ক্রিয়েটিভ রাইটিংঃ “আলোর শহরের চাবি”
🌿আমি তানহা তানজিল তরসা। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @tanha001।
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসি..........
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি পরিবার পরিজনদেরকে নিয়ে। প্রতিদিনের ন্যায় আজ ও একটি নতুন পোস্ট শেয়ার করবো।আশাকরি আমার শেয়ার করা ক্রিয়েটিভ রাইটিং পোস্ট আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
অন্ধকারের ভেতর একজোড়া চোখ নিসর্গপুর নামের এক ছোট্ট শহরে থাকত রিদান। একেবারে সাধারণ এক কিশোর স্কুল, হোমওয়ার্ক, আর ছাদের কোণে বসে আকাশ দেখা ছিল তার জীবন। তবে রিদানের চোখ দুটো সাধারণ ছিল না। ওর চোখে সবকিছু একটু বেশি স্পষ্ট, বেশি রঙিন, বেশি প্রাণবন্ত লাগত। কেউ বিশ্বাস করত না কিন্তু রিদান মাঝে মাঝে স্বপ্নেও দেখতে পেত ভবিষ্যতের ঝলক।এক রাতে শহরে আচমকাই বিদ্যুৎ চলে যায়। অন্ধকারে বসে রিদান দেখতে পায় দূরে পাহাড়ের গায়ে হঠাৎ জ্বলে উঠল একটা আলো। কেউ জানে না ওখানে তো কিছুই নেই?পরদিন সকালে সে রওনা দেয়। কারোকে কিছু না বলে, একটা পুরনো মানচিত্র, একটা টর্চ আর বাবার দেওয়া খালি খাতাটা ব্যাগে ভরে বেরিয়ে পড়ে। হেঁটে হেঁটে সে পৌঁছায় পাহাড়ের গায়ে, যেখানে তার চোখে দেখা আলো জ্বলে উঠেছিল।ওখানে সে খুঁজে পায় এক ধ্বংসপ্রায় প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ পাথর, ভাঙা মেঝে আর এক পুরনো দরজা যার ওপর খোদাই করা।এই দরজার ওপারে আলো আছে। তবে কেবল সে-ই প্রবেশ করতে পারবে, যার চোখ সত্যকে দেখতে পায়।রিদান দরজায় হাত রাখতেই সেটা গুঞ্জন তুলে খুলে যায়। আলো ও ছায়ার শহর ভেতরে ছিল এক বিস্ময়কর শহর ঝুলন্ত বাগান, আকাশভাসা ট্রেন, মানুষেরা কথা বলছে পাখিদের সাথে, গাছেরা গল্প শোনাচ্ছে। এটা ছিল ‘আলোকপুর’ এক হারিয়ে যাওয়া শহর, যেখানে মানুষ তাদের মনের শক্তি দিয়ে চারপাশ গড়ে তুলত।
সেখানে রিদান জানতে পারে প্রতি শতকে একবার, বাইরের জগৎ থেকে একজন আসে যার চোখে থাকে ‘চাবি’। সে পারে শহরের বন্ধ হওয়া আলোগুলো আবার জ্বালাতে।কিন্তু সব এত সহজ ছিল না।ছায়ামানবের আবির্ভাব আলোকপুরে আলো যেমন আছে, তেমনি ছিল ছায়া। এক পুরনো শক্তি ‘অন্ধশক্তি’ যে আলোকে মুছে দিতে চায়। ছায়ামানবেরা শহরের নানা জায়গায় গোপনে বাসা বেঁধেছে। তাদের নেতা নির্বাক চায় রিদানের চোখের আলো নিজের করে নিতে।রিদানকে শেখানো হয় কীভাবে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করে সে আলো ব্যবহার করতে পারবে। সে শেখে শব্দহীন ভাষা, অনুভবের সুর ও নিজের চিন্তা দিয়ে বাস্তবতা গড়ে তোলা।চূড়ান্ত সংঘর্ষের শেষ রাত। ছায়া ছড়িয়ে পড়েছে শহরজুড়ে। আলোর বাতিগুলো নিভে যাচ্ছে একে একে। রিদান দাঁড়ায় শহরের চূড়ায়, তার হাতের মুঠোয় তার নিজের তৈরি করা ‘আলোর চাবি’। সেটা আসলে তার নিজের বিশ্বাস, সাহস আর কল্পনার শক্তি।সে চোখ বন্ধ করে ভাবে একটা পৃথিবী, যেখানে সবাই একে অপরকে বোঝে, যেখানে আলো শুধু বৈদ্যুতিক নয়, হৃদয়ের আলোও জ্বলে চাবি ঘোরে।আলোকপুরে আলো ফিরে আসে।রিদান ফিরে আসে নিসর্গপুরে, তবে সে আর আগের মতো সাধারণ নয়। সে বুঝে গেছে প্রতিটি চোখে থাকে একেকটা চাবি। যারা স্বপ্ন দেখে, বিশ্বাস করে, ভালোবাসে তাদের চোখেই গড়ে ওঠে নতুন নতুন আলোর শহর।আর মাঝে মাঝে রাতে, রিদান এখনো দেখে পাহাড়ের ওপাশে একটা আলো জ্বলে উঠছে।
পোস্টের বিষয় | ক্রিয়েটিভ রাইটিং |
---|---|
পোস্টকারী | তানহা তানজিল তরসা |
ডিভাইস | রেডমি নোট ১১ |
লোকেশন | পাবনা |
https://x.com/TanhaT8250/status/1909275708972757361?t=n36lJ1rs1IRRhmvUz7Kbow&s=19