একটি তাৎপর্যময় দিন (10% beneficiaries for @shy-fox
বাংলাদেশের ইতিহাসে যতগুলো দিবস আছে তার মধ্যে বুদ্ধিজীবী দিবস অন্যতম তাৎপর্য বহন করে। এই দিবস বাঙ্গালীদের মনে এক কালো দাগ লিপিবদ্ধ করে দিয়ে গিয়েছে ।এমন ক্ষতি সাধন করেছে যা কখনোই পূরণ হবার নয় ।আমি বলছি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য যখন উদিত হচ্ছিল তখন বাংলাদেশের মেধাকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য,বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য , সকল মেধাবীদের, বুদ্ধিজীবীদের, শিক্ষক ও শীর্ষস্থানীয় জ্ঞানী -বিজ্ঞানীদের হত্যা করা হয় ।
সেই বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে অধিকাংশ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোনও দেশ নেই যে দেশের স্বাধীনতার জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই তৃতীয়াংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী কর্মচারী জীবন দিয়েছেন। বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেই গৌরবে উজ্জীবিত তবে যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনোই পূরণ করা সম্ভব নয়। সে ঘাটতি এখনো বাংলাদেশে বয়ে চলছে।
দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে আমাদের যে চরম মূল্য দিতে হয়েছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে খোদাই করা থাকবে। প্রায় ত্রিশ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি ।তাদের মধ্যে যে খ্যাতনামা, দেশবরেণ্য ব্যক্তিরা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে আমরা বুদ্ধিজীবী হিসেবে গণ্য করি ।তাদের মধ্যে ছিলেন শিক্ষক ,সাংবাদিক ,চিকিৎসক ,বিজ্ঞানী, সমাজসেবক ,পরিকল্পনাবিদ ,রাজনীতিবিদ সহ আরো অনেকে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঠিক শেষ পর্যায়ে যখন তারা বুঝতে পারল বাংলাদেশ কোনোভাবেই দমাতে পারবোনা, বাংলাদেশ স্বাধীনতার কখনো ভাবেই আটকানো সম্ভব না তখন তারা বাংলাদেশেকে চিরতরে মেধাশূন্য করার জন্য পরিকল্পনা করেছিল এবং তা বাস্তবায়ন করেছিল
১৬ই ডিসেম্বর ।
সেই ভয়াল রাতে হানাদার বাহিনীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল এ , জগন্নাথ হলে ,আবাসিক বাসভবনে ,ঢাকা মেডিকেলের ,বাসভবনে সহ সারা ঢাকা থেকে এবং দেশের বিভিন্ন বিভাগ জেলা, থেকে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের তুলে নিয়ে হত্যা করেছিল। যাদের হত্যা করেছিল তাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী ,আনোয়ার পাশা,অধ্যাপক রাশিদুল হাসান ,সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য,গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, শহীদুল্লাহ কায়সার,সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন ,নিজাম উদ্দিন ,আহমেদ গোলাম মোস্তফা ,খ্যাতনামা চিকিৎসক ফজলে রাব্বী ,আব্দুল আলীম চৌধুরী ও মোহাম্মদ মোর্তজা। এছাড়াও তারা জগন্নাথ হল থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন গোবিন্দ দেব,ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ,যোগেশচন্দ্র ঘোষ ,রণদা প্রসাদ নাথ, চন্দ্র সিংহ প্রখ্যাত সুরকার আলতাফ মাহমুদ ,সাংবাদিক সেলিনা পারভীন ও কবি মেহেরুন্নেসা কে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর অধিকাংশের ক্ষতবিক্ষত লাশ ঢাকার মিরপুরের বধ্যভূমিতে পাওয়া গিয়েছিল। সেইরাতে হত্যা হওয়া মুনীর চৌধুরী, জহির রায়হান সহ অনেকের লাশ পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল শিক্ষক ,শিক্ষার্থী কর্মচারী শহীদ হয়েছিলেন তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর, কলা ভবন চত্বরে, জগন্নাথ হলে বিভিন্ন ধরনের স্মৃতিফলক তৈরি করা হয়েছে এবং তাদের নাম সহ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। সত্যি আমি যখন এই বিষয়গুলো নিয়ে ভাবি তখন ভীষণ বেদনা পাই ,কষ্ট পাই, যে একটা দেশের এতগুলো মানুষকে এক রাতে কিভাবে কেউ হত্যা করতে পারে, একটা দেশকে এইভাবে মেধাশূন্য করতে পারে । যুদ্ধ-বিগ্রহ হানাহানি সত্যি বেদনাদায়ক কেননা যুদ্ধে কখনো কারো জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না। লক্ষ্য লক্ষ্য প্রাণহানি প্রাপ্ত কখনো মঙ্গল বয়ে আনে না ।তবে স্বাধীনতার প্রশ্নে বিজয়ের প্রশ্ন বাংলাদেশ সব সময় ন্যায়ের পক্ষে। আমার যখন সকালে পরীক্ষা ছিল পরীক্ষা শেষ করে বান্ধবী কে সাথে নিয়ে কলাভবনের সামনে গেলাম গিয়ে সেখানকার ছবি গুলা তুললাম ।আমাদের সেই খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবীদের নাম সহ তাদের পরিচয় গুলো লেখা আছে ।এছাড়া সন্ধ্যার দিকে টিউশন থেকে ফিরবার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্তরে থেকে ছবি গুলো তুলেছি ।
১৪ ডিসেম্বর | শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস |
---|---|
ছবি | @abidatasnimora |
Camera | Samsung galaxy S6 |
W3W location | এখানে |
পোস্টটি পড়ে আমার খারাপ লাগছে এবং খারাপ লাগাটাগ স্বাভাবিক । কেননা আজকে বাংলাদেশের একটি কালো অধ্যায় আপনি এই কথাটি ঠিকই বলেছেন। আজকে আমাদের বাংলাদেশের সকল নামিদামি বুদ্ধিজীবীদের গণহারে হত্যা করা হয়েছিল যা আমাদের জন্য খুবই মর্মান্তিক একটা ঘটনা ছিল ।এবং যা আমরা আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি তাই তো আজকের দিনের শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে বাংলাদেশে আজ পালিত হচ্ছে। ধন্যবাদ ভাই আজকের দিনে এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে আপনি আমার পোস্টটি পড়ে কাঙ্খিত মন্তব্য করেছেন।
বুদ্ধিজীবী হত্যার পেছনে শুধু পাকিস্তান না অন্যান্য কিছু দেশ ছিল যারা পাকিস্তানকে এই কাজ করতে সাহস যুগিয়েছিল। বুদ্ধিজীবী হত্যার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে মূর্খ করে রাখতে চেয়েছিল। এতদিন শুধু বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করেছি। কিন্তু এতোটা জানতাম না। আজ আপনার পোস্ট থেকে অনেককিছু জানতে পারলাম।
এবং পোস্টের ছবিগুলোর তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। ধন্যবাদ আপু আমাদের সাথে এতো সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আমার টুইটার অ্যাকাউন্টে আজকের পোস্টে লিঙ্ক-
https://twitter.com/abidatasnimora/status/1471006828855062528?t=PXf43vdOAkXRe0wOABhZRg&s=19