একটি খারাপ সংবাদ

হাটতে বের হলাম,কিছু দূর যাওয়ার পরই শুনতে পেলাম এক বন্ধু পেছনে থেকে ডাকছে।ওকে দেখে থামলাম। ও দৌড়ে এসে হাপাতে হাপাতে বলল,"ভাই একটা খারাপ সংবাদ আছে।ঋত্বিক এর বাবা একটু আগেই মারা গেছে।"
সংবাদ টি শুনে আমি একদম পাথর হয়ে গেলাম।

ঋত্বিক আমার দূর সম্পর্কের ভাগিনা হয়।তবে আমরা প্রায় সমবয়েসী।তাই মামা ভাগিনার সম্পর্কের থেকে বন্ধুর সম্পর্ক টাই বেশি অগ্রাধিকার পায়।আবার আমার সাথে থাকলে দিদিও নিশ্চিন্ত থাকে যে আর যাই হোক কোন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়বে না।

কিন্তু কয়েকদিন যাবৎ আমার পরীক্ষা চলছে তাই বের হতে পারি নি,কারো কোন খোজ খবর ও রাখতে পারি নি।তাই হঠাৎ এই সংবাদ টি শুনে একদম পাথর হয়ে গিয়েছিলাম।

জামাইবাবু ছিলেন অত্যন্ত হাসিখুশি একজন মানুষ।যত ঝড়ঝাপটা যত কিছুই আসুক না কেন।উনাকে কখনো চিন্তিত হতে দেখি নি।ঠোটের কোনে সব সময় একটা হাসি ঝুলিয়ে রাখতেন।আর সেই মানুষটাই কিনা হার্ট অ্যাটাকে মারা গেল।মানুষ না বলে হাসলে হার্ট ভাল থাকে।তাইলে উনি কিভাবে হার্টের অসুখে মারা গেলেন।ছোট মানুষের মত এসব তর্ক করছিলাম নিজের মনের সাথেই।

যাই হোক বন্ধুর ডাকে আবার বাস্তব জগৎ এ ফিরে আসলাম।তারপর ওর থেকে সৎকার এর সময় জেনে নিয়ে বাসায় এসে সবাই কে শোক সংবাদ জানালাম।

আমি জানি মৃত্যু অনেক স্বাভাবিক একটি বিষয়।সবাইকেই একদিন মারা যেতেই হবে।কিন্তু সব সময় সব মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।এইত পরীক্ষার আগের দিনই উনার দোকানের সামনে দিয়ে আসছিলাম।নমষ্কার দিতেই উনি দোকানে ডেকে নিয়ে বসালেন। তারপর চা না খেয়ে আসতেই দিলেন না।কত কথা,কত প্ল্যান বললেন।ভাগিনা কে নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বললেন।

এখন আজ থেকে এই মানুষ টি থাকবে না।তার পরিকল্পনা গুলো বাস্তবায়িত হবে না।তার সাথে আর দেখা হবে না।কথা হবে না।তাকে নির্জন একটি স্থানে একা রেখে আসব।এই বিষয়টা আমি মানতেই পারি না।আশা করি সৃষ্টিকর্তা তাকে স্বর্গবাসী করবেন।সেজন্য কাল থেকে মন খারাপ অনেক। মন খারাপ নাকি শেয়ার করলে কমে তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। সবাই তার জন্য প্রার্থনা করবেন।