আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। |
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, মাঝেমধ্যে সবুজ শাকের ঘন্ট খেতে খুবই মজাদার লাগে। আমাদের গ্রাম অঞ্চলে সবুজ শাকের মধ্যে কচুর শাক অন্যতম প্রধান। কচুর শাক অত্যন্ত পরিচিত এবং জনপ্রিয় একটি সবুজ শাক। প্রায় সব বয়সের মানুষই কচুর শাকের ঘন্ট খেতে খুবই পছন্দ করে। তাছাড়া দীর্ঘদিন যেকোনো রোগে অসুস্থ থাকার পরে মুখের রুচি বৃদ্ধির জন্য কচুর শাকের ঘন্ট খুবই উপকারী। এছাড়াও সব ধরনের ভিটামিন ও পুষ্টিতে পরিপূর্ণ কচুর শাক। শিশুদের রাতকানা রোগ প্রতিরোধে এবং গর্ভবতী মায়েদের রক্তশূন্যতা রোধে কচুর শাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কচুর শাকের ঘন্ট অনেকেই ভাত দিয়ে খেতে পছন্দ করে, আবার অনেকেই রুটি দিয়ে খেতে পছন্দ করে। আমি কচু শাকের ঘন্ট রুটি দিয়ে খেতেই বেশি পছন্দ করি। আপনারাও কচুর শাকের ঘন্ট রুটির সাথে খেয়ে দেখবেন অনেক মজা পাবেন। আজ আমি আপনাদের নিকট সুস্বাদু এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ কচুর শাকের ঘন্ট তৈরির রেসিপি শেয়ার করছি। |
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, চলুন এক নজরে দেখে আসি কচুর শাকের ঘন্ট তৈরির জন্য আমার ব্যবহারিত বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো :-
উপাদান | পরিমাণ |
কচুর শাক | ৫০০ গ্রাম |
ফুল নটেশাক | ২০০ গ্রাম |
সয়াবিন তেল | পরিমাণমতো |
কাঁচা মরিচ | ৮-১০টি |
পেঁয়াজের কুচি | ৩-৪ টেবিল চামচ পরিমাণমতো |
রসুনের কুচি | ২ টেবিল চামচ |
চাউলের গুড়া | চার চা চামচ পরিমাণ |
দারচিনি | পরিমাণমতো |
লবণ | পরিমাণমতো |
কচুর শাকের ঘন্ট তৈরির প্রক্রিয়াগুলো নিম্নে ধাপে ধাপে উপস্থাপন করা হলো:
⬇️ ধাপ-০১:⬇️
প্রথমেই পরিমাণমতো কচুর শাক সংগ্রহ করে নিলাম। তারপর কচুর শাকগুলো কেটে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধৌত করে একটি পরিষ্কার ঝুড়িতে রাখলাম। |
⬇️ ধাপ-০২:⬇️
কচুর শাকের ঘন্ট আরো বেশি সুস্বাদ এবং মজাদার করার জন্য পরিমাণ মতো ফুল নটেশাক সংগ্রহ করে নিলাম। তারপর ফুলনটে শাকগুলো কেটে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধৌত করে একটি পাত্রে রাখলাম। |
⬇️ ধাপ-০৩:⬇️
একটি পরিষ্কার কড়াই চুলার উপর বসিয়ে দিলাম। কড়াই এর ভিতর পরিমাণ মতো কাঁচা মরিচ, সয়াবিন তেল, পেঁয়াজের কুচি, রসুনের কুচি এবং পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে দিলাম। তারপর কড়াই এর ভিতর মসলাগুলো একটু ভেজে নিলাম। |
⬇️ ধাপ-০৪:⬇️
তারপর কড়াইয়ের ভিতর কচুর শাক এবং ফুলনটে শাকগুলো ঢেলে দিলাম। একটি ঢাকনা দিয়ে কড়াইয়ের ভিতর শাকগুলো ঢেকে দিলাম। তারপর চুলার আগুন মাঝামাঝি পর্যায়ে রেখে আগুনের জ্বালানি দেওয়া শুরু করলাম। |
⬇️ ধাপ-০৫:⬇️
১০ মিনিটের মধ্যেই শাঁকগুলো যখন আধা সিদ্ধ হয়ে গেল তখন কড়াই এর উপর থেকে ঢাকনাটি সরিয়ে দিলাম। তারপর আরো কয়েক মিনিট আগুনের জ্বালানি দিলাম। |
⬇️ ধাপ-০৬:⬇️
শাকগুলোর ভিতরে তিন থেকে চার চা চামচ পরিমাণ চাউলের ময়দা দিয়ে দিলাম। তারপর একটি খুন্তি দিয়ে শাকগুলোর সাথে চাউলের ময়দাগুলো ভালো হবে মিশিয়ে দিলাম। একটি ওড়ং দিয়ে শাকগুলো ঘন্ট করে দিলাম। |
⬇️ শেষ ধাপ⬇️
শাকগুলো ঘন্টা করার পর চুলার আগুন বন্ধ করে দিলাম। তারপর একটি খুন্তি দিয়ে কচুর শাকের ঘন্টগুলো কড়াইয়ের ভিতরে গুছিয়ে নিলাম। কচু্র শাকের ঘন্ট'র উপরে অল্প পরিমাণ দারচিনির গুড়া ছিটিয়ে দিলাম। |
⬇️ পরিবেশন⬇️
কচুর শাকের ঘন্টগুলো খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং মজাদার ছিল। কচুর শাকের ঘন্ট গুলো পরিবারের সকল সদস্যদের মাঝে পরিবেশন করা হয়েছিল। অনেকদিন পর কচুশাকের ঘন্ট সকালে অত্যন্ত তৃপ্তি করে খেয়েছিল। |
সুপ্রিয় বন্ধুগণআমার আজকের রেসিপিটি আপনাদের নিকট কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাবেন। আবারো আগামী দিন নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের নিকট হাজির হব। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।
১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ। |
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
কচু শাকের ঘন্টা খুব সুন্দর ভাবে রান্না করেছেন আপনি। কচুশাক খেতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে খুব।কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ আছে তাই প্রত্যেকের উচিত মাঝে মাঝে কচু শাক খাওয়া। আমার ভীষণ পছন্দের রেসিপিটি আপনি শেয়ার করেছেন তাই আপনাকে ধন্যবাদ।
গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
টুইটার লিঙ্ক
কচু শাকে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে আমরা সকলেই তা জানি। আর তাই মাঝে মাঝেই কচুর শাক অথবা কচুর ডাটা দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাই। তবে আপনার তৈরি কচু শাকের ঘন্ট কখনো খাওয়া হয়নি। তাই আপনার তৈরি রেসিপিটি আমার কাছে একদম ইউনিক মনে হচ্ছে। রন্ধনপ্রণালী টি দেখে খুবই কাজে লাগবে। কেননা পরবর্তী সময়ে তৈরি করে খাওয়ার চেষ্টা করব। আপনার সুন্দর উপস্থাপনার জন্য ধন্যবাদ।
জি ভাই প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। আমাদের সকলের উচিত মাঝেমধ্যে শাকের ঘন্ট খাওয়া।
কচুর শাকের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে। কচুর শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যায় জেনে আমিও কচুর শাক খেতে একদম পছন্দ করি না। কচুর শাকের ঘ্রাণ আমার সহ্য হয়না।যাই হোক কচুর শাক ভাজি শুনেছি কিন্তু কখনো কচুর শাক দিয়ে ঘন্ট তৈরি করা যায় জানা ছিল না। আপনি খুব সুন্দর ভাবে কচুর শাকের ঘন্ট রেসিপি তৈরি করেছেন। ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। আরও মজাদার করার জন্য নটে শাক যোগ করেছেন। দুই শাক একসাথে রান্না করাতে মনে হচ্ছে এর স্বাদ আরও বেড়ে গিয়েছে। ধন্যবাদ মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
অতি চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
কচু শাক ঘন্টা আমারও খুবই খুবই ফেভারিট বাড়ি গেলে মাঝে মাঝেই মায়ের হাতের প্রস্তুত করে খাওয়া হয়।। তবে বেশিরভাগ সময় ইলিশ মাছ অথবা টাকি মাছ দিয়ে ঘন্ট হয়।। আপনার প্রস্তুত করার রেসিপিটি দেখেই খুব লোভ হচ্ছে এ ধরনের রেসিপি রুটি দিয়ে খেতে অনেক মজাদার হয়ে থাকে।। রন্ধন প্রণালী সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।।
মায়ের হাতের প্রস্তুত করা কচুর শাকের ঘন্ট খাওয়ার মজাই আলাদা। গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
জি ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন কচুর শাকে সকল ভিটামিন পরিপূর্ন। শিশু বলেন ,বয়স্ক বলেন ,গর্ভবতী সকলের জন্য এই শাক খুবই উপকারি। শরীরের রক্ত বাড়ানোর জন্য এই শাকের কোন তুলনা নেই। কচু শাকের ঘন্ট তো আমার বেশ পছন্দ। আমি প্রায় সময় এই কচুর শাক ঘন্ট করে খাই।
আমার পোস্টে পড়ে অনেক সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মজাদার একটি কচুর শাক ঘন্ট রেসিপি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সেই সাথে এর অনেক রকম উপকারিতাও আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। মজাদার এই রেসিপিটি অনেকদিন পর দেখেই জিভে জল এসে গেল।
আমার পোস্টটি পড়ে অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বাঙালি হলো খাদ্যরসিক। আর বাঙালির খাবারের মধ্যে রয়েছে এই কচুশাক। কখনো চিংড়ি কখনো ইলিশের কাঁটা দিয়ে ঘন্ট করা কচুশাক সত্যি স্বাদে অতুলনীয়। পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন। দারুণ তৈরি করেছেন কচুশাক ঘন্টটা। সুন্দর পোস্ট ছিল।
অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার তৈরি করা কচু পাতার ঘন্ট রেসিপি দেখতে অনেক সুন্দর লাগতেছে। অনেক সুন্দর ভাবে তৈরি করা পাশাপাশি ধাপ গুলো অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।
আপনার জন্য শুভ কামনা রইল
আমার পোস্টটি পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনি খুব সুন্দর করে কচুর শাকের ঘন্ট রান্না করেছেন। কচুর শাক খেতে আমার খুব ভালো লাগে। রেসিপির কালার দেখে মনে হয় খুব সুস্বাদু হবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর করে সাজিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
কচুর শাকের ঘন্ট খেতে আপনার ভালো লেগে জানতে পেরে আমার খুব ভালো লাগলো।