বন্ধুর প্রতি বন্ধুর ভালোবাসা ||১০% লাজুক খ্যাকের জন্য by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -০৬ই ভাদ্র | ১৪২৮ বঙ্গাব্দ | রবিবার | শরৎকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
মানুষ সমাজে কিছু নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে বেড়ে ওঠে। যেমন ধরুন বর্তমানে আমাদের দেশে প্রাপ্তবয়স্ক হলেই ছেলে-মেয়েদেরকে স্কুলে পাঠানো হয়। পড়াশোনার পাশাপাশি সমবয়সী ছেলেদের মধ্যেও বা মেয়েদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আর বিশেষ করে প্রাইমারি স্কুল থেকে হাই স্কুল পর্যন্ত যে বন্ধুত্ব থাকে সেটা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্থায়ী হয় তবে কলেজের বা ভার্সিটির বন্ধুত্ব অতটা গভীর হয় না। ছোটবেলা থেকে একসাথে লেখাপড়া করে আসছি তারা যেন আমার প্রিয় মানুষের থেকে কোন অংশে কম নয়। কিশোর থেকেই বন্ধুগুলো আমার আপদ বিপদে সব সময় পাশে থেকেছে নিজের যখন মন্দ সময় গিয়েছে তখন তারা পাশে থেকেছে আমার মনোবল বৃদ্ধি করেছে। এর থেকে একজন বন্ধুর কাছে আর কি বড় পাওয়া হতে পারে। যখন আমি একা সময় পার করি তখন আমার বন্ধুগুলোকে স্মরণ করি তারা আমার একাকিত্বের সঙ্গী হয়, মেসেঞ্জার গ্রুপে হোক বা সামনাসামনি এসে তাদের সাথে কথা বলে মন ভালো হয়ে যায়। সব সময় তাদের সাথে আড্ডায় মেতে থাকতে ভালো লাগে। বন্ধুদের সাথে পিকনিক করা নৌকা ভ্রমণ করা এছাড়া বিভিন্ন ক্রিকেট খেলার টুর্নামেন্টে মেতে ওঠা অনেক স্মরণীয় মুহূর্ত আছে যেগুলো আমার জীবনের সোনালী পাতা হিসেবে এখনো ফুটে আছে।
সময়ের ব্যবধানে অনেকে বাইরে লেখাপড়া করে আবার অনেকেই চাকরি করে, আর যখন বিশেষ কোনো ছুটি বা মুহূর্তে আসে সব বন্ধুরা একসাথে হওয়ার চেষ্টা করি। আর বন্ধুরা মিলে একসাথে হওয়া মানেই সুন্দর সময় পার করার পাশাপাশি সবাই মিলে একসাথে খাওয়া দাওয়া করা যেন আমাদের একটা অভ্যাস হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি থাকার কারণে আমার কয়েকটা বন্ধু বাড়িতে এসেছিল তাছাড়া বাইরে যারা লেখাপড়া করে তাদের ৩ দিন ছুটি ছিল বলে অনেকে এসেছিল তাই আমরা গ্রুপে আগে কথাবার্তা বলে রেখেছিলাম যে শুক্রবার বিকেলে সবাই মিলে পিকনিক করবো আর বিকেল বেলায় নদী ভ্রমণ শেষে মাঝ নদীতে নৌকা নোংর করে মাঝ নদীতে বসে খাওয়া দাওয়া করব। আসলে আমাদের ভাগ্যে নদী ভ্রমন ছিল না যার কারণে সপ্তাহের ব্যবধানে নদীর পানি অনেকটাই শুকিয়ে গিয়েছিল তাই আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন নিয়ে এলাম। শুধু বিকেল বেলায় সবাই মিলে একসাথে রান্নাবান্না করে খাওয়া দাওয়া করব। গ্রুপের কথাবার্তা শেষে শুক্রবারের দিন বিকেল বেলায় আমার বন্ধুদের সাথে বাজারে দেখা হল সবাই বাজার করতে যাচ্ছিল আর আমি দোকানে ছিলাম কারণ আমার আব্বু বাসায় ছিল না যার কারণে আমাদের দোকানের দায়িত্বটা আমার কাঁধে ছিল। বিকেল বেলায় দোকানের বেচাকেনা একটু বেশি হয় যার কারণে আমার ভাইয়ের একার পক্ষে দোকান সামলানো সম্ভব হয় না তাই আমি তাকে একটু সাহায্য করার জন্য এসেছিলাম। যাইহোক আমার বন্ধুদের বললাম তোমরা গিয়ে বাজার করে আসো আমি একটু দেরিতে যাবো আজকে আমার একটু দোকানে থাকতে হবে। বিকেলের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমার বন্ধুরা কয়েকবার আমাকে ফোন দিয়েছিল কিন্তু আমি ব্যস্ত ছিলাম বলে তাদেরকে সময় দিতে পারিনি পরবর্তীতে বললাম আমার যাওয়া একটু অনিশ্চিত যদি সম্ভব হয় তাহলে রাত আটটার দিকে যাবো। আসলে বন্ধুরা সবাই মিলে একটা প্রোগ্রাম করেছি সেখানে আমি যেতে পারব না বিষয়টা ভাবতেই আমার মনের কাছে খুব খারাপ লাগছিল। দোকানের কাজ শেষ করে বাড়ি যেতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল যার কারণে আমার বন্ধুদের সাথে আর পিকনিকের আড্ডায় যুক্ত হওয়া সম্ভব হয়নি। নিজের মনের কাছে খুব খারাপ লাগছিল যে সবাই মিলে প্রোগ্রাম করলাম বন্ধুদের বললাম যে আমি রাতের বেলায় আসবো কিন্তু যেতে পারলাম না এই ভেবে আর বন্ধুদের কারো কাছেই ফোন দিতে চাইলাম না। ভাবলাম কালকে বা পরশুদিন যখন আবার মেসেঞ্জার গ্রুপে আড্ডা দিব তখন সবার কাছে সমস্যার কথাটা খুলে বলবো। বন্ধুদের সাথে পিকনিকের আড্ডায় যুক্ত হতে না পেরে খুব মন খারাপ হয়েছিল যার কারণে আম্মু খেতে বলার পরেও না খেয়ে শুয়ে পড়েছিলাম। কমিউনিটিতে টুকটাক একটু কাজ শুরু করেছিলাম আর তখনই আমার বন্ধু আমাকে ফোন দিলো তখন ঘড়ির কাঁটায় ঠিক ১০:১১ বাজে। আমি ফোন রিসিভ করলাম আর তখনই আমার বন্ধু আমাকে বলল তোদের বাড়ির সামনে চলে এসেছি একটু বাইরে আসবি??
বাইরে গিয়ে দাঁড়াতেই আমার দুই বন্ধু এসে উপস্থিত হলো এবং ওদের হাতে আমি একটি প্যাকেট লক্ষ্য করলাম। আমি কিছু বলার আগেই ওরা প্যাকেটটি আমার হাতে দিল আর আমি বললাম এটা আবার কি?? আর বন্ধু পলাশ বলে উঠলো তুই যাস নাই তাই বলে আমরা তোকে ফেলে রেখে খেয়ে উঠবো এটা কি কখনো সম্ভব হয়। তখন মনে চাইছিল আমি ওকে একটু জড়িয়ে ধরি। পরবর্তীতে কিছু সময় কথা বলার পরে ওদেরকে বিদায় দিলাম যদিও রুমে আসার জন্য রিকোয়েস্ট করলাম কিন্তু ওরা বলল অনেক রাত হয়ে গিয়েছে এখন আর ভিতরে যাবো না অন্য কোনদিন এসে তোর হাতের নুডুলস রান্না খাবো । এর আগে আমি ওদেরকে কয়েকবার নুডুলস রান্না করে খাইয়েছি তাই ওরা আবারও আমার হাতের নুডুলস রান্না খেতে চেয়েছে। যাই হোক ওদেরকে বিদায় দিয়ে আমি রুমে চলে আসলাম এবং প্যাকেটটি খুলে দেখলাম খিচুড়ি ভাত আর মাংস। তবে খাবার যেটাই হোক বন্ধুত্বের ভালোবাসা টিকিয়ে রেখেছে। বন্ধুর প্রতি বন্ধুর ভালবাসা এভাবেই বৃদ্ধি পায়, খাবারগুলো একদম পুরোপুরি শেষ করলাম আর এই মুহূর্তটা স্মরণীয় করে রাখতে ভাবলাম খাবারটার একটা ছবি তুলি আপনাদের সাথে গল্পটা শেয়ার করা যাবে। খাবারের টেস্ট অনেক দারুন ছিল তাছাড়া বন্ধুরা খাবারটি পাঠিয়েছে তার জন্য বোধহয় খাবারের টেস্ট এতোটা ভালো লেগেছিল। দ্রুত খাওয়া শেষ করে মেসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত হলাম।
মেসেঞ্জারে ঢুকে আরো অনেক খুশি লাগছিল কারণ গ্রুপে আলোচনা হচ্ছিল যে রান্নার সময় কে কি কাজ করেছে?? এক বন্ধু বলছিল আমি ঝাল টেস্ট করেছি অন্য বন্ধু করছিল আমি লবণ টেস্ট করেছি সবমিলিয়ে আমি সেই মুহূর্তগুলো খুব মিস করছিলাম। পরবর্তীতে আমার বন্ধুরা আমাকে জিজ্ঞাসা করল আমি খাবার খেয়েছি কিনা টেস্ট কেমন হয়েছিল সব নিয়ে এই সব গল্প করতে করতেই অনেক রাত হয়ে গেল এবং আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।
তবে আমার কাছে এই বিষয়টি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে যে আমার বন্ধুগুলো আমার বিপদে পাশে থাকে তো বটেই পাশাপাশি সামান্য একটু খাবার তৈরি করে আমি সেখানে উপস্থিত হতে পেরেছিলাম না বলে আমার বাসায় মাঝ রাতে এসে পৌঁছে দিয়ে গিয়েছিল । হয়তোবা এটাই প্রকৃত বন্ধুত্ব বন্ধুত্বের উদাহরণ।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি জীবন কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
https://twitter.com/KaziRai39057271/status/1561158972421591040?s=20&t=PJnrz0NRCYgpuyIxRehZPw
💚🥰💚
বন্ধু এক অমূল্য সম্পদ।একটি ভাল বন্ধুর মত মুল্যবান সম্পদ নেই।আপনারা বন্ধুরা অনেক ভাল এটা জেনে মন টা ভাল হয়ে গেল।আপনাদের বন্ধুত্ব অটুট থাকুক।
দোয়া করবেন ভাইয়া যেন আমাদের এই বন্ধুত্ব চিরজীবন টিকে থাকে।
বন্ধুর সাথে কাটানো স্মৃতিগুলো আমাদের সব সময় বিভিন্ন পরিস্থিতিকে মনে করিয়ে দেয়। যেটা মনে পড়লেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। আর আপনি আপনার সেই অনুভূতির কথাটি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ভাই।
আপনার ও বন্ধু নামে শব্দটি সকল বন্ধুদের শুভেচ্ছা রইল
ভালো বলেছেন ভাইয়া।
ভালোবাসা নিবেন 💚
বন্ধুর প্রতি বন্ধুর ভালোবাসা নামক পোস্টটি যথার্থ হয়েছে। আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম, আপনার বন্ধুরা আপনাকে অনেক ফিল করে। যেভাবে আপনি করেন। আপনার বন্ধুদের আপনার প্রতি ভালোবাসা দেখে অনেক ভালো লাগলো। জয় হোক বন্ধুত্বের। ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আসলে বন্ধুত্ব এমন হওয়া উচিত।
আমি আমার বন্ধুদের নিয়ে গর্ব বোধ করি।
ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে ।সত্যি বন্ধুরা পাশে থাকলে আনন্দের সীমা নেই । বন্ধুরা তো সবকিছু। ভালো থাকুন আপনি আপনার সকল বন্ধুদের নিয়ে । দারুন একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আমি চাই যেন চির দিন আমার বন্ধু গুলো আমার পাশে থাকে, এভাবে আমাকে ভালোবাসে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
বন্ধু তো বন্ধুই।। তুমি ব্যস্ততার কারণে আসতে পারো নি।। সেজন্য তোমার জন্য খাবার পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।। যাতে তুমি বাসায় বসে খেতে পারো।। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।।
ভালোবাসা নিয়ো বন্ধু 💚
আপনি ঠিক বলেছেন ভাই প্রাইমারি এবং হাইস্কুলে যে বন্ধুত্বটা হয় সেটা আসলে ছোটবেলা বন্ধুত্ব আর সেটা আসলে আজীবনই থাকে। আপনি যেতে পারেননি কিন্তু আপনার বন্ধুরা আপনার জন্য খাবার বাসায় নিয়ে এসেছে। খুবই ভালো লাগলো, আসলে এটা বন্ধুত্ব
সুন্দর মন্তব্য করেছেন ভাইয়া।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
বন্ধুত্বের প্রতি বন্ধুত্বের ভালোবাসা গল্পটি পড়ে সত্যি খুবই ভালো লাগলো আপনি খুবই সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখেছেন আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ও অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।