Better life with steem || The Diary Game || 6th January, 2024 ||

in Incredible India8 months ago
IMG_20240107_002153.jpg

"আমার আজকের সারাদিনের বিশেষ কিছু মুহুর্ত"

Hello,

Everyone,

কেমন আছেন আপনারা সকলে?
আশা করছি সকলে খুব ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের প্রত্যেকের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।

দেখতে দেখতে নতুন বছরেরও একটি সপ্তাহ পার করে এলাম। আজ শনিবার, আগেও আপনাদেরকে বলেছি শনিবার মানেই সপ্তাহ শেষের আনন্দ। আর আজকের এই দিনটি আমি কিভাবে কাটিয়েছি, সেই গল্পই আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

IMG_20240107_001836.jpg

"আমাদের গাছের ফুল"

রোজকার মতো প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে এলাম। গতকাল রাতে কয়েকটি ভেরিফিকেশন সেরে তবেই ঘুমিয়েছিলাম। নিচে এসে দেখি আমার ননদ বসে আছে। প্রথমটা একটু অবাকই হলাম, পরে বুঝলাম যেহেতু আমার শ্বশুর-শাশুড়ি আজকে কল্যাণী যাবেন, তাই তাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে।

আসলে আমার ননদের ছোট ছেলে আমাদের বাড়ির পাশের স্কুলেই পড়ে। তাই ওকে স্কুলে ছেড়ে দিয়ে উনি সোজা আমাদের বাড়িতে এসেছেন। দু এক মিনিট আমি তার কথা বলে আমি রান্নাঘরে চলে গেলাম। কারণ রুটিন মাফিক কাজগুলো করতে না পারলে, সঠিক সময়ে শুভ অফিসে বেরোতে পারবে না।

শাশুড়ি মা উঠে পড়েছিলেন। তাই সবার জন্য চা উনি বসিয়ে দিয়েছেন। চা হয়ে গেলে আমি শুভকে চা দিয়ে এলাম। পিকলুর শরীর গতকালের থেকে আজকে আরো একটু বেশি খারাপ। ডক্টর দেখিয়ে ওষুধ আনা হয়েছে। আশা করা যায় আগামী কাল ওর শরীর অনেকটাই উন্নত হবে।

যাই হোক সকলে মিলে গল্প করছিল, আর আমি রান্নাঘর থেকে গল্পে করছিলাম আর রান্নার কাজগুলো শেষ করছিলাম। একটু বাদে অবশ্য শাশুড়ি মা ও রান্না ঘরে গিয়ে ব্রেকফাস্ট তৈরির কাজে হাত লাগাবেন। কিছুক্ষণ বাদে ননদ বেরিয়ে গেলো, কারণ ননদের ছেলের স্কুল ছুটি হওয়ার সময় হয়ে এসেছিল।

এরপর শুভ ব্রেকফাস্ট করে অফিস বেরিয়ে গেলো। পিকলুকে যথারীতি আমি জানালাতেই বসিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। ও চুপচাপ ওখানেই বসেছিল। শুভ বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই শশুর,শাশুড়ি ও আমার ননদ যিনি কালকে আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন, তিনজন মিলেই বেরোনোর জন্য তৈরি হতে গেলেন। কারণ ১১.৩০ নাগাদ গাড়ি আসার কথা। তার মধ্যে সকলে ব্রেকফাস্ট করে,স্নান করে, রেডি হয়ে নিলেন।

শশুর মশাইয়ের যেহেতু অনেক ওষুধ চলে, তাই আমি ওষুধগুলো সঠিকভাবে নিয়েছে কিনা সেগুলো একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম। তারপর কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসলাম।কারণ ভেরিফিকেশনের টাইম তখন শুরু হয়ে গেছে, তাই একদিকে ওনারা গোছগাছ করছিলেন। আর আমি বসে ভেরিফিকেশন করছিলাম।

IMG_20240107_001408.jpg

"আমার ব্রেকফাস্ট"

ইতিমধ্যে গাড়ি চলে এলো। এক এক করে সমস্ত ব্যাগপত্র গাড়িতে নিয়ে তুললো, অবশেষে আমাকে ও পিকলুকে বিদায় জানিয়ে তিনজন কল্যাণীর উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। আমি আর পিকলু ঘরে এসে কমিউনিটির কাজগুলো আগে সেরে নিলাম। তারপর আমি চা করে পাউরুটি দিয়ে ব্রেকফাস্ট করলাম। ঘড়িতে তখন ১২ টার বেশি বাজে।

এরপর ঘরের কাজে হাত দিলাম। কারণ যেহেতু তিনজন সমস্ত জামা কাপড় গুছিয়ে নিয়ে বেরিয়েছেন, তাই ঘরটা বেশ অগোছালো হয়েছিল। সবকিছু গোছগাছ করে আমি পিকলুকে ওষুধ দিলাম। তারপর রান্নাঘরের বাকি কাজগুলো সেরে, পিকলুতে লাঞ্চ দিয়ে দিলাম। আজকের পুজোটা শাশুড়ি মা সকালে দিয়েছিলেন, তাই আমার একটা কাজ কমে গিয়েছিল। এরপর আমি জামা কাপড় ছাদে মেলে দিয়ে স্নান করে নিলাম।

IMG_20240106_170409.jpg

"আমার আজকের লাঞ্চ"

পিকলুকে খাবার দিয়ে, বমির ওষুধ দিয়ে দিয়েছিলাম, যাতে আর বমি না করে। কিন্তু তবুও শেষ রক্ষা হলো না। আবার ওষুধ দিতে হলো। দুপুরবেলাতে লাঞ্চ করতে ইচ্ছে করছিল না। লাঞ্চ করিনি, তবে ফ্রীজে মিষ্টি রাখা ছিল তাই একটা মিষ্টি খেয়েছিলাম।

এরপর কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসলাম। পিকলুর যেহেতু শরীর ভালো না, ও কখনো আমার সামনে বসছিল, কখনো আবার খাটের উপরে উঠে বসছিল। তারপর আমার ঘুম আসছিল তাই টিভিটা চালিয়ে দিয়ে কাজ করছিলাম। কাজগুলো শেষ করতে করতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এলো। তাই আগে সন্ধ্যা পুজো দিয়ে নিলাম। একটু পরে শুভ এলো, কারণ আজ শনিবার একটু তাড়াতাড়ি অফিস ছুটি হয়েছিল। তারপর যথারীতি পিকলুর সঙ্গে আমরা একটু সময় কাটালাম।

IMG_20240107_001927.jpg

"ডিনারের জন্য তৈরি চিকেন বিরিয়ানি"

ফ্রিজে মাংস রাখা ছিল, রাত্রে বেলায় কি খাবে জিজ্ঞেস করাতে শুভ বলল মাংস রান্না করতে। কিন্তু আমার একটু বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছা করছিল। তাই ভাবলাম যখন মাংস রান্না করতেই হবে, তখন বিরিয়ানি বানাই। যেহেতু আমি বাইরের দোকানের বিরিয়ানি খাই না, তাই বাড়িতে করলে তবেই আমার বিরিয়ানি খাওয়া হয়। শুভ দেখলাম রাজি হলো, তাই চলে গেলাম বিরিয়ান তৈরি করতে।

বিরিয়ানি বানাতে এতটা সময় লাগে যে, কখনো কখনো সেই ভয়েই বানানো হয় না। এর মধ্যে একটু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলার জন্য অ্যাডমিন ম্যাম ডিসকর্ড যুক্ত হতে বললেন, তাই প্রথমে ডিসকর্ডে কথা বলা শেষ করে, তারপর রান্না করতে গেলাম। রান্না হতে অনেকটাই লেট হলো। এরপর বিরিয়ানিটা দমে দিয়ে আমি রান্না ঘরের সম্পূর্ণ কাজ সেরে নিলাম।

IMG_20240107_001509.jpg

"পিকলুকে ওষুধ খাওয়ানোর মুহুর্ত"

বিরিয়ানি মোটামুটি দম হয়ে গেলে, গরম গরম নিয়ে আমরা ডিনার করে নিলাম। রাতের বেলা পিকলুকে ডিনারে শুধুমাত্র গাজর সেদ্ধ করে দিয়েছিলাম। পিকলুকে ওষুধ খাওয়ানোটা প্রায় যুদ্ধের সমান। বমির ওষুধ আমি খাওয়ানোর পরপরই দিয়ে দিয়েছিলাম। পেটের সমস্যার কারণে অন্য আরেকটা ওষুধ ডক্টর প্রেসক্রাইব করেছেন, সেই ওষুধটাই শুভ রাতের বেলায় ওকে দিচ্ছিলো, সেই সময় আমি একটা ছবি তুলেছিলাম।

IMG_20240107_001442.jpg

"চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়েছে"

আমি সমস্ত কিছুর গোছানোর জন্য যখন রান্নাঘরের দিকে গিয়েছি, ঘরে এসে দেখে সে দিব্যি খাটের ওপরে উঠে শুয়ে পড়েছে। শরীরটা আসলে ভীষণ ক্লান্ত এই কারণে প্রায় ঘুমিয়েই পড়েছে। খুব বেশি বিরক্ত না করে ছবিটা তুললাম।

ভেবেছি একেবারে শোওয়ার সময় ওকে ওর বিছানায় শুইয়ে, তারপর নিজেদের জন্য বিছানা করবো। সেটা ভেবেই নিজে পোস্ট লিখতে বসেছি। এটা সম্পূর্ণ হলে পিকলুকে শুইয়ে দিয়ে আমিও শুয়ে পড়বো।

যেহেতু আগামীকাল রবিবার, তাই সকালে ওঠার খুব বেশি তাড়া নেই। এইভাবে শনিবারের দিনটা কাটলো। আগামীকাল অর্থাৎ রবিবার কেমন কাটে,সে গল্প নিশ্চয়ই আপনাদের সাথে করবো। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...
 8 months ago 
  • প্রথমত সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি। সৃষ্টিকর্তা যেন পিকলু কে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেয়। আসলে ওরা হয়তোবা নিজেদের মুখে নিজেদের কষ্টের কথা এবং ব্যথার কথা প্রকাশ করতে পারে না। কিন্তু তারপরেও নিজের শরীরের অবস্থার জন্য একেবারেই নিস্তেজ হয়ে গেছে। আপনারা ওর অনেক খেয়াল রাখছেন, আশা করিও খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে।

  • পরিবারের মধ্যে লোক সংখ্যা বেশি থাকলে কাজের পরিমাণ এত বেশি বৃদ্ধি পায়। সেটা আমি এই বেশ কয়েকদিনে ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি। গতকাল বিকেল থেকে লোক সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। এবং কাজের পরিমাণটা অনেক কমে গিয়েছে। একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু জানিনা কতক্ষণ ফেলতে পারব। আপনার ক্ষেত্রে ও ঠিক তাই হয়েছে।

  • রাতে যখন আপনার সাথে কথা হয়েছিল। তখন আপনি দেখিয়েছিলেন বিরিয়ানি রান্না করছেন। যেটা দেখতে অনেক বেশি লোভনীয় দেখাচ্ছে। আসলে চিকেন বিরিয়ানি খাওয়ার মজাটাই অন্যরকম। অবশ্যই পিকলুর দিকে আরো ভালোভাবে খেয়াল রাখবেন। যেন ওর শরীরে ঠান্ডা না লাগে, ধন্যবাদ আপনাকে আপনার একটা দিনের কার্যক্রম উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 8 months ago 

মানুষের জীবন আসলেই অনিশ্চিত। তাই এক মুহূর্ত বাদে আমাদের সাথে কি হবে, আমরা কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন হবো, সেটা বোঝা বড়ই সমস্যা। আপনি হয়তো বা ভেবেছিলেন একটু নিশ্চিত হতে পারবেন, তবে দেখুন আবার কেমন একটা বিপদ চলে এলো। আশা করছি এই সমস্তটা আপনি খুব তাড়াতাড়ি কাটিয়ে উঠতে পারবেন। ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ে এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

একদিকে সংসারের কাজ আর অন্যদিকে ভেরিফিকেশনের কাজ। দুটো কাজ একসাথে সামলান কি করে? আমাকে তো বেশিরভাগ দিনেই চা আর পাউরুটি দিয়ে ব্রেকফাস্ট করতে হয়। দুপুরে একটা মিষ্টি খেয়ে পেট ভরে গেলো? আর কিছু খেলেন না! আমি তো ভাবতেও পারিনা। তাও ভাল যে রাতে চিকেন বিরিয়ানি রান্না করেছিলেন। ওটা নিশ্চয়ই ঠিক মতো সঠিক পরিমাণে খেয়েছিলেন।

 8 months ago 

হ্যাঁ বিরিয়ানিটা সঠিক পরিমাণেই খেয়েছিলাম। দোকানের বিরিয়ানি যেহেতু খাই না, তাই নিজের হাতে তৈরি করা এই সুস্বাদু বিরিয়ানি, তাও শীতকালের রাতে দারুন লেগেছিল। চা আর পাউরুটির থেকে স্বল্প সময়ের ব্রেকফাস্ট আর কিছুই হয় না। তাই সময় বাঁচানোর জন্য বা ব্রেকফাস্ট তৈরি করতে ইচ্ছে না করলে, চা ও পাউরুটি বেশ ভালো অপশন। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 59249.61
ETH 2526.11
USDT 1.00
SBD 2.46