স্ট্রিট ফুড মার্কেট||বগুড়া স্ট্রিট ফুড
পরীক্ষার কারনে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে সেই ৩০ কিলোমিটার পথ ঠেঙিয়ে কলেজে আসতে হয়।ফলে খাওয়ায়াদাওয়া করার খুব একটা সুযোগ পাওয়া যায় না।
আবার কলেজে আসতে না আসতেই পরীক্ষার সময় হয়ে যায়,ফলে ক্যান্টিনেও কিছু খাওয়ার জো নেই।তাই অপেক্ষা করতে হয় পরীক্ষা শেষের জন্য।যা আমার মত পেটুক মানুষের জন্য নিতান্ত্য কষ্টকর।তাও যদি পরীক্ষার প্রশ্ন কমন আসে তবে লেখার তালে ক্ষুধা টাও ভুলে থাকা যায়,কিন্তু যদি কোন কারনে প্রশ্ন কমন না পরে তবে একে তো লিখতে না পারার লজ্জা তার উপর ক্ষুধার জ্বালা।মনে হয় একদম নরকে বসে আছি।
আজ আমার সাথে একদম সেম ঘটনা ঘটেছে।কাল সারা রাত কষ্ট করে যেগুলো পড়েছিলাম আজ সেগুলোর একটাও আসে নি।প্রশ্ন দেখে মনে হচ্ছিল ভীনগ্রহের ভাষায় লেখা কোন গুপ্ত সংকেত।আর সেই সংকেত উদ্ধার করা আমার কম্ম নয়।বন্ধুর থেকে সাহায্য নেওয়ার জন্য তাকালাম,সেও দেখি আমার থেকেও বেশি করুন মুখ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।এভাবেই পরীক্ষা হলের সুন্দর দৃশ্য যখন মনভরে উপভোগ করছিলাম তখন স্যার আমাদের প্রতি সদয় হলেন।উনি বুঝতে পেরেছিলেন আমাদের দ্বারা সম্ভব নয়, আবার লজ্জায় বের ও হতে পারছি না।তাই তিনি দয়া করে আমাদের খাতা নিয়ে আমাদের আরো লজ্জা পাওয়ার হাত থেকে বাচালেন।
আমরাও হাফ ছেড়ে বাচলাম।এতক্ষণ লজ্জায় ক্ষুধা কিছুটা ভুলে গেলেও বের হবার সাথে সাথেই ক্ষুধা টি বেশ চাগিয়ে উঠল।আমি বন্ধুদের বললাম পরীক্ষায় তো রসগোল্লা পাব তা না হয় পেলাম কিন্তু ও দিয়ে তো পেট ভরবে না।তার থেকে চল কোথাও বসে একটু খাওয়াদাওয়া করে নেওয়া যাক।
যেই কথা সেই কাজ,সবাই মিলে চলে গেলাম সাত মাথার স্ট্রিটফুড মার্কেট এ।মার্কেট বলতে যা বোঝায় এটা তা নয়।রাস্তার ২পাশে অস্থায়ী দোকানে খাবার বিক্রি করা হয়।
এখন মার্কেট টির ঠিকানা এবং এর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে নেওয়া যাক।বগুড়া শহরের হৃদপিন্ড বলা যায় সাতমাথা কে।সাতমাথার পাশেই পোষ্ট অফিস। পোষ্ট অফিসের পেছনেই আমাদের এই বিখ্যাত স্ট্রিট ফুডের মার্কেট।
এখানকার গ্রাহক রা সবাই হয় আমার মত বেকার ছাত্র অথবা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সাধারণ মানুষ।তবে এখানে কিন্তু বেশ খাবারের ভ্যারিয়েশন পাবেন।বিরিয়ানি,রুটি,ডিমভাত থেকে শুরু করে ডালপুরি পেয়াজু,আলুচপ,সিঙারা।প্রত্যেকটি খাবারের দাম একদম নাগালের মধ্যে।যদিও সম্প্রতি ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর ফলে ৫টাকার সিঙারা ১০টা আর পুড়ির দাম ৫টাকা থেকে ১০টাকা করা হয়েছে এছাড়া বাদ বাকি প্রায় সব কিছুর দাম একই আছে।
যাই হোক আমি,নূর,মীর আর জিয়াউর গিয়ে বসে পড়লাম একটি দোকানে।কিন্তু আমরা একটু বেশিই সকাল বেলা চলে এসেছিলাম।কারন খাবারের দোকান গুলো মাত্র খুলছে।এই খাবার এর দোকান গুলোর প্রধান টার্গেট হল দুপুরের ক্ষুধার্ত স্বল্প আয়ের মানুষ।তাই দোকানে শুধুমাত্র পুরি সিঙারা ছিল।ততক্ষণে পেটে ছুচোয় ডন মারছিল। সেই পুরি আর সিঙারা দিয়েই নাস্তা সারলাম।নাস্তা সারতে সারতে কেন এত কঠিন প্রশ্ন করা উচিৎ নয়,ক্লাস টেস্ট নিয়ে কি লাভ স্যার দের এসব বিষয় নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছিল।এবং আমরা সবাই একমত হলাম স্যারেরা ছাত্রদের সুখ পছন্দ করে না বলেই মাঝে মাঝে পরীক্ষা নামক ঝামেলায় ফেলে ছাত্রদের একচ্ছত্র সুখের রাজ্যে বাগড়া দেয়।
এরপর বিল দেওয়ার সময় কে বিল দেবে সেই নিয়ে লাগে হাংগামা।সবাই বিল দিতে চায়।এরপর সবাইকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে আমিই বিল দিলাম।তারপর যে যার পথে রওনা দিলাম।
অনেকেই হয়ত নাক সিটকাবেন,অনেকেই হাইজিন নিয়ে প্রশ্ন করবেন। করা টা স্বাভাবিকই।কিন্তু একজন বেকার ছাত্র আর স্বল্প আয়ের ক্ষুধার্ত মানুষের কিন্তু পেটের জ্বালা মিটানো দিয়ে কথা। কথায় আছে ক্ষুধা লাগলে বাঘে ধান খায়।যাই হোক আমাদের মত ছাত্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে এই মার্কেট ওর গুরুত্ব কোন সৃজনশীল প্রশ্নের উদ্দীপকের গুরুত্বের মতই অপরিসীম
ফটোগ্রাফার | বৃত্ত |
---|---|
লোকেশন | সাতমাথা,বগুড়া |
ডিভাইস | পোকো এক্স ২ |
মাশাআল্লাহ ভাইয়া আপনি সুন্দর কিছু মূহূর্ত ছবি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।এই ধরনের স্ট্রিট ফুড খেতে ভিশন ভালো লাগে। দোকানে সামনে দিয়ে গেলে জিহ্বা দিয়ে পানি চলে আসে। বিশেষ করে সিঙারা দেখলে মাথা আমার নষ্ট হয়ে যায়। স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য এগুলো পারফেক্ট খাবার। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। দোয়া এবং শুভকামনা রইলো।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
এই ধরনের খাবার আমার খুবই ফেভারিট এই ধরনের খাবারের সমস্যা আছে তবে খেতে সবথেকে বেশি সুস্বাদু।। আপনার ফটোগ্রাফি দেখেই লোভ হচ্ছে খেতে ইচ্ছে করছে।।
অনেক ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
পরীক্ষায় কমন না পড়লে আর পরীক্ষার খাতায় কিছু লিখে না আসতে পারলে খিদে পায়, এই জীবনে প্রথমবার শুনলাম। হা হা হা....
আপনার বন্ধু-বান্ধব তো খুব ভালো দেখছি। আমার বন্ধুবান্ধবগুলো তো বিল দেয়ার সময় কোথায় যেন উধাও হয়ে যায়।
হ্যা ভাই।সবাই অনেক ভাল।আর ভাই আমি পরীক্ষা হলে ২-৩ প্যাকেট বিস্কুট নিয়ে যাই।
আপনার সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আপনার সাথে আমিও একমত রাস্তার পাশে ওই খাবারগুলো যেন অন্যরকম একটি সাধ। আমার কাছে এই খাবারগুলো খুবই ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।