ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরা।
আমি রাহুল হোসেন। আমার ইউজার নেমঃ@mrahul40।বাংলাদেশ থেকে।আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
- বাড়ির পথে।
- ৩১,মার্চ ,২০২৪
- রবিবার
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসি কেমন আছেন আপনারা? আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আবারো হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। অনেকদিন হলো ঢাকাতেই অবস্থান করেছি। বিশেষ করে ইউনিভার্সিটি ক্লাসের জন্য রমজান মাসেও ঢাকাতে থাকতে হয়েছে। বসে বসে প্রহর গুনছি কখন ইউনিভার্সিটি ক্লাস গুলো শেষ হবে আর কখন বাড়িতে যেতে পারবো। রমজান মাসে ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে ক্লাস করতে অনেক বেশি প্যারা লাগে। তারপরও কিছুই করার নাই ঈদের পর আবার পরীক্ষা সেজন্য ক্লাস ঠিকঠাক মতো করতে হবে। তবে এই সপ্তাহে ছিল আমার শেষ ক্লাস।
ক্লাস শেষ হলে মন কি আর ব্যস্ততম নগরীতে বসে থাকতে ইচ্ছে করে। ক্লাস শেষ হয়েছে শনিবার বিকেলে কিন্তু আমরা তখন আসতে পারবো না কারণ আস্তে আস্তে রাত হয়ে যাবে। সেজন্য চিন্তা করি রবিবার অনেক সকালে আমি আর এবং আমার বন্ধু অংকন বাইক নিয়ে রওনা করব বাড়ির উদ্দেশ্যে। আমরা সাধারণত ঢাকা থেকে যখন বাড়ি আসি তখন খুব সকালেই বের হয়। কারণ অনেক সকালে বাইক রাইট করতে অনেক বেশি ভালো লাগে আর রাস্তাগুলো অনেকটাই ফাঁকা থাকে। আর যেহেতু রমজান মাস চলছে রোজা রেখে তো আর ভর দুপুরে বাইক রাইড করে বাড়িতে আসা যাবে না। আসা যাবে না বলতে ভুল হবে আসতে পারবো কিন্তু অনেক বেশি সমস্যা হবে বিশেষ করে গলা শুকিয়ে যাবে। তাইতো সিদ্ধান্ত নেই সাহরি খাওয়া শেষ করে আমরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করব।
আমরা সকাল পাঁচটার মধ্যেই বাইক নিয়ে বের হয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করি। যখন বের হলাম চারিদিকে সুসান নীরবতা কিছু কিছু জায়গায় সিকিউরিটি গার্ড রয়েছে তাছাড়া রাস্তা পুরাটাই ফাঁকা। এজন্য অন্যরকম শহর ঢাকা। অনেক বেশি ভালো লাগছিল এত সকালে বাইক নিয়ে বের হওয়াতে। বেশি সকালে বাইক নিয়ে বের হলে একটা শীতল আবহাওয়া দেখা মেলে সেটা অনেক বেশি ভালো লাগে। আর বেশ কয়দিন হচ্ছে ভালোই গরম পরছে আর এই গরমের মধ্যে যখন সকালে বের হয় শীতল স্নিগ্ধতা হৃদয়টাকে কোমল করে তোলে । সকালে সূর্য ওঠার আগে আগেই আমরা মানিকগঞ্জ পেয়ে গিয়েছি। যেহেতু এত সকালে মানিকগঞ্জ চলে এসেছি তখন আমরা ক্যালকুলেশন করে ফেলেছি আমরা নয়টার মধ্যেই বাড়িতে পৌঁছে যাব।
Device : Realme 7
What's 3 Word Location :
কিন্তু হঠাৎ করে কালো মেঘে আকাশটা ছেয়ে গেল। যতই সামনের দিকে এগোচ্ছে ততই অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে। মনে হচ্ছে যেন অন্য জগতে চলে এসেছি হঠাৎ করে চারিদিকে অন্ধকারছন্ন পরিবেশ। কিছু সময় জন্য বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আলোর দেখা মিলতে মিলতে হঠাৎ করে চাই দেখ যখন অন্ধকার ঘুনিয়ে আসছে মনে হচ্ছে এই হয়তো ঝড়ো হওয়া শুরু হবে। তারপর আমরা এগোতে থাকি যত দূরে আগানো যায়। হঠাৎ করেই জোরে বাতাস শুরু হয়ে গেল বৃষ্টিও শুরু হয়ে গেল সাথে আমরা দ্রুত একটি পেট্রোল পাম্পে গিয়ে আশ্রয় নেই। বেশ ভাল জোরে বাতাস বইতে শুরু হল চারিদিকে আরও বেশি অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে মনে হচ্ছে আবার রাত হয়ে গিয়েছে। পরিবেশটা অনেক বেশি ভয়ংকর ছিল সাথে এডভেঞ্চারও। আমরা অপেক্ষা করতে থাকি ঝড়ো হওয়া কখন কমবে। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পর ঝড়ো হওয়া কমে একটু আলোর দেখা মিললো তখন আমরা আবার সাহস নিয়ে সামনের দিকে এগোতে শুরু করলাম।
Device : Realme 7
What's 3 Word Location :
যখন বৃষ্টিটা কমে আসে তখন আমরা আবার যাত্রা শুরু করি। বেশিদূর আর যেতে পারলাম কই আমাদের এখনো ফেরি পারাপার হওয়া বাকি। আবার ১০ কিলোমিটার যেতে না যেতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। এখন আরেকটি স্থানে আমরা আশ্রয় টিপ টিপ বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে তো আর যাওয়া যাবে না কারণ আমাদের গন্তব্য অনেক দূর। এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে একসময় ক্লান্ত হয়ে গেলাম। পাশেই বসার জন্য ব্রেঞ্চ ছিল ওখানে বসে থাকতে থাকতে একটি সময় বিরক্ত হয়ে শুয়ে পড়লাম। বৃষ্টি মোটামুটি কমতে এখানেও ৪০ থেকে ৫০ মিনিট সময় লেগে গেল। বৃষ্টি যখন কমে গেল তখন আমরা আবার যাত্রা শুরু করলাম। অবশেষে ফেরিতে গিয়ে পৌছালাম কিন্তু পদ্মা নদীর রূপ দেখে অবাক হলাম বেশ ভয়ঙ্কর একটি রূপ ছিল। এটাকে আবার ভয়ংকর সুন্দর বলা যায় দেখতে দারুন লাগছিল।
Device : Realme 7
What's 3 Word Location :
সকল ঝড়ঝাপটার মাঝেও একটা ভালো লাগা কাজ করছে যে আমরা বাড়িতে যাচ্ছি। সেজন্য সবকিছু উপেক্ষা করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি বাড়ির উদ্দেশ্যে মনটাও বেশ ভালো। অনেকদিন পর গ্রামের বাড়িতে যাব মন খারাপ থাকলে চলবে নাকি? গ্রাম মানেই আত্মার প্রশান্তি অনেক বেশি ভালো লাগে গ্রামটাকে। এখন ফেরি পারাপার হতে একটু সময় বেশি লাগে। কারণ এখন এই রুটে গাড়ির চাপ খুবই কম।ফেরি দাঁড়িয়ে থাকে গাড়ির জন্য। যখন ফেরিটা গাড়ি ধরা পরিপূর্ণ হয় তখন ছেড়ে যায় দৌলতদিয়া উদ্দেশ্যে। অবশেষে আমরা নদীর গভীরে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি অপরূপ সুন্দর করতে করতে।
Device : Realme 7
What's 3 Word Location :
দীর্ঘ ৩০ মিনিট ফেরীতে থাকার পর আমরা অবশেষে কিনারার দেখা পেলাম। তারপর সিরিয়াল অনুযায়ী আমরা সবাই ফেরি থেকে নেমে আবার রওনা করলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। এখন আমাদের আরো ৬০ কিলোমিটার পথ যাওয়া বাকি। আমাদের সময় লাগবে দেড় ঘন্টা। আমাদের ক্যালকুলেশন অনুযায়ী আমরা নয়টার মধ্যে বাড়িতে পৌঁছাতে চেয়েছিলাম কিন্তু বৃষ্টির কারণে ২ ঘন্টা বিলম্ব হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ার পর প্রকৃতিটা আরো বেশি সুন্দর হয়। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে আমরা অবশেষে বাড়িতে এসে পৌঁছালাম। অনেকদিন পর গ্রামে এসে অনেক বেশি ভালো লাগছে। আজ এ পর্যন্তই দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্টে অন্য কোন গল্প নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।
আমি মোঃ রাহুল হোসেন, আমার ইউজার নেম @mrahul40। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন।
ঈদের ছুটি পেলেই বাড়ি ফেরার মধ্যে অন্যরকমের একটা আগ্রহ কাজ করে। সকালের দিকে বের হয়েছেন তাই খুবই স্বস্তির সাথে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন কারণ এই সময়টাতে রাস্তায় কোন জ্যাম থাকে না। আর রাস্তার মধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছিল তাহলে তো দেখছি আপনাদের অনেক কষ্টও করতে হয়েছে।
জি ভাইয়া সকালের পরিবেশটাও বেশ ভালো থাকে। ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য
আসলে শহরে জীবন সবার ভালো লাগেনা। আমার কাছেও এরকম বন্দি জীবন একদম অসহ্য লাগে, তবুও জীবন জীবিকার তাগিদে আমাদের শহরের অলিগলিতে বসবাস করতে হয়। আপনারা দুই বন্ধু একসাথে বেরিয়ে সকাল নয়টার মধ্যে বাড়িতে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন কিন্তু রাস্তায় বিভিন্ন বিলম্ব না কারণে দুই ঘন্টা দেরি হয়েছে। যাই হোক তবুও এত ঝামেলা পেরিয়ে খুব ভালোভাবে বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন এটাই সবথেকে বড় ব্যাপার। আপনাদের ঈদ চমৎকার কাটুক এই কামনা করছি।
জি ভাইয়া জীবন ও জীবিকার তাগিদে আমাদেরকে থাকতে হয় ব্যস্ততম নগরীতে। অসংখ্য ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য
এই মৌসুমে হুটহাট করে এরকম ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়ে যাচ্ছে আর ঢাকার দিকে তো ঝড়-বৃষ্টি একটু বেশিই হচ্ছে। আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে দুই ঘন্টা বিলম্ব হয়েছে তারপরও স্বাভাবিকভাবে বাড়ি ফিরেছো এটাই আলহামদুলিল্লাহ।
একদম ঠিক বলেছেন এখন হুটহাট করে যখন তখন বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। অসংখ্য ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য
আসলে শহরে থাকার যেরকম সুবিধা রয়েছে সেরকম অনেক অসুবিধাও রয়েছে৷ এখন অনেকে বাড়িতে চলে আসছে এবং এইজন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হচ্ছে৷ আপনারা দুই বন্ধুর বাড়িতে এসেছেন এবং বিভিন্ন বিড়ম্বনার জন্য দুই ঘন্টা দেরি হয়ে গিয়েছে শুনে খুবই খারাপ লাগছে৷ আসলে এখন তো একটু কমই দেরি হয়েছে৷ যদি আর কিছুদিন পরে আসতেন তাহলে আরো অনেক দেরি হতো৷ কারণ তখন শহর থেকে সকলে চলে আসবে তাদের বাড়িতে৷
বৃষ্টিতে না পড়লে এতটা দেরি হতো না। ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য
একেবারে ঠিক বলেছেন। আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ৷
ব্যস্তময় শহর ছেড়ে তাহলে অবশেষে গ্রামে এসেছেন ঈদের জন্য। আপনারা দুজন একসাথে বাইক যাত্রায় এসেছেন জেনে ভালো লাগলো। অনেকটা পথ অতিক্রম করে আপনারা এসেছিলেন। তাও আবার বৃষ্টির জন্য অনেক বেশি লেট হয়ে গিয়েছিল। তবে যাই হোক পরিবেশটা উপভোগ করতে করতে এসেছিলেন শুনেই ভালো লেগেছে। আসলে বৃষ্টির পরে চারপাশ অনেক বেশি পরিষ্কার হয়। আর পরিবেশটা অনেক বেশি সুন্দর লাগে। অনেকদিন পর গ্রামের বাড়িতে এসে নিশ্চয়ই ভালো সময় অতিবাহিত করতেছেন এখন। আপনাদের কাটানো মুহূর্তটা সুন্দর করে তুলে ধরেছেন দেখেই ভালো লেগেছে।
জি আপু অনেকদিন পর বাড়িতে এসে বেশ ভালো লাগছে। এখন গ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করব।
বোঝাই যাচ্ছে বাড়িতে যাওয়ার জন্য অনেকটাই এক্সাইটেড ছিলেন যার কারণে খুব ভোরবেলা রওনা করেছিলেন বাড়ির উদ্দেশ্যে। যদিও সকাল সকাল বাসায় পৌঁছাতে চেয়েছিলেন কিন্তু বৃষ্টির কারণে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছিল তবে বৃষ্টির কারণেই সুন্দর প্রকৃতি দেখতে পেরেছেন। আপনি তো এরকম প্রকৃতিতেই চান, যাইহোক অবশেষে ভালোভাবে বাসায় পৌঁছাতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। আশা করি দিন গুলো ভালই কাটাবেন।
প্রকৃতিটা ভালো ছিল কিন্তু হঠাৎ করে অন্ধকার হয়ে যাওয়াতে ভয় লাগছিল। ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য