অনুভূতি ছোঁয়া গেলে মানবিকতার অনেক বেশি বিকাশ হতো।
আমরা সেই সকল মানুষের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে থাকি, যাদের ক্ষত বাইরে থেকে দেখা যায়, অথবা চিকিৎসার মধ্যে দিয়ে যারা শরীরের ভিতরের ক্ষতের চিকিৎসা করছেন, বা করা সম্ভব।
এদের উর্ধ্বে সমাজে এক শ্রেণীর মানুষের অবস্থান আছে, যাদের ক্ষত চিকিৎসায় ধরা পড়ে না!
প্রকৃত অনুভূতির দ্বারা সেই ক্ষতের সন্ধান পাওয়া সম্ভব, অথবা নিজেদের যখন একই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, শুধুমাত্র তখনই সেই ক্ষতের যন্ত্রণা অনুভব করা সম্ভব।
চিকিৎসা দ্বারা এখন অনেক ব্যাধি নির্মূল সম্ভবপর হলেও, আজও প্রতিনিয়ত অনুভূতি যেভাবে দৈনন্দিন জীবনে আক্রান্ত হচ্ছে, তার কোনো খোঁজ কেউ রাখে না, এবং চিন্তাও করে না অনুভূতির চিকিৎসার প্রয়োজন আছে।
আর সেই চিকিৎসা কেবলমাত্র সম্ভব, যদি মানবিকতা দিয়ে সেই অনুভূতিকে স্পর্শ করা যায়!
মেনে নিতে নিতে একশ্রেণীর মানুষ মূল্যহীন এবং অস্তিত্বহীন হয় যায় কিছু মানুষের জীবনে;
আর ঠিক এইখান থেকেই শুরু হয় অনুভূতির হত্যা!
ইচ্ছের হত্যা, চাওয়া পাওয়ার হত্যা, প্রত্যাশার হত্যা;
শারীরিক ভাবে বেঁচে আছে দেখা গেলেও একটু একটু করে রক্তপাত শুরু হয়ে যায় ভিতর থেকে।
সামাজিকতা রক্ষা করতে ভালো আছি বলা, সেজে গুজে সমাজের অঙ্গ হিসেবে নিজেদের সর্বসমক্ষে উপস্থিত করা, পরিবার পরিজন সহ প্রতিবেশী সকলের সাথে শুরু হয়ে যায় অভিনয়!
অথচ সততা, বিশ্বাস আর একটু সহমর্মিতার বিনিময় কিন্তু এই অনুভূতির চিকিৎসা সম্ভব।
সেটুকুও যখন কেউ দিতে নারাজ আর নিজেরা অকারণে সেগুলো ভঙ্গ করে বুক উঁচিয়ে ঘুরে বেড়ায় সমাজের বুকে, সেই সময় বিচারের দাঁড়িপাল্লায় সমতা থাকে না।
(সাদা আর কালো দুয়ের স্থান সময়ের সাথে পরিবর্তন হতেই পারে। আজকে যে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে, কাল তার অবস্থানের পরিবর্তন হবেই, যদি কর্ম ঠিক থাকে!) |
---|
নীরব কিছু মানুষের মতো সৃষ্টিকর্তাও কিন্তু নীরবে সব দেখে যান, সময়ের চক্রে সেই অমানবিক মানুষগুলোকে দাড় করিয়ে দেন একই অবস্থায়;
যাতে, তারা অবহেলিত অনুভূতির যন্ত্রণা বুঝতে সক্ষম হয়।
আমি জীবনে আরো একটি বিষয় বিশ্বাসী আর সেটা হলো, সবসময় নিজের হয়ে সৃষ্টিকর্তা বিচার করতে আসেন না, কখনো কখনো নিজেদের প্রতিবাদী হতে হয়, বুঝিয়ে দিতে হয় আমিও পারি, আমার ও নেওয়ার শেষ আছে।
অনৈতিকতা মেনে নেওয়া, অনৈতিক আচরণের চাইতেও বেশী অপরাধ।
নিজেদের দুর্বলতা কেউ যখন কারোর হাতে তুলে দেয়, তার অর্থ সে তাকে বিশ্বাস করে,সম্মান করে আর ভালোবাসে।
সেটাকে যদি কেউ পরবর্তীতে আত্মস্বার্থে ব্যবহার করে, তাহলে সেটাকে অনুভূতির অসম্মান করা ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।
একটি বিড়াল জানে সে একটি সারমেয়র থেকে দুর্বল শারীরিক শক্তির দিক থেকে তুলনা করলে।
আর এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একটি সারমেয় যখন একটি বিড়ালকে তাড়া করে, বিড়ালটি প্রথমে পালানোর প্রয়াস করে, কিন্তু একটা সময় যখন বিড়াল দেখে সে দেয়ালে এসে পৌঁছেছে, সামনে আর পালাবার পথ নেই!
ঠিক সেই মুহূর্তে সে তার হিংসাত্মক রূপ ধারণ করে সারমেয় কে আক্রমণ করতে এগিয়ে যায়।
এই বিপরীতমুখী আচরণ সারমেয় কে এতটাই অবাক করে যে পিছু হটতে বাধ্য হয়।
কারণ, যাকে সে দুর্বল ভেবে তাকে তাড়া করে নিজের শক্তির প্রদর্শন করছিল, তার ভিন্নরূপ তাকে বিস্মিত করে।
যেদিন ওই বিড়ালের মতো সে হাঁপিয়ে যাবে, অথবা সামনে আর কোনো পথ থাকবে না, সেও কিন্তু আক্রমণাত্বক হয়ে উঠবে মুহূর্তেই।
সহমর্মিতা ও অনুভূতির সঠিক মূল্যায়নের অভাব বোধহয় মানবিকতার বিকাশের পথে প্রথম এবং অদ্বিতীয় বাঁধা!
সর্ম্পূণ নিজস্ব অভিজ্ঞতায় অনুভূতি প্রকাশ, কাজেই, সহমত পোষণ এর আশা করছি না।
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.