লাগবে। চিংড়ি মাছের সমন্বয়ে, ফুলকপি ও আলু তেলে ভেজে রান্না করলে, রান্নার স্বাদ অনেকটাই বেড়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। ফুলকপির সুস্বাদু রেসিপি তৈরির প্রতিটি ধাপ অত্যন্ত সুন্দরভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন, যা দেখে খুব সহজেই আমরা তৈরি করতে পারব। অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা, এত মজার একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 
দাদার রান্নার আর ভোজনের তারিফ না পরে পারলাম না। যার কারনে বাড়ির ফ্রিজের আড়ত ফাঁকা করে ফেলেছেন।হা হা হা।আর হবেই না কেন। এত সুস্বাদু ও মজাদার করে রান্না করলে কি আড়ত ভরা থাকবে।দাদা রান্না মানে স্বাস্থ্য সম্মত রেসিপি।আর যেহেতু শীতের মৌসুম সেক্ষেত্রে ফুলকপি দিয়ে চিংড়ি মাছের রেসিপিটি খুবই দারুণ লাগছে এবং আর স্বাদের কথা তো দাদা নিজেই আড়ত খালি করে বুঝিয়ে দিলেন। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা,এত সুস্বাদু ও মজাদার ফুলকপি দিয়ে চিংড়ি মাছের রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল দাদা।
 2 years ago 

বাজারে এখন সব কিছুরই অনেক দাম বেড়েছে। শীতকালে সব সবজির মধ্যে ফুলকপি খুব ভালো। ফুলকপি দিয়ে যেকোন কিছু রান্না করতে খুব ভালো লাগে। চিংড়ি মাছ, আলু দিয়ে চমৎকার একটা রেসিপি তৈরি করেছেন। এভাবে কখনও খাওয়া হয়নি। আপনার থেকে নতুন রেসিপি শিখতে পারলাম।আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল দাদা।

 2 years ago 

ফুলকপির পাকোড়া আমি খেয়েছি খেতে ভীষণ মজা লাগে। ফুলকপির সুস্বাদু রেসিপি দেখে তো লোভ সামলাতে পারলাম না খেতে ইচ্ছা। শীতকাল ফুলকপি খেতে ভীষণ সুস্বাদু লাগে। আপনার রেসিপি দেখে অনেক ভালো লাগলো। অনেক সুন্দর করে রেসিপি পোস্ট সাজিয়েছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে দাদা।

 2 years ago 

দাদা ফুলকপি আমার খুব পছন্দের একটি খাবার। আমিও আপনার মত আস্ত ফুল কপির টুকরা গুলো শুধু খেতে অনেক ভাল লাগে। শীত কালিন সবজি ফুলকপি সবাই পছন্দ করে। দাদা আপনাকে দেখলাম ফুলকপি সিদ্ধ করলেন। আমাদের দিকে এটা সিদ্ধ না করে এমনি রান্না করা হয়। আর আজকের আপনার চিংড়ি মাছ গুলো অনেক লাল হয়েছে। চিংড়ি মাছ ভাজলে লাল হয় কেন, এই প্রশ্নের উত্তর টা আজও পেলাম না। ধন্যবাদ দাদা।

বিগত দুই দিন ধরে শোল মাছ দিয়ে আমার বাড়ি ফুলকপির তরকারি হচ্ছে। আর সহ্য করা যাচ্ছে না এই ফুলকপির যন্ত্রণা। 😭 তবে আমার কাছে কিন্তু ফুলকপির পাতলা ঝোল খুব ভালো লাগে খেতে। তবে এতগুলো চিংড়ি মাছ দিয়ে তরকারি রান্না করেছো, তার মানে খেতে অবশ্যই খুব সুস্বাদু হয়েছে। আর একটা কথা, ফুলকপির বড়া এবং যাবতীয় ভাজি ভূজি শীতকালে আমারও খুব ভালো লাগে খেতে। একটা দুটো খেলে আমার মন ভরে না, তাই বাড়িতেই ভেজে খাই।😁😁

 2 years ago 

ফুলকপির পাকোড়া আমার কখনো খাওয়া হয়নি। সুযোগ পেলে একদিন ট্রাই করে দেখবো। শীতকালে ফুলকপি খেতে আসলে অনেক ভালো লাগে। আমাদের এইখানেও আগে সিঙ্গারা দাম ছিল ৫ টাকা এখন যেটা হয়ে গেছে ১০ টাকা। যাইহোক আপনি ফুলকপি দিয়ে দারুন একটি রেসিপি তৈরি করেছেন। প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করে দেখিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে এই সুন্দর রেসিপিটা শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60704.11
ETH 2452.38
USDT 1.00
SBD 2.62