ধর্ম যার যার উৎসব সবার ||| ১০% লাজুক শিয়ালের জন্য।
সবাইকে শুভেচ্ছা ,
আমার বাংলা ব্লগের সকল ভাই-বোনদের মঙ্গল কামনা করছি। আশা রাখছি শত ব্যস্ততার মাঝেও সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে কোন রেসিপি,কবিতা নিয়ে আসিনি। এসেছি পূজার এক নতুন অনুভূতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে পূজার অনুভূতিগুলো শুরু করা যাক।
আমরা মুসলিমরা যেমন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অনেক আনন্দ হইচই মজা করে থাকি সবাইকে নিয়ে। ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে একে একেক জন ভাই বোন মিলে মিশে থাকি। তেমনি হিন্দু ধর্মেরও কিছু সামাজিক অনুষ্ঠান ও তাদের নিয়ম নীতি অনুসরণ করে আনন্দ পালন করতে হয়। আমাদের যার যার ধর্ম তার আর আনন্দ সবার। আমরা সবাই সবার অনুষ্ঠানে আনন্দ উপভোগ করতে পারি। জীবনটা মাত্র কদিনের।
এ জীবনে বিশৃঙ্খলা ও অহংকার করে কোন লাভ নেই।আমরা সবাই মানুষ সবাই সবার সাথে মিলেমিশে থাকতে হবে এটাই ধর্মের নীতি। পুজোর সময় যখন স্কুল কলেজ বন্ধ হয় তখন বন্ধু-বান্ধবরা দাওয়াত করত সেই কি যে মজা হতো পুজোয়। প্রথম ২-৩ দিনেও যদি সেই বান্ধবীর বাড়িতে না যেতে পারতাম ।তখন সেই বন্ধু-বান্ধবরা এসে আমাদের বাবা-মাকে বলে নিয়ে যেত।
যখন তারা অনুমতি দিত তখন মনে হতো দুনিয়াটা হাতের মুঠোয় পেয়ে গেলাম। পুজো বলে কথা সবাই কত সাজুগুজু করে আসবে আর আমি সাজবো না তা তো হয় না। তাই বান্ধবীদের রুমে বসিয়ে রেখে আমি মোটামুটি সেজে পরিপাটি হয়ে তাদের সামনে আসলাম এবং বললাম চলো একটু দেরি হয়ে গেল। টাকা নিয়ে যাওয়ার কথা মনে ছিল না আনন্দে। মা তখন বলল ভাড়া নিয়ে যেতে। রিক্সা ভাড়ার জন্য তখন আমি রিকশা থেকে নেমে বাসায় গিয়ে আবার ভাড়াটা নিয়ে আসলাম। তারপর মহা আনন্দে রিকশায় সবাই মিলে গন্তব্য স্থানে যাওয়ার জন্য রওনা হলাম।
মোটামুটি আমরা চারজন ছিলাম আমার বান্ধবীর নাম ছিল মাধবী আর বন্ধুর নাম রাজীব অভিজিৎ এরা সবাই আমার বন্ধু ছিল। এরা একই এলাকায় পাশাপাশি থাকতো। তাদের বাসায় পৌঁছেই দেখি দুই সাইডে ফুলের গেট সাজানো লাল ও বিভিন্ন রঙের ঝাড়বাতি অনেক লাইটিং এর ব্যবস্থা করেছে। চার সাইডে নানার রঙের আলো দেখে কি যে ভালো লাগলো।
আমি আনন্দ উপভোগ করতে লাগলাম ভিতরে নিয়ে গেল মাধবী আমাকে এবং আন্টির সাথে পরিচয় করিয়ে দিল আন্টি অনেক কথাই বলল আমার সাথে। আমি পুজোর ব্যাপারে আন্টিকে অনেক কথা বললাম। আন্টির সব সুন্দর ভাবে উত্তর দিল এবং আমাকে বসতে বলল । একটু পরে এই দিক সেই দিক তাকিয়ে দেখি অনেক লোক সবাই কত আনন্দ করছে তাদের আনন্দ দেখে আমারও অনেক ভালো লাগলো।
কিছুক্ষণ পর মাধবী অভিজিৎ ও সব বন্ধু-বান্ধব যখন চলে আসলো তখন দেখি সবাই অনেক ধরনের শুকনো খাবার নিয়ে হাজির হলো নারকেলের নাড়ু ,শুকনো সেমাই ,মুড়ির নাড়ু , চিড়ার নাড়ু নিয়ে আসছিল এবং খেতে অনেক টেস্টি ছিল। আমরা সব বন্ধু-বান্ধব মিলে একত্রে সেই খাবারগুলো অনেক মজা করে খেলাম ও আনন্দ করলাম।
অনেকক্ষণ সময় কাটানোর পর মনে হল বাসায় ফিরতে হবে।তাই ভিতরে গিয়ে আন্টির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসি আমি বাসায় পৌঁছে আমার মাকে বললাম আমাদের মুসলমানদের মত তারাও অনেক আনন্দ করে। তাদের অনুষ্ঠানে পরিবারের সবার সাথে সবার অনেক আন্তরিকতা। পরিবারের একজন আরেকজনের প্রতি অনেক ভালোবাসা তা দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। তাদের মমতা ও ভালোবাসা আমার অনেক ভালো লেগেছিল। মাধবীদের পূজায় গিয়েছিলাম আজ হঠাৎ সেই দিনের কথা মনে পড়ল ।
আসলে অনুষ্ঠান তো অনুষ্ঠানই, আনন্দটা সবার। যদি মনের মধ্যে সেই পরিমাণ ভালোবাসা থাকে সব আনন্দ সবার সাথে ভাগ করে নেওয়া যায়। আজ হঠাৎ আমার সেই ফেলে আসা দিনের কথা মনে পড়ে গেল এবং সেই অনুভূতিটা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে আমরা আমাদের অতীতের স্মৃতির অনুভূতির কথা শেয়ার করতে পেরে নিজেকে আসলে অনেক ধন্য মনে করি।
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা এবং শিক্ষিকা।রেসিপি তৈরি করতে,কবিতা লিখতে এবং বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন তৈরি করতে পছন্দ করি। যেকোনো বিষয়ে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে ভালো লাগে।
বিষয়ঃ- অনুভূতি " ধর্ম যার যার উৎসব সবার "।
কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।
আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ.......
এইসব স্মৃতিগুলো কখনো ভোলার মতো না আপু। সারাজীবন মনে থেকে যায়। ক্ষণিকের জন্য আমাদের সওা মিলে আমরা সবাই এক হয়ে যায়। থাকে না কোনো ভেদাভেদ। অনেক সুন্দর লিখেছেন আপু।।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।
ঠিক বলেছো আপু। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। এই কথাটি আমরা আসলে প্রায় অনেকেই মেনে চলি।।তবে এরকম কিছু কিছু স্মৃতি অমলিন থেকে যায় সারা জীবনে।যেমন মাধবী রাজিব এদেরকে কখনোই ভোলা যাবে না।স্মৃতি হোক মধুময়।♥♥
মন্তব্য করে উৎসহ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপু।