সব ভালবাসা ভালবাসা নয় - শেষ

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।

প্রথম পর্ব

heart-1192662_1920.jpg

আজকে একটি বিশেষ কারণে আমাদের দুই বাংলায় ছুটির দিন। আমাদের দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় শোক দিবস পালন করা হচ্ছে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে। অপরদিকে ওপার বাংলায় আজ স্বাধীনতা দিবসের আনন্দ উদযাপন করা হচ্ছে। সেখানেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপিত হচ্ছে। সব মিলিয়ে আজকে একটি বিশেষ দিন বলাই যায়। আমরা যারা আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ করি তাদের জন্য আজকের দিনটি বিশেষ বিশেষভাবে স্পেশাল। কারণ আজকের এই দিনে @rme দাদার কল্যাণে @shy-fox আমাদের কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্টে ভোট দেয়া শুরু করে।

যারা দীর্ঘদিন থেকে এই কমিউনিটিতে কাজ করছেন তারা নিশ্চয়ই সাইফক্সের ক্ষমতা সম্বন্ধে অবগত আছেন। আসলে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি খুব অল্প কথায় প্রকাশ করার মত নয়। তারপরেও ছোট করে বলতে হয় এখানে কাজ করে আমাদের মধ্যে অনেকেই তাদের স্বপ্নগুলোকে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পেয়েছে। যদিও আমরা মার্কেটের খুব খারাপ পরিস্থিতিতে শুরু করেছি। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমি আমার অনুভূতি থেকে বলতে পারি কোন কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা না করে নিজের ভাললাগা থেকে কাজ করা উচিত। আমরা যদি একাগ্রচিত্তে নিজেদের কাজটা করে যাই তাহলে সফলতা আপনা আপনি চলে আসবে।

আবারো @shy-fox এর জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং দাদাকে ধন্যবাদ। দাদা অনেক ভালো ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন বলেই আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি আজ সফলতার শীর্ষ এসে পৌঁছেছে। এখন এখানে দাঁড়িয়ে আমরা অনেকেই আবার নতুন করে স্বপ্নের জাল বুনতে শুরু করেছি। এবং আমি বিশ্বাস করি আমরা যদি সৃজনশীলতা দিয়ে নিজের কাজটা সঠিকভাবে করতে পারি। তাহলে সেই দিন আর বেশি দূরে নয় ইনশাআল্লাহ তখন আমরাও আমাদের স্বপ্নগুলো ছুঁয়ে দেখতে পারবো। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের সকলকে নিয়ম মেনে কমিউনিটির পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

যাইহোক এবার মূল ঘটনায় ফিরে আসি।
গাইনী বিভাগের মহিলা প্রফেসরের স্বামী একজন নৌবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। সেখানে তার অনেক দায়িত্ব স্বাভাবিকভাবেই তাকে বাইরেই থাকতে হয়। দূরত্ব অনেক বেশি হওয়ার কারণে ঘন ঘন আসা হয় না। মাঝে মাঝে যখন লম্বা ছুটি থাকে কেবলমাত্র তখনই বাড়িতে আসা হয়। তো এভাবেই চলছিল তাদের সংসার জীবন। লম্বা ছুটি পেলে বাড়িতে চলে আসে বেশ কিছুদিন স্বামী স্ত্রী অনেক আনন্দে দিন কাঁটায়। আবার ছুটি শেষ হলে সেই কর্মজীবনের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়।

এদিকে দীর্ঘদিন এভাবে চলতে থাকে। এই মহিলা ডাক্তারের স্বামী যখন ছুটিতে আসে তখন যেন সে নতুন জীবন ফিরে পায়। যতদিন তার স্বামী থাকেন তিনিও মেডিকেল কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে সময়গুলো উপভোগ করার চেষ্টা করেন। ছুটি শেষে যখন তার স্বামী চলে যান আবার সেই একাকীত্ব তাকে ঘিরে ধরে। এটা অবশ্য যার যার অবস্থান থেকে ভিন্ন রকম হতে পারে। আসল কথা হল মনের পবিত্রতা সেটাকে কেউ রক্ষা করতে পারে। আবার অনেকেই নিজেকে ভাসিয়ে দেয়। এখানে ভালোবাসা নামে নোংরামি টাই বেশি প্রাধান্য পায়। মাত্র কয়েকদিনের জীবন আর আমরা এখানেই ভোগ বিলাসে মত্ত হয়ে থাকি। আমরা ভুলে যাই ভোগে নয় ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।

যাইহোক নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ছুটি শেষে যখন চলে যায় তার কর্মজীবনে। তখন এদিকে এই ডক্টর সাহেবা ধীরে ধীরে আকৃষ্ট হতে থাকে তার ড্রাইভারের দিকে। ড্রাইভার সাহেব বয়স খুব একটা বেশি নয় কিন্তু চেহারায় যৌবন ধরে রেখেছে। অবিবাহিত হওয়া সত্বে ডক্টর সাহেবার নজর তার দিকে ছিল। মহিলা ডাক্তারের এখনো সন্তানাদি হয়নি তিনিও অনেক সুন্দর। তার চেহারায় যথেষ্ট রূপ লাবণ্য তখনও ছিল। আমি নিজেও তাকে দেখে মনে করেছিলাম এখনো বিয়েই হয়নি। আমার মনে হয় তারা অনেক দেরিতেই বিয়ে করেছিলেন সে কারণেই এখনো কোনো সন্তান নেই।

ড্রাইভার সাহেব ম্যাডামকে প্রতিদিন অফিসে এবং চেম্বারে আনা নেয়ার কাজে ব্যস্ত থাকে। মনে মনে হয়তো সেও ম্যাডামকে পছন্দ করত কিন্তু সেটা শুধু তার মনেই ছিল। এদিকে ম্যাডাম তার একাকীত্ব ঘোচানোর জন্য একজনকে কাছে পেতে যাচ্ছিল। যেহেতু এখানে তিনি ড্রাইভারকে মনে মনে কল্পনা করতেন তাই তার সমস্ত ব্যক্তিগত কাজ ড্রাইভারকে দিয়ে করাতেন। ধীরে ধীরে তারা অনেক কাছে চলে আসে। ম্যাডামের এখন আর একাকী লাগেনা তার মনের মধ্যে অনেক পরিবর্তন চলে এসেছে। সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে ড্রাইভার রাতে এখন আর একা একা ঘুমায় না। রাতের বেলা সমস্ত কাজ শেষে কাজের লোকজন যখন বাড়িতে চলে যায়। তখন ড্রাইভার থাকে ম্যাডামের ঘরে এভাবেই ম্যাডামের নতুন জীবন আনন্দে কাটছিল।

এর মাঝেই ঈদের লম্বা ছুটি চলে আসে। আমরা অনেকেই জানি এই ধরনের চাকরিতে যখন ছুটি হয় অনেক লম্বা ছুটি পাওয়া যায়। তো ঈদের ছুটিতে অফিসার বাসায় চলে আসে। কিন্তু তিনি এবার তার স্ত্রীর মাঝে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। আগের মত আর উচ্ছ্বাস নেই। অনেকদিন পর স্বামীকে কাছে পেয়ে স্ত্রীর মধ্যে একটা উন্মাদনা কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। যেটা সব সময় ছিল কিন্তু এবার অফিসার বাসায় এসে সেই উন্মাদনা দেখতে পেল না। কিন্তু সেটা তার স্ত্রীকে বুঝতে দেয়নি। সে আরো একটা জিনিস খেয়াল করলো এবার ঈদে তার ড্রাইভার ছুটিতে যায়নি। আসলে সে যেতে পারেনি তার মনটা তো এখানেই পড়ে থাকবে। পরকীয়া প্রেম বলে কথা হা হা হা।

অনেকদিন পর স্বামীকে পেয়ে ম্যাডামকে সময় দিতেই হতো। পরকীয়া প্রেমকে নিচের ঘরে রেখে স্বামীর সঙ্গে এক ঘরে আছেন। এখন আর ড্রাইভারের সঙ্গে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু এখানে বেশি সমস্যায় পড়ে আছে এই ড্রাইভার ছেলেটি। তার নতুন প্রেমকে সে কিভাবে অন্যের সঙ্গে দেখে থাকবে। তাই সে প্রতি রাতে ছটফট করতে থাকে। এই প্রেমের সম্পূর্ণ ঘটনা আমার পক্ষে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করা সম্ভব নয়। কারণ এর ভিতরের খবরটুকু শুধু তারা তিনজনেই বলতে পারবে। আমি চেম্বার অ্যাটেনডেন্স এর কাছে শুধু পরিণতি টুকু কি সেটুকু শুনেছিলাম। সেটাই আমার ভাষায় বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি।

একদিন রাতের বেলা স্বামী ঘুমিয়ে যাওয়ার পর চুপিচুপি ম্যাডাম ড্রাইভারের ঘরে চলে আসে। কারণ পরকীয়া প্রেম অনেক মধুর হয়ে থাকে তাদের কাছে। তাই প্রতিদিনের চাওয়াকে উপেক্ষা করতে পারেনি। কয়েকদিন কেটে দেওয়ার পর অনেক ঝুঁকি নিয়ে ড্রাইভারের ঘরে যেতে হয়েছিল। এখানেই তারা চূড়ান্ত ভুলটি করে বসে। অফিসারের শুরু থেকেই কিছুটা সন্দেহ মনের মধ্যে ছিল। তাই নিচে নামতে দেখে সেও চুপি চুপি চলে আসে। কিন্তু নিচে নেমে ড্রাইভারের রুমে তার স্ত্রীকে ঢুকতে দেখে মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। তারপর সবকিছু ভালোভাবে বুঝে ওঠার জন্য সামনের দিকে দরজার পাশে চলে যায়। সেখানে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে নিরবে সরে আসে।

অফিসার অনেক অভিমানী ছিল সে এই আঘাতটা নিতে পারেনি। তাই রাতেই সিদ্ধান্ত নেয় সকালে উঠেই চলে যাবে। এই ঘটনাগুলো তার স্ত্রীকে একেবারেই বুঝতে দেয়নি। শুধুমাত্র পরের দিন সকালবেলা যাওয়ার সময় ঘটনা গুলো উল্লেখ করে একটি কাগজ হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। ততক্ষণে সকালে কাজের লোকজন চলে এসেছিল। তারা না আসলে হয়তো আসল ঘটনাটি চাপাই পড়ে থাকত। অফিসার অনেক কষ্ট মনের মধ্যে নিয়ে কর্মস্থলে ফিরে আসে ছুটি শেষ হওয়ার আগেই।

বেশ কিছুদিন থেকে তার মিশনে যাওয়ার প্রস্তাব ছিল কিন্তু যাওয়া হয়নি। এখন সে নিজেই উৎসাহী হয়ে মিশনে চলে যায়। যাওয়ার আগে সমস্ত লিগ্যাল পেপারস সই করে পাঠিয়ে দেয়।
অফিসার সেই যে দেশের বাইরে চলে গেল পরে তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। হয়তো মনের মধ্যে কষ্ট ও ধিক্কার চলে এসেছিল তাই দেশে ফেরার কথা ভুলেই গিয়েছে। আবার হয়তো মিশনে শত্রু পক্ষের গুলিতে নিথর দেহ কোথাও পড়ে আছে। আরো অনেক কিছু হতে পারে সেটা আমার জানা নেই। আসলে এরকম ভালোবাসা কখনো ভালোবাসা হতে পারে না। এটা আমার কাছে শুধুমাত্র নোংরামি মনে হয় যেখানে আমাদের সমাজ ও ধর্ম কোনোভাবেই এটাকে মেনে নেয় না।

বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।

Logo-1.png

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 66028.29
ETH 2694.36
USDT 1.00
SBD 2.89