ছোট গল্প : মরিয়ম (পর্ব-০৩) || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ৫ই কার্তিক | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | হেমন্তকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
দ্বিতীয় পর্বের পরে আজকে আবার তৃতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। কোর্টের রায় অনুযায়ী মরিয়মের ছেলে তার স্বামীর কাছেই থাকবে। তার ছেলেকে হারিয়ে মরিয়ম অনেকটাই একা হয়ে গিয়েছিল ঘরবন্দী অবস্থায় বেশি সময় থাকতো তবে মরিয়মের ছেলে যেহেতু মাদ্রাসায় থাকতো তাই মরিয়ম একদিন চিন্তা করল সে চাইলেই তার ছেলেকে খুব সহজে মাঝেমাঝেই দেখতে পারে। একদিন হঠাৎ করেই সে আবার শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হল তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল তার ছেলেটাকে সে দেখবে কেননা অনেকদিন তার ছেলেটাকে দেখতে পায় না। যদিও মরিয়মের ছেলে মরিয়মের কাছেই থাকতে চায় কিন্তু এখন বাধ্য হয়ে তাকে মাদ্রাসাতেই থাকতে হচ্ছে। মরিও মাদ্রাসায় গেল এবং তার ছেলের সাথে দেখা করলো আর ছেলেকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে লাগলো।
চাইলেই তো আর মরিয়ম তার ছেলেকে নিয়ে আসতে পারছে না কারণ মাদ্রাসার তো নিয়ম আছে সেই নিয়ম অনুসারেই মরিয়মকে তার ছেলের সাথে দেখা করতে হবে যাই হোক দেখা করে আবার মরিয়ম বাসায় ফিরে আসলো। মরিয়ম নিজেকে শক্ত করার চেষ্টা করল এবং সে ভাবলো জীবনে কিছু একটা করতে হবে যার মাধ্যমে তার ছেলেটাকে আদর্শ একজন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে এবং তার স্বামীকে একটা উচিত জবাব দিতে হবে। সে প্রথমে ভাবলো গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে কাজ করবে কিন্তু সেখানে যে টাকা পাওয়া যাবে সেটা দিয়ে তার কোনমতে খাওয়া-দাওয়া খরচ হবে। আবার মরিয়মের পরিবারের অবস্থাও খুব একটা ভালো ছিল না তাই সে চিন্তা করছিল কি কাজ করলে সে জীবনটাকে আবার নতুন করে সাজাতে পারবে।
মরিয়মের পাশের বাড়িতে একজন মহিলা বিদেশ থাকে অর্থাৎ প্রবাসী । তাদের বাড়ি থেকে মরিয়ম জানতে পারে সেই মহিলা বিদেশ থাকে প্রতি মাসে অনেক টাকা রোজগার করে তাই মরিয়মও ভাবল সে বিদেশে যাবে কিন্তু তার কাছে যথেষ্ট পরিমাণ টাকা ছিল না যা দিয়েছে বিদেশ যেতে পারবে। তবে মরিয়মের ছোট মামা বেশ শিক্ষিত ছিল তাই তার বন্ধুর সাহায্যে মরিয়মকে বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলেছিল। মহিলা মানুষের বিদেশ যেতে তো আর খুব বেশি টাকা দরকার পড়ে না। মরিয়ম তার গলার স্বর্ণের চেইন বিক্রি করে পাসপোর্ট করার সিদ্ধান্ত নেয় কেননা বিদেশ যেতে গেলে পাসপোর্ট তো লাগবেই। যেহেতু মরিয়ম বিদেশ যাবে তাই মরিয়মের বাবা-মাও অনেক কষ্ট করে কিছু টাকা ম্যানেজ করে দিল আর গ্রামের ছোট্ট সংস্থা থেকে কিছু টাকা ঋণ নেওয়ার চিন্তা করছিল। মরিয়ম বিদেশ যাবে আর সেই টাকা বিদেশ গিয়ে পরিশোধ করবে। ধীরে ধীরে কার্যক্রম এগোতে থাকল আর মরিয়ম তার পাসপোর্ট হাতে পেয়ে গেল কিছুদিন পরে। মরিয়মের ছোট মামার মাধ্যমে ঢাকায় একটি অফিসে তার পাসপোর্ট জমা দিল এবং ঢাকা থেকে ফেরার সময় আবার মাদ্রাসায় গিয়ে তার ছোট্ট ছেলেটার সাথে দেখা করে আসলো। তবে তার ছেলেটা এখন সবকিছু বুঝতে শুরু করেছে তাই লেখাপড়ার প্রতি অনেকটাই মনোযোগী হয়েছে আর মরিয়মও তাকে লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী হওয়ার জন্য সব সময় উপদেশ দিত।
মরিয়ম বাড়িতে আসলো এবং অনেক কষ্টের টাকা জোগাড় করল সেই সাথে মরিয়মের বাবা গ্রামের একটি ক্ষুদ্র সংস্থা থেকে কিছু টাকা ঋণ করে মরিয়মকে বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিল। হঠাৎ করেই অফিস থেকে একদিন ফোন দিয়ে মরিয়ম কে বলল তার ভিসা হয়ে গিয়েছে খুব শীঘ্রই তাকে সৌদি আরব চলে যেতে হবে। মরিয়ম শুধু বারবার তার ছেলের কথা চিন্তা করছিল কেননা ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার জন্যই সে মহিলা মানুষ হয়ে বিদেশে যাচ্ছে। যেহেতু মরিয়মের একটি দরিদ্র পরিবারের জন্ম তারপর তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে তাই জীবনে তার টাকার খুব দরকার ছিল। এজন্য সে বাধ্য হয়ে বিদেশ যাওয়ার পথটাই বেছে নিয়েছিল।
আজ এ পর্যন্তই বাকিটা আবার পরবর্তী পর্বে শেয়ার করব
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Posted using SteemPro Mobile
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
মেয়ে বা মা নিজের জীবন নষ্ট করে ছেলে মেয়ের জীবন সুন্দর করতে ব্যস্ত থাকে এবং মরিয়ম যে অনেক কষ্ট করছে। জীবনে অনেক টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশ গিয়েছেন মরিয়মের বাবা-মা ও তার পাশে ছিল তাকে সাপোর্ট করছে।মরিয়ম চেষ্টা করছে তার স্বামীকে উচিত জবাব দেওয়ার এবং এটাই হচ্ছে আসল শিক্ষা। জলদি যখন মরিয়মের ভিসাটা হাতে পেয়ে গেল। সত্যি এটা অনেক আনন্দের। জানিনা বিদেশের পরবর্তী জীবনে কি আছে পরবর্তী পর্বে অবশ্যই আমরা বিস্তারিত জেনে যাব এবং সত্যি মরিয়মের জন্য খুবই খারাপ লাগতেছে।
যেহেতু ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়ে দিয়েছে তাই ওখানে নিয়ম কানুন তো মানতেই হবে। নিজের ভবিষ্যৎ নতুন করে গড়ে তোলার জন্য সে বিদেশ যাওয়ার কথাটা বেছে নিয়েছে। আশা করছি বিদেশ যাওয়ার পর তার জীবনটা নতুন ভাবে গড়ে তুলতে পারবে এবং সে খুব ভালো থাকতে পারবে।
আসলে ছেলেকে ছাড়া থাকাটাও কিন্তু অনেক বেশি কষ্টকর একটা মায়ের জন্য। তবে মরিয়ম ছেলের সাথে দেখা করতে মাদ্রাসায় গিয়েছিল এবং তার সাথে দেখা করেছিল এটা জেনে ভালো লাগলো। এখন তো দেখছি সে নিজের লাইফটাকে নতুন করে তুলে ধরার জন্য বিদেশ যাচ্ছে এবং সবকিছু রেডি করে ফেলেছে। আপনার এই গল্পের পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
মরিয়মের এই সিদ্ধান্তটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। এতো কষ্ট করে মরিয়মের বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা তাহলে হলো অবশেষে। দোয়া করি মরিয়ম যেন ঠিকঠাক মতো সৌদি আরব যেতে পারে এবং সেখানে গিয়ে টাকা উপার্জন করে, নিজের ছেলের ভবিষ্যৎ গড়তে পারে, তারপর স্বামী নামের কুলাঙ্গারকে উচিত জবাব দিতে পারে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।