বকশিশের নামে চাদাঁ আদায় [১০% লাজুক খ্যাঁকের জন্য]

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার।

💖সবাইকে স্বাগতম 💖

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ বাসি.. সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই খুব ভালো আছেন,আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। আমি আজকে আপনাদের সামনে হাজির হয়ে গেলাম আরো একটি নতুন পোষ্ট নিয়ে। আজকে এমন কিছু বকশিশের নামে চাদাঁর ঘটনা সেয়ার করবো যে গুলো আমার মামার সাথে ঘটেছে । চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

pexels-woodysmedia-5470968.jpg
source

বর্তমানে আমি যে জায়গায় অবস্থান করতেছি, সেটা হলো বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বিভাগের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লাহ থানার অধীনে রামারবাগ এলাকায়। আরো সহজ করে যদি বলি ফতুল্লার “খান সাহেব ওসমান আলী” স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাশে। আমি প্রায় সাত বছর ধরে এই এলাকায় থাকি। আমি সর্বপ্রথম যখন এখানে আসি, তখন জায়গা জমির এত দাম ছিল না। মানে তখন প্রতি শতক জায়গার দাম ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা ছিল। কিন্তুু এখন প্রতি শতক জায়গা ১০ থেকে ১২ লাখ টাকায় বিক্রয় হয়। তাও খাল বা ডোবা এমন জায়গা। যদি মোটামুটি একটি রাস্তার পাশে হয় আর ভরাট করা হয় তাহলে দাম পরে প্রতি শতকে ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা।

এই সব কিছু বলার উদ্দেশ্য হলো আমার এক চাচাতো মামা ঢাকা, গাজিপুর ও নারায়নগঞ্জে প্রায় ২০ বছর ধরে চাকরী করে আসতেছেন। প্রাইভেট কোম্পানি হওয়ায় যখন যেখানে সুযোগ পেয়েছেন সেখানেই জব করেছেন। দেশের নামকরা পাচঁ থেকে ছয়টা গ্রুপ কোম্পানিতে চাকরী করেছেন মামা। লাষ্ট ফকির গ্রুপে চাকরি করার সময় করোনার কারনে চাকরী হারান।

ধীর্ঘ প্রায় বিশ বছর চাকরী করে তিনি প্রায় দশ থেকে পনের লাখ টাকার মত ব্যাংকে জমিয়ে ছিলেন। তারপর বাড়ির জায়গা জমি বিক্রয় করে ৫০ লাখ টাকার মত এক সাথে করে,২০২০ সালে করোনার সময় আমি যেখানে থাকি তার অল্প একটু দুরে তিন শত জায়াগ কিনেছিলেন । দলিলের খরচ সহ প্রায় ৪৮ লাখ টাকার মত খরচ হয়। তারও জায়গটা ফুল ভরাট ছিল না। অর্ধেকের মত ভরাট ছিল।

গত বছর জায়গার দলিলটা ব্যাংকে জমা দিয়ে ২০ লাখ টাকা লোন পেয়েছিলেন। তারপর আত্নীয় স্বজন থেকে আরো কিছু টাকা ধার নিয়ে একটি বাড়ি করবেন বলে চিন্তা করলেন। তো বাড়ি করার জন্য ইন্জিনিয়ার ও রাজ মিস্ত্রী বললো জায়গাটা আরেকু ভরাট করলে তাদের কাজ করতে সুবিধা হবে, তা না হলে বাড়িটা নিচু হয়ে যাবে। বাড়ি নিচু হলে রাস্তা উচু হলে বৃষ্টির সময় বাড়িতে পানি ঢুকে যাবে।

মামা জায়গাটা আরেকটু ভারাট করার জন্য বালুর লোকের সাথে কন্টাক্ট করলেন। তারা যথা সময়ে বালু নিয়ে এসে এক গাড়ি বালু ফেলে চলে গেল। দ্বিতীয় গাড়ি বালু যখন ফেলতে যাবে তখন এলাকার কিছু ছেলে পেলে এসে বাধা দিলো। তারা এখানে বালু ফেলতে দিবে না। এলাকায় তাদের একটি ক্লাব আছে, সেই ক্লাবে কিছু বকশিশ দিতে হবে। সেই ক্লাব থেকে না কি বিভিন্ন সময় গরীব দুঃখিদের দান সৎকাহ করা হয়। ক্লাবের ফান্ডের টাকা বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কাজে ব্যায় করা হয় ব্লা ব্লা আরো অনেক কিছু বলতে লাগলো। মামা ভাবলো ছেলে পেলে মানুষ হয়তো মিষ্টি খাবে তাই তাদেরকে ২ হাজার টাকা দিলো। তারা বলে আংকেল এটা কি দিলেন এক লাখ টাকা লাগবে।

একথা শুনে মাাম তো আশ্চর্য হয়ে গেল। তারা বলে এখানে এক কোটি টাকা ব্যায় করতে পারবেন, আর আমাদের এক লাখ টাকা দিতে পারবেন না, তা কি করে হয়। তারপর পাচঁ হাজার দশ হাজার দিলো তারপর ও তারা মানবে না। তারা তাদের বড় ভাই, অমুক তমুককে ফোন দিলো। আর দু চারজন ছেলে পেলে আসলো। অবশেষে ২০ হাজার টাকয় দফা রফা করা হলো।

pexels-khoa-võ-6918064.jpg
source

যায় হোক এবার ভরাট করার কাজ শেষ, ইট, রট, সিমেন্ট, কাজ করার বালু সহ সব কিছু আনা হলো। যেদিন কাজ উদ্ভধন করবে সেদিন আরেক দল এসে বাধা দিলো। তারা না কি এই এলাকার বড় ভাই। জায়গা কম থাকায় রাস্তার সাইটে কিছু ইট, বালু রাখায় তারা বাধা দিলো তাদের নাকি চলাচল করতে সমস্যা হয়। মেশিন চালালে শব্দ দূষন হবে আরো অনেক কিছুর ছুতা দিয়ে তারা কাজ বন্ধ করে দিলো। এলাকার কিছু লোক এসে বলে ছেলেদের কিছু বকশিশ দিয়ে দেন তাহলে আর জামেলা করবে না। মামা বললো এর আগে ক্লাবের ছেলেদের ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। তারা বললো ক্লাবের ছোট ছোট ছেলে পেলে, তাদের সাথে নাকি বড়দের কোন সম্পর্ক নেই। অবশেষে তাদেরকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে কাজ উদ্ভদন করেছেন।

তারপর বিভিন্ন দিবসে, অনুষ্ঠানে টাকা দিয়ে এক তালার ছাদ কম্পিলিট করেছেন। এখন আবার কি দিবস এসেছে তারজন্য নাকি আবার টাকা দিতে হয়েছে। মামা এপর্যন্ত একলাখ টাকার মত বকশিশের নামে চাদাঁ দিয়েছেন। বাহির থেকে যারা যায়গা কিনে বাড়ি করে তাদের সবার নাকি এরকম বকশিশ নামক চাদাঁ দিতে হয়।

আমরা কোন দেশে বসবাস করি। আমাদের ভিতরে কি মনুষত্ববোধ আছে..? আমরা কি মানুষ না কি অন্য কিছু। এই ক্ষমতা কয়দিন থাকবে। এই যৌবন কয়দিন থাকবে, ক্ষমতার দাপট কয়দিন দেখাবে। সব কিছুর একটি সীম থাকা দরকার। যখন সীমা অতিক্রম হয়ে যায় তখন অটোমিটিক ধংস চলে আসে। আজ ঘরে ঘরে এত অশান্তি কেন। হালাল হারাম আমারা কিছু মানি না। কোনটা অন্যায় কোনটা ঠিক সেটা আমরা একটুও চিন্তা করি না। আমরা সবাই মানুষে রুপে অমানুষ হয়ে যাচ্ছি।

pexels-woodysmedia-4394826.jpg
source

এলাকার বড় ভাই, এলাকার ছোট ভাই নাম করে বকশিশের নাম দিয়ে চাদাঁ বাজি করে, সন্ত্রাসি করে। জায়গা বিক্রয় করলেও চাদাঁ দেওয়া লাগে,জায়গা কিনলেও চাদাঁ দেওয়া লাগে। শুনেছি বিভিন্ন ফেক্টরী গুলো থেকে বকশিশের নামে বিভিন্ন দিবেসে লাখ লাখ টাকা চাদাঁ তুলে। ১০ লাখ ১৫ লাখ টাকা চাদাঁ তুলে কয়েক লাখ টাকার খিচুরী করে আর বাকি গুলো নিজেরা ভাগ করে নেই। এমন নাকি ঘটনা ঘটেছে প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়ে এক সাথে হাটলে তাদেরকে ধরে এনে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করে। তারা আপন ভাইবোন হোক বা অন্য কেউ। ক্ষমতার দাপটে কত নোংরা কাজ করে চিন্তা করেছেন।

বন্ধুরা মামার একথা গুলো শুনে মনে অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। খুব খারাপ লেগেছিল নিজের কাছে। মানুষের সাথে মানুষ কিভাবে এমন ব্যবহার করতে পারে। কত কষ্টের টাকা চাদাঁ দিতে হয়ছে। আরা কত যেন চাদাঁ দেওয়া লাগে সেটা আল্লাহ জানে। সবাই সাবধান থাকবেন। ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

108.png

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7jpbMNKdA1Swxiey857mvDu4v9YQGGGa7u8o3aSuH2T9hohoCpGA4xjXECnmqJUuaGBR4n9tutUQsJX8FzZckBvZL.png

💖আমার বাংলা ব্লগের পক্ষ থেকে সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।💖
Sort:  
 2 years ago 

ভাই এরা সবাই পাতি নেতা।এরা বড় কোন নেতার অধীনে থাকে।এই নেতার শেল্টারেই এরা এত ভাব নেয়।আপনার ভাই কি পুলিশ কে জানিয়েছিল?

 2 years ago 

নাহ ভাইয়া পুলিশকে জানালে তেমন কোন কাজ হয় না, বরং রাতে এটা সেটা চুরি করে নিয়ে যায়।

 2 years ago 

ভাইয়া বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন। পড়লাম, সত্যি উপরে হাত আছে বলেই এত পাওয়ার তাদের। এসব নিয়েই ত আমাদের বসবাস। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 65970.60
ETH 2685.59
USDT 1.00
SBD 2.86