রবিবারের আড্ডা ৬৪ | উন্মুক্ত আড্ডা - ৩ পর্ব
ব্যানার ক্রেডিটঃ @hafizullah
আমার বাংলা ব্লগের আয়োজন রবিবারের আড্ডার নতুন সংযোজন হচ্ছে এবিবি উন্মুক্ত আড্ডা । মূলত এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকে তাদের সামনে একটা বিষয় তুলে ধরা হয়। যে সকল সদস্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী হয়, তাদের নিয়েই মূলত এই অনুষ্ঠানটা পরিচালিত করা হয়।
তাছাড়া এই অনুষ্ঠানটি তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যেহেতু চার-পাঁচজন অতিথি থাকে প্রথমত দুইবারে সকল অতিথির মতামত শোনা হয়, দ্বিতীয়তঃ কিছুটা বিরতি দিয়ে উপস্থিত দর্শকদের মতামত গ্রহণ করা হয় এবং নিজেদের পছন্দের গান শোনা হয়। সর্বশেষে উপস্থিত সকল দর্শক ও শ্রোতাদের জন্য থাকে শুভেচ্ছা পুরস্কার ।
আজকের আড্ডার আলোচ্য বিষয়ঃ
শৈশবের ঈদ আনন্দের স্মৃতিচারণ।
প্রথম অতিথিঃ @santa14
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃ আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন মূলত রোজার শেষের দিক থেকেই আমার ঈদ শুরু হয়ে যেত, বিশেষ করে নতুন জামা আমি ব্যাগে করে স্কুলে নিয়ে যেতাম, নিয়ে গিয়ে বান্ধবীর গুলো দেখতাম এবং আমারটাও দেখাতাম। যদি দেখতাম বান্ধবীদেরটা ভালো, তাহলে আমি আব্বুকে আবারও বলতাম যে, আমার এটা পছন্দ হয়নি। আমাকে অন্য জামা নিয়ে এসে দাও। তাছাড়া আমি পরিবারের সকলের ছোট ছিলাম, সাজগোজের প্রতি দুর্বলতা আমার অনেক আগে থেকেই ছিল, ঈদের দিন সকালে সবার আগে গোসল করে এসে আপুদের কাছে বায়না ধরতাম আমাকে সাজিয়ে দেওয়ার জন্য, তারপর সব আত্মীয়-স্বজনের কাছে সালামি নিতাম। এই ব্যাপারগুলোকে আমি এখনো ভীষণ মিস করি।
দ্বিতীয় অতিথিঃ @ah-agim
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃ তখন আমি অনেক ছোট, সেই সময় প্রথমবার আমি বাবাকে বলেছিলাম যে, এবার আমার জন্য পাঞ্জাবি পায়জামা নিয়ে আসার দরকার নেই, আমার জন্য নতুন জিন্সের প্যান্ট এবং গেঞ্জি নিয়ে আসিও । বাবা তখন আমার কথাই শুনেছিল। তারপর তো আমি কাপড়গুলো উঠিয়ে রেখেছিলাম। অতঃপর একদম ঈদের দিনে গিয়ে, ঈদের নামাজ পড়ে সবাইকে যখন সালামি করছিলাম, তারপরে সবাই আমাকে টুকটাক সালামি দিচ্ছিল। আমি শুধু টাকাগুলো নিচ্ছিলাম আর হাতে রাখছিলাম। একবার প্যান্টের পকেটে রাখতে গিয়েছিলাম, তখন দেখি প্যান্টের পকেট বন্ধ। তখন আমার চাচাতো ভাই আকাশকে টাকা গুলো ধরতে দিয়েছিলাম, পরে আমার চাচাতো ভাই আকাশ টাকা গুলো আর ফেরত দেয়নি। পরে আমি বাড়িতে গিয়ে আম্মুর কাছে কান্নাকাটি করেছিলাম এবং বললাম যে বাবা আমাকে কি প্যান্ট কিনে দিয়েছে যেখানে পকেট নাই। পরে অবশ্য আম্মু প্যান্টের পকেটের সেলাই খুলে দিয়ে পকেট বের করে দিয়েছিল। তবে এখন বড় হয়েছি, এখনো আমি আমার ভাইয়ের কাছ থেকে সেই ঈদের সালামি বাবদ টাকা নেই।
তৃতীয় অতিথিঃ @kazi-raihan
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃ সবাই যেহেতু ছোটবেলার কথা বলছে আমিও তেমনটা ছোটবেলার কথা বলার চেষ্টা করছি। আমি মূলত ছোটবেলায় যখন ঈদ মার্কেট করতাম, তখন সেই জামা কাপড় আগেই কাউকে দেখাতাম না। বারবার আয়নার সামনে ট্রাইল দিয়ে দেখতাম আর ভাবতাম যদি ঈদ একটু তাড়াতাড়ি আসতো, তাহলে ভালো হতো। এভাবে একদিন রাতে যখন আমি ট্রাইল দিচ্ছিলাম, সেদিন আমার মামারা ঢাকা থেকে আমার জন্য আরো কাপড় কিনে নিয়ে এসেছিল, তখন আমি অনেকটা আসলে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে ছিলাম, কেননা কোন কাপড়টা ছেড়ে কোনটা পড়বো এটা নিয়ে। ,অবশেষে এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে বিছানায় ঘুমিয়ে গিয়েছি, তা আর খেয়াল করে উঠতে পারিনি। অবশেষে সকালে যখন ঘুম থেকে উঠেছি, তখন দেখলাম আমার বিছানার চারপাশে নতুন কাপড় দিয়ে ছড়ানো আছে। তাছাড়াও আর একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে, সেই সময় আমরা চকলেট বোমা ফুটাইতাম। আমরা চকলেট বোম ফুটানোর সময়, সেটার উপরে স্টিলের পানির গ্লাস দিয়েছিলাম। তখন গ্লাসটা অনেক উঁচুতে উঠেছিল, যখন বোমটা ফেটেছিল।
চতুর্থ অতিথিঃ @rupok
মডারেটর, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃ আমার আসলে ছোটবেলা থেকে ঈদ কেটেছে দুভাবে। একদম যখন খুব ছোট ছিলাম,তখন আমরা সবাই অপেক্ষা করতাম কখন স্কুল ছুটি দেবে। কেননা স্কুল ছুটি হলেই, আমরা পুরো পরিবার সহ সবাই চলে যেতাম দাদু বাড়িতে। যেহেতু আমাদের পুরো পরিবারটা অনেক বড় ছিল, মূলত আমার বাবা চাচারা ছিল ১০ ভাই বোন। তাই হয়তো আপনারা বুঝতেই পারছেন, কতগুলো ভাই বোন ছিলাম আমরা। এমনও হয়েছে যে, গ্রামের বাড়িতে থাকতে গিয়ে অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও থাকতে হয়েছে। ঐ দিনগুলো সত্যিই বেশ মজার ছিল। আর একটা বিষয় হচ্ছে, যখন আমরা মফস্বলে ঈদ করতাম, সে সময় এলাকার সমবয়সী ছেলেদের সঙ্গেই মেশার চেষ্টা করতাম। মূলত আমরা যেখানে খেলতাম তার পাশেই ছিল একটা বাড়ি, সেখানে এক বয়স্ক দম্পতি বসবাস করতেন। তবে তারা আমাদের খেলাধুলা নিয়ে অনেক প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল সেই সময়। অতঃপর একবার ঈদের সময় আমরা কয়েকজন মিলে বুদ্ধি করেছিলাম, তার বাড়ির চতুর্দিকে আমরা চকলেট বোমা ফুটাবো। আমরা চেষ্টা করেছিলাম চকলেট বোমার কিছুটা মাথায় আগরবাতি লাগিয়ে দেওয়ার জন্য, যাতে একটা নির্দিষ্ট সময় পড়ে গিয়ে যেন বোমাটা ফুটে যায়, যদিও আগরবাতি পুড়ে যাওয়া সময় সাপেক্ষ ব্যাপার, তবে সেই ধৈর্য আমাদের কোনভাবেই কম ছিল না। অবশেষে বোমাগুলো ঠিকই ফুটেছিল,তাও সেটা অনেকটা বিকট শব্দে। অবশেষে সেই বাড়ির লোকজন চিৎকার চেঁচামেচি করেছিল এবং আমরাও দৌড়ে পালিয়ে ছিলাম।
অতিথি ও শ্রোতাদের শুভেচ্ছা পুরস্কার তাৎক্ষণিক পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুরস্কারের স্পন্সর কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা @rme দাদা
মূলত এভাবেই আয়োজন করা হয়েছিল এবিবি উন্মুক্ত আড্ডা। আমাদের চিন্তাধারা প্রতিনিয়তই ব্যতিক্রম, তাই সব ব্যতিক্রম চিন্তা-ভাবনা নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই প্রতিনিয়ত সামনের দিকে। আশাকরি আমাদের সঙ্গে সকলেই থাকবেন, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1774718908161028340?t=zxLTTEk7df4DbKETnBAHpQ&s=19
বরাবরের মতো গতকালকের রবিবারের আড্ডাও বেশ উপভোগ করেছি। অতিথিরা দারুণভাবে শৈশবের ঈদের স্মৃতিচারণ করেছেন। অতিথিদের কথা শুনে আমি নিজেও কিছুক্ষণের জন্য শৈশবের ঈদের স্মৃতিতে হারিয়ে গিয়েছিলাম। সবমিলিয়ে বেশ ভালো কেটেছে পুরোটা সময়। যাইহোক এই রিপোর্টটি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
এই সপ্তাহের উন্মুক্ত আড্ডার টপিকস বেশ ভালো লেগেছে। আমাদের সুমন ভাই সত্যিই দারুণ ইন্টেলিজেন্ট। এ সপ্তাহে যারা উন্মুক্ত আড্ডায় গেস্ট ছিল তাদের শৈশবের ঈদের সুন্দর মুহূর্ত শুনতে পেরে বেশ ভালই লাগছিল। ভাই রবিবারের আড্ডা অনুষ্ঠানে আপনার উপস্থাপনা সত্যিই দারুণ। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট বিস্তারিতভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
শুধু সুমন ভাই না, আপনাদের পুরো গ্রুপটাই অনেক বুদ্ধিমান, এটা মানতেই হবে।
আসলে ভাই আমরা সব সময় চেষ্টা করি গ্রুপের সবাই সম্মিলিত থাকার। নিজেদের যে, কোন সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও গ্রুপের সবাই মিলে আলোচনা করি। আর আমরা সবাই আমাদের সুমন ভাইয়ের সিদ্ধান্তকে সবসময় সম্মান জানায়। তার সিদ্ধান্তের উপর আমাদের সবার আস্থা ও বিশ্বাস অফুরন্ত।
গতকালকের আড্ডা টি বেশ ভালো লেগেছিল। যেহেতু ভিন্ন ধরনের একটি উন্মুক্ত আড্ডা ছিল। বিশেষ করে ঈদের উৎসব নিয়ে এমন সুন্দর সুন্দর মজার গল্প শুনতে বেশ ভালোই লাগছিল। বেশ কয়েকজনকে অতিথি হিসেবে পেয়েছিলাম আমরা আমাদের প্রিয় কমিউনিটির। আজকে আপনি সেই রবিবারের আড্ডার রিভিউ নিয়ে আবার উপস্থিত হলেন। অনেক ভালো লেগেছে বিস্তারিত পড়ে।
গতকালের আড্ডার রিভিউ পড়ে, আপনার কাছে বেশ ভালো লেগেছে জেনে, খুশি হলাম।
গতকালকের আড্ডাটা ছিল অনেক বেশি সুন্দর। খুব ভালোভাবে উপভোগ করেছি অতিথিদের সাথে গতকালকের সুন্দর মুহূর্তটা। ছোটবেলার ইদের মুহূর্তগুলো সত্যি অনেক সুন্দর ছিল। আর সবার কাছ থেকে ছোটবেলার ঈদের কথা শুনে ভালো লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া বিস্তারিতভাবে এটা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই, প্রতিনিয়ত আমাদের সঙ্গেই থাকার জন্য।
এই সপ্তাহে অতিথি হতে পেরেছিলাম আর নিজের গল্পটা সবার সাথে শেয়ার করেছি বেশ ভালো লেগেছে পুরোটা সময়।
আমরাও আপনাকে অতিথি হিসেবে পেয়ে বেশ ভালোই বোধ করেছি।
ঈদ মানেই আনন্দ। আর এই আনন্দের স্মৃতিগুলো সারা জীবন মনে থাকবে। বিশেষ করে শৈশবের সেই আনন্দের স্মৃতিগুলো সত্যি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এবারের আড্ডার বিষয়বস্তু দারুন ছিল। আর অতিথিরা অনেক সুন্দর ভাবে নিজেদের অনুভূতি তুলে ধরেছিল। ভাইয়া আপনি প্রত্যেকটি বিষয় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এটা একদম সত্য কথা, কেননা এবারের আড্ডার টপিকটা সত্যিই দারুণ ছিল।
ব্যাস্ততার কারনে যদিও এই সপ্তাহের আড্ডা প্রোগ্রামে অংশ গ্রহণ করতে পারি নাই। তবুও আপনি সযোগ করে দিলেন সেদিন অনুষ্ঠানের সব টুকু আমাদের মাঝে তুলে ধরতে। আর আপনার পড়া সেদিনের প্রোগ্রামটির সবটুকু পড়ে বেশ আফসোস হচ্ছে কেন যে থাকতে পারলাম না প্রোগ্রামটিতে। ধন্যবাদ ভাইয়া প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রোগ্রামটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।