বঙ্গবাজারে আগুনে পুড়ে গেল হাজারো স্বপ্ন।।
হ্যালো বাংলাভাষাভাষী স্টিমিট পরিবার,
কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আপনাদের সাথে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে একটি জেনারেল পোষ্টের মাধ্যমে অত্যান্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করবো। আমার আজকের পোষ্টের বিষয় হলো বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ে কিছু কথা। চলুন শুরু করা যাক।
আপনারা হয়তো এতক্ষনে সবাই জেনে গেছেন যে, গতকাল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান বঙ্গবাজার মার্কেটে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সেই অগ্নিকাণ্ডে বঙ্গবাজারসহ আশপাশের ছয়টি মার্কেটের পাঁচ হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকাল ছয়টা দশ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিভানোর কাজে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দিয়ে যৌথভাবে কাজ করে সেনা, নৌ, বিমান ও বিজিবি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর সহ ঢাকার হাতিরঝিল থেকে পানি নিয়ে আগুন নিভানো হয়। ঢাকার বাইরে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ থেকেও আগুন নিভাতে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি ইউনিট। সব মিলিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিটের দীর্ঘ সাড়ে ছয় ঘণ্টার চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ব্যবসায়ী ও মালিক সমিতির সভাপতি জানায় সব মিলিয়ে দশ হাজার কোটি টাকার পন্য আগুনে পুড়ে গেছে।
বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাড়িয়েছে বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তিনি বাংলাদেশ সহ বিশ্বের সবাইকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাড়ানোর আহব্বান জানান। সাকিব আল হাসান SAH FOUNDATION এর পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের বুধবারের ইফতারের জন্য ২০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। আর এই ইফতারের আয়োজনটি সম্পূর্ণ করবে মাস্তুল ফাউন্ডেশন।
বঙ্গবাজারের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু ব্যবসায়ীরা ভিজা, পোড়া, দাগসহ কিছু কাপড় উদ্ধার করেছে। তবে সাধারন ক্রেতারা সেই কাপড় কিনতে চাইবে না। সেই জন্য তাদের প্রতি মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে আলোচিত “ফাউন্ডেশন বিদ্যানন্দ”। তারা ব্যবসায়ীদের ভিজা, পোড়া, দাগসহ কাপড় গুলো কিনার ঘোষনা দিয়েছেন। তারা যথা সম্ভব কাপড় গুলো পরিষ্কার পরিছন্ন করে বিনামূল্যে বিতরন করবে। সবাই হয়তো এই কাপড় গুলো নিবে না তবে কিছু কিছু মানুষ শখ করে স্মৃতি হিসাবে আলমারিতে সাজানোর জন্য এই কাপড় গুলো নিতে পারে।
কেউ কেউ আবার বলতেছে সরকার যদি তাদেরকে বিনা সুদে বা নাম মাত্র সুদে কয়েক হাজার কোটি টাকা লোন দেয় তাহলে ব্যবসায়ীরা তাদের ক্ষতিটা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবে। তবে তাদের এই পরামর্শ সরকারের কানে যাবে কিনা সেটা আমার জানা নেই। যদি যায় তাহলে ভাল, আর যদি না যায় তাহলে কি হবে সেটা সৃষ্টিকর্তাই ভাল জানেন। যেহেতু তিনি মানুষকে বিপদ দেন তিনিই আবার মানুষকে সেই বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন।
আমার এক বন্ধুর দোকান আছে এনেস্কো টাওয়ারে। তার বাসা আবার ঢাকার জুরাইন এলাকায়। সকাল বেলা আগুন লাগার কথা শুনে দ্রুত সেখানে পৌছে তার দোকান থেকে কিছু কাপড় সরাতে সক্ষম হয়েছে। আর কিছু কাপড় পুড়ে গেছে। আমার বন্ধুর বাবার কান্না দেখে আমার অনেক মায়া লেগেছে। তাদেরকে সান্তনা দেওয়ার মত ভাষা আমার জানা ছিল না। শুধু আমার বন্ধু নয় যাদের দোকান ছিল সবাই বুক ফাটিঁয়ে কান্না করেছে। কান্না করলে কি হবে চোখের পানি দিয়ে তো আর আগুন নিভে না। রমজানের ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা নিজের যা সম্বল ছিল সব কিছু দিয়ে দোকানে নতুন কাপড় তুলেছিল। বুকে অনেক আশা ছিল ঈদে বেচা কেনা ভাল হবে। কিন্তুু আগুন লাগার কারনে অনেক ব্যবসায়ী পথের ফকির হয়ে গেছে। বেশি অংশ ব্যবসায়ী বিভিন্ন ভাবে লোন নিয়ে দোকানে কাপড় তুলেছিলো।
একটি বিডিওতে দেখেছিলাম এক ব্যবসায়ী বেচাকেনা করে পাচঁলাখ টাকা দোকানে রেখে তারপর বাসায় গিয়েছিলো। কিন্তুু পরের দিন দোকানে এসে টাকার পরিবর্তে ছাই গুলো হাতে নিয়ে কান্না কাটি করছে। আরেক নিউসে জানতে পারলাম এক ব্যবসায়ী তার গরুর খামার বন্দক দিয়ে এক কোটি টাকা লোন এনেছিলো। আর তার নিজের কাছে ছিল দুই কোটি টাকা। ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছিলো এক কোটি টাকা। সর্বমোট চার কোটি টাকার কাপড় তুলেছিলো তিনটি দোকানে। গত কাল আগুন লেগে সব কিছু পুরে ছাই হয়ে গেছে। সারা দিন কান্না কাটি করে রাতের বেলা বাসায় গিয়ে দেখে ঘরে তার বউ নেই। ঘরে পনের লাখ টাকা আর পাচঁ থেকে ছয় ভরি স্বর্ণ ছিল। টাকা আর স্বর্ণ নিয়ে বউ তার সাবেক প্রেমিকের সাথে পালিয়ে গেছে। এক আঘাতের উপর আরেক আঘাত।
যায়হোক গত কালের আগুনে এমন হাজারো ঘটনা রয়েছে। যা আমি একা বর্ণনা করে শেষ করতে পারবো না। পরিশেষে তাদেরকে সান্তনা দেওয়া ছাড়া আমার কাছে আর কিছুই নেই। আমি ঐ মার্কেটে অনেক বার গিয়েছিলাম। চোখের সামনে সব কিছু ভাসতেছিলো। আর গত কাল সেখানে হাজারো ব্যবসায়ীর স্বপ্ন পুড়ার ছাই দেখলাম।
বন্ধুরা আজকে এপর্যন্তই। আজকে বেশি কিছু লেখার মত মোড নেই। যাদের স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে তাদের ঈদ কিভাবে কাটবে সেটা জানি না। এখানে কোন ষড়যন্ত্র আছে কিনা সেটাও জানি না। আর বেশি কিছু বলবো না। আজকে বিদায় নিলাম। আবার দেখা নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP













Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
অত্যাধিক মর্মান্তিক এবং দুঃখজনক একটি ঘটনা ঘটে গেল আমাদের দেশের মধ্যে। আর এই অগ্নিকাণ্ডের জন্য অনেক পরিবার আজ দিশেহারা হয়েছে অর্থনৈতিক দিক থেকে অতি ভিত্তিহারা। তবে দোয়া করব সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য যেন তারা খুব শীঘ্র তাদের ক্ষতির পরিমাণটা খুব সহজভাবেই এড়িয়ে উঠতে পারে এবং পুনরায় তাদের জীবনধারা পূর্বগতিতে অব্যাহত রাখতে পারে
জী ভাইয়া আমিও আপনার সাথে এক মত পোষন করে দোয়া করি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
বঙ্গবাজারের আগুনে পুড়ে হাজার হাজার দোকান শেষ হয়ে গেল নিমিষেই। সেখানে শুধু দোকান পুড়ে ছারখার হয়নি হাজারো মানুষের স্বপ্নগুলো ছারখার হয়ে গেল। নিঃস্ব হয়ে গেল ব্যবসায়ীরা। তাদের এমন দুর্দিনে দেশবাসী পাশে থাকা দরকার। এমনকি সরকারের সহযোগিতা কাম্য।
জী আপু আপনি ঠিক বলেছেন আগুনে দোকান পুড়েনি,পুড়েছে হাজার হাজার স্বপ্ন। ধন্যবাদ আপু।