দুঃখের পরে সুখের হাতছানি

" আজ সোমবার - ১৭ই আশ্বিন - ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ০২রা, অক্টোবর - ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ "

মার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।

pexels-cottonbro-studio-4098263.jpg

source

আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে। আর আজকের পোস্ট হচ্ছে এক দুঃখী দম্পতির নতুন করে সুখের সংসার গড়ে ওঠা কে কেন্দ্র করে। আমার পার্শ্ববর্তী এক ভাই যার নাম রাকিব। সে খুব ঘনঘটা করে বাবা মায়ের পছন্দে মোহনা নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেছিল আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে।

আর এই রাকিব ও মোহনা দম্পতির ঘরে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান রয়েছে যার নাম ইমাম। বয়স এই হবে হয়তো সাত বছরের মত। বেশ সুখে শান্তিতে তাদের সংসারটি হেসে খেলে কাটিয়ে দিচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে রাকিব ও মোহনা দুজনের মধ্যে কি যেন একটি বিষয় নিয়ে তুমুল ঝগড়াঝাটি শুরু হয়ে গিয়েছিল। আর সেই ঝগড়া যেন তাদের কোনমতেই থাম ছিল না। আর এই সামান্য ঝগড়া বিবাদ চলতে চলতে শেষ মুহূর্তে তারা দুজনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তারা দুজনে আর কোনভাবেই সংসার করবে না।

যখন সংসার করবে না একদম ফাইনাল ডিসিশন নিয়েই ফেলেছিল, তখন তাদের ব্যক্তিগত সমস্যাটি পাড়া-প্রতিবেশী সবাই জেনে ফেলেছিল। আর সমস্যাটি হচ্ছে মোহনা রাকিবকে ভীষণ সন্দেহ করত। বর্তমান ডিজিটাল যুগে কেউ মোবাইলের ভালো দিকটা বেছে নিচ্ছে আবার কেউবা মন্দ দিকটা বেছে নিচ্ছে। আর সেক্ষেত্রে রাকিব facebook এর মাধ্যমে একটা মেয়ের সাথে পরিচিত হয়ে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। যদিও বা ঘটনা সত্যতা আমরা সঠিকভাবে জানিনা। তবে মোহনা যাবার আগে সবার সামনে এই কথাগুলোই বলে গিয়েছিল।

তাদের দুজনের ঝগড়া বিবাদ এতটাই বিগড়ে গিয়েছিল যে শেষ পর্যন্ত তারা ডিভোর্স নিয়েছিল। আর এই ঘটনার প্রায় এক বছর হয়ে গেল, আর এই এক বছরে রাকিব মোহনার অভাব এতখানি উপলব্ধি করেছে যে, শেষ পর্যন্ত তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। একদিকে তাদের ছেলে ইমাম মায়ের কাছে থাকার কারণে, রাকিব সন্তানের অভাব ও বউয়ের অভাব হারে হারে টের পেয়েছিল। এজন্য বেশ কয়েকদিন আগে রাকিব মোহনা কে ফিরিয়ে আনতে তার শ্বশুর বাড়ি গিয়েছিল।

কিন্তু মোহনার বাবা রাকিবকে যখন জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দিতে চেয়েছিল, তখন মোহনা তার বাবাকে বাধা দিয়েছিল। এতে করে রাকিব বুঝতে পেরেছিল মোহনা এখনো রাকিবের প্রতি বেশ ভালই দুর্বল রয়েছে। যার কারনে রাকিব তার শশুরের পায়ে ধরে ভীষণ কান্নাকাটি করেছিল, মোহনাকে নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু মোহনার বাবা রাকিবকে একটি শর্ত দিয়েছিল আর সেই শর্ত হচ্ছে, রাকিবের বসতবাড়ির জমিটুকু মোহনার নামে করে দিতে হবে। যার বর্তমান মূল্য প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। এ নিয়ে রাকিবের বোনেরা ও রাকিবের শ্বশুর মিলে বেশ তর্ক বিতর্ক করেছিল।

কিন্তু রাকিব কোনোভাবেই তার সন্তান ও স্ত্রীকে রেখে আসবেনা। এজন্য সে বসতবাড়ি টুকু মোহনার নামে লিখে দিতে চেয়েছিল। আর এই শর্তটি মেনে নেয়ার কারণে নতুন করে আবারো রাকিব ও মোহনার বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। তবে এই বিয়ের আয়োজন কিন্তু একদম ছোট্ট পরিসরে। শুধুমাত্র রাকিবের ফ্যামিলি ও মোহনার ফ্যামিলির লোক ছাড়া অন্য কেউ ছিলনা। যাইহোক অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে রাকিব যেন নতুন করে আবারও মোহনাকে পেয়ে সুখের সংসার গড়তে শুরু করেছে।

তাদের এই সংসার সুখময় হোক আমি এই প্রত্যাশা করছি। ছেলে ও বউ কে কাছে না পেয়ে রাকিবের দুঃখের সংসার ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হতে চলেছিল। আজ যখন মোহনা ফিরে এসেছে, তাই আজ রাকিবের সংসারে আনন্দের জোয়ার বইছে। যাক অবশেষে দুঃখের পরে রাকিবের সংসারে সুখের হাতছানি দিয়েছে। রাকিব ও মোহনা দম্পতি সুখে থাক আমি যেমন প্রত্যাশা করছি, ঠিক তেমনি আপনারাও এই দম্পতির জন্য দোয়া করবেন আশা করছি।

বাস্তব এই কাহিনী থেকে শিক্ষা || যারা হুটহাট করে ডিভোর্সের চিন্তাভাবনা করে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, যদি একবার ডিভোর্স দেয়ার কথা চিন্তা করে, তাহলে অবশ্যই ১০০ বার সংসার করার কথা চিন্তা করতে হবে। তা না হলে হয়তো রাকিবের মত আবারো মোহনাকে ফিরিয়ে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। তাই চিন্তাভাবনা করে ডিভোর্সের সিদ্ধান্তটা নেয়া উচিত।



আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkPKDYqZPTyz3HQnPBAZYA84k8k89ixkhuUsFjZkgWkC1gjU36M1oU8J7FbJUoPMtjB5EHLD1usXZox8d6boJGJdTa7jANjx37k.png
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

3q52Dkr5nBe3kDiHrk4F3qdzX6E5VuVcCcF7TDQDco37AUsMDxK7aJ1uasvrAaBSP6D1NgNuBSX2m.gif

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeSsa63mzHQexuvWRDgxAQmHZjMKhFaYGe2ubQmiC33SnsVy3TGA7BbZJiqfXWxLCKhiShcGVU.png

Picsart_22-12-07_06-14-15-124.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

ফেইসবুক এর কারনে অনেক মানুষের উপকার হয়েছে আবার অনেক মানুষের ক্ষতি হয়েছে। যদিও মোহনা তার স্বামী রাকিবকে সন্দেহ করতেছে এই ফেইবুকের কারণে। এবং তাদের সংসারে একটিমাত্র সন্তান ইমাম আছে তারপরও তারা তাদের সম্পর্ক নষ্ট করতেছে। এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। যাইহোক রাকিব চেষ্টা করে তার ওয়াইফ এবং ছেলেকে আবার তার সংসারে ফিরিয়ে এনেছে। যদিও এখানে তার বিটে জমিটি রাকিব মোহনা নামে লিখে দিয়েছে। যাইহোক যেভাবে হোক তাদের সংসার আবার নতুন করে ফিরে ফেলো এবং সুখে আছে শুনে খুব ভালো লাগলো। আপনার পার্শ্ববর্তী একটি বাস্তব ঘটনা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আপু, আপনার মত আমিও চাই রাকিব ও মোহনা দুজনেই যেন সুখে শান্তিতে সংসার করতে পারে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 last year 

এটাই প্রকৃত ভালোবাসা।ভালোবাসা এমনি হওয়া উচিত।তবে রাকিব ভাইকে মোহনা ভাবি মনে হয় শুধু সন্দেহ করেছিলো।বাস্তবে রাকিব ভাই কোন সম্পর্ক করেনি কারণ যদি করতো তবে আর মোহনা ভাবিকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে উঠতো না কিংবা জমি মোহনার নামে দিতেন না তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য। যাই হোক দুজনে সুখী হোক।আর কোন অশুভ শক্তি যাতে তাদের ভালোবাসাকে আলাদা না করে সেই প্রত্যাশা করছি।

 last year 

আপু ছেলেটির জন্যই রাকিব এত বড় ত্যাগ স্বীকার করেছে। ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তাই করে মোহনার নামে তার বসত বাড়ি লিখে দিয়েছে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

 last year 

বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ সংসারে অশান্তি হয় সন্দেহের কারণে। একজন একজনকে সন্দেহ করে স্বামী স্ত্রী এই কারণে বেশিরভাগ ঝগড়া হয়।রাকিব ও মোহনা তাদের সংসার খুব সুখের এবং তাদের একটি সন্তান আছে ইমাম। কিন্তু মোহনা তার স্বামীকে ফেইসবুকে কারো সাথে কথা বলে এ নিয়ে সন্দেহ করে তাদের সংসার নষ্ট করতে চেয়েছে। যাইহোক লাস্ট পর্যন্ত রাকিব তার শ্বশুরের কাছে মাপ চেয়ে এবং কান্নাকাটি করে তার সংসার আবার আগের মতো করে ফিরেই আনলেন। যাইহোক এখন রাকিব ও মোহনা তাদের সংসারে সুখ পেয়েছে এটি বড় কথা। আমার মনে হয় রাকিব তার ওয়াইফকে অনেক পছন্দ করে। এই কারণে মোহনার বাবা শর্তটি দেওয়ার পরও সেই মহানাকে ঘরে তুলে নিয়েছে। যাই হোক বাস্তব একটি ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

ভাই, সন্দেহ রোগটা ভীষণ খারাপ, আর তাই রাকিব ও মোহনার সংসার ভেঙ্গে গিয়েছিল। তবে এখন সব ঠিক হয়ে গেছে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65551.56
ETH 2659.92
USDT 1.00
SBD 2.89