জীবিকা

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

কে শুনে কার কথা, কে বোঝে অন্যের ব্যথা। সবাই তো ব্যস্ত নিজেকে নিয়ে। নিজেই চলতে হিমশিম খাচ্ছি, সেখানে অন্যকে নিয়ে ভাবতে গেলে বড্ড মাথা ব্যথা বেড়ে যায়।

তবে এসবের মাঝেও যখন এদিক-সেদিক তাকিয়ে মানুষগুলোকে দেখার চেষ্টা করি, তখন কোথায় যেন গুলিয়ে যাই। চারিপাশে প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকা-পয়সার হিসেব নিকেশ হচ্ছে , অথচ এই মানুষগুলোর জীবন কিভাবে কেটে যাচ্ছে, সেটা ভাবতেই যেন গা শিউরে উঠছে।

20230321_175525.jpg

এমন চিন্তা যে শুধু আমার একার হয়, তা আমি বলবো না। হয়তো স্থান ভেদে অন্য কারো ভাবনায় এমন চিন্তার উদয় হতে পারে। স্বল্প আলাপচারিতায় যা বুঝলাম, পৃথিবীটা যে এখন এই মানুষগুলোর জন্য নরকে পরিণত হয়েছে, তা যেন একদম মিথ্যে কথা নয়।

কাগজের রঙিন ফুলগুলো দেখতে আসলেই সুন্দর। তাতে ভদ্রলোক যে কারুকার্য করেছে তা আসলেই প্রশংসনীয়। তবে এই প্রশংসায় আর যাই না হোক কেন, তাতে কোন অবস্থাতেই পেটের ক্ষুধা দূর হয় না।

20230321_175614.jpg

সর্বোচ্চ সুন্দর যে ফুলটি আছে, সেটার দাম ২৫ টাকা আর বাকিগুলো তো ১০ টাকা করে। সময়টা যে তার পক্ষে নেই, এটা তার চোখের চাহনি বলে দিচ্ছে।

শহরের দিকে খুব একটা যাওয়া হয় না। সেখানে তো হরেক রকমের প্লাস্টিকের খেলনার বাহারি সমাহার, সেখানে এই কাগজের ফুল কেনার ক্রেতা কই। তাই এই গ্রামীণ রাস্তায় কিছুটা ছোটাছুটি।

মাছ-মাংসের স্বাদ তো বহু আগেই ভুলে গিয়েছি। হয়তো বাড়িতে বউ মুরগী পোষে বিধায় মাঝে মাঝে ডিম খাওয়ার সৌভাগ্য হয়।

20230321_175559.jpg

কি একটা অবস্থা, তাই না। তবে প্রিয় পাঠক যা দেখলেন বা শুনলেন, এটাই কিন্তু বাস্তব। এসবই হচ্ছে আশেপাশে।
দুপুরে যে আমি রুই মাছের বড় পেটি দিয়ে ভাত খেয়েছি,সেই তরকারির গন্ধ যেন এখনো আমার হাত নাকের কাছে নিয়ে গেলেই পাওয়া যাচ্ছে। তবে ঐ ভদ্রলোকের দিকে যখন তাকাচ্ছি, তখন যেন নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে।

যেখানে রিক্সায় বসে ছিলাম তার ঠিক পিছনেই ছোট্ট একটা খাবারের দোকান ছিল। সেখানেই মূলত একটু আগে চা খেয়েছিলাম আর সেই বিরতিতেই মূলত এই রঙিন কাগজের ফুল বিক্রেতার সঙ্গে দেখা হয়েছিল । আমি এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলাম তবে বাবুর জন্য এড়িয়ে যেতে পারিনি। অবশেষে বাবুর জন্যই ভদ্রলোক কে ডেকে ছিলাম।

20230321_175545.jpg

একশো টাকার একটা নোট হাতে দিয়ে ছিলাম আর কাছে ডেকে বলেছিলাম বাকিটা ফেরত দিতে হবে না। পিছনের যে খাবারের দোকানটা আছে, সেখানে গিয়ে ডিম ভাজি দিয়ে পরোটা খেয়ে নিয়েন।

ঊর্ধ্বগতির দ্রব্য মূল্যের বাজারে, এমন চিত্র প্রতিনিয়তই আশেপাশে দেখা যাচ্ছে। এই বাজারে কেউ টিকে থাকছে আর কেউ পরাজয়ের গ্লানি মেনে নিচ্ছে। তবে তারপরেও বেঁচে থাকুক সবাই।

কারণ ওরাও মানুষ, ঠিক আমার আপনার মতো। ওদেরও তো বাঁচার অধিকার আছে।

Banner-9.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 last year 

অনেক ভাল লাগলো আপনার লেখনি আর মন মানসিকতা দেখে।আর খারাপ লাগলো এই কাগজের ফুল বিক্রেতার কথা ভেবে।হে, তাইতো এরা ও তো মানুষ।এদের ও বাঁচার অধিকার আছে।এরা বেঁচে থাকলেই আমাদের বেঁচে থাকাটা সার্থক হবে।সবাইকে এদের পাশে দাঁড়াতে হবে।ধন্যবাদ ভাইয়া।খুব সুন্দর লিখেছেন।
আর হে, শায়ানকে মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে। 🥰😍

 last year 

সত্যি ভাইয়া আপনি খুবই উদার মনের মানুষ। যেমন লোকটিকে দেখে আপনার খারাপ লেগেছে বিধায় আপনি তাকে ১০০ টাকা নোট দিয়ে বললেন আর ফেরত দিতে হবে না। নিশ্চয়ই লোকটির খুশি ভাষা প্রকাশ করার মত না। আপনি ঠিক বলেছেন ওরাও তো মানুষ কত কষ্ট করে জীবিকা নির্বাহ করে।কাগজ বিক্রেতার কথাগুলো শুনে খুব খারাপ লাগলো।

 last year 

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে কেউ টিকে আছে কেউ না খেয়ে আছে। আসলে এদেরকে দেখার মত কেউ নেই। সাধারণ এই মানুষগুলো হয়তো দুবেলা ভালোভাবে খেতে পারে না। তাদের কাছে মাছ মাংস কেনা অনেকটা বিলাসিতা। সত্যি ভাইয়া আপনি তাকে সাহায্য করেছেন এবং খাওয়ার জন্য টাকা দিয়েছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। এভাবে যদি সবাই এসব মানুষদের পাশে দাঁড়াতো তাহলে তারা দুবেলা ভালোভাবে খেতে পারতো।

Coin Marketplace

STEEM 0.25
TRX 0.11
JST 0.032
BTC 61041.41
ETH 2947.17
USDT 1.00
SBD 3.85