কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমি আপনাদের দোয়ায় মোটামুটি অনেক ভালো আছি। সকলকে শুভকামনা জানিয়ে শুরু করছি নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি আমাদের পুকুরপাড়ের শিম গাছ এর সুন্দর সুন্দর ফুলের ফটোগ্রাফি ও পেছনের বর্ণনা নিয়ে। আশা করি আপনাদের খুবই ভালো লাগবে ফুলের ফটোগ্রাফি সহ বিস্তারিত ঘটনা।
শীতকালে আমাদের দেশে অনেক প্রকার সবজি পাওয়া যায়। শীতের সবজি গুলোর মধ্যে শিম আমার খুবই প্রিয়। কারণ এই সবজিটা রান্না করে ভাজি করে বিভিন্ন ভাবে খাওয়া সম্ভব। তাই আমি ছোট থেকে দেখে আসছি আমাদের বাড়িতে ছাদের পাশেই আমার আম্মা ছোট্ট করে শিমের বান দিত। যখন প্রয়োজন তখন সেখান থেকে এই সবজি তুলে রান্না করা হতো তাই টাটকা টাটকা খাওয়া সম্ভব হয়। মাঝেমধ্যে নির্দিষ্ট একটি সাইডের শিম গুলো আটি খাওয়ার জন্য রাখা হতো কারণ এতে অনেক আমিষ থাকে তাই আমিও বেশ পছন্দ করি। তবে এখন আর মায়ের বাসার শিম গাছের আশা করা যায় না বললেই চলে। মেয়ে মানুষের জীবন বলে কথা। শ্বশুরবাড়িতে আসার পরে একটি শিম গাছে জায়গায় মনে হয় পাঁচটি পেয়ে গেছি।
আমাদের এখানে পুকুরপাড় গুলোতে বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করে থাকে তার মধ্যে শিম অন্যতম। একদিন আমার হাজব্যান্ড আমাকে প্রশ্ন করছে শীতকালের কোন সবজি তোমার সবচেয়ে বেশি প্রিয়। আমিতো জানতাম না কোনটা বললে সে খুশি হবে। শীতকালে তো অনেক সবজি হয়ে থাকে। আমি আমার ভালো লাগার সবজিগুলোর নাম বলে দিলাম। তবে সে হঠাৎ বলল শিম ভালো লাগে না? আমি তখন বললাম শিমের বিচি আমার খুবই প্রিয়। সে বলল তাহলে এবার তো পুকুরপাড়ে তোমার জন্য বেশি করে শিম গাছ লাগাব আমি। কারণ আমি এমনিতেই অনেক শিম গাছ লাগিয়ে থাকি। কথাটা শোনার পর আমার বেশ খুশি খুশি লাগলো। কারণ অনেকেই বলে মায়ের বাড়িতে ইচ্ছেমতো খাওয়া যায় শ্বশুরবাড়িতে পাওয়া যায় না। তাইতো মনে করেছিলাম হয়তো গতবারের মতো শিমের আঁটি বা বিচি খেতে পারব না। আমি খুশিতে আমার মায়ের কাছ থেকে শিমের বীজ সংরক্ষণ করে তাকে দিয়েছিলাম। সে অবশ্য বলেছিল বামুন্দি বাজার থেকে বিজানব কিন্তু আমার আম্মার কাছে থাকাই তাকে আর বামুন্দি বাজার থেকে আনতে দেয়নি আমি।
প্রথমবার বীজ এনে দেওয়ার পর সে লাগিয়ে বেশি গাছ হলো না। এ সময় প্রচন্ড গরম পড়তো,কোনো কারণে গাছগুলো নষ্ট হয়ে গেছিল প্রায়। এরপর আবারও কিছু শিমের বীজ আম্মার কাছ থেকে এনে দিলাম। যাইহোক দুইবারের বীজ থেকে গাছ হয়ে গেছে পুকুর পাড়ে। কিছুদিন আগে আমি তোর সাথে পুকুরপাড়ে ঘুরতে গেলাম। দেখলাম চার পাঁচ জায়গায় এত সুন্দর শিমের গাছ হয়েছে,দেখে যেন মন ভরে গেল। তবে এবার আমার আম্মার বাসায় সিম গাছ হয়নি। বেশ কিছু গাছ হয়েছিল তবে সেগুলো মারা গেছে। তাই বলতে পারেন এবার আমার আম্মার শিমের বান খালি। সে যখন আমার আম্মার বাসায় গেছিল, বানের খালি অবস্থা দেখে আশ্বাস দিয়ে বলছিল আম্মার কাছে, চিন্তা কইরেন না। আমার অনেক গাছ হয়ে গেছে পুকুর পাড়ে সেখান থেকে তুলে এনে দেব। কথাটা শুনা মাত্র আমার আম্মা অনেক খুশি হল। আম্মা বললেন জামাইরা কখনো এভাবে কোন কিছু জিনিস তৈরি করে দিতে চায় না বা করেও না কিন্তু আমার জামাই যাই হোক মোটামুটি অনেক ভালো। তখন আম্মা মন ভরে দোয়া করে দিলেন।
পুকুরপাড় ঘুরতে আসলাম। আগে থেকেই গাছে শিমের ফুল এসেছে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার। আপনারা যদি দোয়া করেন আর যদি ভাগ্যে থাকে আশা করব এই গাছগুলোতে অনেক শিম হবে। শিম ভাজি আমার অতি প্রিয়। একটু বিচি হলেই তা ভাজি করে রুটির সাথে খেতে দারুন লাগে। যাই হোক চেষ্টা করলাম প্রত্যেকটা বান থেকে ফটোগ্রাফি করার। আশা করি শিমের ফুল গুলো আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। আর ফটোগ্রাফি গুলো সাথে শিম গাছের পেছনের ঘটনাটা ভালোভাবে জানতে পারলেন। পরবর্তীতে যদি আবার পুকুরে যায় আবারও তুলে ধরবো আমাদের এই শিম গাছের দৃশ্য।