অবিস্মরনীয় ভালোবাসা/পর্বঃ--০৬ [benificiary ১০% @shy-fox]|

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আজ - ১৬ শ্রাবণ | ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | রবিবার | বর্ষাকাল |



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি ছোট গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি, এই ছোট গল্পটি আমি কয়েকটি পর্বে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করবো। আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • ছোট গল্প
  • আজ ১৬ শ্রাবণ , ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
  • রবিবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ বিকেল সবাইকে.....!!


আমরা সচরাচর সকলেই গল্প পড়তে অনেক বেশি ভালোবাসি। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও ঘরেও পড়তে অনেক বেশি ভালোবাসি আমার নিজের কয়েকটি গল্পের বই রয়েছে যখন অবসর সময় পাই তখনই আমি গল্পের বই গুলো নিয়ে বসে যাই। আর এই গল্প গুলোর মধ্যে ভালোবাসার গল্প পড়তে আমাদের সব থেকে বেশি ভালো লাগে। ভালোবাসা এমন একটা জিনিস যে গল্পের মাধ্যমে আমরা আমাদের পুরনো স্মৃতি থাকলে সেগুলো জাগ্রত হয় খুব নিমিষেই। যাইহোক আমি আপনাদের মাঝে কয়েকদিন আগে অবিস্মরনীয় ভালোবাসার প্রথম, দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ পঞ্চম পর্ব শেয়ার করেছিলাম। প্রথম,দ্বিতীয় তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম পর্বটি আপনারা সকলেই খুব চমৎকারভাবে পড়েছেন এবং অনেক সুন্দর একটি মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন যেটা দেখে আমি অনেক অনুপ্রাণিত হয়ে ছিলাম। আমি আপনাদের বলেছিলাম খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের মাঝে অবিস্মরনীয় ভালবাসার ষষ্ঠ পর্ব শেয়ার করবো ।সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই আমি আপনাদের মাঝে ষষ্ঠ পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আশাকরি প্রথম,দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ পঞ্চম বারের মতো আপনারা ষষ্ঠ পর্ব খুবই চমৎকার ভাবে পড়বেন এবং সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবে। তাহলে চলুন আর বেশি অপেক্ষা না করে গল্প শুরু করি।



গত পর্বে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম যে কনক যখন সাইকেল নিয়ে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। তখন পথিমধ্যে দেখতে পায় যে কোন এবং তার প্রেমিক সেই মাঠের মধ্যে ছোট্ট গাছের নিচে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কনার প্রেমিক তাকে বোঝানোর চেষ্টা করছে কিন্তু কনা কিছুতেই বুঝতে চাচ্ছে না সে শুধু কান্না করে যাচ্ছে।

window-5850628__480.webp

source

এদিকে কনার প্রেমিক যখন বোঝাতে বোঝাতে একদম অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে, তবুও কণা কিছুতেই বুঝতে চাচ্ছেনা তখন সে কণাকে রেখে চলে যায়। আর এদিকে কনা সেই গাছের নিচে বসে কান্না করতে থাকে দৃশ্যটা দূর থেকে কনক সম্পূর্ণটা দেখেছে এবং নিজের মধ্যে খুবই কষ্ট নিয়েছে। আমরা মানুষ আর মানুষ হিসেবে আমাদের প্রিয় মানুষেরা যখন কষ্ট পায় তখন নিজের কাছে সত্যিই অনেক বেশি খারাপ লাগে আর এই খারাপ লাগাটা হয়তো অনেক বেশিই। আমরা যাকে যত বেশি ভালোবাসি তার ঠিক ততটা কাছে যেতে চাই এবং তার কষ্টতে আমরা কষ্ট পাই কারণ এটাই আমাদের বৈশিষ্ট্য। সত্যিকারের ভালোবাসার মধ্যে অনেক রকম গুণাবলী বিদ্যমান থাকে তার মধ্যে এটা একটি। প্রিয় মানুষের সুখে সুখী হওয়া এবং দুঃখে দুঃখী হওয়া এটাই মূলত সত্যিকারের ভালবাসার বৈশিষ্ট্য যেটা কনক এর মাঝে বিদ্যমান। যাইহোক সাইকেল পাশে রেখে এসে অনেকটা সময় কনার দিকে তাকিয়ে থাকে কিন্তু কণা ওদিকে কান্না করছে। অনেকটা সময় অতিবাহিত করার পর কনক সাইকেল নিয়ে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা করে এবং নিজের দোকানে গিয়ে বসে। দোকানে গিয়ে তার কাজে মন বসছে না তার মনের মধ্যে শুধু একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে কেন কনা কান্না করল আর কেনই বা তার প্রেমিক তাকে একা রেখে চলে গেল। ভাবতে ভাবতে সে সেদিন দোকানের কোন কাজই করলো না শুধু বসে বসে সেই মুহূর্তটার কথা ভাবছিল। হঠাৎ একটা সময় তার বন্ধু সোহাগ তার দোকানে আসে এবং তাকে আনমনা দেখে জিজ্ঞেস করে কিরে কি হয়েছে...? এরকম আনমনা হয় বসে আছিস কেন...? সে তার বন্ধু সোহাগ কে বিকেলবেলা কনা এবং তার প্রেমিকের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা বর্ণনা করে। ঘটনা শুনে তার বন্ধু সোহাগ বলে হয়তো বা তাদের মধ্যে কিছু একটা ঝামেলা হয়েছে যার কারণে এরকম দৃশ্য দেখেছিস। বিষয়টা নিয়ে তারা অনেকটা সময় গল্প করে গল্প করতে করতে তারা রাত্রেবেলা দুজন একসঙ্গে বাজার থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে।

shop-4806610__340.jpg

source

তারা একটা জায়গায় বসে অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দিয়ে যে যার মত বাসায় চলে যায়। এদিকে কনকের চোখে ঘুম নেই। কনক শুধু সেই মুহূর্তটার কথা ভেবেই চলছে আর মনের মধ্যে অনেক অজানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কিন্তু যে প্রশ্নগুলোর কোন উত্তর নেই। যে প্রশ্ন গুলো সে নিজের মনের মধ্যে যত্ন করে করছে কিন্তু সেই প্রশ্নগুলোই তাকে আঘাত করছে কষ্ট দিচ্ছে। সে রাত্রে ঘুমানোর সময় ভেবে রাখে কাল সকাল বেলা কণার প্রেমিকের কাছে তাদের ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবো। এরকম অনেক কিছু ভাবতে ভাবতেই সে ঘুমিয়ে পড়ে ।পরের দিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে সে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে তার প্রত্যাহ দিনের কাজ করার জন্য। প্রতি মধ্যেই কনার প্রেমিকার সঙ্গে তার রাস্তায় দেখা হয়। সে তার সাথে মতবিনিময় করে এবং নিজের পরিচয় দেয় দুজন দুজনের সঙ্গে অনেকটা সময় গল্প করার পরে হঠাৎ করেই কনক তাকে জিজ্ঞেস করে ভাই আমি আপনার কাছ থেকে একটা কথা জানতে চাই। সে অবাক হয়ে বলে ঠিক আছে বলুন। তখন কনক জিজ্ঞেস করে আচ্ছা কালকে বিকেল বেলা আপনার সঙ্গে একটা মেয়ে ছিল মেয়েটা কান্না করছিল আপনি অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু সে কিছুতেই বুঝছিল না। মেয়েটার সাথে আপনার কি কোন ঝামেলা হয়েছে নাকি..? তখন কনক এটাও বলে যে আপনি কিছু মনে করেন না আমি দূর থেকে আপনাদের পুরো দৃশ্যটা দেখেছি তাই জিজ্ঞেস করলাম। তখন সে বলে ওঠে যে আমরা দুজন দুজনকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আমরা কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারবো না তবে এখন আমার বর্তমান পরিবারের অবস্থা খুবই খারাপ। আমার বাবা এখন তেমন একটা কাজকর্ম করতে পারেনা আমাকেই বাড়ির সকল কাজকর্ম সহ টাকা-পয়সার যোগান দিতে হয়। আমি এখন তাকে বিয়ে করতে পারব না কারণ আমার সেই সামর্থ্য নেই। পাশের গ্রামের মেম্বার চাচার মেয়ের সঙ্গে আমার বাবা আমার বিয়ে ঠিক করেছে যদি আমি মেম্বার চাচার মেয়েকে বিয়ে করি তাহলে তারা আমাকে ৫ লক্ষ টাকা দেবে। যে টাকা নিয়ে আমি বিদেশ যাব। আমি কনাকে অনেক দিন ধরেই ব্যাপারটা বলবো বলে ভাবছি কিন্তু কিছুতেই বলতে পারছিলাম না। যার কারনে সেদিন আমি তাকে এটা বলেছিলাম সে আমাকে কখনোই ছাড়তে পারবে না এটাও বলেছে সে কিন্তু আমি নিরুপায়। পরিবারের হাল ধরতে হলে আমাকে অবশ্যই মেম্বার চাচার মেয়েকে বিয়ে করতেই হবে। আমি এখন কি করতে পারি ভাই আপনি বলুন...??

heart-1297121_640.png

source

কথাটা শুনে কোন হতাশ হয়ে পড়ে এবং কিছুটা বাকরুদ্ধ হয়ে তার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। তখনকার সেই ব্যাপারটা এমন ছিল যে কনক যেন আকাশ থেকে পড়েছে। সে কিছুতেই এটা ভাবতে পারছে না যে সে যার সাথে এতটা বছর অতিবাহিত করেছে বিয়ে করবে বলে কথা দিয়েছে হঠাৎ করেই তার সাথে এরকম করবে। যাইহোক কনক তার সঙ্গে কিছুটা সময় কথা বলার পরে সে বাজারে চলে যায়। নিজের প্রিয় মানুষটিকে না বলা কথা সে এখন পর্যন্ত বলতে পারেনি সে বলতে পারেনি যে এই সেই মানুষ যাকে সে ছোটবেলায় এতটা পছন্দ করত। কনা এখন পর্যন্ত জানে না যে ছোটবেলায় হারিয়ে যাওয়া সেই খেলার সাথী এই কনক। কনক অনেকটা ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কিন্তু সে কি সিদ্ধান্ত নেবে এটাই ভেবে পাচ্ছে না। আমরা যারা মানুষ আমাদের যাদের প্রিয় মানুষ আছে তাদের জন্য আমরা অনেক রকম দুঃখ কষ্ট সইতে রাজি থাকে সবসময়। সেদিন রাত্রে কনক আর তার বন্ধু সোহাগ এ ব্যাপারটা নিয়ে অনেকটা সময় আলোচনা করে। অনেকটা সময় আলোচনা করার পরে কনক এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয় যে সে তার দোকান বিক্রি করে দেবে। দোকান বিক্রির কথা শুনে সোহাগ রীতিমতো অবাক হয়ে যায়। এবং সে বলে দোকান বিক্রি করবে কেন..? তখন কনক বলে যে দোকান বিক্রি করে যে টাকা হবে সেই টাকা আমি কনার প্রেমিককে দেব যাতে করে সে যেন কনাকে বিয়ে করে। প্রিয় মানুষকে হ্যাপি রাখার জন্য কনক সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিজের দোকান বিক্রি করে দিয়ে যে টাকা হবে সেটা তার প্রিয় মানুষের প্রেমিককে দেবে যাতে করে অনা তার ভালোবাসার মানুষকে পায় সারা জীবনের জন্য। কনা যেন কোন রকম কষ্ট না পায় সেই কথা ভেবেই কনকের এমন সিদ্ধান্ত। অবশেষে একটা দিনে কনক তার গ্রামের উচ্চপদস্থ এক লোকের কাছে তার নিজের দোকান বিক্রি করে দেয়। তার দোকান বিক্রি করে দিয়ে সে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করে নতুন এক চাকরির খোঁজে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই গল্পের শেষ হয়নি। ঢাকা শহরে চাকরি খুঁজে পাওয়া কি এতই সহজ....!!



এখানেই আমি আমার অবিস্মরনীয় ভালোবাসার ষষ্ঠ পর্ব শেষ করছি। খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের মাঝে বাকি পর্বগুলো শেয়ার করব ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই ধৈর্য ধারণ করুন। সবাই যে যার জায়গা থেকে সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এবং পরিবারের সাথেই থাকুন। সেই সাথে প্রিয় মানুষটিকে হ্যাপি রাখার চেষ্টা করুন সবসময়। ধন্যবাদ সকলকে....!!!


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন

বিবরণ
বিভাগছোট গল্প
বিষয়অবিস্মরনীয় ভালোবাসা,পর্ব ষষ্ঠ
গল্পের কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source

Sort:  
 2 years ago 

সাপোর্ট করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই আপনার তৃতীয় চতুর্থ এবং পঞ্চম পর্ব অনেক চমৎকার ছিল। এবং এই গল্পগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগে আমার ।এবং আপনার গল্প লেখার টাও হয় একটু ভিন্ন ধরনের। আজকের গল্পের শেষ দিকে দোকান বিক্রি করার যে দৃশ্যটি এটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আমার এই গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন যেটা দেখে আমার খুবই ভালো লাগলো অথচ চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শুভেচ্ছা রইল।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 59241.40
ETH 2525.12
USDT 1.00
SBD 2.47