জেনারেল রাইটিং পোস্ট || দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের জীবন দিশেহারা
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। এই পোস্টের টপিক হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের জীবন দিশেহারা। আমরা সবাই জানি যে, দ্রব্যমূল্যের দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এককথায় বলতে গেলে বর্তমান বাজার একেবারে লাগামহীন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ দিন আনে দিন খায়। তাদের পক্ষে বর্তমানে সংসার চালানো একেবারে মুশকিল হয়ে গিয়েছে। কিছুদিন আগেও আমাদের সবার ধারণা ছিলো দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। কিন্তু আমাদের সবার ধারণা একেবারে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। মাঝেমধ্যে বাজারে গিয়ে আমাদেরই মেজাজ খারাপ হয়ে যায় দ্রব্যমূল্যের দাম দেখে।
আর যারা দিনমজুর, তাদের অবস্থা তো একেবারে বেগতিক। বর্তমানে যেকোনো সবজির দাম ৮০ টাকা কেজির নিচে না। তাছাড়া ১ কেজি কাঁচামরিচের দাম হচ্ছে ২০০ টাকা। কিছুদিন আগে ৪০০/৫০০ টাকাও ছিলো। তাছাড়া মাছের এবং মুরগির দামও অনেক বেশি। সেদিন কক মুরগি কিনলাম ৩২০ টাকা কেজি। নদীর মাছ কিনতে গেলে নূন্যতম ৮০০ টাকা কেজি। তাছাড়া চাষের মাছের দামও ৩০০/৪০০ টাকা কেজি। গতকাল সকালে বিভিন্ন ধরনের মাছ কিনতে গিয়েছিলাম। শুধুমাত্র মাছ কিনেই ৫,০০০ টাকা চলে গিয়েছে। এখন ব্রয়লার মুরগির ৩০ টা ডিম কিনতে হয় ৪৩০ টাকা দিয়ে। ডিমের বাজার তো সবচেয়ে বেশি অস্থির। আসলে আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের ইনকাম হচ্ছে মাসিক ১৫-২৫ হাজার টাকা। তো সংসারের বাজার খরচ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খরচ থাকে। যেমন অনেকের বাসা ভাড়া দিতে হয়।
তাছাড়া ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ, সংসারে কেউ অসুস্থ থাকলে চিকিৎসা খরচ মেটাতে হয়। এছাড়া বছরে দুটি ঈদ আসে এবং সেজন্য কিছু টাকা জমিয়ে রাখতে হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষ যদি সংসারের খরচ মিটিয়ে টাকা জমাতে না পারে,তাহলে তো বাকি খরচ গুলো করতে পারবে না। আবার অনেকে বিপদে পড়ে টাকা ধার করে থাকে বিভিন্ন জায়গা থেকে। তারপর সেই টাকা শোধ করতে পারে না এবং পরবর্তীতে আরও বিপদে পড়তে হয়। কিছুদিন আগে একটা জায়গায় হাঁটতে গিয়েছিলাম। তো সেখানকার কিছু মানুষের মুখ থেকে শুনতে পারলাম তাদের সংসারের করুণ কাহিনী। একজন অসুস্থ লোক বয়স আনুমানিক ৫০/৫৫ হবে। তো উনার স্ত্রী গার্মেন্টসে কাজ করে মাসে ১৭,০০০ টাকা বেতন পায়। উনাদের বাসা ভাড়া দিতে হয় না। সেই লোকের একটা ছেলে সহ তাদের তিনজনের সংসার। তবুও সেই লোক নাকি বিগত কয়েকদিন ধরে সবজি চোখেই দেখে না।
আর মাছ মাংসের কথা বাদ ই দিলাম। সেই লোকের প্রতিমাসে মেডিসিন লাগে ৩,০০০ টাকা। বাকি টাকা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে। লোকটার কথা শুনে আমার নিজের কাছেই খারাপ লাগছিল। যেদিন সেই লোকের সাথে কথা বলেছিলাম, সেই লোক বললো তার স্ত্রী গার্মেন্টসে যাওয়ার আগে শুধুমাত্র ভাত,আলু ভর্তা এবং ডাল রান্না করে রেখে গিয়েছে। এই হচ্ছে আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের বর্তমান অবস্থা। লোকটার ছেলে অনার্স পাশ করে বসে আছে, কিন্তু চাকরি পাচ্ছে না। এভাবে আরও কয়েকটি পরিবারের সাথে কথা বলে, অনেকের মুখ থেকেই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা শুনতে পারলাম সেদিন। তাদের কথা শুনে এটাই মনে হলো,দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে তাদের জীবন বিপন্ন। যাইহোক আমাদের সবার এখন একটাই চাওয়া,দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা হোক। এতে করে সাধারণ মানুষ স্বস্তি ফিরে পাবে।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S9 Plus |
তারিখ | ৪.১১.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
X-promotion
ভাই আপনার পোস্ট টা অনেক সুন্দর হয়েছে এবং লেখা গুলো একদম বুঝার মতো আর ভাই আমি নতুন আইডি খুলছি আমাকে একটু সাহায্য করবেন কীভাবে আপনার মতো সুন্দর করে কীভাবে পোস্ট করে অর্থ উপার্জন করব।শুভকামনা রইলো।
পোস্টটি পড়ে চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি যেটা বলছেন যে মূল্য কমে যাবে তা কিন্তু নয়। এখন বিশ্বের সব কিছুরই মূল্য বাড়ছে শুধু আপনাদের দেশে বলে নয়। এই মূল্যবৃদ্ধি সহজে কমবে না।কারণ বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা কিন্তু ভালো নয়। ভেতরে ভেতরে বেশ ভালই রিসেশন চলছে যা সাধারণ মানুষ এখনো টের পাচ্ছে না। একই পরিস্থিতি আমাদের গ্রামগঞ্জগুলোতেও।
সারা বিশ্বে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে সেটা আমিও জানি। তবে আমাদের দেশে সবকিছুর দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের সাথে তুলনা করলেও আমাদের দেশে সবকিছুর দাম অনেক বেশি। ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাই একই অবস্থা ভারতেও। দ্রব্যমূল্য ছোঁয়া যাচ্ছেনা। সামান্য কিছু সবজি কিনলেই প্রচুর দাম হয়ে যাচ্ছে। কিভাবে যে সামলাবো বুঝতে পারছি না। আপনি একটি প্রাসঙ্গিক ব্যাপারে পোস্ট করলেন। এটি বর্তমান যুগের একটি বিশাল সমস্যা। এভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকলে কোথায় গিয়ে যে পৌঁছবো আমরা নিজেরাই জানিনা।
ভাই ভারতের তুলনায় আমাদের দেশে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। আমি মাঝেমধ্যে ইউটিউবে ভারতের ভিডিও দেখে থাকি। তখন বিভিন্ন জিনিসপত্রের সাথে তুলনা করলে অবাক হয়ে যাই। যাইহোক অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ তা ঠিক ভাই। আমি বাংলাদেশ গিয়ে এটা দেখেছি। আমাদের এখানকার থেকে বাংলাদেশের দ্রব্যের দাম অনেকটাই বেশি। আসলে কিছু আমদানি রপ্তানিজনিত বিষয় থেকেই থাকে। তাই বাংলাদেশের অনেক বন্ধুরা কলকাতা থেকে জুতো জামা অনেক কিছু কিনে নিয়ে যায়। আমি ঢাকায় গিয়ে সাধারণ খাবার-দাবারের দাম দেখেও একটু অবাক হয়েছিলাম। আমরা এক পাউন্ড পাঁউরুটি ৩৪ টাকায় কিনি। সেখানে ঢাকায় আমার থেকে প্রায় ৬০ টাকা নিয়েছিল। এটা একটা উদাহরণ দিলাম ভাই। তবু এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও ভালো থাকবেন।
এই কঠিন পরিস্থিতিতেও আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো আছি ভাই। তবে নিম্নবিত্ত মানুষদের কথা ভাবলে খুবই খারাপ লাগে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আমরা আশা করছি দ্রব্যমূল্যের দাম কমে যাবে কিন্তু বিশ্বের অর্থনীতির যে অবস্থা মনে হয় না সহজে কমবে। জিনিসপত্রের যে দাম কিছু ছোঁয়ায় যাচ্ছে না। আজ বাজারে গিয়েছিলাম শীতে সবজি বাজারে এসে গেছে। অনেক নতুন নতুন সবজি দেখলাম। কিন্তু দাম আকাশছোঁয়া আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের কেনার সামর্থের বাইরে। দ্রব্যমূল্যের দাম এরকম বাড়তে থাকলে আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের কি হবে সেটাই ভাবি।
সবজির বাজারে তো আগুন। এতে করে বেশিরভাগ মানুষ প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে। যাইহোক গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের কষ্ট সবসময়ই থাকে। আমাদের সবচাইতে প্রয়োজনীয় দ্রব্য খাদ্যের দামের বিষয়ে কখনও দেখলাম না সঠিক উদ্দ্যোগ নিতে। প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূলের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
হ্যাঁ ভাই আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। যাইহোক পোস্টটি পড়ে সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আপনি সমসাময়িক বেশ সুন্দর একটি টপিক নিয়ে লিখেছেন ভাইয়া।আসলেই বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি মানুষকে দিশে হারা করে দিচ্ছে একপ্রকার।স্বাধীনতার পর মানুষ এরকম দেশ অন্তত চায়নি,ধন্যবাদ ।
দ্রব্যমূল্যের দাম সামনে মনে হচ্ছে আরও বাড়বে। যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আসলে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির কারণে যে যেভাবে যেখান থেকে যার কাছ থেকে পারছে তার কাছ থেকে আদায় করে নিচ্ছে৷ আসলে এখন যেভাবে চারিদিকে সিন্ডিকেট শুরু হয়ে গিয়েছে এর ফলে অনেক মানুষই এই সিন্ডিকেট করে সাধারণ মানুষদেরকে ঠকিয়ে দিচ্ছে৷ আসলে এক্ষেত্রে তারাই লাভবান হচ্ছে৷ শুধুমাত্র সাধারণ মানুষ জনের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে৷
সিন্ডিকেট এর কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম আসলেই প্রতিনিয়ত বেড়ে যাচ্ছে। যাইহোক যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে এই সিন্ডিকেট কোনদিন বন্ধ হবে বলেও মনে হয় না।