রেসিপি - ৬ কেলাকুচ পাতার বড়া | | @shimulakter

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম,আদাব “ আমার বাংলা ব্লগ” এর বন্ধুরা , সবাই কেমন আছেন ? আশাকরি আপনারা সবাই ভাল আছেন ।আমিও আপনাদের শুভ কামনায় ভাল আছি । এখন বর্ষাকাল ,সারাদিন রিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টি পরে। আর এই সময় যদি স্বাস্থ্য সম্মত ভাজা ভুজি খাওয়া হয় তবে মন্দ কি । তাই আজ আমি আপনাদের সামনে এমন এক রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি , যা আপনাদের খেতে যেমন ভাল লাগবে ,তেমনি শরীরের জন্যও ভাল ।

WhatsApp Image 2022-06-23 at 9.06.06 PM.jpeg

আজ আমি আপনাদের কেলাকুচ পাতার বড়া বানিয়ে দেখাব। এই রেসিপি দেয়ার আগে , আমি আপনাদের এই রেসিপির উপকরন এর গুনাগুন নিয়ে সামান্য কিছু বলতে চাই ।

আমি বিক্রমপুরের মেয়ে , আমাদের বিক্রমপুরে এই পাতাটাকে কেলাকুচ বলে থাকে । একেক অঞ্চলে এর নামের ভিন্নতা থাকতে পারে । তবে গুনের দিক দিয়ে এর কোন ভিন্নতা নেই।শহরে এ গাছ দেখা না গেলেও , আজকাল বাজারে এসব পাতা বিক্রি করে । কারন এখন সবাই এই পাতার ঔষধি গুন সম্পর্কে জানে । তাই এই পাতার চাহিদা দেখে আজকাল বাজারে এসব পাতা পাওয়া যায় ।এখন আমি এই পাতার কিছু ঔষধি গুনের কথা আপনাদের কাছে শেয়ার করব।অনেক কিছু ত রান্নার রেসিপিতে বলা যায় না ।

সংক্ষেপে কিছু বলছি - আমি আমার আম্মুর কাছে শুনেছি, যাদের হাত-পা এর পাতা গরম বা জ্বালা করে মাথা গরম তারা এই পাতা পানি দিয়ে হাত-পা মাথার তালুতে ঘষে নিলে অনেক টাই আরাম পায় । এছাড়া এ পাতা খেলে ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রনে থাকে কিডনি, খাবারের অরুচি ,আমাশয় ও ভাল হয় ।এছাড়া ও ব্রন , জন্ডিস প্রতিরোধে এই পাতা জোরালো ভুমিকা পালন করে ।

এবার আমি আমার রান্নার রেসিপির মুল উপকরনে চলে যাব -

WhatsApp Image 2022-06-23 at 6.37.34 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-06-23 at 9.13.59 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-06-23 at 9.10.15 PM.jpeg

উপকরন

১। ২/৩ রকমের ডাল

২। পোলাওয়ের চাল সামান্য

৩। পেঁয়াজ কুচি

৪। রসুন বাটা

৫।কাঁচা মরিচ কুচি

৬। ভাজার জন্য তেল

৭। সাজানোর জন্য টমেটো সস, পেঁয়াজ ও লেবু

প্রস্তুত প্রণালীঃ

আমি এই রেসিপি ধাপে ধাপে আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি।

WhatsApp Image 2022-06-23 at 6.32.59 PM.jpeg

প্রথম ধাপঃ

প্রথমে ডাল আর অল্প চাল একসাথে ভিজিয়ে রাখতে হবে । ভিজে গেলে তা ভাল

মত ধুয়ে বেটে নিতে হয় ।

দ্বিতীয় ধাপঃ

এরপর পেঁয়াজ , কাঁচা মরিচ কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে ।কেলাকুচ পাতা ও কুচি করা নিতে হবে ও রসুন বেটে নিতে হবে ।

WhatsApp Image 2022-06-23 at 6.37.56 PM.jpeg

WhatsApp Image 2022-06-23 at 6.33.21 PM.jpeg

তৃতীয় ধাপঃ
এবার বাটা ডালের মধ্যে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ কুচি, রসুন বাটা , সামান্য হলুদ ও মরিচের গুড়া , লবণ ও কেলাকুচ পাতা কুচি ভালমত মিশিয়ে নিতে হবে ।

WhatsApp Image 2022-06-23 at 9.22.00 PM.jpeg

চতুর্থ ধাপঃ
এখন চুলায় কড়াই বসিয়ে তাতে তেল দিতে হবে । তেল গরম হয়ে এলে , তাতে গোল গোল বড়ার আকৃতি করে তেলের উপর ছেড়ে দিতে হবে । পোলাওয়ের চাল দেয়াতে এই বড়া থেকে যেমন সুগন্ধ ছড়াবে , তেমনি এটা খেতে বেশ মচমচে হবে । এভাবেই রেডি হয়ে গেল , আমার কেলাকুচ পাতার বড়া।

WhatsApp Image 2022-06-23 at 6.33.03 PM.jpeg

পঞ্চম ধাপঃ

এবার সাজানোর জন্য কিছু পেঁয়াজ, লেবু গোল গোল করে কেটে নিয়ে প্লেট সাজিয়ে পাশে টমেটো সস দিয়ে পরিবেশন করব। একটা সামান্য খাবার অনেক বেশি অসামান্য হয়ে যায় , খাবারটা সুন্দর করে পরিবেশনের উপর ।তাই আমরা যেকোনো খাবার সুন্দর করে পরিবেশন করে , খাবারটার প্রতি ছোটবড় সকলের আগ্রহ তৈরি করার চেষ্টা করব ।

WhatsApp Image 2022-06-23 at 6.33.04 PM.jpeg

আমার আজকের এই সহজ রেসিপিটি আপনাদের কেমন লাগলো ,জানাতে ভুলবেন না ।এই বড়া গরম গরম খেতে পারবেন । আবার গরম ভাতের সাথেও কিন্তু মন্দ লাগবে না ।তাই আপনারা সবাই এই ঔষধি গুন সম্পন্ন পাতা সুন্দর বড়া করে খাবেন ।আবার চাইলে , আপনি বেশি করে রসুন, পেঁয়াজ ,শুকনা মরিচ দিয়ে ভেজেও খেতে পারেন।যেভাবেই করে খান না কেন , উপকার হবেই ।

আমার রেসিপির সব ছবি আমি নিজে তুলেছি ।আমি আমার ছবির তথ্য নিচে তুলে ধরছি -

ক্যাটাগরিফটোগ্রাফি
ডিভাইসSamsungA20
ফটোগ্রাফার@Shimulakter
স্থানধানমন্ডি,ঢাকা

সবাই অনেক বেশি ভালো থাকবেন , সুস্থ থাকবেন । আজ এ পর্যন্তই।

আল্লাহ হাফেজ
আমি শিমুল আক্তার
ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে ।

Sort:  
 2 years ago 

এই কেলাকুচ পাতার উপকারিতা অনেক জানতাম। এই পাতার রস খেতে দেখেছি বিভিন্ন অসুখে। কিন্তু কখনো এভাবে বড়া তৈরি করার কথা মাথায় আসে নাই। আপনার কেলকুচ পাতার বড়া দেখে মনে হচ্ছে যে সেটা যেমন সুস্বাদু হয়েছে তেমনি পুষ্টিকর ও বটে। ধন্যবাদ আপনাকে ইউনিক একটি রেসিপি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

এটি শাক হিসেবে ভাজি করে খেয়েছি রান্না করে খেয়েছে। কি কেটে দিয়ে জে বড়া বানানো যায় সেটি আমি আগে জানতাম না। আপনার কাছ থেকে নতুন রেসিপি শিখে নিয়েছে আপু আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ রেসিপিটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য । আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

কেলাকুচ পাতার বড়া আমি খেয়েছি খেতে ভীষণ মজা লাগে। আপনার রেসিপি দেখে তো খেতে ইচ্ছা করছে। অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে উপস্থাপনা করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে 🥀

 2 years ago 

আপনি খুবই মজাদার এবং খুবই সুস্বাদু একটি রেসিপি তৈরি করে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। এই রেসিপিটি খুবই ভালো লাগে খেতে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে ধাপে ধাপে উপস্থাপনা করে শেয়ার করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সকলের মাঝে উপস্থাপনা করে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

আপনাকেও ধন্যবাদ আপু।

কেলাকুচা পাতা নামটি প্রথম শুনলাম। অনেক ধরনের শাকসবজি-পাতা দিয়ে বড়া খাওয়া হলেও; এই কালাকুচা পাতা দিয়ে বড়া খাওয়া হয়ে ওঠেনি। প্রতিটি ধাপের উপস্থাপনা খুব সুন্দর ভাবে দিয়েছেন। শিখে নিলাম আপনার পোস্টের মাধ্যমে নতুন একটি রেসিপি। আপনার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

কেলাকুচ পাতার বড়া রেসিপি কখনো খাওয়া হয়নি। যেটা আমার প্রথম দেখা দারুন একটি খাবার রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। যেটা দেখে খুবই ভাল লাগল। এই ধরনের মুখরোচক খাবার খেতে খুবই পছন্দ করি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনি ঠিক বলেছেন স্বাস্থ্যসম্মত ভাজা ভুজি খেতে পারলে খারাপ হয় না। বিশেষ করে এ সমস্ত খাবার যদি বাড়িতে বানানো হয় তাহলে খাওয়া বেশ নিরাপদ। আমাদের এলাকায় এ পাতাটিকে বলে তেলাকুচ। আসলেই এই পাতাটির অনেক ঔষধি গুণ আছে। রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

 2 years ago 

ভাইয়া,আপনাকেও ধন্যবাদ।

 2 years ago 

এই পাতাটির নাম আমার একদমই নতুন লাগছে পাতাটি আমি আগে কখনই দেখিনি তবে কেলাকুচ পাতা নাকি খুবই ঔষধি গুণসম্পন্ন আপনি এর ভরা তৈরি করেছেন। মনে হচ্ছে খেতে খুবই মজার হবে।

 2 years ago 

একেক অঞ্চলে এর একেক নাম।হে ভাইয়া খেতেও মজার আর হেলদি খাবারও।

 2 years ago 

এ কচুপাতা আমি রান্না করে খেয়েছি ও ভাজি করে ও খেয়েছি। এভাবে কখনো বড়া বানিয়ে খাইনি। আপনার এই পোস্টটা মাধ্যমে তা শিখে নিলাম আজ।

কিন্তু তিন-চার রকমের ডাল এর নাম যদি উল্লেখ করা হতো তাহলে আরো ভাল লাগত আপু। যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর রেসিপি শেয়ার করার জন্য

 2 years ago 

আমাদের এখানে তেলাকুচা পাতা কিংবা ডায়বেটিস পাতা বলে থাকে,যদিও কখনো এভাবে বড়া বানিয়ে খাওয়া হয়নি। তবে মনে হচ্ছে খেতে ভালো হবে,আর স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো।ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.031
BTC 59077.53
ETH 2518.13
USDT 1.00
SBD 2.48