অনাকাংখিত সমস্যা এবং অভিজ্ঞতা || Original Photography by @hafizullah

in আমার বাংলা ব্লগlast year

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি তবে বিগত কয়েক দিন বেশ অস্থিরতার মাঝে ছিলাম। সত্যি বলতে এমনিতে অতিবৃষ্টির কারনে মানসিকভাবে খারাপবোধ করতে ছিলাম। তারপর হটাৎ করেই ছোট ভাই মোবাইল করে বলে আম্মুর অবস্থা ভালো ছিলো। দুপুরের দিকে শুনেছিলাম ডায়রিয়া হয়েছে কিন্তু সন্ধার দিকে ছোট ভাই বললো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আসলে এই রকম খবরের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। কারন এমনিতে পরিবেশের অবস্থা ভালো না, অতিবৃষ্টির কারনে অফিসে যাতায়াতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। কারন আমাদের দেশই মনে হয় একমাত্র দেশ যেখানে সড়কগুলোতে যান চলাচলে সম্পূর্ণরূপে অযোগ্য না হওয়ার আগ পর্যন্ত সেগুলোকে ঠিক করা হয় না।

সত্যি বলতে খবরটা শুনার পর অন্য রকম একটা অস্থিরতা কাজ করতে থাকে তাই রাতেই সব কিছু গুছিয়ে ভোর সকালেই রওয়ানা হয়ে যাই বাড়ির উদ্দেশ্যে। আমরা অর্ধেক পথ যাওয়ার পরই সড়কের পাশের এক দোকানে সকালের নাস্তা করে নেই। তারপর সোজা গ্রামের সরকারী হাসপাতালে চলে যাই। দেখুন মানুষ অসুস্থ্য হলেই হাসপাতালে যায়, অন্যত্থায় কেউ সেটা ভ্রমণ করতে যায় না, এই বিষয়টি ডাক্তারদের বুঝা উচিত। যেখানে রোগী থাকবে সেখানে আত্মীয় স্বজনদের উপস্থিতি বা ভিড় থাকবে সেটাকে মেনে নিতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশের হাসপাতালের কর্মচারীদের ব্যবহার এমন যে, এখান যারা আছেন সবাই দাগী আসামী, তাই তাদের সাথে বেশী মানুষের সাক্ষাত করার সুযোগ দেয়া হবে না।

IMG_20230714_125916.jpg

না না এটা কথার প্রসঙ্গে কথা বলি নাই বরং বাস্তব অভিজ্ঞতা হতে। সেটা যত বড়ই হাসপাতাল হোক না কেন? আপনি যদি কোথায় কাউকে দেখার জন্য যেয়ে থাকেন তাহলে সেটা উপলব্ধি করতে পারবেন। বিষয়টি আমার কাছে কখনোই ভালো লাগে নাই। হ্যা, এটা লিমিট থাকতেই পারে, নির্দিষ্ট নিয়ম থাকতেই পারে সেটা বিপক্ষে নই আমি। কিন্তু সেই নিয়মটা যেন বাড়াবাড়ি না হয় সে বিষয়ের প্রতিও লক্ষ্য রাখা উচিত সকলের। আমরা হাসপাতালে যাওয়ার পর সব কিছুর খোঁজ খবর নেয়ার চেষ্টা করি এবং অবস্থা ভালো না দেখে সেখান হতে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। কিন্তু সমস্যা তৈরী হয় অন্য জায়গায়, রোগীকে এখন পর্যন্ত কি কি ঔষধ দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে কোন তথ্য তারা শেয়ার করবে না কিংবা কোন কাগজও দিবে না।

IMG_20230714_125825.jpg

সত্যি আমাদের দেশেই মনে হয় পৃথিবীর যতসব আজব নিয়ম তৈরী হয় এবং সেগুলোর বাস্তবায়নও আমাদের দেশ হতে শুরু হয়। একজন রোগীকে যখন অন্য কোথায় সিফট করানো হয় তখন তাকে ইতিপূর্বে কি কি ঔষধ দেয়া হয়েছে সেটার রেকর্ডটা জরুরী হয়ে পড়ে, কারণ পরবর্তী ডাক্তারের জন্য সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রেকর্ডটা থাকলে সে নিশ্চিন্ত হয়ে নতুন মেডিসিন দিতে পারেন এবং রোগী সম্পর্কে একটা ধারণা গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু যতই তাদের বুঝানোর চেষ্টা করি না কেন তারা সেটা মানতে নারাজ। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের ভিন্ন পথে সেটাকে সংগ্রহ করতে হলো। আসলেই নিরুপায় হয়ে আমাদের কত কিছু করতে হয়।

IMG_20230714_125829.jpg

কারন রোগীর বিষয়টি তখন কেবল মাত্র তাদের নিকট আত্মীয় স্বজনরাই ‍উপলব্ধি করতে পারেন কিন্তু হাসপাতালের কর্মচারী কিংবা অন্য কেউ সেটা উপলব্ধি করতে পারেন না। তাদের কাছে এসব স্বাভাবিক বিষয়, কে বাঁচলো কিংবা কে মারা গেলো সেগুলো কোন বিষয়ই না তাদের নিকট। তারপর দ্রুত একটা এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সেখান হতে দ্রুত বের হয়ে আসি এবং সাভারের একটা প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করি। তারপর দ্রুত কিছু পরীক্ষা সম্পন্ন করে আশ্বস্ত হওয়ার চেষ্টা করি বিষয়টি অতোটা গভীর না। আসলে স্বাস্থ্য সেবাটা এখন আর সেবার মাঝে নেই বরং সেটা এখন ইনকাম করার কিংবা ব্যবসা করার দারুণ একটা মাধ্যম হয়ে উঠেছে, হ্যা কেউ হয়তো একটু বেশী আর কেউ হয়তো একটু ব্যবসা করার চেষ্টা করেন। যারা রোগাক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় আর যারা তাদের সাথে থাকেন, শুধুমাত্র তারাই এটা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারেন।

IMG_20230714_125856.jpg

IMG_20230714_140141.jpg

আমার মা এখন বেশ সুস্থ্য আছেন এবং বাড়িতে আছেন। কিন্তু সমস্যার অন্তরালের অনুভূতি কিংবা অভিজ্ঞতাগুলো মোটেও ভালো নেই, হয়তো এটা ভালো রাখার কোন উপায়ও নেই। পরবর্তীতে কোন কারনে আবার হাসপাতালে গেলে হয়তো নতুন করে আরো কিছু নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন হবে। কিন্তু আমাদের মতো দেশে এই রকম পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না কিংবা আশা করাও ঠিক না। ভালো থাকুন এবং সুস্থ্য থাকুন সবাই এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে শেষ করছি।

তারিখঃ জুলাই ১৪, ২০২৩ইং।
লোকেশনঃ ধামরাই, ঢাকা।
ক্যামেরাঃ রেডমি-৯ স্মার্টফোন।

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  
 last year 

আসালে কি বলবো। আমি ‍নিজেও স্বাস্থ্য সেক্টরের একজন কর্মচারী। কিন্তু স্বাস্থ্য সেবায় যে দূর অবস্থা তাতে আমি কিন্তু মোটেও সন্তোষ্ট নয়। কি আর বলবো হাসপাতাল গুলো যে অরাজকতা চলে তা দেখার মত যেন কেউ নেই। কাগজ তো দেওয়ার কথা। কিন্তু না এটা তাদের অজুহাত। কি আর করার ভাইয়া এ দেশে প্রতিবাদ করতে গেলেও দোষ। মানুষ এখন জিম্মি অন্যের কাছে। তবে সবকিছুর পরও ভালো লাগছে যে আন্টি এখন সুস্থ্য। দোয়া রইল আন্টির প্রতি।

 last year 

আমাদের দেশের হাসপাতালের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন ভাই আপনার এই পোস্টে। আমাদের সরকারি হাসপাতাল গুলোতে পেশাদারিত্বের বড্ড অভাব। সেই সাথে হ য ব র ল ম্যানেজম্যান্ট। একারণেই প্রতি বছর হাজার হাজার রোগী আমাদের দেশ থেকে বিদেশে যায়। তবে স্বস্তির খবর আপনার মা এখন ভালো আছেন। আপনার মায়ের জন্য শুভ কামনা। দেশের হাসপাতাল ব্যবস্থা নিয়ে দরকারি পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

ভাই আপনার আম্মুর জন্য দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা যেন খুব দ্রুত আপনার আম্মুকে সুস্থ করে দেন।পিতা-মাতার কোন অসুস্থতা সংবাদ শুনলে মনটা ভিষণ খারাপ লাগে।হাসপাতাল এখন আর চিকিৎসার জায়গা নেয় সেখানে এখন ব্যবসা শুরু হয়েছ। অপ্রয়োজনীয় টেস্ট ও অপ্রয়োজনীয় ঔষধ তাদের ব্যবসার উৎস।রোগির আপনজনদের রোগির কাছে থাকতে দিতে চাইনা।আল্লাহতালা যেন আপনার পরিবারকে সুস্থ রাখেন এবং হেফাজত করেন।

 last year 

ভাই প্রথমেই আপনার মায়ের সুস্থতা কামনা করছি। উনি যে সুস্থ হয়েছেন অনেকটা এটাই অনেক খুশির খবর। তবে শুধুমাত্র বাংলাদেশ না ভাই, ভারতবর্ষেও এরকম হসপিটালে আত্মীয় স্বজনদের ঢুকতে দেয় না, খারাপ ব্যবহার করে। যদিও অতিরিক্ত আত্মীয়-স্বজন আসলে রোগীদের অনেক সমস্যা হয়। তারপরও একটু হলেও ফ্যাসিলিটি দেওয়া উচিত। কারণ পরিবার অসুস্থ হলে বা পরিবারের লোকজন অসুস্থ হলে কেমন লাগে সেটা তারা উপলব্ধি করতে পারে না, যেটা আমরা করতে পারবো।

 last year 

ভাই আপনার মা এখন সুস্থ জেনে অনেক ভালো লাগলো তারপরও আন্টির জন্য দোয়া আন্টিকে আল্লাহ যেন সব সময় সুস্থ রাখেন। মা-বাবার অসুস্থতার কথা শুনলে মনটা অনেক খারাপ থাকে। আর হাসপাতালের কথা শুনলেই ভয় লাগে। মানুষের জীবন মরণের কোন দাম নেই তাদের কাছে কারণ হাসপাতালে তারা বিজনেস খুলে বসেছে । আপনার পরিবারের সবাই যেন সুস্থ থাকে এ কামনাই করি।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

হাফিজ ভাই, আপনার মা যে এখন সুস্থ আছে এটা শুনে বেশ খুশি হলাম। তবে বর্তমানে অনেক হসপিটাল এরকম হয়ে গেছে। শুধুমাত্র বাংলাদেশ না আমাদের কলকাতাতেও এমন এমন হসপিটাল আছে যেখানে নিজের আত্মীয়-স্বজনদেরও ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি নেই। তবে নিয়মটা আমার কাছে কিছুটা হলেও খারাপ বলে মনে হয়। তাছাড়া হসপিটালে যারা কর্মরত থাকে তারা তো মৃত্যু দেখতে দেখতে অভ্যাস হয়ে গেছে কিন্তু আমাদের মত নরমাল মানুষের কাছে এটা অনেক বড় ব্যাপার। এজন্য ওদের কাছে কিছু মনে হয় না। তবে এই ব্যাপারটা একটু খারাপ লাগলো যে, কি ওষুধ খেতে দিচ্ছে এটা দেখালো না। এটা অবশ্যই অন্যায় কাজ।

 last year 

ভাইয়া আপনার আম্মু অসুস্থ হ্যাং আউটের দিন শুনেছিলাম।তবে এখন সুস্থ আছে জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। আসলে মা-বাবা অসুস্থ হলে কোন কিছুই ভালো লাগে না।আর হাসপাতালে শুনলে আরো বেশি খারাপ লাগে।দোয়া করি আপনার আম্মু সুস্থ হয়ে যাবেন।হাসপাতালের কথা আর কি বলবো।এরা মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে।এদের কাছে জীবনের চাইতে টাকা বেশি দামী।আপনার কিছু অনুভূতি শেয়ার করলেন পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ভাইয়া আমাদের দেশের কোন দিকটা আপনি ভাল বলবেন,শিক্ষা,স্বাস্থ,যোগাযোগ সব জাগায় সেবার নামে ব্যবসা চলে। আমি শত ভাগ সিউর বাংলাদেশের মত দুর্নীতি অন্য কোন দেশে হয় না। আপনার মাকে নিয়ে কি হেনেস্থার শিকার হয়েছেন। যায়হোক এখন আন্টি ভাল আছে সেটা জেনে খুবই খুশি হয়েছি। ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65546.28
ETH 2666.01
USDT 1.00
SBD 2.90