ঢাকা শহরেও জঙ্গল আছে।।
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই,আশা করছি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকের ব্লগটি হলো প্রকৃতি নিয়ে। ঢাকা শহরের প্রকৃতি নিয়ে এমন কিছু তথ্য শেয়ার করবো যা জানলে আপনারা চমকে উঠবেন। চলুন শুরু করছি।
বিভিন্ন গ্রন্থে দেখা যায় বিশেষজ্ঞগণের মতে সুস্থ, সুন্দর ও বাসযোগ্য ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার জন্য যেকোনো দেশের আয়তনের শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি বা বনাঞ্চল থাকা প্রয়োজন। আামদের বাংলাদেশে বর্তমানে মোট বন বিভাগ নিয়ন্ত্রিত বনভূমির পরিমাণ প্রায় ২৩ লাখ হেক্টর জমি যা দেশের আয়তনের শতকরা মাত্র ১৫.৫৮ ভাগ। এটি আমাদের দেশের জন্য যথেষ্ট নয়। আমাদের দেশের প্রত্যেকটা মানুষ জানে যে আমাদের বাচঁতে হলে গাছ লাগাতে হবে। গাছ ছাড়া আমাদের স্বাভাবিক জীবন সম্ভব নয়। তারপরও আমাদের দেশে উল্লেখ যোগ্য হারে গাছ নিধন চলছেই। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের ফুসফুস নামে ক্ষেত আমাদের জাতীয় বন সুন্দরবনকে ধ্বংস করার জন্য এক দল স্বাথলোভী মানুষ চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাদের গাছ কর্তনের ফলে দিনে দিনে সুন্দরবনের আয়তন কমছে। সেই সাথে হারিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনের হাজারো প্রাণী। ২০১৮ সালে আমার একবার সুন্দরবন দেখার ভাগ্য হয়েছিল।
প্রায় পাঁচ কোটি জন সংখ্যার ঢাকা শহরে গাছপালা নাই বললেই চলে। যার ফলে প্রতি বছর বিভিন্ন বিদেশি সংস্থা ঢাকা শহরের পরিবেশ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বাস যোগ্য শহর গুলোর জীবন যাত্রার মানের সার্বিক দিক বিবেচনা করে রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেই রিপোর্টে বাংদেশের রাজধানী ঢাকা সবসময় লাল তালিকায় থাকে। শহরের মানুষের অসচেতন চলো ফেরা,নিয়মনীতি না মেনে বাসা বাড়ি,কল কারখানা তৈরী করার ফলে বাস যোগ্য শহরের তালিকায় একেবারে নিচে থাকে ঢাকা শহরের নাম। কোন কোন প্রতিবেদনে দেখা যায় বাসযোগ্যহীন শহরের তালিকার একনাম্বার বা দুই নাম্বারে থাকে রাজধানী শহর ঢাকা।
এমন পরিস্থিতে যদি ঢাকা শহরের মধ্যে কোথাও গাছপালা পূর্ণ জঙ্গল দেখা যায়, তাহলে কেমন লাগবে। জী হ্যাঁ এমনি একটি জায়গা রয়েছে ঢাকার বানিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র গুলিস্তানের পশ্চিম পাশে। সেই জায়গার নাম হলো উসমানী উদ্যান। ২৩ একর জায়গা নিয়ে অবস্থিত সেই উদ্যানে আমি তিনচার বছর আগে একবার গিয়েছিলাম। তবে তখন এত গাছপালা ছিল না। কিন্তুু গত মাসে কোন একটি কারনে সেই উদ্যানে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। সেখানে গিয়ে আমি চিনতেই পারছিলাম না যে আমি এখানে একবার এসেছিলাম। উদ্যানটিতে এত গাছপালা জন্ম নিয়েছে যে রীতিমত জঙ্গল ছাড়া আর কিছু বলতে পারছিলাম না। সেখানে প্রবেশ করে আমার কাছে মনে হয়েছে আমি কোন জঙ্গলের মাঝখানে এসে হাজির হয়েছি।
আমি উদ্যানে প্রবেশ করে অনেক গুলো ফটোগ্রাফি করেছি। আপনারা ফটোগ্রাফিতে দেখতে পাচ্ছেন ছোট বড় অনেক গুলো গাছ রয়েছে। বট গাছ,শালবন গাছ,আম গাছ,করই গাছ সহ নাম না জানা অনেক প্রকার গাছ রয়েছে সেখানে। সব থেকে আকর্ষনীয় একটি বিষয় হলো সেখানে হাটার মত বসার মত অনেক গুলো নতুন রাস্তা করা হয়েছে। উদ্যানটি উন্নয়নের জন্য হয়তো বাজেট হয়েছিল। কিছু কাজ করেছে,তারপর বাকি টাকা মেরে দিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের দেশে এমন ঘটনা অহরহ দেখা যায়। বিভিন্ন জাগায় উন্নয়নমূলক কাজের জন্য অনেক বার বাজেট হয় কিন্তুু একবারও কাজ হয় না। তবে যে গুলো দৃশ্যমান বা শহরের কাছাকাছি থাকে সে গুলোতে কিছু কাজ করে লোক দেখানোর জন্য। উসমানী উদ্যানে ঠিক সেই কাজটিই করা হয়েছে। লোক দেখানোর জন্য কিছু কাজ করেছে।
ফটোগ্রাফি গুলো ঠিক ভাবে লক্ষ করলে বুঝতে পারবেন সেখানে কি পরিমান গাছপালা রয়েছে। আমি সম্পূর্ণ উদ্যানে দুইবার করে ঘুরেছি। যত দেখি ততই ভাল লাগে। ঢাকা শহরের মত জাগায় এমন একটি উদ্যান কল্পনা করা যায় না। দুঃখের বিষয় হলো উদ্যানের মাঝখানে একটি লেক রয়েছে। অযত্নে অবহেলায় লেকের পানিতে ছোট ছোট কচুরিপানা জন্ম নিয়েছে। আপনারাই বলেন এই লেকটি পরিষ্কার করলে কত সুন্দর লাগবে। ঢাকাতে এক ফুট জায়গা পাওয়া যায় না দাড়াবার জন্য, সেই পরিস্থিতে এত জায়গা অপরিষ্কার অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এখানে জঙ্গলের মত হওয়ার কারনে কিছু দুষ্ট মানুষের আখড়া বেড়েছে। তারা বিভিন্ন ঝোপঝাড়ে বসে নেশা করে। তাই একা বা সাথী সঙ্গী নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন।
বন্ধুরা সেই উদ্যানে ঘুরে আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে। আমার মন চাইছে সরকার থেকে লিজ নিয়ে আমি উদ্যানটিকে আমার মনের মত করে সাজিয়ে তুলি। এখানে সব কিছু পরিষ্কার করে বিনোদনের ব্যবস্থা করা হলে প্রচুর লোকের সমাগম হবে। প্রতি বছর সরকার এখান থেকে কোটি কোটি টাকা আয় করতে পারে। আমাদের দেশে অনেক সচেতন ও পরিবেশ কর্মী রয়েছে। আশা করছি দুইদিন আগে আর পরে এই উদ্যানের গুরুত্ব বুঝতে পেরে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
বন্ধুরা আর ধীর্ঘায়িত করবো না। এখান থেকেই বিদায় নিবো। আশা করি আপনারা যারা উসমানী উদ্যানের আশে পাশে আছেন তারা একবার হলেও উদ্যানে ঘুরে আসবেন। উদ্যানে প্রবেশ করতে কোন প্রকার টাকা পায়সা লাগে না। ফ্রী প্রবেশ করবেন,ফ্রী নিঃশ্বাস নিবেন আবার ফ্রী বের হয়ে চলে আসবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-১০ |
শিরোনাম | ঢাকা শহরেও জঙ্গল আছে।। |
স্থান | গুলিস্তান, ঢাকা,বাংলাদেশে। |
তারিখ | ২১-০৭-২০২৩ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.