গল্প: ধুসর পৃথিবী এবং লাইফ কোড। (পর্ব -০১) || Story: Gray Earth and the Life Code.

গল্প: ধুসর পৃথিবী এবং লাইফ কোড

_{^{সংগ্রহশালা}}

সাল: ৮৮৬৬ ইং
সময়: ভোর ৩টা

রবিনসনের চোখে হঠাৎ সূর্যের আলো পড়লো, চোখ খুলতে তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। কি করবে বেচারা পুরো দিনের মধ্যে মাত্র চার ঘণ্টা সূর্যের দেখা মেলে। সে দ্রুত তার কাঠ এবং কাপড়ের তৈরি বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে ধূসর বিস্তীর্ণ বালুর মাঠে। তাড়াতাড়ি শরীরের কাপড় খুলে রোদের উষ্ণতা নেয়ার জন্য পাতলা কাপড় বিছিয়ে শুয়ে পড়লো। সে জানে এই তাপটুকু তার শরীরের জন্য কতটুকু দরকার। তাছাড়াও এই চার ঘণ্টা পর পুরো পৃথিবীর বুকে অন্ধকার আর হিম শীতলতা ছড়িয়ে পড়বে আর এই অন্ধকারেই শুরু হবে জীবন মৃত্যুর লাইফ কোড খেলা। লাইফ কোড নিয়ে একটু পরে কথা বলি। আগে রবিনসনের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করি।

রবিনসনের পরিবার বলতে কেউ নেই এই ধূসর পৃথিবীতে। সে তার পরিবার হারিয়েছে এই লাইফ কোড গেমে, এখন সে শুধুমাত্র বেঁচে আছে তার পিতা-মাতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য। প্রায় তিন ঘন্টা শরীরে তাপ সংগ্রহ করার পর এবার খাবার খাওয়ার সময় হয়েছে। খাবার বলতে বিশেষভাবে তৈরি কৃত্রিম প্রোটিন ক্যাপসুল, এই খেয়ে সে তার জীবন ধারণের শক্তি যোগায়। ধূসর পৃথিবীতে খাবার মানেই কৃত্রিম প্রোটিন ক্যাপসুল। যাইহোক একটু পরেই অন্ধকার নেমে আসবে, আর হয়তো এটাই হতে পারে তার শেষ রাত।

পুরো পৃথিবীর ভীষন দুরাবস্থা, গাছপালা কমে গিয়ে প্রায় শূন্যের কোঠায়। হঠাৎ হঠাৎ অগ্নুৎপাত ঘটতে থাকে আর সাগর শুকিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। সূর্য তার তাপ দেয়ার ক্ষমতা হারিয়ে মাত্র চার ঘণ্টা সক্রিয় থাকে। এদিকে পৃথিবীর বুকে বিভিন্ন গ্রহ এবং উপগ্রহ থেকে এলিয়েনরা ছুটে আসতে থাকে খাবারের খোঁজে। না তারা সরাসরি রক্ত কিংবা মাংস খায় না। মানুষ সূর্যের আলোর মাধ্যমে তাদের শরীরে যে তাপ সংগ্রহ করে সেখানে অদ্ভুত একটি শক্তিশালী ভিটামিন এবং প্রোটিন উৎপন্ন হয়। মূলত এই প্রোটিনের উপর তাদের ভীষণ লোভ।

এলিয়েনদের লর্ড অফ কমান্ড হলো টেলিডাগা। সে মূলত এলিয়েন সাইন্টিস্ট মিসানোকে সাথে নিয়ে তাদের বেঁচে থাকার এই বিশেষ ক্যাপসুল আবিষ্কার করেছে যা একমাত্র মানুষের শরীরে বিদ্যমান। বুদ্ধিমান আর দুর্ধর্ষ লর্ড অফ কমান্ড হলো টেলিডাগা একটি অদ্ভুত আর কার্যকরী পথ বের করেছে আর সেটাই হলো লাইফ কোড। মানুষের শরীরের তাপমাত্রা আর প্রোটিনের উপস্থিতির মাধ্যমে একটি বিশেষ লাইফ কোড তৈরি করে, পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা কম থাকায় সে বাইনারি লাইফ কোড ড্র এর মাধ্যমে প্রতি তিন দিন পর পর ঐ লাইফ কোড ধারী মানুষটিকে উঠিয়ে নেয়া হয়। পরবর্তীতে সেই মানুষটির শরীর থেকে তৈরি বিশেষ প্রোটিন ক্যাপসুল দিয়ে টেলিডাগার পুরো এলিয়েন বাহিনী জীবন ধারণ করে আসছে।

রাত যত গভীর হতে থাকে রবিনসনের দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে কারণ এই মাত্র একটি ফ্রাইং সসার উড়ে গেছে পাশ দিয়ে। এটাই হতে পারে তার শেষ রাত।

_{^{"চলবে"}}

---

---

---

আমাদের উইটনেসকে সাপোর্ট করুন

https://steemitwallet.com/~witnesses

---

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

_{Posted using SteemPro Mobile}