"ফটিক শোল মাছের বাচ্চা ধরা"
নমস্কার
ফটিক শোল মাছের বাচ্চা ধরা:
বন্ধুরা, পোষ্টের টাইটেল পড়েই ভাবছেন ফটিক শব্দটি কেন লিখলাম তাইনা!আসলে ফটিক শব্দটি এইজন্যে লিখেছি কারন শোল মাছ খুবই লাফালাফি করে।প্রত্যেকটি কাজের পিছনেই তাঁর নির্দিষ্ট একটা বিষয়বস্তু রয়েছে।
গতবছর এই সময়ের কথা।চারিদিকে অল্প অল্প বৃষ্টির জলে থৈ থৈ করছে পুকুর, খাল কিংবা ফসলের মাঠ।আর বর্ষাকালে খাল -বিলের যেকোনো মাছ খুব সহজেই বংশবিস্তার করে।তেমনি আমাদের বাড়ির সামনে ক্যানেলেও শোল মাছ তার বাচ্চাকে নিয়ে চড়ে বেড়াচ্ছিল।অসংখ্য শোল মাছের বাচ্চা এমনভাবে চড়ে বেড়াচ্ছিল যে দেখে মনে হচ্ছিল অনেকটা জায়গা জুড়ে যেন লাল রঙের সৃষ্টি হচ্ছে।আবার কখনো বাচ্চাগুলো একসঙ্গে না চড়ে কিছুটা করে আলাদা দল বেঁধেও ঘুরে বেড়াচ্ছিল।শোল মাছের বাচ্চারা যখন চলাফেরা করে তখন তার মা শোল মাছ পাশেই থাকে।কোনো বিপদ বুঝলে টুক করেই নিজের মুখের মধ্যে পুরে নেয় সেই অসংখ্য বাচ্চাদের।
শোল মাছের বাচ্চা ধীরে ধীরে কিছুটা বড় হলো।আমার বাবা তাক বুঝেই খাপ জাল দিয়ে একটি খাপ দিল।আর জাল ভরে লাল রঙের মতো ছেয়ে গেল শোল মাছের বাচ্চায়।তখন একটা বড় পাত্রে জল দিয়ে আমরা বাচ্চাগুলোকে জাবিয়ে রাখলাম।
গ্রামের বাড়িতে আমাদের তিনখানা বড় বড় পুকুর ছিল।কিন্তু এখানে খুব ছোট করেই একটি পুকুর কাটা হয়েছে।সেই পুকুরে এই শোল মাছের বাচ্চাগুলো ছেড়ে দেওয়া হয় বড় হওয়ার জন্য।দেখতে দেখতে অনেক দিন পার হয়ে গেল।শোল মাছগুলো বেশ বড় হয়েছে,দুই একটি খাওয়াও হয়েছে।কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হলো।পুকুর ভর্তি হয়ে গেল, ফসলের মাঠ টইটুম্বুর হলো জলে।আর তখনই আমাদের ক্যানেল দিয়ে জল সরানোর জন্য দামোদর নদীর বাঁধ খুলে দেওয়া হলো।সেই ক্যানেলের জল উপচে পড়ে আমাদের বাড়ির উঠানে জল ভরে গেল।টানা দুইদিন জল কমার নাম নেই,তার উপরে আবার ঝলকে ঝলকে বৃষ্টি।শোল মাছের তো আনন্দের সীমা নেই,বৃষ্টির জল পেয়ে সবই লাফিয়ে লাফিয়ে আশেপাশের বাড়ির পুকুর কিংবা ফসলের মাঠে চলে গেল।
সকালে ঘুম থেকে উঠে মা একটি শোল মাছ আমাদের সবজি ক্ষেতের মধ্যে থেকে ধরে আনলো।এতগুলো শোল মাছের বাচ্চা ছাড়ার পরও মাত্র দুই একটি শোল মাছ খাওয়া হলো আমাদের।তো এভাবেই ফটিক শোল মাছগুলো সবই লাফিয়ে লাফিয়ে চলে গেল অন্যত্রে।
আশা করি আমার আজকের পোষ্টটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।
পোস্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
আমাদের মাঠে আগে যখন পানি জুমে যেতো বৃষ্টির তখন আমরা এই মাছ দেখতে পেতাম।মা মাছের সাথে ছানা মাছ গুলো ঝাক বেধে ঘুরতো আর মশারি দিয়ে আমরা সেগুলো ধরে রাখতাম পাতিলে। অনুভূতি গুলো সুন্দর ধন্যবাদ দিদি শেয়ার করার জন্য।
আপনার অনুভূতি জেনে ভালো লাগলো ,ধন্যবাদ ভাইয়া।
প্রথমেই আমি ফটিক শোল মাছ কথাটা শুনে বেশ অবাক হলাম, এরপর পুরো পোস্ট পড়ে ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম। তবে সত্যিই খারাপ লাগলো এতো গুলো শোল মাছের বাচ্চা ছাড়ার পর মাত্র কয়েকটা আপনারা খেতে পারলেন। যাইহোক চমৎকার অনুভূতি নিয়ে লিখাটা ভালো লেগেছে আপু।
ভাইয়া, বেশি লাফ দেয় এই মাছগুলো তাই আমিই এই নাম দিয়েছি☺️☺️।ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেকদিন পরে শোল মাছের বাচ্চার কথা মনে পড়ে গেল। একটা সময় আমরা ছিপ দিয়ে এই শোল মাছের বাচ্চা ধরতাম। আশ্চর্য হয়ে যেতাম যদি টপ ফেলতাম তাহলে একটার সাথে তিনটা চারটা করে উঠে চলে আসতো। শোল মাছের বাচ্চা গুলো সব সময় একসাথে ঘুরে বেড়ায়। আশেপাশে তার মাও থাকে। শোল মাছের বাচ্চা গুলো লাফালাফি সব চলে গেছে এটা জানার পর আমার বেশ ভালো লেগেছে। কারন ওরা তো ছোট, বড় হলে অনেক বেশি হবে।
ভাইয়া ,আপনি হয়তো খেয়াল করেননি আমার লেখা।আসলে শোল মাছের বাচ্চাগুলো লাফিয়ে যায় নি সেগুলো খাবার খেয়ে বড় হওয়ার পর চলে গিয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে।