একজন প্রবাসীর গল্প।
আজ - ১৯ই আষাঢ় | ১৪২৮ বঙ্গাব্দ | শনিবার | বর্ষাকাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।

ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
অনেকদিন হলো মাকে কল দেওয়া হয় না, আজ মাকে কল দিলাম অনেকদিন পর। মায়ের কথা গুলো এখনো আমার কানে ভেসে আসছে।
মা - হ্যালো, বাবা কেমন আছিস ?
ছেলে - হ্যাঁ, মা আমি ভালো আছি ।তুমি কেমন আছো? ঠিকঠাকমতো ওষুধগুলো খাচ্ছ তো?
মা - খাচ্ছি বাবা, তুর আমাকে নিয়ে এত চিন্তা করতে হবে না। তুই ভালো তো ? তুকে নিয়ে আমার অনেক চিন্তা হয় কতদিন দেখি না তুকে।
ছেলে - আরে আমার কথা বাদ দাও তো বাসার সবাই ভালো আছে তো। ওরা ঠিকঠাক মতো পড়াশোনা করছে তো?
মা - হ্যাঁ করছে, তুকে কিছু কথা বলার ছিল।
ছেলে - কি কথা মা?
মা - কাল বাড়িওয়ালা এসেছে বলছে তিন মাসের বকেয়া ভাড়া এবং এই মাসের ভাড়া সহ সব দিয়ে দিতে। তা না হলে বাড়ি থেকে বের করে দিবে।এছাড়াও তোর বিদেশ যাওয়ার সময় যে টাকাগুলো দেনা করেছিলাম সেগুলোর জন্য ও দেনাদারেরা বিরক্ত করছে। কেনই বা করবে না বল কিছুদিনের কথা বলে টাকাগুলো নিয়েছিলাম কিন্তু অনেকদিন তো হয়ে গেল। এছাড়াও গত কয়েক মাস ধরে তুইতো টাকাও পাঠাইতে পারতেছিস না। সংসার যে আর চলে না রে বাপ। যা ছিল তা দিয়ে কষ্ট করে চালিয়েছে কতদিন আর যে পারছি না।
ছেলে - মা তুমি এই নিয়ে চিন্তা করো না তো আমি দেখছি কি করা যায়। আচ্ছা এখন রাখছি পরে আবার কল দিব।
মা - আচ্ছা ,ভালো থাকিস বাপ।
মাকে তো বলে দিলাম যে কিছু একটা ব্যবস্থা করবো, কিন্তু কি করবো আমার যে এই দেশে এসে নিজেরই চলতে কষ্ট হয়। কেন যে বিদেশ নামে এই জেলখানায় আসলাম, না এসেই বা উপায় কি। আগে ভাবতাম বিদেশ মানে অনেক টাকা কিন্তু সেসব শুধুই কল্পনা। আমার মত মানুষেরই বা কি করার আছে আমি তো আর অফিস-আদালতে কাজ করি না, আমি তো এখানে একজন শ্রমিক মাত্র। অবৈধভাবে এসেছি এদেশে, তাই ভালো কোন কাজও করতে পারি না, সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় কখন যে ধরা খেয়ে যায়।
বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের সব দায়িত্ব আমার কাঁধে এসে পড়ে , কেননা আমি পরিবারের বড় ছেলে। তাইতো পরিবারের সকল দায় দায়িত্ব আমার উপর।
এভাবে আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে আনেক প্রবাসীদের গল্প।
সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।
| 100 SP | 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP |

ভাই এই রকম নির্মম সত্য কাহিনীর স্বাক্ষী আমি নিজেও। কারন আমার বাবা দীর্ঘ সাত বছর বিদেশে প্রবাসী জীবন কাটিয়েছেন, তার কাছে প্রবাসী জীবনের গল্প শুনার পর বিদেশ যাওয়ার আগ্রহ কোনদিন তৈরী হয় নাই।
সত্যি কথা বলতে আমরা প্রবাসীদের সমস্যার কথা বুঝতে চাই না, বরং আমাদের প্রয়োজন ও সমস্যাগুলো তাদের উপর চাপিয়ে দেই।
জি ভাই এটাই বাস্তবতা।
খুব সুন্দর লিখেছেন স্যার
বর্তমান সমাজের প্রবাসী সম্পর্কে বাস্তব রুপটি সুন্দরভাবে গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই
ভাই প্রবাসীদের জীবনের গল্পগুলো ভাই অনেক করুন ও বাস্তবতা কেন্দ্রিক যাইহোক ভাল লিখেছেন ধন্যবাদ ।
এটা একটি বাস্তবতামূলক লেখা পড়ে ভালো লাগল।ধন্যবাদ ভাইয়া।
প্রবাসীদের জীবনটাই আসলে এরকম। কত কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে রাখতে হয়।
আপনার লেখাটা সুন্দর হয়েছে।
রেমিট্যান্স যোদ্ধারা আসলেই বর্বর জীবন-যাপন করে আমাদের উন্নয়নের চাকা ঘোরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।সুন্দর লিখেছেন ভাই