জীবন থেকে নেওয়া পার্ট-২ (১০ % লাজুক খ্যাঁক এর জন্য)
আশা করি সবাই ভাল আছেন।
আলহামদুলিল্লাহ সকলের দোয়ায় আমিও ভালো আছি।
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাতে চাই কমিউনিটির এডমিন ও মডারেটরদের। ভেরিফাইড ট্যাগ অর্জনে সহযোগিতা করার জন্য।
গতবার জীবন থেকে নেওয়া পার্ট ওয়ানে আর কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আজকে আর কিছু বিষয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। উখিয়া থেকে কক্সবাজার আসার পর আমার নানা আমাকে ক্লাস টু তে ভর্তি করায় বাহারচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
আগের পোস্ট থেকে মোটামুটি বুঝতে পেরেছেন ছাত্র হিসেবে খুব বেশি একটা খারাপ ছিলাম না। ক্লাস টু থ্রি ফোর এ ক্লাস গুলোর কথা তেমন একটা মনে নাই। ক্লাস ফাইভ এর কথা মোটামুটি কিছুটা মনে আছে। ক্লাস ফাইভে আমার রোল ছিল ৫ কি ৬ এরকম। সঠিক মনে নাই। তবে এক- দুই নিয়ে প্রতিযোগিতা চলত আমাদের দুই ফ্রেন্ডের। একজন ছিল সাদ্দাম আর অন্য ছিল আমাদের এক বান্ধবী নাম রুবিনা আমরা রুবি ডাকতাম। দুজনের কারো সাথে বর্তমানে যোগাযোগ নাই। রুবির বাপের বাড়ি বলতে পারেন আমার বাসা থেকে বেশি দূরে না। তার ভাই ভাগিনাদের সাথে মাঝেমধ্যে দেখা হয়। তাদের কাছ থেকে মাঝেমধ্যে খোঁজ খবর নি। সে কোথায় আছে, কি করে, সর্বশেষ যতটুক আপডেট জানি সে বর্তমানে ঢাকা আছে স্বামী সংসার নিয়ে ভালোই আছে। আর সাদ্দামের সাথে শেষ দেখা হয়েছে মনে হয় আর আরো ৭-৮ বছর আগে কক্সবাজারে। মূলত পোস্টটা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে সাদ্দামকে নিয়ে। কারণ মানুষেরই ইচ্ছা শক্তি পারপার্শ্বিক সুযোগ-সুবিধা একজন মানুষকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে সেটাই মূলত তুলে ধরার চেষ্টা করব বা করছি।
সাদ্দাম গরিব ঘরের ছেলে ছিল কিন্তু খুবই মেধাবী ছিল। ক্লাস ফাইভ শেষ করে যখন ক্লাস ৬ এ আমরা কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভর্তি হই সে নিয়মিত ক্লাসে আসতো না, কারণ ক্লাস করতে আসলে তার সংসার চলবে না। তাই অল্প বয়সেই থাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। অথচ একটু সুযোগ সুবিধা পেলেই বিষয়টি অন্যরকম হতে পারত।
মাঝে মধ্যে দেখা হতো জিজ্ঞেস করতাম ক্লাসে আসিস না কেন? হেসে উড়িয়ে দিত। বলতো তোরা পড়। মাঝেমধ্যে এভাবে পথে ঘাটে দেখা হতো দেখতাম যে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেছে বিভিন্ন জায়গায় একেক সময় একেক রকম কাজ করে। এভাবে ক্লাস সিক্স সেভেন করে করে আমার পড়ালেখা চলতে থাকলো। কিন্তু সাদ্দামের আর পড়ালেখা হলো না। মাঝেমধ্যে রাস্তায় দেখা হলে সে নিজে লজ্জায় কথা বলতে চাইতো না। পাশ কাঠিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করত। আমাদের দেশে তো অনেক ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা হয়েছে বিশেষ করে ঝড়ে পড়া বাচ্চাদের জন্য। সরকার বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে তখন হয়তোবা সেটা তার বাবা-মা তার ফ্যামিলি বিষয়গুলো সম্পর্কে জানত না। যদি জানতো সে হতে পারতো দেশের জন্য একটা সম্পদ, হয়তো আজকে কোন সরকারি কোনো বড় অফিসার হতে পারতো, এভাবে একটি প্রতিভা হয়তো হারিয়ে যেত না। জীবন থেকে নেওয়া পার্ট টু আজকে এখানেই শেষ করব।
সবার প্রতি অনুরোধ সাদ্দামরা যাতে এভাবে হারিয়ে না যায়। যদি আপনারা আপনাদের আশেপাশে কাউকে দেখেন এরকম অবশ্যই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসবেন। কিছু করতে না পারেন অন্তত তার পড়ালেখার বিষয়টা ব্যাপারে সাহায্য করবেন দেখবেন এতে নিজের মধ্যে যেমন একটা অশান্তি অনুভব করবেন ঠিক একইভাবে দেশ রাষ্ট্র এতে উপকৃত হবে।
ধন্যবাদ সবাইকে মনোযোগ সহকারে এতক্ষণ ধরে আমার লেখাটি পড়ার জন্য
দরিদ্রতার কারণেই সাদ্দামকে পরিবারে হাল ধরতে হয়েছে আসলে না হলে সাদ্দামের ভবিষ্যৎটা আরো উজ্জ্বল হতে পারতো । আসলে সাদ্দামের মত যারা আমাদের সমাজে আছে তাদের পাশে আসলে আমাদের দাঁড়ানো উচিত ।আপনার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো আসলে ভাইয়া ।ধন্যবাদ আপনাকে
জি ভাই।আমাদের যাদের টাকা পয়সার সমস্যা নাই। তারা চাইলে একটু সহযোগিতার হাত বাড়ালে সমাজটা অন্য রকম হবে।
আপনার ঘটনা পড়ে অনেক কষ্ট লাগেলো ভাইয়া। আমাদের সমাজে এমন অনেক ঘটনা ঘটতেছে। আমাদের উচিত এসব ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া । ধন্যবাদ ভাইয়া।