বাইক ট্যুর (Bike Tour) : পর্ব - ১৩... || ১০% বেনিফিশিয়ারি shy-fox এর জন্য

" আজ বুধবার-৮ই অগ্রহায়ণ-১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২৩,নভেম্বর - ২০২২ খ্রিস্টাব্দ "

মার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।

Picsart_22-11-23_00-16-46-553.jpg

বাইক ট্যুর (Bike Tour) : পর্ব - ১২...

পোষ্টের লিংক

আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি আমার বাইক ট্যুর (Bike Tour) : পর্ব - ১৩... উপস্থাপন করব। গত পর্বে আমি আপনাদের মাঝে লঞ্চের চায়ের দোকানে চা খাওয়া পর্যন্ত রেখে দিয়েছিলাম। আজ আবারও সেখান থেকে শুরু করছি। আমরা লঞ্চে করে যাওয়ার সময় বিশেষ একজনের সাথে পরিচিত হয়েছিলাম। তার বাড়ি পটুয়াখালী। সে আমাকে এবং আমার অর্ধাঙ্গিনী কে দেখে, খুবই কৌতুহল বসতো জিজ্ঞেস করেছিল আমাদের বাড়ি কোথায়? আর আমরা যখনই বলেছিলাম আমাদের বাড়ি কুড়িগ্রাম, তখন সে বলেছিল এত দূর থেকে আপনারা কোথায় যাচ্ছেন। আমি বলেছিলাম আমরা বাইক ট্যুরে এসেছি, কুয়াকাটা পর্যন্ত আমাদের গন্তব্যস্থল। তখন তিনি বেশ অবাক হয়েছিলেন। কেননা বাইকে করে একজন মহিলা সহ এতদূর জার্নি করা তার বিশ্বাসই হচ্ছিল না। যাইহোক পরে আমাদের সাথে অনেক কথোপকথন হলো। সেই ভাই তার পরিচয়ে নামটি জানিয়েছিল সাইফুল ইসলাম।

IMG_20221122_215025.jpg

IMG_20221122_215419.jpg

আমরা চা খাওয়া শেষ করতেই সেই ছাইফুল ভাই চায়ের বিলটি মেটানোর জন্য খুবই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছিল। কিন্তু আমি নাছোড় বান্দা, যেহেতু আমিই চা খাওয়ার জন্য তাকে ডেকেছিলাম, তাই চায়ের বিলটি আমি দিয়েছিলাম। লঞ্চের ভিতরে এত স্বাদের চা পাওয়া যায়, তা কখনো ভাবি নি। চা খাওয়ার পর্ব শেষ করে আমরা এবার আমাদের কেবিনের উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করলাম। আর যখন আমি কেবিনের সামনে এসে গেলাম, তখন কেবিনের গলির একটি ছবি তুলে নিলাম আমার মুঠোফোনে।

IMG_20221122_215306.jpg

IMG_20221122_215203.jpg

এই হলো ভিআইপি এসি কেবিন। এই ভিআইপি এসি কেবিনে আমরা টিকিট কেটেছিলাম। আর আমাদের কেবিনের পাশেই সাইফুল ভাইয়ের কেবিন ছিল। তাই গলির মধ্যে থাকা সোফায় বসে আমরা দুজনে মিলে অনেকক্ষণ আলাপ-আলোচনা করেছিলাম। সাইফুল ভাই তার বাসায় আমাদেরকে নেয়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ করতে থাকলো। আর আমরাও তাকে আশ্বস্ত করলাম সময় সুযোগ করে তার বাসায় এক দিন অবশ্যই যাওয়ার চেষ্টা করব।

IMG_20221122_215527.jpg

IMG_20221123_012140.jpg

আমরা সাইফুল ভাইয়ের সাথে কথোপকথন শেষ করে, আমাদের ভিআইপি এসি কেবিনের ভিতরে প্রবেশ করলাম কিছুটা রিলাক্স হওয়ার জন্য। আমরা অনেকটা পথ বাইকে করে জার্নি করেছি, যার কারণে আমাদের শরীর ভারাক্রান্ত। তাই লঞ্চে যতক্ষণ আছি ততক্ষণ আমাদের বিশ্রাম নেয়াটাই উচিত বলে মনে করেছিলাম। আর বিশ্রাম নেয়ার মুহূর্তে আমি আর আমার অর্ধাঙ্গিনী দুজনের একটি করে ছবি ক্যামেরাবন্দি করে নেই।

IMG_20221123_002028.jpg

IMG_20221123_001924.jpg

IMG_20221123_001846.jpg

এটি ছিল আমাদের অর্থাৎ কাজল-৭ লঞ্চের সবচেয়ে বিলাসবহুল কেবিনের চিত্র। এই কেবিন রুমটিতে করে, ঢাকা সদরঘাট থেকে পটুয়াখালী লঞ্চঘাট যেতে ভাড়া পড়বে (৫০০০৳) পাঁচ হাজার টাকা। ভাড়াটা আমার কাছে অনেক অনেক বেশি মনে হয়েছিল। কারন নৌপথে ১৫৭ কিলোমিটার রাস্তা মাত্র। আর সড়কপথে ২৭৬ কিলোমিটার রাস্তার জন্য (৫০০০ ৳)পাঁচ হাজার টাকা গুনতে হবে। তাই আমি কোনো প্রয়োজন মনে করিনি এই রুমটি নেবার। তবে হ্যাঁ, আমরা যে রুমটি নিয়ে ছিলাম, সেই রুমটিও ছিল বেশ পরিপাটি।

IMG_20221122_215812.jpg

IMG_20221122_215654.jpg

IMG_20221123_002202.jpg

আমরা সারারাত ধরে লঞ্চে করে পটুয়াখালী পর্যন্ত এসে পৌছালাম। তখন সকালবেলা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছিল আর ঠিক সেই মুহূর্তেই পটুয়াখালী ঘাটে এসে আমাদের লঞ্চটি যাত্রা শেষ করল। তাই এবার আমাদের ব্যাগ প্যাকিং করে, কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে রওনা দেবার পালা। আমি যখন সকালবেলা লঞ্চের বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম, তখন পটুয়াখালীর ঘাটে যে চিত্র দেখেছি তা সত্যি আমাকে মুগ্ধ করেছিল। সকালের মুক্ত হওয়ায়, ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে পটুয়াখালী ঘাট যেন ঝকঝকে, চকচকে ও পরিষ্কার মনে হচ্ছিল।
আমার তো মনে হচ্ছিল কেউ যেন এই ঘাটেকে পানি দিয়ে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দিয়ে গেছে।

IMG_20221122_215908.jpg

IMG_20221122_220008.jpg

আমরা যখন লঞ্চে করে যাত্রা করেছিলাম তখনকার চিত্রে লঞ্চে নিচতলা একদম যাত্রী দিয়ে ভরপুর ছিল। আমরা এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত হেঁটে যেতে অসুবিধা হচ্ছিল। অথচ সকালে যখন সবাই তাদের ব্যাগ প্যাকিং করে নিয়ে লঞ্চ থেকে চলে গেছে, তখন লঞ্চটি পুরোটাই ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। আর সেই মুহূর্তে আমিও ফটোগ্রাফি করে নিয়েছি আমার মোবাইল ফোনে। পটুয়াখালী ঘাট, নতুন একটি জায়গায় এসে নতুন একটি পরিবেশ দেখতে পেয়ে আমার ভীষণ রকম ভালো লেগেছিল। এখন মনের মধ্যে শুধু চিন্তা আসছে, আর কতদূর গেলে আমরা কুয়াকাটা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবো। আজ আর নয়, এখানেই শেষ করছি।

আশা করি আমার বাইক ট্যুর (Bike Tour) : পর্ব - ১৩... পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkPKDYqZPTyz3HQnPBAZYA84k8k89ixkhuUsFjZkgWkC1gjU36M1oU8J7FbJUoPMtjB5EHLD1usXZox8d6boJGJdTa7jANjx37k.png
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

3q52Dkr5nBe3kDiHrk4F3qdzX6E5VuVcCcF7TDQDco37AUsMDxK7aJ1uasvrAaBSP6D1NgNuBSX2m.gif

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeSsa63mzHQexuvWRDgxAQmHZjMKhFaYGe2ubQmiC33SnsVy3TGA7BbZJiqfXWxLCKhiShcGVU.png

" ধন্যবাদ সবাইকে "

Sort:  
 2 years ago 

ভাইয়া বাইক ট্যুরের গল্প পড়তে আমার খুব ভালো লাগে। আপনি দেখছি ভাবিকে নিয়ে অনেক দিন যাবৎ বাইক ট্যুরে আছেন। তবে তাই বলেন লঞ্চের ভিতরে ভিআইপি কেবিন দেখতে কিন্তু দারুণ। আমি এক বার লঞ্চে করে ঢাকায় এসেছি। কিন্তু লঞ্চে চা খাওয়া হয়নি যেহেতু আপনি বলছেন তাহলে আবার গেলে অবশ্যই খাব। ভাইয়া খুব সুন্দর ভাবে বাইক ট্যুরের গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন পড়ে খুব ভালো লাগলো।এর সাথে আবার ছবিগুলোও দেখতে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

আমি আপনার সবগুলো পর্ব পড়তে পারিনি। যে কয়টা পর্ব করেছি সবগুলো আমার অনেক ভালো লেগেছে। আমার এই ধরনের ট্যুরের গল্প করতে অনেক ভালো লাগে। পোস্টটি পড়ে আমার পটুয়াখালী ঘাটে চিত্র চোখে দেখতে ইচ্ছে করছে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। কুয়াকাটার পর্বের অপেক্ষায় আছি। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

বাইক ট্যুরের গল্প নয় আপু, বাইক ট্যুর করতেই আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনার গতবারের বাইক ট্যুর আমি পড়েছিলাম বেশ ভালো লেগেছিল।কিন্তু এবারের বাইক ট্যুর অসাধারণ।লঞ্চের ভিতর এমন সুন্দর এসি রুম থাকে আমার আগে জানা ছিল না।আপনি ভাবিকে নিয়ে লঞ্চের ভিতর অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন ভালো লাগলো পড়ে।

 2 years ago 

লঞ্চে করে ভ্রমন করার মজাটাই আলাদা। আমিও এইবার প্রথম লঞ্চে উঠেছি। আমার মনে হয় সবাইকে একবার হলেও লঞ্চ জার্নি করা উচিত। তাহলেই এর ভাল লাগা কতটুকু বুঝতে পারবে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে ও

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি বাইক ট্যুরে যাবেন, সেটা বলেছিলেন ডিসকোডে।তখন বলেছিলাম, ভাবীকে নিয়ে যাবেন, আপনি ভাবীকে নিয়ে গেছেন,খুব ভাল লাগলো দেখে।আর বড় বড় লঞ্চের অভিজ্ঞতা আমার আছে।আগে আমি লঞ্চে করেই ঝালকাঠী শ্বশুর বাড়ি যেতাম। এখন ত গাড়িতেই যাওয়া আসা করি।লঞ্চের খাবারগুলো ও মজার হয়। আপনি সুন্দর মূহুর্ত গুলো শেয়ার করেছেন অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপু আপনি যেহেতু লঞ্চে উঠেছেন তাহলে আপনি অবশ্যই উপলব্ধি করেছেন লঞ্চে উঠলে ঠিক কতটা ভালো লাগে। আমার তো প্রথম লঞ্চে ওঠাটা সারা জীবন মনে থাকবে। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 62447.99
ETH 2513.51
USDT 1.00
SBD 2.67