বাংলাদেশের নতুন স্বাধীনতা 🇧🇩 (৫ ই আগষ্ট ২০২৪)
প্রিয় সহকর্মী বৃন্দ,
অত্যন্ত আনন্দের সাথে জানাচ্ছি আমাদের বাংলাদেশ স্বৈরাচারী সরকারের পতনের মাধ্যমে নতুনভাবে স্বাধীনতা লাভ করেছে। এটা একদমই অন্যরকম একটা অনুভুতি।
বিগত বেশ কিছু বছর পুরো বাংলাদেশের মানুষ ভীষণ ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন পার করেছে, যেখানে ছিলনা আইনের শাসন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা। তবুও বাংলাদেশের মানুষ মুখ বুজে সহ্য করে দিন পার করেছে।
গতমাসে ছাত্রদের বৈষম্য বিরোধী একটি যৌক্তিক আন্দোলন শুরু হয়। একদমই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকার অযাচিত জোর খাটিয়ে বন্ধ করতে চায়। এক পর্যায়ে তাদের রাজাকার বলে আখ্যায়িত করা হয়, যা সবার রক্তে আগুন ধরায়। তবুও আন্দোলনটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হিসেবে চলতে থাকে। একটা সময় সরকার পুলিশ এবং ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দেয় নিরস্ত্র ছাত্রদের দিকে। এরপর রক্তে রক্তাক্ত হতে থাকে রাজপথ, সেখানে শিশু, নারীসহ হতাহত হতে থাকে শত শত মানুষ।
একপর্যায়ে সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইন্টারনেটসহ সবকিছু বন্ধ করে দেয়। তাছাড়াও কারফিউ দিয়ে পরিস্থিতি ঠান্ডা করার চেষ্টা করে। কিন্তু ছাত্ররা একবিন্দু দমে না গিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে, সময় যত গড়াতে থাকে ততই লাশের বন্যা বইতে থাকে। সরকার নিকৃষ্টতম আচরণ করতে থাকে তার দেশের জনগণের প্রতি, একটা সময় অভিভাবক, শিক্ষক এবং আপামর জনতা সরকারের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে স্বজন হারানোর বেদনায়। সবাই ধীরে ধীরে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ঘোষণা করে।
রক্ত, রক্ত আর রক্ত ঝড়তে থাকে রাজপথে, তাছাড়াও বিভিন্নভাবে দেশের ছাত্রদের হয়রানি করতে থাকে সরকার পন্থীরা। তবে সবকিছু ছাপিয়ে মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি ডাক দেয় ছাত্রজনতা। এই কর্মসূচিতে পুরো দেশের মানুষ সহমত দেয় এবং গণভবন অভিমুখে যাত্রা করে। জনতার ঢল দেখে ফ্যাসিবাদ সরকার ভয়ে ক্ষমতা সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। সত্যি বলতে পুরো দেশের মানুষ আলহামদুলিল্লাহ বলে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছে, এই বিজয় পুরো জাতির বিজয়। পাড়া, মহল্লা এবং পুরো দেশে আজ বিজয় উল্লাস করা হচ্ছে।
পুরো জাতি আজ ভেতর থেকে স্বস্তি অনুভব করছে কিন্তু এখনো এই যুদ্ধ শেষ হয়নি কারন ফ্যাসিবাদী সরকার আবার ফিরে আসতে পারে। তাছাড়াও সেনাবাহিনী ক্ষমতা হাতে নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা এখনো মাঠে রয়েছেন এবং তারা এমন একটি সরকার ব্যাবস্থা প্রনয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছেন যা আমাদের সবার জন্য ভালো হবে। তাই আমরা ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করি এবং শান্ত থাকি।
সৃষ্টিকর্তা সবসময়ই উত্তম পরিকল্পনাকারী এবং তিনি যা করেন আমাদের মঙ্গলের জন্য করেন। তাছাড়াও কেউ যদি তার সীমা অতিক্রম করে তাহলে তার জন্য রয়েছে সীমাহীন শাস্তি।
সবশেষে নতুন স্বাধীন দেশের নাগরিকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিলাম ❤️🇧🇩
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
আমাদের দেশের পরিস্থিতি এত খারাপের দিকে যাবে কখনো কল্পনা করতে পারিনি। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি খারাপ লেগেছে যেসব ছাত্রছাত্রীরা মারা গেল তাদের জন্য এবং তাদের পরিবারের জন্য। সত্যি বলতেই এই বিজয়ী একদম ভালো লাগতেছে না। কারণ হচ্ছে ভবিষ্যৎ আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করতেছে আমরা নিজেও জানিনা। সৃষ্টিকর্তা যা করেন তা ভালোর জন্য করেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য দোয়া প্রার্থনা করছি।
ছাত্ররা এখন পর্যন্ত তাদের সকল আন্দোলনে সফল। সেটা ৪৭ এর সর্বদলীয় রাষ্ট্রা ভাষা সংগ্রাম পরিষদ হোক আর হালের এক দফা দাবী হোক। তারাই দেশের মেরুদণ্ড।
আমি ৭১ সালের স্বাধীনতা দেখিনি, হবে ২৪ সালের স্বাধীনতা দেখলাম। অবশেষে আমরা ফ্যাসিবাদী সরকার থেকে মুক্তি পেলাম। কিন্তু এখনো দেশের পরিস্থিতি ঠিক হয়নি। কিছুটা সময় লাগতে পারে। সে পর্যন্ত আমাদেরকে ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। যাইহোক স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করলাম। আপনার গোছানো পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাই ধন্যবাদ আপনাকে।