শৈশবের একটি মজার স্মৃতি।
আজ - ৬ই জ্যৈষ্ঠ |১৪৩০ বঙ্গাব্দ, | গ্রীষ্ম-কাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।

ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
আজ পোস্টে কি লাগবে এমন ভাবনায় হঠাৎ মনে পড়ল ছোটবেলার মাজারে এক স্মৃতি। আসলে শৈশবের স্মৃতিগুলো এতটাই মধুর যে তা কখনোই ভোলা সম্ভব না । যত দিন যায় ততই যেন সে সকল স্মৃতিগুলো আরো স্পষ্ট হয়ে মনের মাঝে গেঁথে থাকে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে শৈশব মানেই হচ্ছে স্বর্ণালী একটি সময়। সে স্বর্ণালী সময়ের কথা আজীবন মনে থাকে । আর এই ছোট্ট জীবনে সে সকল স্বর্ণালী মুহূর্তগুলো ছিলে বলেই জীবনটা এখনো সুন্দর। পৃথিবীতে এমন মানুষ খুবই কমে আছে যারা তাদের শৈশব কে মিস করে না। আমিও ঠিক সেরকমই একজন যে কিনা শৈশবের নানা দুরন্তপনা এবং দুষ্টুমি সেই স্বর্ণালী সময়গুলোকে খুব মিস করি।
যাইহোক আজ যে কথা বলতে চলে এলাম। অনেক আগের একটি ঘটনা। ঘটনাটি এমনই কোন এক বর্ষার সময়। সেবারে কোন একটা উপলক্ষে জানি নানা বাড়িতে সকালে বেড়াতে এসেছে। আর তখন ওই বয়সের নানুর বাড়ি ছিল সব থেকে ভালো লাগার একটি জায়গা। সব সময় অপেক্ষায় থাকতাম কখন নানু বাড়িতে বেড়াতে যাব। আমি মনে করি প্রত্যেকেরই নানা বাড়িটা এমনই হয়।
যাই হোক যে কথা বলছিলাম। সকল কাজিনরা সেবারে একত্র হয়েছিলাম নানুর বাড়িতে। তখন আমি যে খুব ছোট তা কিন্তু না, মোটামুটি জ্ঞান বুদ্ধি হয়েছে। যাইহোক, আমরা সমবয়সী মোট তিনজন কাজিন ছিলাম। তিনজন যে একই বয়সী তা কিন্তু না, মোটামুটি বছর খানিকের ব্যবধান রয়েছে আমাদের তিনজনের মধ্যে। তবে এই তিনজনের মধ্যে আমি ছিলাম সবার ছোট।
কিন্তু বয়সে ছোট হলে কি হবে দুষ্টুমির মধ্যে ছিলাম তাদের থেকে আরো এগিয়ে। আমাকে যারা ছোটবেলায় দেখেছে আর এখন দেখছে তাদের প্রত্যেকেরই একই বক্তব্য যে ছোটবেলার সে আমি আর এখনকার এই আমি মধ্যে নাকি অনেক তফাৎ। এখনকার এই আমির সম্পন্ন বিপরীত ছিলাম তখনকার সে আমির। প্রচন্ড দুষ্টু ছিলাম আমি ছোটবেলায়। তবে এখন বড় হওয়ার সাথে সাথে একেবারে শান্ত হয়ে গেছি।

ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
যাইহোক, আমরা তিন কাজিন মিলে প্ল্যান করলাম একদিন সাগর পাড়ে যাওয়ার। আমাদের নানু বাড়ি থেকে সেই সাগর পার টা খুব বেশি দূরে না। তবে আমরা এটা জানতাম যে বাসায় এ বিষয়টি জানলে কেউ আমাদের যেতে দিবে না সেখানে। কেননা আমাদের জন্য ওখানে একা যাওয়াটা কিছুটা বিপদজনক। তবে আমাদের যাওয়ার ইচ্ছা কে থামাই, যত যাই হোক না কেন প্ল্যান যেহেতু করেছি সেহেতু আমরা তো যাবোই। তো যেভাবে সেই কাজ একদিন সকালে ভোরে ভোরে আমরা বেরিয়ে পড়লাম সাগর পাড়ের উদ্দেশ্য। বাসায় তখন বেশিরভাগ লোকই ঘুম। আমাদের প্ল্যান ছিল ঘন্টাখানেকের মধ্যে চলে আসার।
ওখানে গিয়ে আমরা বেশ মজা করেছিলাম। ওই সাগর পারটার একটা নাম ও ছিল সেটা হচ্ছে "বাংলাবাজার"। আর ওই সাগর পাড়টাতে জেলেদের বসবাস আর ওখানে সকালের মাছ ধরতো । আর আমরা ওখান থেকে বেশ কয়েকটি মাছ ধরার জাল, ককশিট আর কিছু গুঠি নিয়ে আসে। বেশ হেলে দুলে মজা মাস্তিতে ঘন্টা তিনেকের মধ্যে আমরা আবার বাড়ি ফিরে আসি।
কিন্তু বাড়ি ফিরে এসে আমাদের জন্য যে এত মজা অপেক্ষা করছে তা আমরা সত্যিই বুঝতে পারিনি। আমরা যেহেতু সকাল সকাল কাউকে না বলে বাইরে বেরিয়ে পড়েছিলাম তাই পরিবারের সকল খুবই চিন্তা করছিল। এবং খুবই বিশৃঙ্খলা একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল আমাদের জন্য।
একে তো আমরা অন্যায় করেছি বাসায় কাউকে না বলে বাহিরে বেরোনোর। আরেক অন্যায় করেছি আমরা একা একা অতদূর যাওয়ার। ঐদিন বেশ উত্তম মধ্যম আদর-যত্ন পেয়েছিলাম মামাদের কাছ থেকে। নানা বাড়িতে একটি ঘর ছিল যেদিকে আমরা "বরঘর" বলতাম। ওই ঘরটা মূল স্টোর রুমের মত যেখানে যাবতীয় সব জিনিসপত্র ও লাকড়ি রাখা হতো। ওই ঘরটাতে আমাদের তিনজনকে মোটামুটি এক বেলা বন্দি করে রেখেছিল আমাদের শাস্তি হিসেবে। তবে মজার বিষয় হচ্ছে, এই ঘরেই আমরা সাগর পাড় থেকে আনা জিনিসপত্র গুলো আগেই লুকিয়ে রেখেছিলাম। এবং ওই বন্দী অবস্থায় এগুলো নিয়ে বেশ মজা করেছি।
আর এই ঘটনাটি নিয়ে এখনো পর্যন্ত আমরা যখন তিনজন কাজিন একত্রিত হয় তখন মজা করি।
সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

VOTE @bangla.witness as witness

OR
আসলে ছোটবেলার অনুভূতিগুলো একটু অন্যরকমই হয়ে থাকে। আর হ্যাঁ ছোটবেলায় আপনার মত আমারও নানীর বাড়ি বেশ প্রিয় ছিল। আমরাও ছোটবেলায় মামাতো ভাইদের সাথে এরকম কাউকে না জানিয়ে ঘোরাঘুরি করতাম। এর জন্য অবশ্য অনেক বকাও খেয়েছি। যাইহোক আপনারা তো দেখছি সাগর পাড়ে গিয়ে বেশ ভালই এনজয় করেছিলেন আর ফিরে এসেও বেশ ভালই মজা নিয়েছিলেন। কারণ কাউকে না জানিয়ে সাগর পাড়ে যাওয়ার কারণে সবাই তো একটু মজা দিবেই। 😁 যাইহোক পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো ভাই ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
কাউকে কিছু না জানিয়ে চলে গিয়েছিলেন বলেই আপনাদের উত্তম মাধ্যম ভালোই হয়েছিল। তবে অবশেষে সেই ঘরেই বন্দি করা হলো যেখানে আপনারা আপনাদের খেলনা গুলো লুকিয়ে রেখেছিলেন। ব্যাপারটা বেশ মজার ছিল। সময়ের সাথে সাথে ছোটবেলার আনন্দ গুলো হারিয়ে গেছে। সেই সাথে স্মৃতিগুলো যেন আরো বেশি মনে পড়ছে। ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে।
ভাই আপনার সাথে দেখছি আমার অনেকটা মিল আছে। আমিও ছোট্টবেলা অনেক দুষ্ট ছিলাম কিন্তু এখন সেই অভ্যাসটা নেই সবাই আমাকে নিয়ে মাঝে মাঝেই গল্প করে। এমনিতেই নানুর বাড়িতে ছোট্টবেলা যেতে অনেক ভালো লাগতো যদি একবার নানুর বাড়িতে যাওয়ার কথা শুনতাম অনেক খুশি হতাম। ছোটবেলার দিনগুলো সত্যিই অনেক মধুর সোনালী যুগ সেই মুহূর্তগুলো কখনোই ভুলবার নয়। সাগর পাড়ে গিয়ে জেলেদের জাল চুরি করে এনে ছিলেন শাস্তি হিসেবে বন্দি করে রেখেছিল অনেক মজা পেলাম ভাই।
ভাইয়া, আপনার শৈশব জীবনের মজার স্মৃতি গুলো খুবই চমৎকার ভাবে আপনি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার শৈশব জীবনের মজার স্মৃতিগুলো পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। ছোটবেলায় আপনি যে প্রচন্ড দুষ্টু ছিলেন, এটা জেনে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগলো আমার। আসলে ছোটবেলায় যারা প্রচন্ড দুষ্টু হয়, তারা বড় হওয়ার সাথে সাথে তাদের বুদ্ধিবৃত্তির যথার্থ বিকাশ ঘটে। যেমনটা আপনার ক্ষেত্রে হয়েছে।
কি যে বলেন ভাইয়া, ছেলেবেলার কথা কি আর বলতে। সে যে আমার নানা রং এর দিনগুলা। কতই না মজার ছিল সে দিনগুলো। এভাবে না জানিয়ে গেলে তো উত্তম আর মধ্যম খেতেই হবে। বাড়ীর মানুষের বুঝি টেনশন হয় না। তবে খারাপ হয় নাই। আপনাদের প্রিয় জায়গাতেই বন্দী করা হয়েছিল। যেখানে আপনাদের খেলার জিনিস গুলো ছিল। হি হি হি । আসলাম কিছুক্ষন।