স্মৃতির পাতায় হাতিরঝিল
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি। আজ আমি স্মৃতিচারণ করব বেশ কিছু জায়গা এবং ঘটনা নিয়ে। এই ব্যস্ততম জীবনে আমরা বিভিন্ন জায়গায় ভিজিট করে থাকি, কিছু কিছু জায়গায় কাজের জন্য যাওয়া হয়। আবার কিছু কিছু জায়গায় প্রশান্তির জন্য যাওয়া হয়। কিন্তু তারপরও আমাদের এই জীবনে সেসব জায়গাগুলো জীবনের একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে। ঠিক তেমনি আমার জীবনের একটি অধ্যায় হল হাতিরঝিল।
ঢাকা শহরে এমন অনেক কম জায়গা রয়েছে যেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুভব করা যায়। সত্যি বলতে, হাতিরঝিল শুধুমাত্র একটি লেক নয় বরং একটি প্রশান্তির জায়গা। যেখানে গিয়ে আপনি বসে থাকলে শান্তির বাতাস অনুভব করতে পারবেন, সেই সাথে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। কারণ হাতিরঝিলের চারিপাশে রয়েছে প্রচুর গাছপালা। করোনা মহামারীর কারণে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড থেকে ভর্তি ক্যান্সেল করে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হয়েছিলাম এবং ভর্তি হওয়ার পর পরই হাতিরঝিলে একটি বাসায় উঠেছিলাম।
যদিও বাসাটা আম্মুই ঠিক করে দিয়েছিল। কারণ তখন আম্মু ঢাকায় ছিল এবং আমি গ্রামের বাসায় ছিলাম। যাইহোক সেই জায়গা থেকে হাতিরঝিল যেতে মাত্র ৩০ সেকেন্ড সময় লাগে। অর্থাৎ বাসা থেকে বেরোলেই হাতিরঝিল দেখা যায়, (রামপুরার দিকে)। হাতিরঝিল দেখতে ছোট মনে হলেও এটা কিন্তু বৃহৎ একটি এলাকা নিয়ে তৈরি। যেমন কাওরান বাজার থেকে রামপুরা আসতেই প্রায় ৩০ মিনিটের মতো লেগে যায়, এই সম্পূর্ণ জায়গাটাই কিন্তু হাতিরঝিলের অংশ। বর্তমানে হাতিরঝিল জায়গাটিকে প্রচন্ড রকমের মিস করি। এর মিস করার পিছনে বেশ কিছু কারণও রয়েছে। আগে প্রতিদিন বিকেল বেলায় এই হাতিরঝিলে হাটাহাটি করতাম এবং অসম্ভব একটি সুন্দর পরিবেশ উপভোগ করতাম। দূর-দূরান্ত থেকে এই হাতিরঝিল ভিজিট করতে অনেক পর্যটকই আসে মাঝে মাঝে।
এমনও অনেক মানুষকে দেখেছি যারা অফিস শেষ করে এই হাতিরঝিলে একটু প্রশান্তির নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য আসে। কিংবা এই ঢাকার বুকে কেউ নৌকায় করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও নিতে আসে। যদিও নৌকায় দিয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে একটু বেশি সময় লাগে কিন্তু এই ট্রাভেলের সময়টা সত্যিই অনেক বেশি উপভোগ্যকর হয়ে ওঠে। হাতিরঝিল এলাকায় আমি থাকা অবস্থায় কোনদিন জ্যাম দেখিনি। কারণ এই রাস্তাগুলো ওয়ান ওয়ে এবং এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে এখানে খুব সহজেই জ্যাম না লাগতে পারে। এর জন্য হাতিরঝিল এলাকাটা আমার খুব বেশি পছন্দের।
গত একমাস ধরে সার্বিক পরিস্থিতির জন্য ভার্সিটি যাওয়া হয়নি এবং আমি যখনই ভার্সিটি যাই, ভার্সিটি থেকে আসার সময় হাতিরঝিলে বসে একটু সময় কাটাই এবং অতিতে স্মৃতিগুলো মনে করার চেষ্টা করি। আসলে সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কাছে সবকিছুই অনেক তুচ্ছ মনে হবে, এটা আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। আমার কাছে মনে হয় সেই সময়টা একটু বিশ্রামের সময়। আমরা প্রত্যেকেই রোবটের মত জীবন যাপন করছি আমরা সবাই একটু প্রশান্তি চাই এবং আমার কাছে মনে হয় ঢাকা শহরের জন্য হাতিরঝিল প্রশান্তির অন্যতম একটি জায়গা।
আমার ব্যক্তিগত জীবনে খুব বেশি একটা বন্ধু বান্ধব নেই। তবে মাঝে মাঝেই ভার্সিটির বন্ধু-বান্ধব নিয়ে সেই হাতিরঝিলে আড্ডা দিয়েছিলাম। এছাড়াও সেখানে যে ফ্ল্যাটে ছিলাম সেখানকার দুই একটা বড় ভাইয়ের সাথেও মাঝে মাঝে আড্ডা দিতাম। আবার বেশিরভাগ সময় কানে হেডফোন লাগিয়ে হাতিরঝিলে হাঁটা শুরু করে দিতাম। আবার খুব যখন মন খারাপ হয়ে যায় তখন হাতিরঝিলের নৌকায় করে একপারে যেতাম আবার সেই পার থেকে আমার গন্তব্যে ফিরে আসতাম।
যেতে এবং আসতে প্রায় এক ঘণ্টার মতো সময় লাগতো। এতে করে আমি একটু শান্তি পেতাম। কারণ নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ানোর মতো কিন্তু একটা প্রশান্তি রয়েছে। সবমিলিয়ে অনেকটা স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এই হাতিরঝিলে মধ্যে। আজ হঠাৎ করেই গ্যালারিতে ছবি দেখতে গিয়ে এই হাতিরঝিলের কিছু ছবি চোখে পড়ে গেল। তাই ভাবলাম এই বিষয়ে একটি পোস্ট লিখে আপনার সাথে শেয়ার করি। আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আপনারা যদি কেউ হাতিরঝিল গিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই মন্তব্যে জানাতে পারেন, ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: স্মৃতির পাতায় হাতিরঝিল
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
সবকিছু ঠিক হয়ে গেলে তুমি আবার হাতিরঝিলে ঘুরতে যেও। বিকেলে বা সকালে বিশুদ্ধ বাতাসে কিছু সময় কাটানো কিন্তু খুবই স্বাস্থ্যকর। ছবিতে দেখে মনে হচ্ছে হাতিরঝিল জায়গাটি খুবই মনোরম। এমন সবুজ বিশুদ্ধ জায়গা মেট্রো সিটি গুলোতে খুবই কম থাকে। কংক্রিটের জঙ্গলে এই একখণ্ড প্রকৃতির বুকে সামান্য না গেলে দিনের ক্লান্তি গুলো যেন থেকেই যায়। খুবই ভালো লাগলো তোমার পোস্ট।