বর্তমান সময়ের পেক্ষাপটে “রুটিন কালচার” প্রথম পর্ব।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহু।

হায় বন্ধুরা

কেমন আছেন?


আশা করি "আমার বাংলা ব্লগ" এর সকল সম্মানিত সদস্যবৃন্দ আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে ভালো আছেন।আপনাদের দোয়ায় আমিও ভালো আছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে বর্তমান সময়ের একটি বিষয়কে ছোট গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।আশাকরি,গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে।

wasa-crispbread-rR2YntJJOl4-unsplash.jpg

Source

আমার এক প্রতিবেশী বড় ভাই বললেন, বিপদের আর শেষ নেই। কি যে করি। আমি জানতে চাইলাম কিসের বিপদ।বড় ভাই বললেন, কিসের আবার। রুটিনের বিপদ। এই রুটিন নিয়ে আর পারা যায় না। এমনিতেই তোর ভাবীর সঙ্গে আমার বনিবনা একটু কম ছিল। রুটিন ইস্যুতে সম্পর্ক এখন এমন জায়গায় গেছে, কি আর বলব। ধুর,ভালো লাগেনা এইসব। বড় ভাইয়ের মুখ হাঁড়ির মত বানিয়ে ফেললেন।


আমি বললাম, ব্যাপারটা যাতে খুলে বলেন। বড় ভাই একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। তারপর বললেন, ছাত্রজীবনে আমার একটা অভ্যাস ছিল।পড়ার রুটিন বলিস আর পরীক্ষার রুটিনই বলিস, আমি সেটা পড়ার টেবিল সংলগ্ন দেয়ালে টানিয়ে রাখতাম। এত বছর পরে এখন আবার রুটিন এর প্রচলন এসেছে। লোডশেডিংএর রুটিন।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে,এখন তো আমার পড়া টেবিল নেই। আমার টেবিল ছাড়া চলবে না।যেহেতু অভ্যাসের ব্যাপার।তাই করি কি,লোডশেডিংয়ের যে শিডিউলটা,এটা সাঁটিয়ে রাখি তোর ভাবীর ড্রেসিংটেবিলে।মানে ড্রেসিংটেবিলের আয়নায়।ব্যস,তাতেই সে ক্ষিপ্ত।কারণ,আয়নায় সিডিউল সাঁটিয়ে রাখার কারণে নাকি তার মুখের পুরোটা দেখা যায় না।

আমি অবশ্য রসিকতা করে বলেছিলাম,তোমার এত বড় মুখ,পুরোটা একবারে দেখা না যাওয়াটাই স্বাভাবিক। সমস্যা নেই,ধাপে ধাপে দেখো।এতে বউ এমন ক্ষ্যাপা ক্ষেপলো যে,মেকাপের ডিব্বা ছুড়ে মারল আমার দিকে। ভাগ্যিস,আমি ’ক্যাচ’ ধরায় দক্ষ ছিলাম।

এমন সময় আমার আরেক প্রতিবেশী ছোট ভাই বললো,আমরা যারা অগুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করি,তাদের জন্য হয়েছে বিপদ।অথচ আজ যদি গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করতাম,যদি আমার একজন পিস থাকতো,তাহলে কোন ঝামেলাই ছিল না।আমি বললাম,তা তো বটেই।পিএস থাকলে অনেক সুবিধা।

ছোট ভাই বললো,বড় ভাই মনে হয় বিষয়টা না বুঝেই কমেন্ট করলেন।আমি এবার আমতা আমতা করতে শুরু করলাম।ছোট ভাই বললো,আসলে হয়েছে কি ভাই,পিএস থাকলে নরমালি যেসব সুবিধা পাওয়া যায়,এর চেয়ে এখনকার পরিস্থিতিটা আরো জটিল। যা-ই হোক,এখন আমি পিএস রাখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি বিশেষ একটা কারণে।

মানে আমাকে যাতে সে লোডশেডিংয়ের রুটিনটা মনে করিয়ে দিতে পারে- এই আর কি।এবার আমার আমতা আমতা ভাব কেটে গেল।আমি বললাম,লোডশেডিং এর রুটিন মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য পিএস রাখার চিন্তা করার চেয়ে অনেক সহজ আইপিএস রাখা।তাতে লোডশেডিংয়ের টেরই পাওয়া যাবে না।তাছাড়া পিএস রাখতে যে খরচ তার অর্ধেক খরচ দিয়ে আইপিএস কিনলে যে টাকা বাঁচবে তা দিয়ে ভাবিকে কিছু উপহার দিলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হবে।


IMG_4528.JPG
আমি আনিসুর রহমান।আমার ইউজার আই ডি @anisshamim.
আমি মুন্সিগজ্ঞে বসবাস করি।আমি নিজেকে একজন বাংঙ্গালী হিসেবে গর্ববোধ করি।আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে কবিতা লিখি, ফটোগ্রাফি করি।নিত্য নতুন কিছু রান্না করা আমার প্রচন্ড শখ।ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 59185.02
ETH 2522.04
USDT 1.00
SBD 2.47