পুরোনো দিনের পহেলা বৈশাখ।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আজ - ২ বৈশাখ |১৪৩০ বঙ্গাব্দ, | গ্রীষ্ম-কাল |


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।




amusement-gacc3b9555_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

কেমন আছেন সবাই? আশা করছে ভালো আছেন। বেশ কিছুদিন ধরে খুবই গরম পরছে। তবে মনে হচ্ছে আজকে গরমের মত্রাটা অন্যদনের তুলনায় বেশিই একটু। কারণ সকালে উঠে মোবাইল চেক করতেই দেখলাম, মোবাইলে নোটিফিকেশন শো করছে আজকের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি হবে। তাই বোঝাই যাচ্ছে সারাটি দিন গরমের তিব্রতা নিয়েই কাটবে। আর তার সাথে আবার যুক্ত হয়েছে ইলেকট্রিসিটির সমস্যা । দিনের মধ্যে বেশ কয়েকবারই ইলেকট্রিসিটি চলে যায়। সকাল পর্যন্ত এই না হলে ৪ থেকে ৫ বার ইলেকট্রিসিটি চলে গিয়েছে।

যাইহোক আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে মোবাইলটা হাতে নিতেই দেখতে পেলাম ঢাকা নিউ মার্কেটের অগ্নিকান্ডের সেই ঘটনাটি। কিছুদিন আগেও যেখানে খবরের শিরোনাম হয়ে উঠেছিল বঙ্গবাজারের অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি এখন সেখানে নতুন করে আরো একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা যোগ হয়েছে। একই ঘটনা বারবার ঘটছে বুঝতে পারছি না এটা কি কোন ষড়যন্ত্র নাকি সত্যিই কোন দুর্ঘটনা। তবে যাই হোক না কেন, এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে অনেক ব্যবসায়ের ক্ষতি হয়েছে তা তো আর বলার অপেক্ষায় রাখে না। সামনে ঈদ আর ঈদকে কেন্দ্র করে কাপড় ব্যবসায়ীরা কিছুটা লাভবান হয়। আর এমন একটি সময় এ সকল দুর্ঘটনা। আসলে খুব খারাপ লাগছে মানুষগুলোর এমন দুরবস্থা দেখে। এছাড়াও আজ বাংলা বছরের প্রথম দিন আর এমন দিনে দুর্ঘটনা মেনে নেওয়া খুবই কষ্টের।

যাই হোক সকলকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা । যদিও আমাদের এখানে বাংলাদেশে গতকালকেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ওপার বাংলায় পহেলা বৈশাখ আজকে উদযাপন করা হচ্ছে। কারণ ওখানে একদিন পিছিয়ে উদযাপন করা হয়। গতকাল ওখানে ছিল চৈত্র সংক্রান্তি।

যেহেতু পহেলা বৈশাখ এবার রোজার মধ্যে হয়েছে। সেহুতু তেমন একটা ভালো ভাবে উদযাপন করা যায়নি। পহেলা বৈশাখ হল বাঙালির একটি গর্ব ও ঐতিহ্যের বিষয়। আমরা সবাই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এই বিশেষ দিনটি পালন করার চেষ্টা করি। তবে এটা সত্য যে বর্তমানের সাথে পুরনো দিনের পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। বিশেষ করে শহরে এবং গ্রামের মধ্যেও পহেলা বৈশাখ উদযাপনের বৈচিত্র দেখা যায়। যদিও আগে গ্রামে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের যে মজাছিল সেটার আমেজ তেমন একটা নেই এখন। সবার মাঝে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। তাই সবকিছুই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। সব জায়গায় যেমন হচ্ছে তাও না। ঐতিহ্যবাহী অনেক জেলায় এখনো বেশ ভালোভাবেই ঐতিহ্যগত ভাবে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়।

এবার আসি আমার পুরনো দিনের বাংলা নববর্ষ উদযাপনের কিছু কথা নিয়ে। এখন তো আমি শহরে থাকি অনেক বছর হলো। যখন ছোট ছিলাম গ্রামে আমরা অনেক জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে নববর্ষ উদযাপন করতাম। প্রতিন ঘুম থেকে দেড়িতে উঠলেও ওই দিন ভোর ৫ টাই ঘুম থেকে উঠে যেতাম। কারণ ওই সময় একটা বিষয় বলা হতো যে , নববর্ষের দিনে যা যা করব পুরো বছর নাকি তাই তাই করব।

তাই ওই দিন খুব ভোরে উঠতাম যাতে প্রতিদিন সকালে উঠতে পারি, এরপর পুকুরে ডুব দিয়ে গোসল করতাম । তবে একটা মজার ব্যপার হল পুকুরে ডুব দিয়ে ডুমুর ফল খেতে দিত আম্মু, কেননা এটি খেলে নাকি সারা বছর আর গায়ে কোন বিচি ওঠে না । এরপর কয়েক রকমের বাদাম, বিচি, দিয়ে কড়ই ভাজা খেতাম (চাল ভাজা । এরপর ১৭-১৮ রকমের সব্জির মিশ্রনে একটা সবজি রান্না করা হতো যার নাম ছিল আঠোরা। যেটাকে অনেকে পাচন বলে থাকে। বেশ মজার খেতে ওটা । সারাদিন এই রকমি বিভিন্ন খাওয়া দাওয়ার আয়োজন থাকতো। সাথে পান্তা ইলিশ তো ছিলই। আর বিকালে চলে যেতাম গ্রামের মেলাই। পহেলা বৈশাখের মেলা বেশ বড় আকারেই হতো। অনেক কিছু কিনতাম মেলা থেকে।

সত্যি পুরোনো দিনের সময় গুলো অনেক মজার ছিল। যেটা এখন আর নেই। আর এখন তো সারা বছরই কোন না কোন মেলা থাকে। মেলার পথে এখন আর সে আকর্ষণটা কাজ করে না। আগে শুধুমাত্র বিশেষ কয়েকটি উপলক্ষ ছাড়া মেলা বসতো না। তার মধ্যে একটি বড় উপলক্ষ্য ছিলই পহেলা বৈশাখ। বেশ জমজমাট ভাবে এ পহেলা বৈশাখের মেলা বসে গ্রামে। যদিও কিছু কিছু গ্রাম অঞ্চলে এখনো পর্যন্ত এ পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মেলার সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। পহেলা বৈশাখ আসলে কোন ধর্ম কিংবা দেশের কোন উৎসব নয় বরং এটা আমাদের বাঙালি জাতির একটি উৎসব।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 3 years ago 

আজ গরম এতটা পড়ছে যে ঘরে বাইরে কোথাও টেকা যাচ্ছে না।এইদিকে আবার কারেন্ট নেই সকাল ১১ টার পর থেকে। আসলে দিন দিন যেন গরমের মাত্রা বাড়ছে আর সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আমার ছেলেটা গরমে ঘেমে এখন জ্বরে ভুগছে।যাইহোক আসি পহেলা বৈশাখের কথায়।আমাদের গ্রামে আগে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ৩দিন ব্যাপী নববর্ষ মেলা হতো। বিভিন্ন রকম ফলমূল, মিষ্টি এসব উঠতো।আমরা বিভিন্ন রকম সবজি দিয়ে রান্না করা খাবারটাকে পাঁচন বলে থাকি,এটা খেতে কিন্তু খুব মজার।যদিও অনেকদিন খাওয়া হয়নি।পুরনো দিনের পহেলা বৈশাখকে অনেক মিস করি এখন।

আমাদের এদিকে তো আজকের টেম্পারেচার আরো অনেক বেশি । বাইরে বেরোনো তো দূরের কথা, ঘরের মধ্যে টেকা মুশকিল হয়ে পড়েছে।

সবার মাঝে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। তাই সবকিছুই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।

তবে এই আধুনিকতার ছোঁয়ার জন্য হয়তো পহেলা বৈশাখটা আর আগের মত নেই। যেমনটা আপনি বললেন যে পহেলা বৈশাখ আপনার কিভাবে কাটতো ছোটবেলায়। আমি নিজেও যখন খুব ছোট ছিলাম তখন গ্রামের মেলায় ঘুরতে যেতাম। সেই মজাটা এখন আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। ইনফ্যাক্ট আমি তো এখন ঘর থেকেই বেরোই না পহেলা বৈশাখের দিন।

 3 years ago 

আসলে এই গরমে জীবনটা দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। তারমধ্যে নিউমার্কেটের অগ্নিকাণ্ড দেখে খুব খারাপ লাগলো। বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। ভেবে উঠতে পারছি না এগুলো কি দুর্ঘটনা নাকি ষড়যন্ত্র। যাইহোক ছোটবেলায় পহেলা বৈশাখে সবাই নতুন জামা পরিধান করতে চাইতাম। মজার মজার খাবার খেতে চাইতাম। খুব আনন্দে কাটাতে চাইতাম সেইদিনটা। তাহলে নাকি সারা বছর খুব ভালো ভাবে কাটবে। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

ভাইয়া আপনাকে জানাই শুভ নববর্ষের প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। একথা সত্য ভাইয়া পুরনো দিনে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেওয়ার জন্য আয়োজন করা হতো বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান এবং পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বসতো বিভিন্ন জিনিসপত্রের মেলা। আর আমাদের প্রধান আকর্ষণ তখন ছিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মেলায় যাওয়া এবং বিভিন্ন রকমের খেলনা জিনিসপত্রগুলো ক্রয় করা। এখন অবশ্য পহেলা বৈশাখের সেই আকর্ষণটা একেবারেই নেই বললেই চলে। দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য প্রিয় ভাইয়া আপনার অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

সত্যি ভাইয়া তাপমাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। আর গরম মানুষের সহ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। কেন জানি কয়েকদিন থেকে সবকিছু এলোমেলো হচ্ছে। একদিকে প্রচন্ড গরম অন্যদিকে আগুনে পুড়ে যাওয়ার দুর্ঘটনা সবকিছু মিলে কেন জানি পরিবেশটা এলোমেলো লাগছে। তবে যাই হোক ভাইয়া আগেকার সময় আমরা যেভাবে পহেলা বৈশাখ পালন করতাম এখনো সেসব আনন্দ দেখতে পাই না। এখন সবকিছুই বদলে গেছে।

 3 years ago 

ভাইয়া আপনাকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানাই প্রথমেই।কদিন আগেই বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরেই আবার নিউ মার্কেটে আগুন।ঈদের সামনে তাদের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল।যাইহোক পহেলা বৈশাখ এবারও রোজার মধ্যে হওয়াতে খুব একটা উদযাপন করা যায়নি।পূর্বের পহেলা বৈশাখ সত্যি অনেকটা রঙিন ছিল,এখন সবকিছু আপডেট হওয়াতে আগের আমেজটা নেই।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

নববর্ষের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ভাইয়া।সত্যি সকালে উঠে আগুন লাগার খবর শুনে টিভি ছেড়ে বসে খবর দেখলাম।আমার বাসা থেকে কাছেই।যার জন্য নিউ মার্কেটেই আমার যাওয়া হয় বেশি।খুব খারাপ লাগলো আসলে।যাই হোক আপনার পুরনো দিনের পহেলা বৈশাখের অনুভূতি পড়ে খুব ভাল লাগলো।আমরাও আসলে এমনটা ভাবতাম, এই দিন যা যা ভাল কাজ করব সারাবছর তাই তাই হবে।আপনার মেলার কথা শুনে আমার ও মেলায় যাওয়ার অনুভূতি গুলো মনে পরে গেলো। আসলে সেই দিন গুলো ই খুব ভাল ছিল।খুব সুন্দর সময় তখন কাটিয়েছি। ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য। অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.09
TRX 0.30
JST 0.035
BTC 109979.78
ETH 3879.06
USDT 1.00
SBD 0.56