আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা- ২২ | জীবনে প্রথম মোবাইল হাতে পাওয়ার অনুভূতি(১০%-শাই ফক্স)
আসসালামু আলাইকুম,আশা করি সবাই কুশল আছেন।আলহামদুলিল্লাহ,আমিও ভালো আছি।মূল বিষয়ে যাওয়ার আগে ধন্যবাদ দিতে চাই শুভ ভাইয়াকে এতো সুন্দর একটি প্রতিযোগিতা আমাদের মাঝে আনার জন্য।
আমরা এখন যে সময়ে আছি,এই সময়টাতে দাঁড়িয়ে একটা ছোট বাচ্চাকেও বলে দিতে হবেনা যে মোবাইলটা কতটা জরুরি!মুখে কথা ফোটার আগে থেকেই বাচ্চাদের আঙ্গুল ফোনের টাচ প্যাডের উপর দেখা যায়।
বর্তমানে আমি অপ্পো ব্রান্ডের এফ-১৯ প্রো মডেলের ফোনটি ইউজ করছি।আমার জীবনে এটিই প্রথম ফোন এবং দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ফোনটি আমি ইউজ করছি।আর সত্যি বলতে ফোনের দামের ২৮৯৯০ টাকার পুরোটাই আমার নিজের টাকা।তাই আবেগটা একটু বেশিই কাজ করে।জেএসসি পরিক্ষার বৃত্তির টাকা,উপবৃত্তির টাকা,স্টিমিট থেকে পাওয়া কিছু টাকা আর আমার একটা ছাগল ছিল সেটা বিক্রি করে পাওয়া টাকা-এই সব টাকা একত্র করে কিনেছি আমার এই ফোনটি।তো বুঝতেই পারছেন,আমার অনুভূতিটা কেমন কাজ করে!
তখন লকডাউনের সময়।এর ওর সাজেশন অনুযায়ী আর নিজেরো পছন্দ হওয়ায় আমি ভেবেছিলাম রেডমি ব্রান্ডের নোট-১০ প্রো মডেল ফোনটি কিনবো।লকডাউনের সময় কিন্তু দোকানপাট বাহির থেকে তালা বন্ধ করা থাকতো আর ভেতরে বিক্রেতা বসে থাকতো।যেদিন আমি ফোন কিনতে গিয়েছিলাম তো সেদিন ওই ঘটনাই ঘটেছিল।ভিতরে লোক ছিল আর বাহিরে তালা দেয়া।
আমি আর শুভ ভাইয়া গিয়েছিলাম ফোন কিনতে।চিন্তা-ভাবনা তো করে গিয়েছিলাম যে রেডমি ফোনটা নিবো কিন্তু দোকানে গিয়ে বিক্রেতার সাজেশন আর গুগলে কিছু কোয়ালিফিকেশন দেখে নিজের মত পালটে অপ্পো ফোন কিনেছিলাম।রেডমি আর অপ্পো ফোন দুটির মাঝে দামের ফারাক ছিল তিন হাজার টাকা।
তো যাইহোক,ফোন কিনে বাসায় আসার পর সর্বপ্রথম ছবি তুলেছিলাম আমার দাদির।দাদি বেশ খুশিই হয়েছিল,সেটা অবশ্য ফোন কেনার জন্য না।আমার মুখের হাসি দেখে।ফোন কিনে এনেই লুডু নামিয়ে আমি,দাদি,বাবা আর আম্মু একসাথে লুডু খেলেছিলাম।দাদিকে হারিয়েছি বছর খানেক হয়েই এলো।মাঝে মাঝে এই ছবিটা দেখলেই দাদিকে খুব মনে পরে।
আমার দাদি টিভিকে বলতো শয়তানের বাক্স আর ফোনকে বলতো পিচ্চি শয়তান।তার এই কথা হাস্যকর হলেও এটাই একদম বাস্তব।পিচ্চি শয়তান হাতে আসার পর থেকে আমার ভেতর ব্যাপক পরিবর্তন চলে এসেছে।মাঠে খেলতেও যাইনা,সবার সাথে সময়ও কাটাই না।সারাদিন এই ফোন আর ফোন।সকালে ঘুম থেকে উঠেই ইউটিউব দেখা,খেতে বসে এ সে ভিডিও দেখা,বাইরে বের হলে এটা সেটা ছবি তোলা,হেডফোন লাগিয়ে গান শোনা,মানে সারাটাদিন অযথাই কাটে।ফোন পাওয়ার পর ফেসবুক একাউন্ট খুলেছিলাম,আর সেটাই আমার কাল হয়ে দাড়িয়েছিল।এক মেয়ের সাথে বছর খানেক কথা বলার পর মেয়ে তো হাওয়া🫤।আর আমি এদিকে দেবদাস হয়ে ছিলাম প্রায় মাস দুয়েক।এস,এস,সি পরিক্ষাটা যে ভালো করে দিতে পেরেছিলাম তার জন্য আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া।
ফোন কেনার পর আম্মুরও বেশ ভালোই সুবিধা হয়েছে।কেমনে সেটা বলি।খালা-ফুফুরা কল দেয় আমায় ম্যাসেঞ্জারে আর ওদিকে তাদের সাথে আম্মুর গল্প চলতে থাকে ২০/২৫/৩০ মিনিট ধরে।মানে,আমি যদি ফোন না চাই তাহলে বোধয় কথা বলা শেষ হবেনা।বাবা আবার যখন বাসায় থাকে তখন হারুন কিসিঞ্জারের কৌতুক দেখে আর ছোট ভাই তো আছেই,গেম খেলার জন্য।
মাশাল্লাহ ফোনটি বেশ ভালোই সার্ভিস দিচ্ছে এখনো।ক্যামেরাও বেশ ভালোই আর অপ্পো তো মূলত ক্যামেরার জন্যই বেশি খ্যাত।মাস চারেক আগে আমার হাত থেকে ফোনটি রাস্তার উপর পরে গিয়েছিল আর তাতে প্রটেক্টর গ্লাস ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।
চাওয়ার পরেও সব অনুভূতি বুঝানো সম্ভব হয়না।বলার পরেও মনে হয় কি যেন বাদ গেছে।হয়তোবা এবারেও তাই হয়েছে।গোজামিল অনুভূতি ব্যক্ত করে এখানেই বিদায় নিচ্ছি-
Cc.@farhantanvir
Shot on. Oppo f19 pro & Huawei u-29
Location
Date.30/08/22
আপনার এবং আমার প্রথম ফোনের কাহিনী টা অনেক টা মিলে যায়। আমারও প্রথম ফোন আমি এখনও ব্যবহার করছি। এবং আমিও আমার টাকা দিয়ে ফোন কিনেছিলাম আমার এসএসসির স্কলারশীপ এবং টিউশনির টাকা দিয়ে। এবং আমি নিজেও বাসা থেকে ভেবে যায় একটা মডেল কিন্তু ওখানে গিয়ে দোকানদার এর পরামর্শে অন্য ফোন নেয়। দেখেছেন কত মিল।
ভাই ভাই না! মিল তো থাকবেই🌸।
বাট এবার মনে হয় বেশিই মিলে গেছে ভাইয়া😅।ভালোবাসা নিয়েন।
ঠিক ঠিক ঠিক।।