Better life with steem || The Diary Game || 7th January, 2024 ||

"আমার সারাদিনের বিশেষ কিছু মুহুর্ত"

Hello,

Everyone,

আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের প্রত্যেকের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।

রবিবার মানেই সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং এই ছুটির দিনটা অনেকেই অনেক কিছু প্ল্যান করেন। তবে সত্যি কথা বলতে আমার তেমন কোনো প্ল্যান করা হয়ে ওঠে না, তবে মাঝেমধ্যে রুটিনের একটু পরিবর্তন হয় বৈ কি!

আজকের রবিবারটা কিভাবে কাটালাম, সেই গল্প এই পোস্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করবো, চলুন তাহলে শুরু করি-

গতকালের পোস্টে জানিয়েছিলাম, পিকলুর শরীরটা বেশ খারাপ। তবে গতকালকের তুলনায় আজকে ওর শারীরিক অবস্থা অনেকটাই ভালো আছে এবং আজ সারাদিনে মোটামুটি সে এদিক-ওদিক ভালোই ঘুরেছে।

তবে গতকাল একদম শান্তভাবে শুয়েছিল, যেটার জন্য আমার মনটাও একটু বেশি খারাপ ছিলো। গতকাল রাতে মাঝখানে অনেকবারই ঘুম থেকে জেগে পিকলুকে দেখেছি, কারণ ও বারবার ওর বিছানা থেকে নেমে মেঝেতে শুচ্ছিলো, তাই ওকে কোলে করে আবার ওর বিছানায় শোয়াতে হয়েছে বেশ কয়েকবার।

সকালবেলা

আজ সকালে ফোনের অ্যালার্ম নয়, আমাদের কাজের মাসি আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলেছিলো। আসলে সারারাত খুব ভালোভাবে ঘুম হয়নি, তাই ভোরবেলার দিকে একটু গভীরভাবে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে কাজের মাসি জানালা দিয়ে ডাক দেওয়াতে তড়িঘড়ি ঘুম থেকে উঠলাম।

যেহেতু শাশুড়ি মা বাড়িতে নেই, তাই আমার নাম ধরেই ডাকছিলো। ঘুমের ঘোরে হঠাৎ করে নিজের নাম শুনে চমকে গিয়ে ঘুম থেকে উঠলাম। তারপর দরজা খুলে দিয়ে এসে আবার শুয়ে পড়লাম। পিকলুও আমার পিছু পিছু গেট পর্যন্ত গিয়েছিলো।

এরপর ঘুম থেকে উঠলাম ঘড়িতে তখন ১০.৪৮ বাজে। যেহেতু শশুর ও শাশুড়ি মা বাড়িতে নেই, এই কারণে সকাল বেলায় কাজের খুব বেশি তাড়া ছিলো না। ঘুম থেকে উঠে, ফ্রেশ হয়ে, প্রথমে ঠাকুর শয়ন তুললাম। যে কাজটা অন্যান্য দিন শাশুড়ি মা বা শ্বশুরমশাই করে থাকেন। আজ সেটা আমাকেই করতে হলো।

তারপর একটু গরম জল খেলাম।।জলটা অবশ্য ফ্লাক্সে করাই ছিল। তারপর চা করে দুজনে ফোন ঘাটতে ঘাটতে সকালের চা খেলাম। ব্রেকফাস্টের জন্য আলাদা করে কিছুই তৈরি করিনি আজ, হরলিক্স এর সাথে চকোস খেয়ে নিয়েছিলাম।

কিছুক্ষণ বাদে আমার ননদ ফোন করে আজ বিকেলে ওনাদের বাড়িতে যেতে বলল। কারণ ওনরা নতুন গ্রিলার কিনেছেন, যেটা দিয়ে আজ চিকেন তন্দুরি করে খাওয়া হবে। ছুটির দিনে সন্ধ্যা বেলায়, সকলে মিলে একসাথে কিছুটা সময় উপভোগ করা ও খাওয়া-দাওয়ার প্ল্যান করেছে আজ। শুভ যাবে কিনা শুনে নিয়ে ননদকে হ্যাঁ বললাম।

পিকলুকে বিস্কুট খাইয়ে দিয়ে সকালের ওষুধ খাইয়ে দিলাম। তারপর আমি ঘরের কাজ শুরু করলাম। ঘরের কাজগুলো গোছাতে মোটামুটি ঘন্টা খানেক সময় গেল এবং কিছু জামা ধোয়ার ছিল সেগুলোও সার্ফের জলে ভিজিয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ বাদে শুভর বন্ধু এলো মটন নিয়ে। গতকাল রাতে ওরা দুজন মিলে প্ল্যান করেছিল, আজ লাঞ্চে ওরা মটন খাবে, যেটা আমাকে রান্না করে দিতে হবে। আর তার সাথে শুধু সাদা ভাত।

দুপুরবেলা

এরপর আমি মাংসগুলোকে ভালো করে ধুয়ে জল ঝরাতে দিলাম এবং মাংস রান্না করার জন্য সবকিছু রেডি করে নিলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম স্নান করে পুজো দিয়ে রান্না করতে যাবো, কিন্তু পরে ভাবলাম আগে রান্না শেষ করে নিই তারপর বাদবাকি কাজ করবো। এই কারণে রান্না শুরু করলাম। তার মাঝখানে জামা কাপড় গুলো ধুয়ে ছাদে মেলে দিয়ে এসেছিলাম।

শুভ ওর বন্ধুর সাথে বাইরে বেরিয়ে ছিলো, কিছুক্ষণ বাদে ফিরে ও পিকলুকে লাঞ্চ করিয়ে দিল এবং তার সাথে সাথে ওষুধ দিয়ে দিলো। দুপুরবেলায় অবশ্য পিকগুলো তেমন কিছু খেতে চাইছিল না। তাই খুব বেশি জোর না করে ওষুধ দিয়ে দেয়া হয়েছিল।

রান্না শেষ করে, রান্না ঘরে সমস্ত কাজ গুছিয়ে, আমি স্নান করে আগে পূজো দিলাম। কারণ অনেকটাই বেলা হয়ে গিয়েছিল। তারপর শুভর বন্ধু এলে, ওদের দুজনকে আমি একসাথে খেতে দিলাম। তারপর গতকালের বিরিয়ানি যেটা আমার জন্য রাখা ছিলো, সেটা গরম করে আমিও লাঞ্চ করে নিলাম।

আজকে লাঞ্চ করতে অনেকটাই লেট হয়ে গিয়েছিলো। তারপর আমি কমিউনিটির কাজ শুরু করলাম। পিকলু ওর বিছানাতেই শুয়ে ছিলো, একটু পরে হঠাৎ ওর কি মনে হলো, ও আমার খাটের উপরে উঠে শুয়ে পড়ল।

সন্ধ্যাবেলা ও রাত্রিবেলা

বিকেলের দিকে একটু ছাদে গেলাম। কারণ ছাদের গাছগুলোতে গতকাল জল দেয়া হয়নি। তাই আজ একটু জল দিতে হতো। আমার পিছু পিছু আজকে পিকলুও ছাদে গিয়েছিল। সন্ধ্যার আগে বেশ কিছুটা সময় আমরা দুজন ছাদে কাটালাম। এরপর আমি নিচে এসে সন্ধ্যা পুজো দিলাম। কমিউনিটির বেশ কিছু কাজ ছিল সেগুলো শেষ করলাম। তারপর গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ডিসকর্ডে কথা বললাম।

এমনটা করতে করতে অনেকটাই দেরি হয়ে গেলো। তারপর রেডি হয়ে আমি, পিকলু, ও শুভ তিনজন মিলে ননদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। সেখানে গিয়ে দেখি ইতিমধ্যেই ননদ চিকেন ম্যারিনেট করা থেকে শুরু করে বাকি সব রেডি করে রেখেছে।

ফাইনালি তন্দুর চিকেন তৈরি পরিবেশনের জন্য।

সকলে খুব ভালো সময় কাটিয়েছি। গ্রিল চিকেন খেতেও অনেক ভালো হয়েছিল। আড্ডা, খাওয়া-দাওয়া, হাসি মজা করতে করতে বেশ খানিকটাই রাত হয়ে গিয়েছিল। এই ঠান্ডার মধ্যে আবার বাড়িতে ফিরতে হবে ভেবে খুব বেশি দেরি না করে আমরা রওনা দিলাম।

বাড়িতে এসে পিকলুকে অল্প একটু ডিনার দিয়ে ওষুধ দিয়ে দিলাম। আমি আর শুভ রাতের ডিনারে আর কিছু খাইনি। তাড়াতাড়ি করে পোস্ট লিখতে বসলাম। পোস্ট লেখা শেষ হলে আমি কমিউনিটির কিছু কাজ গুছিয়ে,
তারপর শুতে যাবো।

ছুটির দিনটা আজ বেশ ভালই উপভোগ করেছি। অনেকদিন বাদে সকলে মিলে, পুরনো দিনের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে অনেক আলোচনা করেছি।

যাইহোক আশা করছি আপনারা প্রত্যেকেও মাঝেমধ্যে ছুটির দিনগুলোতে পরিবারের সকলের সাথে, এইরকম ভাবেই পুরনো দিনের কথা মনে করে, সেই সময় গুলোকে উপভোগ করেন। আমার পোস্ট পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না। ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।