প্রবাসীর সুখ দুঃখ কান্না হাসি (দ্বিতীয় পর্ব)।
গত দুদিন ধরে সবুজের তার বউয়ের সঙ্গে কথা হয়নি। সে অনেকবার ফোন দিয়েছে তার সাথে কথা বলার জন্য। কিন্তু তার ফোন বন্ধ পেয়েছে। সবুজ বারবার তার বাবার কাছে তার স্ত্রীর কথা জিজ্ঞেস করছিলো। কিন্তু তার বাবা সেই প্রসঙ্গে কথা না বলাতে সবুজ খুবই রেগে যায়। সবুজ রাগ করে তার বাবাকে বলে আপনি যদি আমার প্রশ্নের উত্তর না দেন। তাহলে আমি এখনই গাড়ি থেকে নেমে যাবো। তখন সবুজের বাবা বলে একটু সমস্যা হয়েছে। বাড়িতে চলো তোমাকে সবকিছু বুঝিয়ে বলছি।
সবুজ তখন গো ধরে বলে আপনি আমাকে যা বলার এখনই বলুন। তখন সবুজের বাবা বলে দুদিন আগে তোমার স্ত্রী সব টাকা পয়সা গহনা নিয়ে হঠাৎ করে কোথায় যেন চলে গিয়েছে। আমাদের কাউকে কিছু বলেনি। তখন সবুজ মনে করলো হয়তো তার স্ত্রী তার বাবা-মার সঙ্গে রাগারাগি করে নিজের বাড়িতে চলে গিয়েছে। এজন্যই হয়তো দুইদিন ধরে তার ফোন ধরছেনা। কথাটা শোনার পর সবুজ কিছুটা নিশ্চিন্ত হলো। সে মনে মনে পরিকল্পনা করলো আগামীকাল সকালে গিয়ে সে তার স্ত্রী সন্তানকে বাড়িতে নিয়ে আসবে।
এতদিন পর দেশে ফিরে তার এই ব্যাপারটা মোটেও ভালো লাগলো না। বাড়িতে পৌঁছতেই সবুজের মা সবুজকে জড়িয়ে ধরল। সে অনেক কান্নাকাটি করলো। সন্তানকে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ফিরে পেয়ে মায়ের খুশি আর ধরে না। পরিবার সবাইকে কাছে পেয়েও সবুজের স্ত্রী সন্তানের জন্য মনটা খুব খারাপ লাগতে লাগলো। সবুজের মুখ দেখে সবাই ব্যাপারটা বুঝতে পারলো। কিন্তু তারপরেও কেউ সবুজকে সত্যি কথাটা বলল না। পরদিন সকালে সবুজ ঘুম থেকে উঠে জামা কাপড় পড়ে তার শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছিলো।
তখন তার মা তাকে বলে এত সকালে কোথায় যাচ্ছিস? সবুজ বলে আমার স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে আসতে যাচ্ছি। তখন সবুজের মা বলে একটু চুপচাপ এখানে এসে বস। তোর সাথে কিছু জরুরী কথা আছে। সবুজ তখন তার মাকে জিজ্ঞেস করে আসলে ঘটনা কি বলতো? তখন সবুজের মা সবুজকে বলে তোর বউ পাশের গ্রামের এক ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়েছে। যাওয়ার সময় গহনাগাটি টাকা-পয়সা যা তুই পাঠিয়েছিলি সব নিয়ে গিয়েছে। এই কথা শুনে সবুজের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।
সবুজ তার মাকে বলে এ কথা আমি বিশ্বাস করি না। ওর সাথে আমার প্রায় প্রতিদিনই ফোনে কথা হতো। আসার দুদিন আগেও ওর সাথে ফোনে কথা হয়েছে। এরকম কোন কিছু হলে আমি বুঝতে পারতাম। সবুজের মা তখন বলে তুই যেহেতু এসেই পড়েছিস। তাহলে তুই নিজেই সবকিছু জানতে পারবি। তখন সবুজ তার শ্বশুরকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে বলে আমার স্ত্রী কোথায়? তখন সবুজের শ্বশুর তাকে বলে তুমি ওকে ভুলে যাও। ও অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে সংসার করছে। তখন সবুজ বুঝতে পারে তার স্ত্রীর এই কাজে তার শ্বশুরবাড়ির সমর্থন রয়েছে। সবুজের কাছে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যায়।
তখন সবুজ রাগ করে তার শ্বশুরকে বলে আপনার মেয়েকে বলবেন। ভালো মতো আমার সন্তানকে এবং আমার যত টাকা পয়সা তার কাছে পাঠিয়েছিলাম সব ফেরত দিয়ে দিতে। না হলে কিন্তু আমি কেস করবো তার নামে। এত বড় প্রতারণার কথা জানতে পেরে সবুজের সারা শরীরে আগুন ধরে যায়। আর রাগে সে গজরাতে থাকে। মরুভূমির প্রচন্ড গরমে তার রক্ত পানি করা টাকা। সবই সে তার স্ত্রীর নামে পাঠিয়েছিলো। (চলবে)
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
অনেক হৃদয় বিদারক একটি ঘটনা এটা।একজন জীবনের এত গুলো বছর রক্তজল করল পরিবার থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে থেকে যার জন্য সে তার কষ্টের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেল।খুবই খারাপ লাগল ভাই গল্পটি পড়ে।আর টাকার লোভে মেয়ের বাবা মাও তাকে সমর্থন দিল। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
এমন ঘটনা হরহামেশাই আমাদের আশপাশে ঘটছে।
আসলে শুধু প্রবাসী নয় এখন প্রায় এসব ঘটনা শোনা যাচ্ছে ৷ যে স্ত্রী তার সুন্দর সাজানো গোছানো সংসার ছেড়ে অন্য কারো সাথে পালিয়ে যাওয়া ৷
যে মানুষটি স্ত্রী সন্তান পরিবার পরিজন ছেড়ে পরিবারের জন্যই টাকা ইনকাম করতে গেছে ৷ দিনশেষে কী না এমনটা হবে ৷
বিয়ে হলো দুটি মনের মিলন যেখানে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পযন্ত একটা বন্ধন ৷ এ কেমন স্ত্রী যে কী না স্বামীর সুখ দুঃখ বুঝে না ৷
যা হোক পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা ৷
এগুলো এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে প্রবাসীদের জীবনে এমন ঘটনা প্রচুর ঘটছে।