আমার লিখনী :- মানব রোবট 🤖
আমার লিখনী :- মানব রোবট 🤖
আমার লিখনী :- মানব রোবট 🤖
আমরা মানুষ কিন্তু রোবটের মত জীবন যাপন করছি। ভেতরের আবেগ আর বোধশক্তি আজ অনেকটাই কমে গেছে। সত্যি বলতে ঠিক পাশেই যদি কোন একজন মানুষ মরে পরেও থাকে তবুও ভেতরে খারাপ লাগার অনুভূতি কাজ করে না। এমনকি পিতা মাতার একটু বয়স হলে তাদের পরিচালনা কঠিন হবে ভেবে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিতে দ্বিধাবোধ করছিনা। ভেতরে ভালোবাসার অনুভূতি তেমন কাজ না করার ফলে আজ বিবাহ বিচ্ছেদ বেড়ে গেছে আশংকাজনক হারে। দিনশেষে মানুষ আর মানুষ নয়, এ যেন রোবট হয়ে দিন যাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মানব সমাজ।
আপনারা হয়তো বহুবার শুনে থাকবেন একটি বাচ্চা জন্মলাভ করার পর পরই সে ডাক্তার হবে না ইন্জিনিয়ার হবে তা নিয়ে বিশাল চিন্তা ভাবনা শুরু হয়ে যায়। পিতা মাতার মাথায় এখন সন্তান নেয়ার কারন একটাই দেখা যায়, তা হলো বড় হয়ে ডাক্তার কিংবা ইন্জিনিয়ার হয়ে তাদের দেখাশোনা করবে। শিশুটি যখন একটু বড় হয়ে স্কুলে যেতে শুরু করে তখন তার উপর চাপিয়ে দেয়া হয় বইয়ের বোঝা। আর অভিভাবক গন শুরু করেন কিভাবে ক্লাশে প্রথম হওয়া যায় সেই যুদ্ধ। এখানে বিষয়টি হচ্ছে একদিনে কোন বাচ্চা সবকিছু শিখে উঠবে না কিন্তু ঐ যে আমাদের মাথায় তাকে প্রথম হতেই হবে এটাই ঘুরপাক খেতে থাকে। ফলশ্রুতিতে পিতা মাতা চাপ প্রয়োগ করে আর বাচ্চাটা খেলতে ভুলে যায়। তার ভেতরে থাকা আবেগ, অনুভূতি আর ভালো কিছু শেখার আগেই ইচ্ছে গুলো নষ্ট হতে থাকে। অত্যধিক নিয়ম তান্ত্রিক জীবন যাপন করার ফলে সে অন্য বাচ্চাদের সাথে মিশতে এবং খেলার সুযোগ পায়না।
ধীরে ধীরে সে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং মোবাইলে আসক্ত হয়ে ওঠে। আর বলা যায় সেই সন্তানটি সবকিছুর সাথে মানিয়ে নিয়ে পিতা-মাতার ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে এক গাদা পুঁথিগত বিদ্যা মগজে ঢোকাতে থাকে। এক সময় সে হয়তো ডাক্তার কিংবা ইন্জিনিয়ার হয়ে উঠে ঠিকই কিন্তু মানুষ হয়ে আর উঠতে পারে না। কারন সেই শিক্ষা সে কখনো পায়নি। সে একজন মানব রোবট হয়ে বেড়ে উঠেছে।
একজন মানব রোবটের মাঝে কোন আবেগ, অনুভূতি আর ভালোবাসা থাকে না। সে শুধু মাত্র লাভ আর ক্ষতির অংক করতে থাকে, যেখানে ভালোবাসা বড্ড মূল্যহীন। মানব রোবট মানুষকে টাকার অনুপাতে মাপতে শিখেছে কিন্তু ভালোবাসা সে সত্যিই বোঝেনা। একটা সময় বয়স্ক পিতা মাতাকে তার বোঝা এবং মূল্যহীন মনে হতে থাকে। সে ঝামেলা এড়াতে তাদের বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে। তার ভেতরে তাদের জন্য নূন্যতম ভালোবাসা কাজ করেনা কারন সে কখনো ভালোবাসাতে শিখেনি। এদিকে আবেগ অনুভূতি না বোঝার কারনে তার সংসার হয়তো ভেঙ্গে যেতে বসেছে।
আমাদের সন্তান পৃথিবীতে আসার পর সে একজন মানুষ হয়ে উঠুক আর সুন্দর জীবন যাপন করুক এই কামনা ব্যাক্ত করা উচিত। সুন্দর মানুষ হয়ে ওঠার জন্য তাকে খেলতে দেয়া, বন্ধুদের সাথে মন খুলে মিশতে দেয়া, সঠিক নিয়মে লেখাপড়া করানো এবং নৈতিক শিক্ষা দেয়াটা জরুরি। এতে সে মানুষ হয়ে ওঠার চেষ্টা করবে, আর যখন সবকিছু বুঝতে শিখবে তখন নিজ দায়িত্বে লেখাপড়া করে নিজের জীবন সে নিজেই গড়ে নেবে। পরবর্তী সময়ে সে মানুষকে মূল্যায়ন করবে এবং ভালোবাসতে শিখবে। সবথেকে বড় ব্যাপার পৃথিবীতে একজন মানুষের সংখ্যা বাড়বে। একজন শিশুর উপর কখনো বোঝা চাপিয়ে দেবেন না 🙏
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1563777423258587136?t=3n9wHiCNhlU34JLNEiU63w&s=19
আপনি বরাবরের মতো আজকেও চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। আসলে আমাদের উচিত ছেলে মেয়েদের কে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। আপনার পোস্ট ভিজিট করে অনেক কিছু বুঝতে পারলাম। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই করি।
ধন্যবাদ লিমন, আসলে মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে বড্ড কম। তাই আজ আমার এই পোস্টটি করা।
খুব সুন্দর লিখেছেন ভাই আর বিশ্লেষণ টাও সুন্দর ছিল।কিন্তু বস্তুবাদী আর পুঁজিবাদী সমাজ ব্যাবস্থা আমাদের যেভাবে আমাদের মগজ ধলাই করে রেখে দিয়েছে তাতে মনে হয় না এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বের হতে পারবো আমরা।
এজন্য তো বললাম সব মানব রোবট তৈরি হচ্ছে এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে।
রোবটিক সমাজ ব্যাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
কথাগুলো একেবারেই বাস্তব ভাই। যারা বৃদ্ধাশ্রমে থাকে দেখবেন তাদের অধিকাংশের ছেলে মেয়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার। বাবা মা তাদের মানুষ বানাতে গিয়ে মানবিক রোবট তৈরি করে ফেলেছে। সত্যি তারা লাভ ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই বোঝে না😩।
অথচ দিনশেষে সন্তানগুলো যদি মানুষ হতো রিকশা চালিয়ে হলেও পিতা মাতাকে দেখতো।