অল কোয়াইট অন দ্যা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট||মুভি রিভিউ
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সকলেই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব একটি মুভি রিভিউ।
যে মুভির রিভিউ আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেটি বিখ্যাত লেখক এরিখ মারিয়া রেমার্ক এর বিখ্যাত উপন্যাস অল কোয়াইট অন দ্যা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট এর উপরে ভিত্তি করে নির্মিত।আমার অনেক প্রিয় একটি উপন্যাস।আমি আগে এই উপন্যাসের উপর রিভিউ দিয়েছি।আজ সেকথা থাক।আজ এই উপন্যাসের উপরে নির্মিত মুভি নিয়েই কথা বলি।
সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
মুভির নাম | অল কোয়াইট অন দ্যা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট |
---|---|
জনরা | যুদ্ধ,মনস্তত্ত্ব |
পরিচালক | এডওয়ার্ড বার্গার |
ভাষা | জার্মান,ইংরেজী,হিন্দি,ফ্রান্স |
অভিনয়ে | ফেলিক্স ক্যামেরার,ড্যানিয়েল ব্রুল,অ্যারন হিলমার |
মুক্তির তারিখ | অক্টোবরে ২৮,২০২২ |
পার্সোনাল রেটিং | ৭/১০ |
মুভির প্লটঃ
আমি মুভি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেব।এতে হালকা স্পয়লার চলে আসতে পারে।
মুভিটি নির্মিত হয়েছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের গল্প নিয়ে।
পল বেমার একজন জার্মান সৈনিক।তারই কথকতাতেই এগিয়ে এগিয়েছে গল্প।যুদ্ধ মানেই আমাদের কাছে বেশ রোমান্টিক একটি বিষয়।বন্দুক নিয়ে ঘুরে বেড়নো,শত্রুকে খতম করা,বীরত্ব দেখানো,মেডেল অর্জন।
স্ক্রিনশট ফ্রম মিডিয়া প্লেয়ার
পল বেমার মুভির শুরুতেই ছিল একজন হাইস্কুলের ছাত্র।শিক্ষকদের মোটিভেশনে স্কুলের বাকি সব ছাত্রদের মতই সে যোগ দেয় যুদ্ধে।যোগ দেওয়ার আগে তাদের চোখে রঙিন স্বপ্ন।কিন্তু যেদিন প্রথম তারা যুদ্ধক্ষেত্রে যায় সেদিন তারা বুঝতে পারে যে তারা যে স্বপ্ন দেখেছিল তা কতটা ভুল ছিল।
প্রথমেই তারা ফ্রন্টে যায়। ফ্রন্ট হল সেই জায়গা, যেখানে দুই বিপরীতপক্ষ পরস্পরের সাথে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেয়।সৈনিকরা ট্রেঞ্চেই খায়,ট্রেঞ্চেই ঘুমায়।সেখানে থেকেই আক্রমণ প্রতি আক্রমণ চালায়। পল যখন প্রথম ট্রেঞ্চে প্রবেশ করে তখন সে হতবাক হয়ে পড়ে।চারদিকে মৃতদেহের ছড়াছড়ি, কাদা আর পানিতে একাকার।তাদের দেখা সেই রঙিন স্বপ্নের বেলন যেন হঠাৎ করেই চুপসে যায়।তারা ট্রেঞ্চে প্রবেশ করার সাথে সাথেই তাদের পানি সেচার কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়।
এখানেই পলের সাথে পরিচয় হয় কাটজেনেস্কি ওরফে কাটের।কাট একজন পোর খাওয়া সৈনিক।সে পল এর মত নতুন সৈনিকদের শেখাতে থাকে কিভাবে যুদ্ধের ময়দানে টিকে থাকা যায়।এভাবেই পলের সাথে তার বন্ধুত্ব গভীর হয় এবং আস্তে আস্তে তাদের দল ভারি হতে থাকে।মুভিটি এই কয়জন কে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়।বাড়ি থেকে মাসের পর মাস দূরে থাকার সময় তারা একে অপরকে আপনা করে নেয়।একজন আরেকজনের সুখে হাসে,অপরের দুঃখে কাদে।যুদ্ধের মত কঠিন জায়গাতেও একে অপরের কথা ভুলে যায়না।চরম খাদ্যাভাবের মাঝেও তারা খাবার ভাগাভাগি করে খায়।
এই দলে তালার মিস্ত্রি,কৃষক,ছাত্র সহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ রয়েছে।যারা যুদ্ধের কারনে আজ লড়াই করছে একসাথে।এদের সুখ,দুঃখ,চিন্তার মাধ্যমেই লেখক যুদ্ধ সম্পর্কে তার মনোভাব তুলে ধরেছেন।তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে যুদ্ধ মানব জাতির জন্য বিশাল এক অভিশাপ,কিভাবে যুদ্ধ একটি জাতির অর্থনীতী ধ্বংস করে।যুদ্ধের ফলে কয়েক প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যায়।
ব্যক্তিগত মতামত
মুভিটি অনেক সুন্দর।ডিরেক্টর সুন্দর ভাবে যুদ্ধের ভয়াবহতা ফুটিয়ে তুলেছেন।প্রত্যেকটি অভিনেতা তাদের চরিত্রের প্রতি সুবিচার করেছেন।প্রত্যেকের অভিনয় ছিল ন্যাচারাল।ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দৃশ্যপট অনুযায়ী একদম পারফেক্ট ফিট।গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাবে।তবে আপনি যদি উপন্যাস পড়ে থাকেন, তাইলে আপনার কাছে মুভিটি একটু স্লো মনে হবে।আর মনে হবে কি যেন বাদ গেছে।আর এটা মেনে নিতেই হবে কারন পুরো উপন্যাস মুভিটির মাঝে তুলে আনতে গেলে সেটাকে ২ঘন্টায় শেষ করা সম্ভব হবেনা।
যদি আপনার যুদ্ধের মুভি ভাল লাগে,আর যুদ্ধের ভয়াবহতা জানার ইচ্ছা থাকে তাইলে দেখে ফেলতে পারেন দারুন এই মুভিটি।
ট্রেইলার লিংক
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
মুভিটি যদিও দেখিনি তবে আপনার রিভিউ পড়ে কৌতুহল জেগে উঠলো দেখার জন্য।
ইউটিউবে সার্চ দিয়ে দেখলাম আছে।ইনশাল্লাহ দেখবো সময় করে।সুন্দর রিভিউ ছিল।শুভ কামনা রইলো।
ইউটিউবে পুরোনো গুলো আছে ভাইয়া। একটু স্লো মনে হতে পারে। ধৈর্য ধরে দেখলে ভাল লাগবে।ধন্যবাদ গঠণমূলক মন্তব্যের জন্য।
আপনি খুব সুন্দর মুভি রিভিউ করেছেন। দেখে খুব ভালো লাগলো। মুভিটি আমি দেখি নি তবে আপনার পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো। দেখতে খুব ইচ্ছে করতেছে। আগে এ ধরনের ইংলিশ মুভি প্রায় সময় দেখতাম। তবে এখন ব্যস্ততার কারণে মুভি দেখার হয় না এত সুন্দর মুভি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
সময় পেলে দেখে নিয়েন ভাইয়া। আশা করি ভাল লাগবে।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
যদি আমি ইংলিশ ছবি দেখি না তবু আপনার ভিডিও দেখে ছবি দেখার খুব ইচ্ছা থাকলো। দেখি সুযোগ পেলে একবার দেখে নিব।
দেখেন ভাল লাগবে আশা করি। মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ আপু।
মানে আমি বুঝলাম না রে ভাই, আমি যে ওয়েব সিরিজ বা মুভিটাই দেখবো বলে সিদ্ধান্ত নেই আপনি সেটাই সবসময় রিভিউ করেন কেন। 🤣🤣 আপনার পোস্ট তো পড়তেই পরি না। শুধু কমেন্ট করতে হয় যে, দুঃখিত পোস্ট পড়তে পারলাম না কারণ এই ওয়েব সিরিজটা বা এই মুভিটা এখন আমি দেখছি। বিশ্বাস করেন আমি সত্যিই এই মুভিটা দেখবো জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শুধু সময় হচ্ছে না জন্য দেখতে পারছি না।😁😁😁
দাদা কোন স্পয়লার দেইনি৷ পড়তে পারেন।আর আপনার আমার মাইন্ডসেট সেম তাই হয়ত এরকম হয়।
এবারের লেখাটা পড়ে বুঝলাম যে এবার তুমি বিশেষ স্পয়েলার দাও নি। যেটুকু বলেছো সেটুকু প্রেক্ষাপট না লিখলে কোন ভাবেই রিভিউ করা যাবে না। পলের যুদ্ধ নইয়ে রোমান্সিজম এবং তারপর কাটজেনেস্কির সাথে সাক্ষাৎ সবটাই বেশ আলাদা। দেখব ভাবছি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঘটনা নিয়ে তৈরী এই সিরিজ।