লকুড় খুনতি || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -৪ঠা ভাদ্র | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শনিবার | শরৎকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
আজকে একটি ছোট গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি তবে গল্পটা ছোট হলেও বেশ মজার একটি গল্প। আগে বেশ কয়েকটি গল্প শেয়ার করেছি আর সেগুলো দুই থেকে তিন ব
পর্ব কেন্দ্রিক তবে আজকের এই গল্পটি এক পর্বেই শেষ হবে কারণ এটি একটি ছোট্ট মজার গল্প। আমার মনে হয় গল্পতে যদি মজার বিষয়গুলো তুলে ধরা হয় তাহলে পাঠকের গল্পটা পড়ার প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে। আমার নিজের কথাই বলি যদি কোন গল্প পড়ে মজা না পাই তাহলে সেটা পুরোপুরি পড়তে ইচ্ছে করে না এরকম সবার ক্ষেত্রেই হওয়াটা স্বাভাবিক। যাইহোক আর কথা না বাড়িয়ে এবার মূল গল্পের দিকে ফিরে যাই।
ছোট এক শহরে জব্বার মিয়া নামে এক লোক বাস করতো। তিনি অনেক গরিব ছিলেন আর সারাদিন পরিশ্রম করে তার পরিবারের লোকজনের মুখে দুবেলা দুমুঠো ভাত তুলে দিত। জব্বার মিয়া পেশায় ছিল একজন রিকশাচালক। আর্থিকভাবে অনেক দুর্বল হলেও তার অনেকগুলো সন্তান ছিল যার কারণে সবার মুখে অন্ন তুলে দিতে তাকে সারাদিন রিক্সা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করতে হতো। তার অনেকগুলো ছেলে মেয়ে ছিল আর সবাই একে অপরের থেকে দেড় দুই বছরের ছোট বড়। সামান্য রিক্সা চালিয়ে কয় টাকায় বা ইনকাম করতে হবে সেটা শেষ বেলায় গিয়ে চাল ডাল সহ সব তড়িতরকারি কিনে শেষ হয়ে যেত। তবে জব্বার মিয়া যে পরিমাণে চাল ডাল কিনে নিয়ে আসতো তা দিয়ে যে রান্না হতো সেটা তার ছেলেমেয়েদের খেতেই শেষ হয়ে যেত জব্বার মিয়া আর তার বউ ঠিকমত খেতেই পারত না। তার সন্তানদের খাওয়া দাওয়া শেষ হতে যা রান্না হতো সেটা ফুরিয়ে যেত আর মা-বাবা সব সময় সন্তানদেরকে পেটপুরে খেতে দেয় তারপর নিজেরা খায় আর তার সন্তানদের পেট পুরে খেতে দিতে গেলে তাদের আর ঠিকমতো খাওয়া হত না তাই ওই ভাবেই তাদের অভাবের সংসার চলতে থাকে।
জব্বার মিয়ার ভালো ভালো খাবার খেতে মন চাইলেও সে আর্থিক সংকটের কারণে সেই খাবারগুলো খেতে পারত না। তিন বেলা পেটপুরে ভাত খেতে পারে না তার ভালো ভালো খাবার কিভাবে খাবে সে। একদিন এক সাহেব তার রিকশায় ওঠে এবং অনেক টাকা ভাড়া দেয় সে সেই টাকাগুলো নিয়ে চিন্তা করে গরুর মাংস কিনে পেটপুরে ভাত খাবে। বাজারে গিয়ে জব্বার মিয়া দুই কেজি গরুর মাংস কিনে। যখন রাতের বেলা যখন বাসায় ফিরল তখন তার বউকে গোপনে ব্যাগ হাতে দিয়ে বলল এর মধ্যে ২ কেজি গরুর মাংস আছে ছেলেমেয়েরা ঘুমিয়ে যাওয়ার পরে আমরা দুজন পেটপুরে আজকে ভাত খাবো। জব্বার মিয়া অপেক্ষা করছিল যে তার সন্তানেরা ঘুমিয়ে গেলে রান্না করে আজকে পেটপুরে খাবে। কিন্তু জব্বার মিয়ার বউয়ের বিবেকে বাধা দেয় যে তার সন্তানগুলোকে রেখে সে একা একা কিভাবে খাবে। আসলে মায়ের মন কিছুতেই মানতে চাইছিল না। সে একটি টেকনিক অবলম্বন করে রান্না শেষ করার আগেই তার ছেলেমেয়েদেরকে লকুড় খুনতি কড়াই চামচ সহ বিভিন্ন ধরনের নাম রাখে। রান্না শেষ হওয়ার আগেই জব্বার মিয়ার সন্তানেরা ঘুমিয়ে পড়ে আর যখন রান্না শেষ হয় তখন জব্বার মিয়ার বউ ডাকতে থাকে।
জব্বার মিয়ার বউ যেহেতু আগে থেকেই তাদের সন্তানগুলোকে আলাদা আলাদা নাম রেখেছিল সেহেতু যখন খেতে বসেছিল তখন জোরে জোরে বলছিল লকুড় দিয়ে ভাত নেড়ে দাও,কৈরে লকুড়। আবার কিছু সময় পরে বলছিল প্লেট কোথায় প্লেট?? আবার চামচ বলে চিৎকার করতে থাকে। এভাবে কিছুক্ষণ পর একে একে সব ছেলেমেয়েরা সেখানে চলে আসে। ধারাবাহিকভাবে সবাই এসে পাটিতে বসে পড়ে। যখন ধীরে ধীরে সব সন্তানগুলো পাটিতে এসে বসছিল তখন জব্বার মিয়ার বউ মিটিমিটি হাসছিল আর জব্বার মিয়া তো হা করে তাকিয়ে ছিল। কিছু সময় পরে জব্বার মিয়া সব ছেলেমেয়েদের কে ডেকে নিয়ে একই পাটিতে খেতে বসে আর জব্বার মিয়ার বউ ধারাবাহিকভাবে তাদের সবাইকে খাবার পরিবেশন করে দেয়। তবে যে পরিমাণে রান্না হয়েছিল তাতে পরিবারের সবাই মোটামুটি ভালোভাবে খেতে পেরেছিল আর খাওয়া শেষে জব্বার মিয়া সব ছেলেমেয়েদেরকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করছিল আর তার মনের দুঃখের কথাগুলো প্রকাশ করছিল। তবে সবশেষে তার ছেলেমেয়েদেরকে আবার লকুড় খুনতি কড়াই ইত্যাদি নামে ডাকছিল আর হাসছিল।
এভাবেই ধীরে ধীরে জব্বার মিয়ার দিনগুলো পার হতে থাকে আর তার ছেলে সন্তানগুলো বড় হয়ে সংসারের হাল ধরতে থাকে আর তাদের অভাব অনটন ধীরে ধীরে দূর হতে থাকে।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Posted using SteemPro Mobile
https://twitter.com/KaziRai39057271/status/1692936700526465255?s=20
বউয়ের বুদ্ধির কাছে হেরে গেলো জব্বার মিয়া। লকুড় খুনতি কড়াই নাম গুলো কিন্তুু দারুন। কোথাও গেলে এই তীক্ন মেধাট কাজে লাগানো যেতে পারে। ধন্যবাদ।
যাক তাহলে এই মেধা খাটানোর একটা টপিক পেয়েছেন হা হা হা।