গ্রামের সকাল একটু তাড়াতাড়ি শুরু হয় || ফটোগ্রাফি পর্ব - ১ ||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।

Picsart_22-08-08_11-29-51-889.jpg

গতকাল শেষ বিকালে ব্যক্তিগত কিছু সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজতে অনেক অনেক দূরে একটি গ্রামে গিয়েছিলাম। সেখানে সমস্ত কাজ সঠিক সময়ে সম্পন্ন করতে পারেনি। কিছুটা কাজ বাকি ছিল তা সত্ত্বেও বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করেছিলাম। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকার কারণে আর বাসায় ফিরতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত সেখানে এক আত্মীয়র বাসায় রাত্রিযাপন করতে হয়েছিল। রাত্রে খেয়েদেয়ে আরাম করে ঘুমিয়ে পড়লাম। বিছানার কোন সমস্যা ছিল না আমাকে পুরো একটা রুম ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু সমস্যা হয়েছিল পল্লী বিদ্যুৎ যেটা যায় তো আসার কোন নাম গন্ধই নেই। লোডশেডিং আমার শহরেও প্রকট কিন্তু আল্লাহর রহমতে রাতে ঘুমানোর সময় কারেন্ট থাকে। ঘুমিয়ে পড়ার পর হঠাৎ করে গরমের কারণে ঘুম ভেঙ্গে যায়। চোখ খুলে দেখি ফ্যান ঘুরছে না। হাত পাখা দিয়ে বাতাস করতে করতে কখন যে চোখ বন্ধ হয়েছিল টের পাইনি। রাতে ঘুম কম হওয়ার কারণে সকালে উঠতে কিছুটা দেরি হয়েছিল। তবুও বাসায় থাকতে আমি যে সময় উঠি তার চেয়েও অনেক আগে উঠেছিলাম। কিন্তু গ্রামের সকাল যেন একটু তাড়াতাড়ি শুরু হয়।

তাই সকাল বেলা ওয়াশরুম থেকে আসার পরেই আমাকে বিস্কুট আর চা দিয়েছিল। আমিও সেগুলো খেয়ে গ্রামের রাস্তা দিয়ে একটু হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। আসলে এই সময়টাতে গ্রামাঞ্চলে সকালবেলা ঘুরতে খুব ভালো লাগে। গ্রামের লোকজন সকালবেলা গবাদি পশু ও হাঁস মুরগি ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন কাজে বেরিয়ে পড়ে। আর কৃষক ভাইয়েরা ঘুম থেকে উঠেই খেয়ে না খেয়ে নিজেদের জমিতে কাজ করতে ছুটে যায়। কারণ এই সময়টাতে সবাই ধানের চারা রোপণ নিয়ে ব্যস্ত। আবার বিভিন্ন জায়গায় যাগ দিয়ে রাখা পাটগুলো ধোয়ার কাজে ব্যস্ত থাকে। গ্রামের এই দৃশ্যগুলো শহরে আমাদের চোখে পড়ে না। তাই মাঝে মাঝে যখন কোন কারণে গ্রামের রাস্তাগুলো দিয়ে হাটতে যাই তখন এরকম দৃশ্যগুলো দেখে হঠাৎ করেই যেন থমকে দাঁড়াই। আমি আজকে সকাল বেলা সেই রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম।

20220808_203256.jpg
20220808_104505.jpg

আমি বাড়ির পেছন গেট দিয়ে বের হয়েছিলাম। এই দিক দিয়েই যে রাস্তাটা গেছে সেটা সরাসরি পুকুরের পাড় দিয়ে কৃষি জমিতে গিয়ে ঠেকেছে। বাড়ির পিছনে দুটি বিশাল পুকুর সকালবেলাতেই পুকুরের পানিতে মাছগুলো লাফালাফি করছিল। একটা দুটো করে হাঁস কেবল পানিতে নামতে শুরু করেছে।

20220808_104906.jpg
20220808_104802.jpg
20220808_104738.jpg

পুকুর পাড় দিয়ে হেটে এসে সামনের এই রাস্তায় চলে আসলাম। কিছুদূর এগুলেই পাকা রাস্তার পরে মেটো পথ। এই রাস্তার দুই পাশে সবুজ মাঠ। এখানেই কৃষকেরা নিজেদের উজাড় করে দিয়ে ফসল ফলায়।

20220808_105952.jpg
20220808_105919.jpg

এই ছেলেটার সঙ্গে কথা বললাম সে এখনো ছাত্র জীবনে আছে। এখন কোন কাজ না থাকায় অবসরে তার বাবাকে সাহায্য করার জন্য ট্রাক্টর নিয়ে বের হয়েছে জমি চাষ করার জন্য। এরকম দৃশ্য গ্রামে সব সময় দেখা যায় খুব ভালো লাগে দেখতে দেখতে।

20220808_234338.jpg
20220808_234316.jpg

সকালবেলা গ্রামের ওই বুড়িমা তার পোষা ছাগলগুলো বাইরে বেঁধে রেখে চলে যাচ্ছে। গ্রামে একটা সুবিধা গবাদি পশু লালন পালনের জন্য খুব একটা কেনা খাবারের উপর নির্ভর করতে হয় না। এই যে ছাগলগুলো আপন মনে ঘাস খেয়ে তাদের ক্ষুধা নির্ধারণ করবে। এভাবেই দিনের পর দিন চলতে থাকে।

20220808_104945.jpg
20220808_104703.jpg

পাশাপাশি দুটো ধান ক্ষেত লক্ষ করলাম একটিতে নতুন চারা রোপন হয়েছে। আবার অপরটিতে রীতিমত ধান চলে এসেছে।
এই মৌসুমটা নতুন চারা রোপনের সময় কিন্তু অন্য একটি জমিতে ধানের ফলন চলে এসেছে এটা সমন্ধে সঠিক ব্যাখ্যা আমার জানা নেই। সকালবেলা এসে গ্রামীন প্রকৃতির দৃশ্য গুলো আমার মন কেড়ে নিয়েছে।

এদিকে হাঁটতে এসে পুকুর ভর্তি মাছের লাফালাফি দেখতে পেয়েছি। আবার কোথাও জমিতে সকালবেলা হাঁসের দল এসে তাদের খাবার সন্ধান করছে। গ্রামের সকাল অনেক তাড়াতাড়ি শুরু হয় বলতে পারি। আমরা যে সময় ঘুম থেকে উঠে হয়তো ব্রাশও করিনা। সেই সময়ে গ্রামের লোকজনের অনেকটা কাজ হয়ে যায়। এদের কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে আমরা শুধু বইয়ে পড়েছি।

বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।

ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি A-10
ফটো@mayedul
লোকেশনw3w location

Logo-1.png

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

Sort:  
 2 years ago 

পল্লী বিদ‍্যুৎ টা একটু বেশিই বিরক্ত করে বিশেষ করে রাতে। এবং এই সময়ে গ্রামের রাস্তা দিয়ে হাঁটলে দারুণ স‍ৌন্দ‍র্য অবলোকন করা যায়। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সেটা বোঝা যাচ্ছে। দারুণ লিখেছেন ভাই।

 2 years ago 

পল্লী বিদ্যুৎ যায় তো আসার কোন নাম গন্ধই নেই। এরা ভুলেই যায় ওদের জন্য কেউ অপেক্ষা করছে।

 2 years ago 

আসলে ভাই গ্রামের মেঠো পথ, সেই চিরসেনা প্রকৃতি সত্যিই সেই সকাল বেলার আবহাওয়াটা এক অন্যরকম অনুভূতি। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভাই ছোটবেলা গ্রামে থাকার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল। যাইহোক চমৎকার ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে শুভকামনা অবিরাম আপনার জন্য।

 2 years ago 

এরকম সুন্দর সকাল শুধুমাত্র গ্রামে গেলেই দেখতে পাওয়া যায়।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন গ্রামের সকাল একটু তাড়াতাড়ি শুরু হয়। বর্তমান কৃষকেরা খুবই ব্যস্ত তাদের কৃষিকাজ নিয়ে। সত্যিই আপনার করা ফটোগ্রাফি গুলো অনেক ভালো লাগলো।

 2 years ago 

একদম সবাই খুব ব্যস্ত কোথাও কোন মাঠ ফাকা নেই।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া গ্রামের লোকজন ফজরের পড়ে মাঠে নেমে যায়। গ্রামের সকালের পরিবেশটা একদম অন্যরকম অনুভুতি জোগায়। আপনার গ্রামটা আসলেই অনেক সুন্দর এবং সবুজের সমারোহ দিয়ে ভরপুর। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া সুন্দর কিছু ছবি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

 2 years ago 

আপনার বুঝতে একটু ভুল হয়েছে ভাইয়া। এটা আমার গ্রাম নয় ওই দিন কোন এক কাজে গ্রামে গিয়েছিলাম
অনেক রাত হয়েছিল ফিরতে পারিনি তাই এক আত্মীয়র বাসায় থেকে গিয়েছিলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

গ্রামের সৌন্দর্য দৃশ্য এর ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সত্যি অসাধারণ ফটোগ্রাফি করেছেন। আমার অনেক ভালো লেগেছে, আপনার জন্য রইল শুভকামনা।

 2 years ago 

আসলেই আমাদের দেশের গ্রাম গুলো অনেক সুন্দর।

Keep motivated to protect our home!🛡🌎🌍🌏

 2 years ago 

গ্রামীণ পরিবেশের ছবি দেখলেই মনটা ভরে যায়। আপনি খুবই সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনার প্রতিটি ফটোগ্রাফ আমার অনেক অনেক ভালো লাগছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

গ্রামীণ পরিবেশে ঘুরে ঘুরে ফটোগ্রাফি করতে আমারও খুব ভালো লাগে। অন্যরকম একটা অনুভূতি নিয়ে কাজ করে।

 2 years ago 

সত্যি কথা বলতে অনেক দিন পর গ্রামের এরকম দৃশ্য দেখলাম। সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেছে ভাই আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে। খুব সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন আপনি। সবগুলো ফটোগ্রাফি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। বিশেষ করে ধানগাছের ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে বেশ ভালো লাগতেছে।

 2 years ago 

আমিও মনে হয় অনেক বছর পর সকালবেলা গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হাঁটতে পেরেছি।

 2 years ago 

এই ছেলেটার সঙ্গে কথা বললাম সে এখনো ছাত্র জীবনে আছে

ছাত্র জীবনে থেকে ইনকামের সোর্স বেছে নেওয়ায় আমি অনেক খুশি হয়েছি। আসলে আপনার ফটোগ্রাফি গুলো ছিল মনে। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আপনার মোবাইলের ক্যামেরা বন্দি করে কিছু ছবি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য

 2 years ago 

ছেলেটি ইনকাম সোর্স বেছে নেওয়ার জন্য এই কাজ করছে না। সে ওর বাবাকে সাহায্য করছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 66028.29
ETH 2694.36
USDT 1.00
SBD 2.89