বন্ধুত্ব হতে কি সমান সমান ই হতে হয়!

🌼 হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন? আশাকরছি সকলে ভালো আছেন,আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি ।

আজকে আবারো চলে আসলাম নতুন আরও একটি লেখা নিয়ে। আশা করি আজকের লেখাটিও আপনাদের সকলেরই ভালো লাগবে।

আজ ভাবলাম একটু বন্ধুদের নিয়ে কথা বলি।ফ্রেন্ডশীপ মানুষের জীবনের অন্যতম সুন্দর সম্পর্ক। বন্ধু ছাড়া জীবনকে অনেক সময় একদম ঠান্ডা আর মজা ছাড়া মনে হয়। কিন্তু একটা প্রশ্ন প্রায়ই মনে আসে ফ্রেন্ডশিপ কি শুধুই সমান সমান মানুষের মধ্যে হয়? মানে বয়স, অবস্থান, এডুকেশন বা ফাইনানসিয়াল কন্ডিশন সমান না হলে কি বন্ধুত্ব টিকে থাকতে পারে? আসলে বন্ধুত্বের আসল শক্তি সমানত্বে নয়।বোঝাপড়ায়, শ্রদ্ধায় এবং আন্তরিকতায়।

আমাদের বয়স বা সামাজিক অবস্থান সমান না হলেও রিয়েল বন্ধুত্ব গড়ে উঠতে পারে।অনেক সময় একজন টিচার তার স্টুডেন্ট সাথেও বন্ধুত্ব করে আবার বড় ভাই ছোট ভাইয়েরও ঘনিষ্ঠ বন্ধু হতে পারে। এখানে বয়স বা অভিজ্ঞতার পার্থক্য থাকলেও ভালোবাসা ও ভরসাই সম্পর্কটিকে টিকিয়ে রাখে। তাই বয়স সমান হলেই বন্ধুত্ব হবে এমন ধারণা একেবারে কিন্তু ঠিক নয়।

একইভাবে অর্থনৈতিক বা সামাজিক অবস্থার পার্থক্যও বন্ধুত্বের পথে বাধা নয়। একজন ধনী ও একজন গরিব মানুষও প্রকৃত বন্ধু হতে পারে। কারণ বন্ধুত্ব কোনো লেনদেনের সম্পর্ক নয়,এটা আত্মার টান। যদি পরস্পরের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা থাকে, তবে অর্থনৈতিক সমতা সেখানে কোনো প্রভাব ফেলে না। অনেক সময় দেখা যায়, একেবারে ভিন্ন জীবনযাপনের মানুষও একে অপরের জীবনে অবলম্বন হয়ে ওঠে।কিন্তু এটাও সত্যি যে সেইম ভাইভ বন্ধুত্বকে আরও সহজ করে দেয়। যেমন পড়াশোনার জায়গা, কাজের ক্ষেত্র বা শখ আহ্লাদ মিলে গেলে ফ্রেন্ডশিপ দ্রুত গড়ে ওঠে এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। কারণ মিল থাকলে বোঝাপড়াও সহজ হয়। কিন্তু এটাই আসলে একমাত্র বন্ধুত্বের মূল শর্ত নয়। ফ্রেন্ডশিপের আসল শর্ত হলো বিশ্বাস, সহমর্মিতা আর একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর মানসিকতা।

আমি মনে করি বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে সমতার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মেন্টালিটি এটাচমেন্ট। যদি দুই জনের মানসিকতা কাছাকাছি হয়, তারা একে অপরকে বুঝতে পারে, তাহলে অন্য কোনো পার্থক্য তেমন গুরুত্ব পায় না। যেমন একজন ইঞ্জিনিয়ার আর একজন শিল্পীও ভালো বন্ধু হতে পারেন যদি তারা একে অপরের ভাবনা বোঝেন এবং সম্মান করেন।আসলে বন্ধুত্বে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় নিঃস্বার্থ ভালোবাসার। বন্ধু মানেই হলো সুখে দুঃখে পাশে থাকা। সেখানে কে বেশি পড়াশোনা করেছে, কার কাছে বেশি অর্থ আছে, কে বড় পদে আছে এসব হিসাব চলতে পারে না। বরং প্রকৃত বন্ধুত্ব সেই সম্পর্ক যেখানে দুজন মানুষ একে অপরকে ঠিক যেমন আছে তেমনভাবেই মেনে নেয়।

হয়তো আমার মতের সাথে আপনাদের মত মিলবে না।তবে আমি মনে করি বন্ধুত্ব হতে সমান সমান হওয়া কোনো শর্ত নয়। প্রকৃত বন্ধুত্ব সব পার্থক্যকে অতিক্রম করে হৃদয়ের সংযোগ তৈরি করে। এটি কখনো বয়স, অবস্থান, সম্পদ বা পড়াশোনার সীমায় আটকে থাকে না। আস্থা, ভালোবাসা, সহমর্মিতা আর আন্তরিকতাই বন্ধুত্বকে সত্যিকার অর্থে শক্তিশালী করে তোলে। তাই আমি বলতে পারি যে বন্ধুত্বের আসল সৌন্দর্য সমতায় নয়, ভিন্নতাকে গ্রহণ করার মধ্যেই লুকিয়ে আছে।

আশা করছি লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে।এই প্লাটফর্ম এর এই লেখাগুলো থেকে যাবে চিরকাল সে সাথে থেকে যাবে আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্যগুলোও।তাই আশা করছি আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য দেখতে পাবো।