শৈশব স্মৃতি -বরই কুড়ানো

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম

আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি।

শৈশব স্মৃতি -বরই কুড়ানো

cousins-2491047_1280.jpg

source

বরাবরের মতো আজ ও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আসলে আজ এসেছি ছোটবেলার একটি ঘটনা নিয়ে। ছোটবেলার ঘটনা মনে পড়লে আজ ও বুক ভেটে কান্না আসে। যাইহোক তাহলে শুরু করি আজকের পোস্ট। আমি তখন ক্লাস থ্রি পড়ি।আমি আমার চাচাতো ভাই বাসার ও আমার ছোট ভাই জাহাঙ্গীর।বাসার আর আমি একসাথে পড়ি। দুই জনে অনেক মিল ছিল । আমরা তিনজন সকালে প্রতিনিয়ত বরই টুকাতে যেতাম। অবশ্যই আমি আর বাসার বেশি যেতাম। তবে মাঝে মাঝে জাহাঙ্গীরকে নিতাম।আসলে আমার এক দাদীর বিশাল বিশাল বরই এর গাছ ছিল। বরই গুলো যেমন ছিল মিষ্টি তেমনি অনেক বড় বড়। আসলে অনেক মজার ছিল।

তবে কেউ চায়লে দাদী বরই দিতে চায় তো না। আর আমরা প্রায় প্রায় সকালে গিয়ে বরই টুকিয়ে আনতাম। তবে আমরা যে বরই টুকাতে যেতাম একথা আমার বাবা মা জানত না। আসলে আমরা আজানের পরেই যেতাম। দাদীর গাছ বাদে আরো অনেক গাছ ছিল কিন্তু দাদীর গাছের বরই এর মতো কোন বরই ছিল না। আমাদের মতো অনেকেই বরই টুকাতে আসত।সবাই অনেক সকল সকাল আসত আমরা যেতাম পরে। একদিন ভাবলাম আজ আজান দেবার সময় যাব।সত্যি আমার চাচাতো ভাই বাসার এসে আমাকে ডাক দিল তখন ভোর সাড়েচারটা বাজে। আমি আবার আমার ছোট ভাই জাহাঙ্গীরকে ডেকে সাথে নিয়ে গেলাম।

আমরা সবাই আগে চলে গেলাম দাদীর বরই গাছ তলা। সেদিন গিয়ে দেখি অনেক বরই পড়ে আছে। আসলে সেদিন কেউ বরই টুকাতে আসেনি। আমরা প্রায় ব্যাগ ভর্তি বরই পেলাম। বরই গুলো পেয়ে আনন্দে সবাই আত্মহারা হয়ে পড়েছি।সেদিন এতো পরিমাণ বরই পেয়েছি তাই আর অন্য গাছতলার যাবার দরকার ছিল না। তারপর জাহাঙ্গীর ও বাসারকে আমি বললাম তোরা বরই গুলো নিয়ে যা আমি অন্য গাছ গুলো একটু দেখে আসি।উরা বরই গুলো নিয়ে রওনা দিল।

যে দাদীর বরই গাছ ছিল উনার ছেলেরা আগের দিন সিডি চালিয়ে দেখেছিল। আসলে উনারা কারেন্টের চুরা লাইন দিয়ে সিডি দেখেছে।রাতভর দেখে সেটা আর খোলার মনে ছিল না।সেই তার কিভাবে যেন ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে আছে । এদিকে বাসার আর জাহাঙ্গীর আনন্দ বরই গুলো নিয়ে আসতে লাগলো। হঠাৎ বাসারের পা পড়ল সেই কারেন্টের তারের ওপর। আর সাথে সাথে ওকে কারেন্টে ধরে ফেলল,আর ছাড়ছে না। এদিকে জাহাঙ্গীর দেখল বাসার তারের সাথে ঝুলছে তাই ওকে টান দিতে লাগলো। টান দেবার সাথে সাথে ওকে ছিঁটকে দূরে ফেলে দিল। তারপর জাহাঙ্গীর বাড়িতে এসে সবাইকে খবর দিল আমাকে কারেন্টে ধরেছে আর বাসার মারা গেছে। আসলে কারন্টে ধরার সাথে সাথে বাসার মারা গিয়েছে। সত্যি ওর কথা মনে পড়লে আজ ওবুক ভেটে কান্না আসে।আজ যখন লিখছি অনেক মনে পড়ছে ওকে।আপনারা সবাই দোয়া করবেন আল্লাহ যেন ওকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আমিন।
প্রয়োজনীয়তথ্য
ফটোগ্রাফার@parul19
ডিভাইসLGK30
লোকেসনফরিদ পুর

g6br9NKHvSo72r7xnHSpj1hkcv6csCddDyMEi1jUecgDw3N4Yfy6YpdUvdCyw6kiWy8pVjCrDNVML5aQoBLFZoYCEFX6JNcKgvs5UsgTeh3J1kkfdqcLg16eYhyDuv...vc46UPdpEf1AVVuUWBn8RUMuwUdmFWuyrwZEyyuDTDyVbPcmkcnLzvaPhyPaKzykkdRpMiY3R5t15G2er9hQQRrN59nMWe2xMnGw1fVdX6StCUsD1ukGkadgPX.gif

আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkKeUxjpvDicJC19Ww3PsohAvFMrugrSu1pSg638699Yh7Ad6pYix9LvdLXvARH2hxGmJfzFWD97xUzBMCRy1Fz5WLidW545LKQ.png

আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।

hPb2XtKwBGiwRzkrzveR1sSPznD4Wv2miQhHXdT4AQFLAHkykY3jBdZmCxJjk6ztifZuRFBV7zoGPBbLN7Lkye6VFmom81baPfeUCEyY7AHbTLxQc1o85rEUTzNp98...YVvDBETk3mJPgn7FZvEHUXrxkZzx8XXwvxZ1XaAXaUKMY1J4Jnwp1qFNdww2VMXKd9tbLkXzNUZiDGZRtCm2dynbYGBzJduBamEPX9ALJK2XX9TDqYeaKh8Gtd.gif

5ShzsKnKF7vppGeV6VN3m3GSDcLoRruAhMmifZtFSDkYScQy7C44Q43NAfhUa73Y1nHv3cvSKChk62pnPhuqhkLAnzA47j47NEp6Q4f9dRCvyy31KSeqyMAMi2Tg2svDUEiUHJR3KGZmtezgQhN2HrwQ.png

Sort:  
 last year 

বিশ্বাস করেন আপনার পোষ্টটি পড়তে গিয়ে নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে জল ঝরে পড়ল। আপনি এই পোস্ট কিভাবে লিখেছেন বুঝতে পারছিনা। অনেক কষ্ট করে লিখেছেন অবশ্যই কান্নাও করেছেন কারণ আপনার পোস্ট টি পড়তেই আমার কান্না পাচ্ছে আর আপনি তো পুরা সৃতিচারণ করে লিখেছেন। আমি পোস্ট টি পড়ার সাথে সাথে লিখতে পারি নি এতোটাই খারাপ লাগছিলো।একটু পর কমেন্ট করছি। এমন পরিস্থিতি কোন শত্রুর ও না হোক।

 last year 

জি আপু আপনি ঠিক বলেছেন এ কথা মনে হলেই কান্নায় ভেঙে পড়তে হয়। তবে অনেক কষ্টে করে লিখেছি। এখনো কান্না আসে আপু। দোয়া করবেন এমন যেন কারো না হয়।

 last year 

আপনি এমন একটি ঘটনা শেয়ার করবেন আসলে বিশ্বাসও করতে পারি নাই। কত আনন্দ করে বড়ই কুড়াতে গেলেন। কিন্তু সেখানে একজন মারা গেল সেটা খুবই খারাপ লাগার একটি কথা। দোয়া করি আপু আপনার বন্ধু যেন জান্নাতে নসিব হয়। ছোটকালের এমন কিছু স্মৃতি আছে যেগুলো আসলে কখনো ভুলার মত নয়। যদিও আপনার স্মৃতি টা খুবই মারাত্মক এবং জঘন্য ছিল।

 last year 

জি আপু এমন স্মৃতি কখনো ভুলার নয়,ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65847.68
ETH 2679.11
USDT 1.00
SBD 3.08