সুন্দরবন পর্ব-3: "সুন্দরবন এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার কয়েকটি আলোকচিত্র"
নমস্কার
বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই?
আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হলাম "সুন্দরবন এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার কয়েকটি আলোকচিত্র" নিয়ে।
বন্ধুরা, কিছুদিন আগে আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন নদীর আলোকচিত্র এবং আমি সেখানে কিভাবে গিয়েছিলাম।তো শেষমেশ আমি গাড়াল নদী পার হয়ে সুন্দরবন এলাকায় দাদুবাড়ি ছোট মোল্লাখালী পৌঁছে গেলাম।সেখানকার মানুষের সাধারণ জীবন-যাপনের কিছু চিত্র তুলে ধরবো।আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের কাছেও।তো চলুন দেখে নেওয়া যাক----
সুন্দরবন এলাকার মানুষের একমাত্র জীবিকা মৎস্য শিকার করা।তাদের জীবনযাপন খুবই সাধারণ, তাই একমাত্র অবলম্বন নৌকায় তাদের জীবিকার সম্বল।এই নৌকায় করে তারা মাছ ধরে সুন্দরবনের নদী থেকে এবং সুন্দরবনের গা ঘেষে যে ছোট ছোট ক্যানেল রয়েছে সেখান থেকে তারা কাঁকড়া ধরে।ক্যানেলগুলি সুন্দরবনের অনেক মধ্যে দিয়ে ঢুকে গেছে।উপরের ছবিটিতে অনেক মানুষ একটি নৌকা টেনে তোলার চেষ্টা করছে মেঠো রাস্তার উপর।কারন নৌকাটি নতুন কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মৎস্য শিকার করার জন্য।তাই গ্রামের সবাই সাহায্য করছে।
নৌকাটিকে নদীর চড়ে নামিয়ে রাখা হয়েছে এবং নৌকা যাতে দীর্ঘদিন স্থায়ী থাকে তার জন্য নৌকার গায়ে আলকাতরার রং করা হয়েছে।আলকাতরা দেওয়ার ফলে কাঠে ঘূণি পোকা লাগে না, যাইহোক নৌকাটি বেশ বড়ো।নৌকাটিতে ছাউনির ব্যবস্থা করা হচ্ছে,মূলত সুন্দরবন এলাকার প্রত্যেক ঘরের মানুষ এই জীবিকার উপর নির্ভরশীল।যদিও তারা প্রত্যেক মাসেই 1 জন প্রতি 12 কিলো করে রেশন চাউল পান সঙ্গে আরো অনেক কিছু সামান্য টাকার বিনিময়ে।কারন তাদের জীবন সর্বদা ঝুঁকিপূর্ণ।
এখানে কিছু মানুষ জাল নৌকা নিয়ে মৎস্য শিকারের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি নিচ্ছেন।সুন্দরবনের সকল মানুষরা সকাল বেলাতে পান্তা ভাত খেয়েই দিন যাপন করেন।তাছাড়া একটি নৌকায় 3-4 জন অংশীদার বা ভাগিদার থাকে।তারা একবারে প্রায় 1 মাস বা দেড় মাস নৌকার উপরে জীবন ধারণ করে।কখনো বা স্বামী-স্ত্রী কখনো বা সবাই পুরুষ মানুষ গিয়ে কাঁকড়া বা মৎস্য শিকার করেন।মাছ ধরার জন্য তাদেরকে সরকার থেকে পাশ কিনে নিতে হয়।
গ্রামের পরিবেশ বা জনজীবন খুবই সাধারণ এবং অধিকাংশ মানুষের ঘর খড়,টিন ও সিমেন্টের টিন ইত্যাদি এর ছাউনি।তাছাড়া এখানে গ্রামে মানুষের আন্তরিকতা অনেক বেশি।সুন্দরবনের গ্রামে মেঠো রাস্তা,আবার খাবার জলের ও খুবই সমস্যা।কিন্তু এখন গ্রামেও বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে।তো আমি দেখলাম, সাতজেলিয়া বাজারে যেতে যেতে সারি সারি নৌকা ঘাটে বাঁধা রয়েছে।
জোয়ারের জল থৈ থৈ করছে সুন্দরবনে।সুন্দরী,গেওয়া,ওড়া,কেওড়া,গরান,বাইন,গোলপাতা ইত্যাদি প্রধান গাছে ভর্তি।এই গাছ থেকে ও অনেক মধু সংগ্রহ করা হয়।যেমন-গড়ান ফুলের মধু খেতে খুবই টেস্টি হয় ।এখানে কেউ কেউ জালের ছেড়া তুলতে ব্যস্ত আবার কেউ কেউ জলে নেমে কাঁকড়া ধরতে ব্যস্ত।সবে গাছে কেওড়া ফুল ধরেছে।
আমরা সাধারণত সাতজেলিয়া বাজার থেকে ফিরে আসার সময় দেখলাম নৌকায় অনেক মানুষ গাছের চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে।যেমন-আম, নারিকেল ও সুপারি চারা।তাছাড়া আমার খুবই ভালো লেগেছে এদের সরল ও সাধারণ জীবনযাপন।তো ধীরে ধীরে নৌকা থেকে নেমে সিঁড়ি বেয়ে উঠে এলাম আবার মোল্লাখালী গ্রামে।
আশা করি আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের ফটোগ্রাফিগুলি ভালো লাগবে।সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ও সাবধানে থাকবেন।
টুইটার লিংক
আপু আপনার ফটোগ্রাফি মাধ্যমে সুন্দরবন সম্পর্কে জানতে ও দেখতে পেলাম। সুন্দরবন মানুষের প্রধান জীবিকা হলো মৎস্য শিকার করা তাদের জীবন যাএার মান অনেক নিম্নমানের।সুন্দরবন এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার পড়ে ভালোই লাগল।আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ঠিক বলেছেন আপু,অনেক ধন্যবাদ আপনাকে,আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
সুন্দরবনের মানুষের জীবনযাত্রা নিয়ে লেখা আপনার এই পর্বটি আমার খুব ভাল লেগেছে। সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা যে খুব সাধারণ সেটি ছবিগুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে। আপনি খুব সুন্দরভাবে তাদের জীবনযাত্রা উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ দিদি আপনাকে।
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা, আপনার সুন্দর মতামত জানানোর জন্য।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
Enhorabuena, su "post" ha sido "up-voted" por @dsc-r2cornell, que es la "cuenta curating" de la Comunidad de la Discordia de @R2cornell.
Thank you.💝
ফটোগ্রাফি গুলো যেমন সুন্দর হয়েছে, তেমনি সুন্দরবন এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে বেশ ভালো কিছু তথ্য জানতে পারলাম। খুব ভালো হয়েছে আপনার পোস্ট।
অনেক ধন্যবাদ দাদা,আমাকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য।