"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ০৮ ||"মচমচে বেগুনে ইলিশের ঝুরি ভাজা "||১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য||
হ্যালো হ্যালো হ্যালো!!
সবাই কেমন আছেন?আশা করছি সবাই খুব ভালো আছেন, আমিও ভালো আছি।
আজকে আমি অনেক বেশি এক্সাইটেড। তার কারণ আমি " আমার বাংলা ব্লগ " কমিউনিটিতে প্রথম কোনো কনটেস্টে অংশগ্রহণ করছি। আর তার চেয়েও বেশি এক্সাইটেড কারণ আমি আপনাদের সামনে আজকে নিয়ে এসেছি একদম নতুন একটি রেসিপি। আমি আজকের এই রেসিপিটি তৈরি করেছি একদম ১০০% নিজের আইডিয়া থেকেই।
আমি ভাবছিলাম ইলিশের সাথে কি খেতে বেশি মজা!সাথে সাথে আমার মাথায় এলো বেগুন। তাই জন্য বানিয়ে ফেললাম আমার এই ইউনিক রেসিপিটি।
আমার আজকের রেসিপিটির নাম আমি দিয়েছি - " মচমচে বেগুনে ইলিশের ঝুরি ভাজা "
এই নামটি দেওয়ার কারণ, আমার ইলিশের এই রেসিপির মূল বিষয় হলো " মচমচে বেগুনের ভিতরে মজাদার ইলিশের ঝুরি ভাজা। "
"মচমচে বেগুনে ইলিশের ঝুরি ভাজা " রেসিপিটির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
১।একটি ইলিশ মাছ ( আমি নিয়েছি ১ কেজি ৭০০ গ্রাম)
২।বেগুন বড় সাইজের চারটি
৩।টমেটো( প্লেট ডেকোরেশন এর জন্য)
৪।গাজর(প্লেট ডেকোরেশন এর জন্য)
৫।পেঁয়াজ পরিমাণ মতো
৬।ব্রেড ক্রাম্বস
৭।ধনিয়া পাতা
৮।কর্ণ ফ্লাওয়ার
৯।অল্প সরিষার তেল ( ২ চামচ)
১০।সয়াবিন তেল পরিমাণ মতো
১১।কাঁচা মরিচ ( স্বাদ মতো)
১২।লাল মরিচের গুড়ো এক চা চামচ
১৩।হলুদ গুড়ো এক চা চামচ
১৪।ধনিয়া গুড়ো এক চা চামচ
১৫।লবণ এক চা চামচ
১৬।গরম মসলা এক চা চামচ
১৭।পাঁচফোড়ন আধা চামচ
১৮।গোটা সরিষা আধা চা চামচ
১৯।পেঁয়াজ বাটা এক চামচ
২০।শসা (প্লেট ডেকোরেশন এর জন্য)
২১।দুইটি মুরগির ডিম
"মচমচে বেগুনে ইলিশের ঝুরি ভাজা " রেসিপিটির প্রস্তুত প্রণালীঃ
ধাপ ১ঃ
প্রথমে ইলিশ মাছটি নিলাম।
ধাপ ২ঃ
ইলিশ মাছটি পরিষ্কার করলাম ভালো ভাবে।
ধাপ ৩ঃ
মাছগুলোকে কেটে একটি বাটিতে নিলাম।
ধাপ ৪ঃ
এখন মাছ গুলোকে একটি পাতিলে নিলাম।
ধাপ ৫ঃ
এখন তাতে আধা চামচ হলুদ গুড়ো,আধা চামচ লাল মরিচ গুড়ো, আধা চামচ গরম মশলা, পরিমাণ মতো লবণ, আধা চামচ পেঁয়াজ বাটা দিলাম।
ধাপ ৬ঃ
এখন সব মসলা মাছের সাথে মাখালাম।
ধাপ ৭ঃ
এখন তাতে অল্প করে পানি নিলাম।
ধাপ ৮ঃ
এখন পাতিলটি চুলায় দিলাম।চুলার আঁচ মাঝারি করে দিয়েছি।
ধাপ ৯ঃ
এখন পেঁয়াজ, মরিচ,ধনেপাতা কেটে নিলাম।
ধাপ ১০ঃ
এই ফাঁকে চারটি বেগুন ধুয়ে নিলাম।
ধাপ ১১ঃ
বেগুনের উপরে নিচে কেটে নিলাম।
ধাপ ১২ঃ
এখন বেগুন চারটিই একই ভাবে কাটলাম।
ধাপ ১৩ঃ
এখন চুলায় একটি পানি ভর্তি পাতিল দিলাম এবং তাতে বেগুন কাটা গুলো দিয়ে দিলাম।
ধাপ ১৪ঃ
তাতে এক চামচ লবণ দিলাম এবং চুলার আঁচ মাঝারি করে দিলাম।
ধাপ ১৫ঃ
একটু পর বেগুন গুলো নরম হয়ে আসলে এবং কালার চেঞ্জ হয়ে গেলে চুলা বন্ধ করে দিলাম।
ধাপ ১৬ঃ
এখন বেগুনের টুকরো গুলোর পানি ঝরতে দিলাম।
ধাপ ১৭ঃ
এবার একটু পর দেখলাম মাছগুলোর পানি শুকিয়ে গেছে। তাই চুলার আঁচ বন্ধ করে দিলাম।
ধাপ ১৮ঃ
এখন মাছগুলোর কাঁটা বেছে নিচ্ছি।
ধাপ ১৯ঃ
মাছের কাঁটা বাছা শেষ।
ধাপ ২০ঃ
এখন একটি কড়াইয়ে সয়াবিন তেল দেওয়ার পর তাতে পেঁয়াজ আর কাঁচা মরিচ দিলাম।
ধাপ ২১ঃ
এখন সেগুলোকে একটু ভেজে নিচ্ছি।
ধাপ ২২ঃ
পেঁয়াজ গুলো একটু লালচে রঙ ধারণ করলে তাতে দুই চামচ সরিষার তেল এবং পাঁচফোড়ন দিলাম।
ধাপ ২৩ঃ
এখন সব গুড়ো মশলা গুলো এবং পেঁয়াজ বাটা দিলাম।এবং ভালো ভাবে মিশালাম।
ধাপ ২৪ঃ
এখন ধনিয়াপাতা দিলাম।
ধাপ ২৫ঃ
এখন সব ভালোভাবে মিশালাম।
ধাপ ২৬ঃ
এখন তাতে কাঁটা বেছে রাখা মাছ গুলো দিলাম।
ধাপ ২৭ঃ
এখন সব কিছু একসাথে মেশালাম।
ধাপ ২৮ঃ
এখন চুলা থেকে নামিয়ে ফেললাম।
ধাপ ২৯ঃ
এখন দুটি ডিম কে ফেটিয়ে তার মধ্যে পরিমাণ মতো লবণ আর দুই চিমটি লাল মরিচের গুলো দিলাম।
ধাপ ৩০ঃ
এখন ব্রেড ক্রাম্বস ও ফেটানো ডিম নিলাম।
ধাপ ৩১ঃ
এখন বেগুন গুলোকে ফেটানো ডিমের মধ্যে চুবালাম।
ধাপ ৩২ঃ
এখন বেগুন গুলোকে ব্রেড ক্রাম্বস এ গড়িয়ে নিলাম।
ধাপ ৩৩ঃ
এখন বেগুনের টুকরো গুলো একে একে সয়াবিন তেলে দিলাম।
ধাপ ৩৪ঃ
লাল হয়ে গেলে উঠিয়ে নিলাম।
ধাপ ৩৫ঃ
সব গুলো বেগুন ও বেগুনের উপরের ডাটা গুলো ভাজা শেষ। (ডাটা গুলো ডেকোরেশন এর জন্য)
ধাপ ৩৬ঃ
এখন একদম সামান্য সময়ের জন্য ঠান্ডা করতে দিলাম।
ধাপ ৩৭ঃ
এখন বেগুনের ভিতরের অনেকটা বের করে ফেললাম।
ধাপ ৩৮ঃ
সব গুলো একই ভাবে করলাম।
ধাপ ৩৯ঃ
এখন বেগুনের ডাটা গুলো উপরে দিয়ে দেখলাম ঠিক ভাবে বসছে কিনা।
ধাপ ৪০ঃ
এখন প্লেটটি সাজিয়ে নিলাম নিজের মতো করে।প্লেট সাজাতে ব্যবহার করেছি গাজর, আঙ্গুর, পুদিনা পাতা, টমেটো।
ধাপ ৪১ঃ
টমেটো আর পুদিনা পাতা দিয়ে একটি ফুল বানিয়েছি।
ধাপ ৪২ঃ
এখন বেগুনের ভিতর ইলিশের ঝুরি ভাজা গুলো চেপে চেপে ঢুকিয়ে দিলাম।
ধাপ ৪৩ঃ
বেগুনের অনেক উপরে পর্যন্ত ইলিশ মাছের ঝুরি ভাজা গুলো দিয়েছি।
ধাপ ৪৪ঃ
এখন ইলিশের ঝুরি ভাজাতে পূর্ণ মচমচে বেগুন গুলো প্লেটে রাখলাম।
ধাপ ৪৫ঃ
এখন টুপির মতো করে উপরের বেগুনের ডাটা গুলো দিয়ে দিলাম।
ধাপ ৪৬ঃ
এখন কিছু ছবি তুললাম।
ধাপ ৪৭ঃ
এখন আমার মচমচে বেগুনে ইলিশের ঝুরি ভাজার প্লেটটি হাতে নিয়ে ছবি তুললাম।
এইতো শেষ আমার " মচমচে বেগুন ইলিশের ঝুরি ভাজা " তৈরি। আমি এই প্রথম নিজে রেসিপি তৈরি করেছি তাও একদম সম্পূর্ণ নিজের চিন্তা ধারায়। আর এই আইটেমটি গোল গোল করে কেটে নাস্তার মতো অথবা ভাতের সাথেও খাওয়া যায়। একই সাথে বেগুনের মচমচে স্বাদ আর কাঁটা ছাড়া ইলিশ মাছ খেতে যে কতটা মজা হয়েছে তা বলার বাইরে।
আর হ্যা, আমি কিন্তু আমার রেসিপিটি খেয়েছি। তার আগে অবশ্যই অনেক পাওয়ারি একটি এলার্জীর ওষুধ খেয়ে নিয়েছি। না হলে আমার অবস্থা তো খারাপ হয়ে যেতো। রেসিপিটি অনেক বেশি মজা লেগেছে আমার কাছে আর বিশ মিনিটের মধ্যেই সবাই মিলে খেয়ে শেষ করে ফেলেছে। তাহলে ভাবুন কতটা মজা হয়েছে।
সবাই প্লিজ প্লিজ জানাবেন কেমন লেগেছে আমার রেসিপিটি। আমি সত্যিই খুব কষ্ট করে বানালাম কারণ আমি একদম ই অনেক বেশি রান্না বান্না করিনা।তাই জন্য বলছি অবশ্যই জানাবেন আপনাদের মতামত।
ছবিগুলো তুলেছি আইফোন ১২ প্রো ম্যাক্স দিয়ে।
লোকেশন:
What's 3 Word Location
ধন্যবাদ দাদা আপনাকে এতো মজার একটি কনটেস্ট দেওয়ার জন্য। আমি অংশগ্রহণ করতে পারাতে অনেক খুশি।
ভালোবাসা নিবেন ❤️
ইতি, @nusuranur
ওয়াও আপু অসাধারণ হয়েছে আপনার রেসিপিটি। এটি আমার কাছে সত্যিই ইউনিক একটি রেসিপি এর আগে কখনো খাই নি। আপনার রেসিপিটি দেখে জিভে জল এসে গেলো। দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে অনেক মজার হয়েছে।
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা আপু।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
ওয়াও আপু জাস্ট অসাধারণ। আপনার রেসিপি টা চমৎকার হয়েছে। আপনার চিন্তাধারার প্রশংসা করতে হয় আপনি একটি ভিন্ন ধরনের রেসিপি উপস্থাপন করেছেন যা আমার খুবই ভালো লেগেছে । শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
আপু খুবই সুন্দর হয়েছে আপনার রেসিপিটি তবে খেয়ে দেখার দরকার ছিলো স্বাদটা কেমন হয়েছে। আপনি ধাপে ধাপে সব কিছু উপস্থাপনা করেছেন যা দেখতে খুবই ভালো লাগছে।শুভ কামনা রইল আপু আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
একদিন খাওয়াবো।
ওরে বেগুন রে শেষ মেষ ইলিশের জন্য জীবন দিয়ে দিলো, হা হা হা
রেসিপিটি দারুণ লেগেছে আমার কাছে, কিছুটা ব্যতিক্রম এবং ইউনক লেগেছে আমার কাছে।
উপস্থাপনাটি সুন্দর হয়েছে কিন্তু 27 নং ধাপে কালো কড়াই আর 28 নং ধাপে এসে ফর্সা হয়ে গেলো কেমনে? চিন্তায় পড়ে গেলাম।
কড়াই আলাদা করছি ভাই। 😂😂
ওইটা তে তো শুধু ভাজার কড়াই আর ওইটা আবার দরকার ছিলো বেগুন ভাজতে। তাই
আপনি পারেন ও।
হ্যা ভাই চেষ্টা করলাম।
হি হি হি আমি না পারলে কে পারবে? খেয়েছেন তো নাকি? বেশী খাইয়েন না আবার, তাইলে কিন্তু হয়ে যেতে পারে :P
আমি ওষুধ খাইছি, একদম ভয় লাগাবেন না।,🥺🥺
চমৎকার হয়েছে রেসিপিটি আপু। একদম ইউনিক একটি কন্সেপ্ট ছিল আপনার। প্রতিভার খুব সুন্দর বহিঃপ্রকাশ করেছেন আপনি।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমার বোন এতো সুন্দর করে ইলিশ ও বেগুন দিয়ে মচমচা করে রান্না করেছেন। সত্যি এটি সম্পূর্ণ আলদা একটি রেসিপি। আমি কখনো দেখিনি। শুভকামনা রইল আপু।
অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ আপুমণি।
সম্পূর্ণ unique একটি রেসিপি পোস্ট করেছেন আপনি ।বেগুন আর ইলিশের এই combination টি দারুণ হয়েছে।খেতে যে অনেক সুস্বাদু ছিলো সেটা বোঝায় যাচ্চে।এই রকম একটি নতুন ও সুন্দর রেসিপি আবিস্কার ও তা উপস্থাপন এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
এটা আমার অনেক বড় পাওয়া যে আপনার পছন্দ হয়েছে।
আপনি নতুন এক রান্নার উন্মোচন করলেন আপু।ইলিশ মাছ দিয়ে যে কত রকমের রান্না হয় তা আপনাদের দ্বারা প্রমাণিত। বেগুন দিয়ে ইলিশ ঝুড়ি অসম্ভব সুন্দর ছিল। খেতে পারলে ভালো লাগতো কিন্তু অনুভব তো একটু করতেই হবে। অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য আপু। ❤️❤️
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
ইলিশ মাছ আমার খুব প্রিয়। আপনার রেসিপিটি অসাধারণ হয়েছে। ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে মাঝে উপস্থাপন করেছেন। নিশ্চয় অনেক সুস্বাদু হয়েছে ।শুভকামনা আপনার জন্য।
ধন্যবাদ।
বাহ, আপু দারুণ একটি রেসিপি, সবাই দেখছি একটু নতুন করে ইলিশ রেসিপি শেয়ার করছে। আপনি কিন্তু অনেক সুন্দর করে ইলিশ রেসিপি ধাপে ধাপে উপস্থাপন করেছেন। প্রিতিটি ছবি অসাধারণ ছিল। অনেক শুভ কামনা রইল আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে অনেক বেশি ধন্যবাদ আপু।