ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের মধ্যে একদিন
নমস্কার সবাইকে,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও খুব ভালো আছি। |
---|
আজকের ব্লগে আমি তোমাদের সবার সাথে ইউনিভার্সিটির মধ্যে কাটানো কিছু মুহূর্ত নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করব। প্রথমেই বলে রাখি আমাদের ইউনিভার্সিটির নাম হচ্ছে রবীন্দ্রভারতী ইউনিভার্সিটি। আমাদের এই ক্যাম্পাসটি কলকাতার জোড়াসাঁকোতে অবস্থিত। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বমোট তিনটি ক্যাম্পাস রয়েছে তার মধ্যে এটি একটি। এই ক্যাম্পাসটি মূলত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাচীন বাড়ির প্রাঙ্গণেই তৈরি করা হয়েছে। কবিগুরু এই ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণের বাড়িতেই ছোটবেলা থেকে বড় হয়েছেন এবং এখানেই তার জীবনের অনেকাংশ সময় কাটিয়েছেন। শেষ নিঃশ্বাসও কবি এইখানেই ত্যাগ করেছিলেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত আমাদের এই ক্যাম্পাসটি।
আমাদের এই জোড়াসাঁকোর ক্যাম্পাসটিতে দুটি ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। যেহেতু এই ক্যাম্পাসের বাড়িটি একটা মিউজিয়াম তাই যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটবেলা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যত স্মৃতি ছিল সেগুলো সংরক্ষণ করা রয়েছে। তাছাড়াও ঠাকুরবাড়ির বিভিন্ন জিনিসপত্র এখানে প্রদর্শন করা রয়েছে তাই এখানে অনেকগুলো সাবজেক্টের ডিপার্টমেন্ট করা হয়নি। আমাদের তিনটি ক্যাম্পাসের অন্যান্য গুলোতে অধিকাংশ ডিপার্টমেন্টগুলো রয়েছে। আমাদের এইখানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা খুবই কম বলতে গেলে হতে গোনা কিছু ছাত্র ছাত্রীই এই ক্যাম্পাসটিতে যায়। এই ক্যাম্পাসটি দেখার জন্য দেশ-বিদেশের শত শত মানুষ প্রতিদিন এই ক্যাম্পাসের মধ্যে আসে। যেহেতু এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ছিল সেই জন্য আর কি।
কয়েক মাস আগে আমি যখন এই ক্যাম্পাসের মধ্যে গেছিলাম সেদিন ক্যাম্পাসের মিউজিয়াম বন্ধ ছিল। সেই জন্য বাইরে থেকে যেসব দর্শকরা ক্যাম্পাসটি দেখতে আসে তারা সেদিন ছিল না। তাছাড়াও আমাদের ডিপার্টমেন্টের ছাত্রছাত্রীরাও সেই দিন যায়নি। আমি ক্যাম্পাসের মধ্যে গিয়ে দেখি আমি একাই ক্যাম্পাসে এসেছি আর ক্লাসও হবে না যা গিয়েই জানতে পেরেছিলাম। আমাদের বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসটি অনেকটা দূরেই অবস্থিত ছিল । সেখানে যেতে প্রথমে ট্রেনে করে তারপর মেট্রোতে করে এরপর অনেকটা দূর হেঁটে এই ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে হয়। এতটা পথ যাওয়ার পরে যখন জানতে পারলাম ক্লাস হবে না তখন আর কোন কিছু করারও ছিল না। পরে ভাবলাম এত কষ্ট করে যখন এসেছি ক্যাম্পাসের মধ্যে কিছু সময় কাটিয়ে যাই। পুরো ফাঁকা ক্যাম্পাসে একা একা কেমন জানি লাগছিল। শুধু সিকিউরিটি গার্ড আর দু একজন লোক ছাড়া কেউই ছিল না । আমি ক্যাম্পাসের আশেপাশে একটু ঘোরাঘুরি করলাম, কিছু ফটোগ্রাফিও করলাম। ক্যাম্পাসের মধ্যে হাঁটার সময় বারবার মনে হচ্ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এইখানে বড় হয়েছেন , এইখানে চারপাশে চলাফেরা করেছেন এইসব ইমাজিনেশনে ভেসে যাচ্ছিলাম সময় কাটাতে গিয়ে।
ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ থেকে ভিতরের দিকে যেখানে ঠাকুরবাড়ির বিভিন্ন অনুষ্ঠান হতো সেখানেও গেছিলাম । সেইখানে গিয়ে অনেকটা সময় বসে ছিলাম। সুন্দর একটা ভালো লাগা কাজ করছিল সেইখানে বসে। খুব শান্ত পরিবেশে কবিগুরুর সবকিছু মনে করার চেষ্টা করছিলাম। ছোটবেলা থেকে যা যা পড়ে এসেছি এমনকি সেইগুলোও। কবিগুরুর কিছু কবিতা , কিছু লেখাও মনে পড়ে যাচ্ছিল সেখানে সময় কাটানোর সময়। এখানে বসে কবি কত কিছুই না লিখেছেন। এভাবে ক্যাম্পাসের মধ্যে একা একা প্রায় দু'ঘণ্টার মতো সময় পার করে দিই। এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছিল এরকম একটা জায়গায় একা একা কিছুটা সময় কাটিয়ে। ক্যাম্পাসের মধ্যের পরিবেশটা ছিল অসাধারণ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে সবকিছুই ছিল সাজানো-গোছানো। দু'ঘণ্টা পর ক্যাম্পাসে চারপাশে ভালোভাবে ঘুরে অনেকটা সুন্দর সময় কাটিয়ে বের হয়েছিলাম। বের হয়ে বাইরে থেকে একটু খাওয়া দাওয়া করে নিয়েছিলাম কারণ একটু খিদে পেয়ে গেছিল। খাওয়া-দাওয়া শেষ করেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করি।
ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: রবীন্দ্রভারতী ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস,পশ্চিমবঙ্গ।
দেখেই বোঝা যাচ্ছে নিজ ক্যাম্পাস রবীন্দ্রভারতীয় ইউনিভার্সিটি তে খুবই চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। বিশেষ করে এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো যে মিউজিয়ামের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্ত স্মৃতি রাখা হয়েছে। আসলে এখানে যদি কেউ যায় তাহলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতেও দেখতে পারবে বলে আমার মনে হয়। ক্যাম্পাসে গিয়ে যখন আপনি জানতে পারলেন যে ক্যাম্পাস বন্ধ, ঠিক তখনই আপনি দারুন একটি উদ্যোগ নিয়েছেন ক্যাম্পাস ঘোরাঘুরি করেছেন এবং চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফিও আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো।
হ্যাঁ ভাই এখানে কেউ গেলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে সবকিছুই জানতে পারবে সে।