সময়ের শিক্ষা এবং আমাদের ভিন্ন উপলব্ধি- প্রকৃতির ফটোগ্রাফি || Original Photography by @hafizullah
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা এবং বিশ্বাস সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি এবং ভালো থাকার চেষ্টায় প্রতিনিয়ত নিজেকে গতিশীল রাখার চেষ্টা করছি। যদিও সময়ের গতি সর্বদা আমাদের সেই প্রচেষ্টাগুলোকে সফল হতে দেয় না, মাঝে মাঝে সময়ের নিষ্ঠুর আঘাতে সব কিছু কেমন জানি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। সত্যি বলতে আমরা চাইলেও সর্বদা সময়গুলোকে সুন্দর ও রঙিন করে রাখতে পারি না বরং মাঝে মাঝে সময়ের নিষ্ঠুর আঘাতে সাজানো সব কিছু কেমন অচেনা হয়ে যায়। আসলে বাস্তবতা আমাদের প্রতিনিয়ত একটা শিক্ষা দেয়ার চেষ্টা করে কিন্তু আমরা কখনোই সেখান হতে কোন শিক্ষা নেয়ার চেষ্টা করি না। আমাদের এই সাজানো সংসারটা অনেকটাই সমুদ্র পাড়ের বালুর বাধের মতো, যা যে কোন সময়ে সমুদ্রের ঢেউয়ের আঘাতে মিশে যেতে পারে।
একটা গান এই রকম, যা ছোট বেলায় খুব বেশী শুনতাম আমি যখন মন খারাপ থাকতো, যদিও এখন আর শুনা হয় না কারন এখন বড় হয়েছি ভাবনা ও রুচি দুটোরই পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের দেশের জনপ্রিয় একজন শিল্পীর গানটার প্রথম কলি এই রকম, “হায়রে মানুষ রঙ্গীন ফানুস- দম ফুরাইলেই ঠুস” আসলেই বাস্তবতা এমনই, আজকে আমরা বালুর বাধে কত সুন্দর জীবন সাজানোর চেষ্টা করছি, হাজার হাজার টাকা খরচ করে নিজের স্ট্যাটাস ঠিক রাখার চেষ্টা করছি, জীবনটাকে রঙিন করে তোলার প্রচেষ্টায় দিন রাত সমানে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু কি হবে এসব করে? কতটা সময় আমরা এসব ভোগ করতে পারি? আমাদের জীবন অনেকটাই সেই রঙিন ফানুসের মতো, বাতাস বের হয়ে গেলেই সেই ফানুসের আর কোন মূল্য থাকে না।
আমরা কখনো এটা ভাবি না, জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে আমরা নতুনভাবে সব কিছুকে সাজানোর চেষ্টা করি। প্রতিটি অধ্যায়ে নিজের নতুন অবস্থান তৈরীর প্রচেষ্টা রাখি কিন্তু এটা কখনো ভাবি না পরের অধ্যায়ে যাওয়ার সুযোগ নাও পেতে পারি, হতে পারে এটাই আমাদের জীবনের শেষ অধ্যায়! আসলে আমরা রঙিন ফানুসের মতো সত্যিই, রঙিন হয়ে আকাশে ভেসে বেড়াতে পছন্দ করি, কিন্তু নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে ভয় পাই, জীবনের শেষ পরিনতি নিয়ে ভীত থাকি তাই সেটা কখনো স্মরণে আনতে চাই না। কারন ঐ যে ভয়, রঙিন স্বপ্ন কিংবা রঙিন স্বাদ সবই নষ্ট হয়ে যাবে এবং দিন শেষে নিজের প্রকৃত অবস্থানটা সম্মুখে চলে আসবে। আমরা সবাই কম বেশী সবটাই বুঝি কিন্তু তবুও নিজেদের মুখোশের আড়ালে রাখতে পছন্দ করি এবং রঙিন হাওয়ার জীবনকে ধরে রাখতে ভালোবাসি।
এসব কিছু বলার মূল উদ্দেশ্যে হলো, গতকাল ভোর রাতে হঠাৎই খবর পেলাম আমার অফিসের সিনিয়র ম্যানেজারের আম্মা মারা গেছেন, হ্যা চলে যাওয়াই হয়তো নিয়ম এবং প্রকৃতির স্বাভাবিক রীতি কিন্তু সেটা আমাদের কাছে সর্বদাই অপ্রত্যাশিত থাকে। কারণ ঐ যে একটু আগেই ব্যাখ্যা করলাম, আমরা সর্বদা রঙিন হাওয়ার ভাসতে চাই এবং জীবনের গতিকে ফানুসের সাথে চলমান রাখতে চাই। যাইহোক, তারপর গতকাল অফিস বন্ধ রেখে সবাই চলে যাই ঢাকা হতে কুমিল্লায়। ঢাকা হতে প্রায় ১০৪ কিলোমিটার দূরত্ব, যদিও আমার বাসা হতে সেটা ১৫০ কিলোমিটারের মতো। তবুও হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে সারাদিনের যাত্রায় পা বাড়াই। আসলে উদ্দেশ্য ছিলো সহকর্মীকে কিছুটা সহমর্মিতা প্রকাশ করা। মানুষের বিপদে মানুষের পাশে থাকা এবং তাকে মানসিকভাবে শক্ত থাকার ক্ষেত্রে সহমর্মিতা প্রকাশ করা খুবই জরুরী। যদিও আমরা সেটা কখনোই করি না বরং সুযোগ পেলে নিজের আসল চরিত্রটা দেখানোর চেষ্টা করি।
আসলেই জীবনটা কি আমাদের? কতটা সময় আছে আমাদের? কেউ সেটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারে না এবং বলার সুযোগও নেই কিন্তু তবুও আমরা সেই বিষয়টিকে কখনো গভীরভাবে ভেবে দেখি না এবং প্রকৃত বিষয়টি কখনো উপলব্ধি করার চেষ্টা করি না। যত যাই হোক সত্যটা আমাদের মেনে নিতে হয় এবং সেভাবেই জীবনকে সাজাতে হয়। হয়তো একদিন আমিও এভাবে হারিয়ে যাবো, আপনারা সেদিন সহমর্মিতা প্রকাশ করবেন, আমার মতো এই রকম কিছু নীতি বাক্যও শেয়ার করবেন। কিন্তু তারপর? তারপর সবকিছু আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে আর আমি দূর আকাশের তারার সাথে সন্ধি করে নিজেকে লুকিয়ে রাখবো। যদি ভালো কিছু করে থাকি হয়তো মানুষ কিছুটা হলেও মরে রাখার চেষ্টা করবেন আর না হলে দূর আকাশের অন্ধকারের মতোই সবার মন হতে হারিয়ে যাবো। যাইহোক গতকাল কুমিল্লা যাওয়ার পথে এবং সেই কাংখিত গ্রামের পৌছানোর পর কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম, তার মাঝে হতে কিছু দৃশ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলাম।
তারিখঃ ডিসেম্বর ৪, ২০২২ইং।
লোকেশনঃ ঢাকা কুমিল্লা মহাসড়ক এবং চান্দিনা।
ক্যামেরাঃ রেডমি-৯ স্মার্টফোন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আসলে জীবনটা একটা রেলস্টেশনের ওয়েটিং রুমের মত।অর্থাৎ ট্রেন আসতে দেরি হবে যেনে ওয়েটিং রুম পরিষ্কার করে, আয়েশ করে বসে থাকার জন্য কাঁথা কম্বল নামিয়ে গায়ে দিয়ে আরাম করে যেই বসতে যাবে ঠিক ট্রেন এসে পরলো।ঠিক জীবনটাও এমন এত সুন্দর করে গুছিয়া এত এত টাকা ইনকাম করে ভবিষ্যতে ভালো থাকবে বলে ঠিক ঐ মূহুর্তে ডাক পরে।এই সত্যিতা জেনে ও মেনে নিতে কষ্ট হয়।সত্যি আমরা অনেক বোকা।যাই হোক আপনার কলিগের আম্মার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। কতদিন নিজ থানা চান্দিনায় যাওয়া হয় না।
বাহ! আপনার দেখি বুদ্ধি খুলে গেছে, খুব সুন্দর উদাহরণ দিয়েছেন তো, আরো একটা পোষ্ট লেখা যাবে এটা নিয়ে।
আসলেই জীবনটা আমাদের নয়,আমরা শুধু চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছি হুকুম মতো।এতো এতো অধ্যায় আমরা সাঁজিয়ে রেখেছি।কিন্তু কেও জানিনা কোন অধ্যায়টা আমাদের শেষ অধ্যায়।
ঠিক কেউ বলতে পারি না এটা আমার শেষ অধ্যায় কিনা? সামনের অধ্যায়ে যাওয়ার সুযোগ পাবো কিনা।
আসলেই ভাই জীবনটা কয়দিনের আজ আছি কাল নাও থাকতে পারি। দুদিনের দুনিয়াতে মানুষের টাকা পয়সা আভিজাত্য নিয়ে ব্যস্ত কখনো কেউ চিন্তা করে না আমাদের সারা জীবনের এই সম্পদ কিছুই নিয়ে যেতে পারবো না। সবাই সবার স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত ভাই ভাইয়ের শত্রু বাবা সন্তানের শত্রু। মাঝে মাঝে মনে হয় এই জীবনটা রঙ্গমঞ্চ আর আমরা শুধু অভিনয় করছি।
খুবই কঠিন একটা সময়ে আমরা আসছি, যদিও সবাই এটাকে সভ্যতার সেরা সময় বলে অভিহিত করছে কিন্তু আমি তার সাথে দ্বিমত পোষণ করছি কারন আজ সন্তান বাবার শত্রু শুধুমাত্র অর্থের জন্য।
আসলে আমরা আমাদের এই ক্ষুদ্র জীবনে খুবই অল্প সময়ের অতিথি। আমদের হয়তো হঠাৎ করে চলে যেতে হবে। হয়তো পৃথিবীর এই গোলক ধাঁধায় আমরা শুধু ক্ষণিকের অতিথি হয়ে এসেছি। ভাইয়া আপনার কলিগের আম্মা মারা গিয়েছেন জেনে খারাপ লাগলো। আসলে আমরা হয়তো অনেক ক্ষেত্রে সহমর্মিতা প্রকাশ করি। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে হয়তো নিজের রূপ বদলে যায়। এমন কিছু মানুষ আছে যারা স্বার্থের লোভে অনেক কিছু করে। তাই সব কিছু পেছনে রেখে নিজেকে বদলানো দরকার। এই ক্ষুদ্র জীবনে একটু না হয় ভালোভাবেই চলি। তাহলে অন্তত নিজের মনুষত্ব বজায় থাকবে।
ধন্যবাদ সুন্দর অনুভুতি প্রকাশের জন্য, সত্যি বলতে কি স্বার্থের কাছে কমবেশী আমরা সবাই বন্দি, যার কারনে সময়ের সাথে সাথে পাল্টে যেতে বাধ্য হই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার প্রতিটি ফটোগ্রাফি অনেক সুন্দর ও ব্যতিক্রম এবং ইউনিক ছিল।আপনার প্রতিটি ছবি আমার কাছে ভালো লেগেছে।তবে প্রথম ছবিটি আমার কাছে অনেক বেশি।
আপনি ঠিকই বলেছেন ভাইয়া। আসলে আমরা এটা কখনোই সেভাবে ভাবি না যে, জীবনের প্রতিটি অধ্যায় বা মুহূর্তে আমরা নতুন করে নতুন কিছু ভাবি। এবং নতুন ভাবে চলার চেষ্টা করি।আপনার প্রতিটি ফটোগ্রাফি জাস্ট অসাধারণ হয়েছে।সময়ের শিক্ষা এবং আমাদের ভিন্ন উপলব্ধি- প্রকৃতির ফটোগ্রাফি গুলো ঠিক যেন মনমুগ্ধকর।তবে, লোকেশনঃ ঢাকা কুমিল্লা মহাসড়ক এবং চান্দিনা।মহাসড়কের প্রতিটা ফটোগ্রাফি আমার কাছে জাস্ট ওয়াও মনে হয়েছে।♥♥
প্রথমে আপনার সহকর্মীর মায়ের আত্মার শান্তি কামনা করি।আশা করি উনি ঈশ্বরের ঘরে থাকবেন। আপনার এই উদ্যোগ যে আপনি দেড়শ কিলোমিটার পারি দিয়েও সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রকাশ করতে গেছেন, সেটা সত্যিই সাধুবাদযোগ্য। সবার মধ্যে এই অনুভূতিটা থাকে না। আজকাল মোবাইল হয়ে যাওয়ার পরে তো আরোই রাস্তা সহজ হয়ে গেছে।একটা হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ বা বড়জোর একটা কল।তার মধ্যেও সশরীরে গিয়ে সহমর্মিতা প্রকাশ করা এক আলাদা মাইলস্টোন।ঠিকই আমাদের জীবনের চিরসত্য হলো মৃত্যু। জন্মটাই একটা এক্সিডেন্ট মাত্র।তা সত্ত্বেও আমরা কত কিছু মেন্টেন করার চেষ্টা করি আসলে হয়তো নিজের পরিণতি কি সেটা অনেকেই আমরা ভুলে যাই। পরিণতির সম্পর্কে ওয়াকিবহুল হয়ে যারা বাঁচতে পারবে, তারাই জীবনটাকে উপভোগ করতে পারবে।