গল্প: অতৃপ্ত আত্মা 💀 || ৩য় পর্ব: মৃত্যুর কারন অনুসন্ধান চেষ্টা। (Story: Insatiable Soul 💀)
৩য় পর্ব: মৃত্যুর কারন অনুসন্ধান চেষ্টা |
---|
অস্টিফের লাশের পাশে পাখি জিওনা পরে আছে। জোসেফ বেশ কিছু সময় দাদুর লাশের পাশে আহাজারি করতে লাগলো। জোসেফের ফর্সা মুখ হঠাৎ লাল বর্ণের হয়ে গেছে, সে জানতে চায় কে তার এতো বড় ক্ষতি করলো। তার মাথায় প্রথমেই এলো শহরের শেরিফকে ফোন করতে হবে। দৌড়ে টেলিফোনের কাছে গিয়ে লেন্ড ফোনে ডায়াল করে শেরিফের নাম্বারে। এদিকে মরফেজের চোখ মুখ কালো হয়ে গেছে। কিন্তু সে চাইলেই জোসেফকে আটকাতে পারবে না। এতে তার বিপদ বাড়তে পারে।
এদিকে ভোরের আলো ফুটতে চলেছে বেশ কয়েকবার ডায়াল করেও শেরিফ রোজারকে পেলোনা জোসেফ, হয়তো রোজার ঘুমিয়েই রয়েছে। শেষ বারের চেষ্টায় সে রোজারকে ফোনে পেলো। রোজার ঘুম জড়ানো কন্ঠে হ্যালো বলে উঠলো। জোসেফ বললো আংকেল রোজার দয়া করে আমাদের বাড়িতে আসুন। আমার দাদু আর বেঁচে নেই, পুরো ঘর এলোমেলো। কেউ হয়তো আমার দাদুকে মেরে ফেলেছে, আপনি তাড়াতাড়ি আসুন। রোজার বেশ অস্থির হয়ে বললো জোসেফ আমি খুব তাড়াতাড়ি আসছি তোমাদের বাড়িতে, তুমি সাবধানে থেকো। লাইন কেটে দিয়ে সহকারী দুজন পুলিশ নিয়ে গাড়িতে উঠলো রোজার।
এদিকে পাখি জিওনা হঠাৎ কঁকিয়ে উঠলো, জোসেফ তাড়াতাড়ি তার খাঁচা উঠিয়ে নিয়ে তাকে খাঁচা থেকে ছেড়ে দিল। জিওনা দীর্ঘ সময় কেচর মেচর করার ফলে তার গলা দিয়ে কোন শব্দ বেরুচ্ছে না। কিছুক্ষণ এলোমেলো উড়তে লাগলো পুরো ঘরে। জোসেফ অস্টিফের লাশের পাশে বসে আহাজারি করতে লাগলো। এদিকে দিনের আলো ফোটার সাথে সাথে অস্টিফের আত্মা জোসেফকে ছোঁয়ার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। সে শুধুমাত্র এখন নীরব দর্শক হয়ে সবকিছু দেখতে পারবে কিন্তু কিছুই করতে পারবে না। এদিকে মরফেজ তার সর্বোচ্চ অভিনয় জারি রাখলো। বিশ মিনিটের মধ্যে শেরিফ দুজন পুলিশ সহকর্মী নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করলো।
শেরিফ রোজার তাদের বাড়িতে আরো বহুবার এসেছে, কারন অস্টিফের সাথে তার অনেকটাই বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। যদিও অস্টিফ তার চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন কিন্তু ভীষণ সম্মান করতেন শেরিফ হিসেবে। বেশ হন্তদন্ত হয়ে অস্টিফের ঘরে প্রবেশ করলেন, দেখলেন লাশ হয়ে পরে আছে প্রিয় অস্টিফ। শেরিফ রোজার ভীষণ কষ্ট পেয়ে কিছুটা ভেঙ্গে পরার মতো হলেও, সে নিজেকে সামলিয়ে নিলেন। কারন সে একজন পুলিশ কর্মকর্তা, তার দায়িত্ব দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া। রোজার তার অনুসন্ধান শুরু করলো, প্রথমেই সে জোসেফের মুখ থেকে সবকিছু শুনতে চাইলো। তখন জোসেফ বলা শুরু করলো সে হঠাৎ ভয় পেয়ে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। বেশ কয়েকবার দাদুকে ডাকার পরেও তিনি যখন শুনতে পেলেন না তখন দৌড়ে দাদুর ঘরে এসে দেখলাম পুরো ঘর এলোমেলো আর আলমারি খোলা আর দাদু বিছানায় পরে আছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে কেউ ডাকাতি করতে এসে দাদুকে মেরে ফেলেছে, ঐ দেখুন দড়ি ঝুলে আছে জানালা দিয়ে।
শেরিফ প্রথমেই অস্টিফের শরীরের খুব কাছে এসে তাকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। তার চোখ বেশ বড় বড় হয়ে আছে আতংকে কিন্তু কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। পাশেই একটা বালিশ বেশ অগোছালো ভাবে পরে আছে। শেরিফ বুঝতে পারলো এই বালিশ দিয়েই তাকে মেরে ফেলা হয়েছে, দম বন্ধ হয়ে অস্টিফ মারা গেছে। এবার সে আলমারির কাছে গিয়ে ভালোভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরিক্ষা করতে লাগলো। কেমন যেন অসংগতি খুঁজে পেলো শেরিফ, কারন অন্যান্য ডাকাতরা যেভাবে চুরি করে এখানে ব্যাতিক্রম রয়েছে কিছুটা। এবার দৌড়ে দড়ির কাছে যায় শেরিফ, দেখতে পায় নিচ পর্যন্ত দড়ি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আরো একটা ব্যাপার হলো ডাকতরা যে ধরনের দড়ি ব্যাবহার করে এখানে ব্যাতিক্রম দড়ি যা ভীষণ পিচ্ছিল সুতরাং এটা বেয়ে ওঠা নামা মুশকিল। এরপর তিনি সামনের ঘাসের মাঝে গিয়ে ভালোভাবে পরিক্ষা করলেন সেখানেও কোন অতিরিক্ত পায়ের ছাপ নেই।
সবমিলিয়ে শেরিফে ঘটনাটা বেশ গোলমেলে মনে হতে লাগলো। এদিকে মরফেজকে সে বেশ কয়েকবছর ধরে চেনে সে একেবারেই ছাপোষা মানুষ, কিছুতেই তাকে সন্দেহ করা যাচ্ছে না আবার তালিকা থেকে বাদ দেয়া যাচ্ছে না। এমন কোন জোড়ালো প্রমান খুঁজে পেলোনা শেরিফ। এদিকে দীর্ঘ সময় লাশ পরে রয়েছে, সে এম্বুলেন্স খবর দিয়ে লাশ মর্গে পাঠালেন। জোসেফকে বললেন, তোমার দাদুর মৃত্যুতে আমি ভীষণ মর্মাহত এবং তার শারীরিক কিছু পরিক্ষা করার পর লাশ সৎকার করবো আমরা। জোসেফ তুমি শক্ত থেকো, তোমার দাদুর খুনিকে খুঁজে বের করে শান্তি দিতে হবে আমাদের।
এদিকে বিকেলের পরেই লাশ জোসেফকে বুঝিয়ে দিয়ে সরকারে ব্যাবস্থা করলেন শেরিফ। জোসেফকে মরফেজ ধরে রেখেছে কারন সে বারবার লাশের উপর আছড়ে পড়ছিল। সৎকার কাজ শেষ করে শেরিফ জোসেফকে নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে তার সাথে আলাদা কথা বলতে চাইলেন। শেরিফ তার রুমে গিয়ে কথা বলা শুরু করলেন, দেখ জোসেফ তুমি ভেবো না তুমি এখন একা আংকেল রোজার তোমার সাথে রয়েছি আর যতক্ষন আমি রয়েছি কেউ তোমার ক্ষতি করতে পারবে না। তোমাকে এখন থেকে সতর্ক হয়ে চলতে হবে। কারন আমি তোমার আশেপাশে বিপদের গন্ধ পাচ্ছি। কোন কিছু হলেই সাথে সাথে আমাকে ফোন করবে আর প্রতিনিয়ত তোমার দিকে নজর রাখতে আমার একজন লোক আশেপাশে থাকবে কিন্তু তুমি ছাড়া এটা কেউ জানতে পারবেনা। এই বলে ঘর থেকে বেরিয়ে বেশ জোরে বলে উঠলেন কেউ যদি তোমার গায়ে টোকা দেয় তাহলে আমি তাকে দেখে নেবো, তুমি নিশ্চিত থাকো। শেরিফ এটা মরফেজকে সরাসরি না বললেও তাকে বুঝিয়েছেন।
এদিকে দিন পেরিয়ে রাত নেমে এসেছে, অস্টিফের আত্মা যেন আবার শক্তি ফিরে পেল। কিন্তু যখন তখন জোসেফকে যখন তখন ছোঁয়া যাবেনা সে ভয় পেয়ে যাবে। এদিকে সারাদিনের ধকলে জোসেফ তার রকিং চেয়ারে ঘুমিয়ে পড়েছে, অস্টিফের আত্মা তার মাথায় হাত রাখা মাত্র সে লাফিয়ে উঠে দেয়ালে বেশ বড় ছায়া দেখতে পেলো। জোরে চিৎকার করে উঠলো, মরফেজ দৌড়ে এলো। মরফেজ আবারো একটি বড় ছায়া সরে যেতে দেখলো দ্বিতীয় বারের মতো। পাখি জিওনা আবারো কেচর মেচর শুরু করে দিল।
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1590623371431383040?t=hjpxO8qcsIPHthNpCupfRA&s=19
মনে হচ্ছে পরের পর্বে মরফেজ ধরা পড়বে কারন সেই তো খুন করেছে। জোসেফ অস্টিফের আত্মার ছায়া দেখে ভয় পেয়েছে জেনে ভালো লাগলো। অতৃপ্ত আত্মা গল্পটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ লিমন।
হ্যা সামনের পর্বে দেখা যাক কি হয়।